প্রাজ্ঞ
প্রাজ্ঞ পাঠের আগে
বেশ কিছুদিন আগে কাহলিল জিবরান এর গদ্য কবিতা দি প্রফেট পড়া হলো। এত বড় একটা সৃষ্টি মানুষের হতে পারে ভাবলে শিহরিত হতে হয়! প্রত্যেকটা বাণী পড়ে আমার মনে হয়েছিলো যে; জিবরান বোধ হয় একজন মহামানব যিনি আপনার-আমার সকলের মনের কথা দি প্রফেট লেখার সময় জেনে গেছেন! দি প্রফেট একটি সাড়া জাগানো গদ্য কবিতা। প্রায় ২০ টি ভাষায় এর অনুবাদ ও হয়েছে। জিবরান এই বইতে কিছু ছবিও নিজে এঁকেছেন যা তাঁর বিশালত্বতাকে আরো তুলে ধরেছে উচ্চে! মনে মনে আমার একটা আকাঙ্খা জাগলো যে; কাহলিল জিবরান কে অনুসরণ করে আমি যদি একটা কিছু লিখি তাহলে কেমন হয়? ঝোঁকের বশে লিখে ফেললাম অনেকখানি। এক সুহৃৎ জানালো “লেখাটা নাকি হাদীস এর মতো হয়েছে!” ঠিক দি প্রফেট এর মতো হয়নি। আমি অনুধাবন করলাম যে আসলে নিজের ক্রিয়েটিভিটির বাইরে গিয়ে অন্যকে অনুসরণ হাদীসের মতোই হবে। তা আর বাণী হবেনা। আমি যে পর্যন্ত লিখলাম ওখানেই শেষ করলাম। আর লিখতে মনে চাইলো না কাউকে অনুসরণ করে। কারণ, আমি জিবরান কে অনুসরণ করে আমার গদ্য কবিতাটা লিখছি এখন অন্যকেউ যদি জিবরানের দি প্রফোট পড়ে আমার “প্রাজ্ঞ” পড়ে তাহলে আমার চিন্তাটা তাঁরা ধরে নেবে জিবরানের চিন্তা হিসাবে। আমার গুরুত্ব থাকবে না। আমি যে লেখাটা লিখলাম, নিজের মেধা-মগজ দিয়ে। কাহলিল জিবরান কে সুরকার আর আমাকে গীতিকার হিসাবে ধরতে পারেন। তবুও ঐ যেটুকু অনুসরণ করলাম সেটুকুর জন্য আমার অধ্যাবসায় কে অস্বীকার করা হতে পারে। প্রাজ্ঞ লেখাটা এর জন্যই স্টপ করে দিলাম। যেটুকু লিখেছিলাম সেটুকু আপনাদের পাঠের উদ্দেশ্যে তুলে দিলাম।
সজল আহমেদ
বরিশাল, বাংলাদেশ।
৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার
প্রাজ্ঞ
তাঁর গলায় একটা শাপলার মালা ছিলো আর পরনে গেঁড়ুয়া পাঞ্জাবী সাদা লুঙ্গী আর হাতে তজবীর দানা।
সে নামলো আমাদের বন্দরে তখন সন্ধ্যা শেষে কৃষ্ণ রাত ছেয়েছিলো এ বন্দর।
এ বন্দরের স্মৃতিতে স্মৃতিতে সবুজ। তাঁর মনে হলো এ নগর তাঁর চিরচেনা। এ নগর তাঁর আত্মীয়।
তাঁর শাম শাম বোরাককে সে উড়ে যেতে বললেন। বোরাক তার সাদা ডানা মেলে উড়ে চলে গেলো।
নেমেই একটা চায়ের দোকানে যোগসাজশ বসলো।
তাঁকে দেখে যারা চিনতে পারলো চারপাশ থেকে ঘিরে ধরলো।
আর জিজ্ঞেস করতে থাকলো একের পর এক। চা দোকানদার তাঁকে এক কাপ চা বানিয়ে দিলো।
হাসিমুখে তিনি চায়ের কাপ নিলেন এবং বললেন শুকরিয়া সুহৃৎ!
