আজকে আপনাদের একটা বেদনার কথা বলছি। প্রস্তুত তো? আমি যার গল্প শেয়ার করতেছি উনি আমার বন্ধু হন। মনির। বাবা মা কেউ বেঁচে নাই ওনার। একটা গার্লফ্রেন্ড ছিলো কাল সকালে সেইটায়ও মারা গেছে। সম্ভবত ক্যানসারে। যে মেয়েটার মরণে উনি কাঁদতেছেন এই মেয়েটার শরীর যখন জীবিত আর রোগমুক্ত ছিলো, ও মনির ভাই'র সাথে ধোকাবাজি করছিলো। এক চরম ধোকাবাজি। আমার খুব গায় বাজছিলো কেননা এই মনির লোকটা খুব সরল লোক। আমার মনির ভাইর কান্নার দিনগুলা মনে আছে। দাগ কাইটা রাখছিলাম। ঘটনাটা ছোট্ট পরিসরে বলি। মেয়েটা কোন এক সমস্যায় পরে বাড়ি ছাড়ছিলো আর মনির ভাই রিস্ক নিয়া ওরে ঢাকায় নিয়া ওনার বন্ধুর বাসায় থাকার ব্যবস্থা কইরা দেয়। টাকারে পয়সারে যা যখন লাগছে মনির ভাই দিছেন। এমন কোন অসুবিধা নাই ওঁর যা উনি দেখেননায়। কিন্তু মেয়েটা ওনার উপকারের বদলে একটার পর একটা উষ্ঠা দিতেই লাগলো! যখন ওনার সাথে প্রেম চলছিলো পাশাপাশি অন্য একটা ছেলের সাথেও প্রেম চালাইতেছিলো মেয়েটা। এক পর্যায়ে মনির ভাই সব জাইনা ফেল্লে উনি তিনি অপর ছেলেটার সাথে যোগাযোগ করলেন। মেয়েটার জারিজুরি ফাঁস হওয়ার পথে গেলে এক পর্যায়ে মেয়েটা মনির ভাইরে এই বইলা ব্ল্যাকমেইলিং করতে লাগলো 'তুমি যদি ওরে কিছু বলো তাইলে আমি আত্মহত্যা করব!' ঐ ছেলেটা বিদেশ থাকতো। মেয়েটা চাইছিলো ঐ ছেলেটারে বিয়ে করতে। এইদিকে মনির ভাই যেন ছাইড়া না যায় তাও চাইতো। কারণ তা না হইলে ঢাকায় ওর থাকাটা প্রবলেম হইয়া যাইতো। তো এজন্য মেয়েটা শুরু কইরা দেয় পাগলামি আর ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইলিং! এক পর্যায়ে খুব কষ্টে পইরা মেয়েটারে ত্যাগ করে মনির ভাই। এর মধ্যে মনির ভাইর এক প্রকারের স্থায়ী জ্বর হয়। কোন ডাক্তার কবিরাজেও এই জ্বর কমতেছেনা! কোন এক হাতুড়ে ডাক্তার কইলো ওনার নাকি ক্যান্সার কোষ আছে শরীরে! এইসব শুইনা ভাড়াক্রান্ত মন নিয়া মনির ভাই আমারে ফোন দিলেন। আমি ওনার লগে প্রায় আধাঘন্টা কথা কইলাম। আর বল্লাম যে চিন্তা কইরেননা এইসব রিপোর্ট ভূয়া আপনে অন্য ডাক্তার দেখান। তবুও ভয় সত্যই হইলো কিনা! কিছুদিনের মধ্যে উনি অন্য ডাক্তার দেখাইলে রিপোর্ট ভালো আসে! এর ও এক-দেড়মাস পর উনি সুস্থ হন। এরপর ওনার দিন আবার আগের মতোই ভালো চলছিলো। মাস পাঁচেকক বা তার বেশি কম সময় হইতে পারে ঐ মেয়েটা তাঁরে হঠাৎ ফোন কইরা বলে 'আমি অমুক হসপিটালে আছি আমার কীডনি আর শরীরে পানি হইছে!' মনির ভাই মেয়েটার সব ধোকাবাজির কথা নিমিষেই ভুইলা যায় যেহেতু একটা সময়ে উভয়ের ভালোবাসা ছিলো। আর পাগলের মতো মেয়েটারে দেখতে যায়! এরপর মেয়েটা যতদিন হসপিটালে ছিলো সম্ভবত প্রতিদিনই মেয়েটার খোঁজ নিছে। এইতো কয়েকদিন আগেও মনির ভাইর লগে মেয়েটারে নিয়া কথা কইছিলাম তখন উনি কইলেন মেয়েটা বাঁচবে ডাক্তার বলছে। হয়তো ডাক্তার সান্ত্বনা দিয়া আড়ালে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছিলেন যা কারো দৃষ্টিগোচর হয়নাই। তারপর কিছুদিন বাদে কইলেন মেয়েটার হাত পা ফুলছে। আর আজকে মেয়েটা সম্পর্কে শেষ কইলেন 'মেয়েটা বাঁইচা নাই!' কী আশ্চর্যের পৃথিবী ব্রো! এই মেয়েটার সুখের দিনে কী কখনো ভাবতে পারছে যে ও কখনো মারা যাবে?
খুব নাকি শখ আছিলো নার্সিং নিয়া পড়বে তাও কী আর হইলো? আশাপূর্ণ সবার হওয়া আসলে মানায়না। মেয়েটার ধোকাবাজিরে আমি হাইলাইটস করতে এতবড় কইরা লিখিনাই। আমি মূলত মনির ভাইর সরলতা দেখাইতে, আর লাইফ ঘুইরা যাইতে পারে কিভাবে তা দেখাইতে লিখছি। কিভাবে ধোকাবাজি আল্লার আসমান কাঁপায় এইটাও বুঝাইলে বুঝাইতে পারি। মনির ভাইর সরলত্ব আর মেয়েটার ধোকাবাজি নিয়া আমি এই কবিতা লিখছিলাম;
মনিরআমি আপনাকে চিনিএকটা ভীতু আপনি।মনিরআপনার এতটাসরল হওয়াঅস্বাভাবিকতাআপনি যতটা।সাবধান!আপনি চা খানপান আপনি চাবানআর আপনি কাজে যানমনিরআপনি কি শুনছেন আমার কথা?জানি আপনি নন বঁধীর।মনিরআপনি ভাবছেন হয়তোবা আমিঐ গিপ মেয়েটার কথা লিখবোমনির একটি কথাবারবার ফিকে হয়আপনাকে বলতে ভয়তবুও বলি,মেয়েটি আপনাকে মনির পেয়ে বসোছেও জানে, আপনি একজন মনির!মনিরআপনি খুড়তে থাকুনআমি খুঁজে দেখি গর্ত বেশ গভীর!
মনির ভাই কবিতাটা পইড়া খালি হাসছিলো কোন মন্তব্য করেননাই। যেহেতু খুব সরল মানুষ। আজ মেয়েটার জন্য আফসোস হইতেছে! বোকা মেয়েটা মৃত্যু পর্যন্ত মনিরের কাছে হাইরা গেলো আহা! ওর প্রতি কোন রাগ নাই আমাগো। আল্লাহ্ ওঁরে যেইখানে খুশি রাখুক দোআ।
No comments:
Post a Comment