তখন চায়ের কাপ থেকে বাষ্প উড়ে যাচ্ছিলো মেঘেদের রাজ্যে। এই বাষ্প একদিন অবেলায় বৃষ্টি হয়ে নামবে পানিচক্রের নিয়মে।
আর বৃষ্টি থেকে জন্মাবে যে ফসল তা পরিচিতি পাবে সোনার ফসলে।
আসা যাওয়া
“জনাব! কষ্ট হয়নিতো, কষ্ট হয়নিতো? এ অবেলায় কেন?”
সে চায়ের কাপ ঠান্ডা হওয়ার পর একচুমুক চা গিললেন।
চা ঠান্ডা হওয়ার পর চুমুক দেয়ার কারণ হলো সে পানিচক্রের নিয়ম ভাঙতে চান না।
চা গিলতে গিলতে বললেন,
“সুহৃৎ আমার ! আসিবার কোন সময় হয়না। সময় হয়না চলিয়া যাইবার।
যে যাইবে সে যাইবেই আর যে আসিবে তিনি আসিবেন’ই।
তোমরা চাইলেও আর না চাইলেও সে আসিবেন।
কারো ইচ্ছা অনিচ্ছায় আসা যাওয়া এক প্রকার দাসত্ব।
মানুষ একমাত্র প্রভূর দাস অন্যসবাই মানুষের।”
স্রষ্টার সন্নিকটে ঋন
যাঁরা তাঁকে প্রথম দেখায় চিনলো না তাঁরাও চিনতে ভুল করলোনা। সবাই জড়ো হয়ে বসলেন। পূবের আন্তরীক্ষে তখন একফালি চাঁদ দেখা গেলো।
চাঁদের আলোতে কৃষ্ণ রাত তখন উঠন্ত যৌবনা যুবতী!
তিনি তাঁর সুহৃদ্বরদের দিকে তাকালেন। তখন তাঁর চোখ থেকে টপটপ করে অশ্রুধারা গড়িয়ে গড়িয়ে মাটি ভিজছিলো প্রায়!
তিনি চাঁদফালির দিকে তাকিয়ে বললেন,
“সুহৃদ্বর আমার! তোমরা তাঁর কোন নিয়মত কে অস্বীকার করিবে?
পৃথিবীর মাধ্যিখানে তুমি এমন কিছু ঋন নিয়া জন্মাইয়াছো যাহা কস্মিনকালেও শুধিতে পারিবেনা।
আর এই যে ঋনসমূহ শোধ করিতে চাহিলে তোমাকে ধরিয়া নেওয়া হইবে তুমি পথভ্রষ্টা।
স্রষ্টার কাছে যে ঋন রহিয়াছে তোমার তাহা শোধ করিবার আকাঙ্খা হইলো বোকামি।
এই তালিকাতে আরো কিছু রহিয়াছে সুহৃৎ।
মাতৃঋন তন্মধ্যে একটি।
এক যুবক দাঁড়ালো। যুকটির রয়েছে ঘন দাড়ি, এলো কেশ আর তীক্ষ্ণ চোখ।
এ চোখ এমন যে প্রশ্নবানে জর্জরিত করে যে কাউকে মেরে ফেলতে পারে।
দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলো
“জনাব তাহলে মানুষ জন্মগত ভাবেই ঋনী বলছেন?
তাহলে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব কোথায়? মানুষ কী তবে নিকৃষ্ট নহে?
যেমন ইদুর, ছুঁচো আর রয়েছে বিভিন্ন কীট?”
সে মুচকি হাসলো আর যুবক কে পাশে বসিয়ে হাতটা রাখলো তাঁর পিঠে গভীর মায়ায়।
“সুহৃৎ! এই যে তুমি প্রশ্ন করিলে ইহাই তোমার শ্রেষ্ঠত্ব। মনে রাখিয়ো, মানুষ ছাড়া অন্যকেউ প্রশ্ন করিতে পারেনা তাই তাহারা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব নহে।
তুমি কী?
কিভাবে আসিলে?
কেন আসিলে?
তোমার দ্বার কী সম্ভব? এসকল প্রশ্ন করা আর ইহার সমাধান খুঁজিতে যাওয়াই তোমার শ্রেষ্ঠত্ব।
মনে রাখিও তুমি মনুষ্য, তোমার মাঝে নিজেকে খুঁজিয়া পাবার আকাঙ্খা যতটুকু রহিয়াছে অতটুকুই তুমি খাঁটি মনুষ্য।
সুহৃৎ আমার! পিতার শ্রেষ্ঠত্ব মৃত্যুদিন পুত্র কে বলিয়া যাওয়া ‘বাছা সুখে থেকো!’
মায়ের শ্রেষ্ঠত্ব দুগ্ধদানে নহে শুধু। তোমার ষোলো-কুড়িটি বছর গড়িয়া দেওয়াই মা।
একজন পুত্র তাঁহার পিতার চাইয়া তাহার মাতা কে বেশি ভালোবাসতে শেখে এটাই তাহার শ্রেষ্ঠত্ব! ”
যুবক তাঁর পায়ে লুটে পরার পূর্বেই সে তাঁকে বুকে তুলে নিয়ে ললাটে চুমু খেলো আর সে চায়ের টাকা পরিশোধ করে হাটা ধরলো অন্ধকারের গলিতে।
এক হাতে তালিয়া বাজেনা
সামনে একটি উপসানলয় তাঁকে আকৃষ্ট করলো। তিনি উপসানালয়ে তাঁর কাঁধের ব্যাগটি রাখলেন। উপসানালয়ে যাঁরা ছিলেন তাঁরা সবাই’ই চিনতে পারলো তাঁকে। উপসানালয়ের সবাই তাঁকে ঘিরে ধরলো এবং প্রশ্নে জর্জরিত করতে থাকলো।
তাঁকে এক বৃদ্ধ বললেন, আপনি আমাদের ঝগড়াবিবাদ সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বললেন,
একহাতে কভূ তালিয়া বাজে না। আবার একটি কারণ হইতে একটি ফাসাদের ও সৃষ্টি নহে।
ঘটানা সমূহের সৃষ্টি হইতে হইতে একখানা ফাসাদের সৃষ্টি হয়।
সুহৃত আমার!
মনে রাখিও, যে ব্যক্তি খুন হন তাহার মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী থাকে।
আর ফাসাদের মূল কারণ হইলো ক্রোধ।
ক্রোধ তোমাদিগকে অন্ধ করিয়া দেয়। সে সর্বদা রুধির ধারা দেখিতে ভালোবাসে।
তোমাদিগকার ভেতরের পশুত্ব আত্মাকে সে সম্মুখ হইতে প্রবঞ্চনা দেয়। ক্রোধ হইলো ধূর্ত প্রবঞ্চক।
অতএব ক্রোধকে সংবরণ করিতে হইবে। যদিও ক্রোধ সংবরণ মনুষ্যের এখতিয়ারে নহে।
ইল্যুসন/ আবেগ
এক কবি উঠে বল্লেন, মহোদয় আপনি আমাদের আবেগ সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বললেন,
সুহৃত আমার! আবেগ হইলো তোমার মধ্যিকার জন্মানো এক প্রকার মানসিক বিষ।
যাহা ক্রমশই তোমার রক্তে বহিতে থাকে এবং, তোমাকে শোষন করিতে থাকে।
সে তোমাকে তৈয়ার করে তাহার গোলামরূপে। যার যত আবেগ সে তত মানসিক ভাবে দাস হইয়া থাকে।
আবেগ হইলো একখানা তাজা খুন। ইল্যুসন হইলো একখানা পচা শামুক।
যাহাতে কাটলে হৃদয়, অনুভূতি পচিয়া যায়!
তোমরা আবেগ বশত কত কী করিয়া ফেলো নিজেই জানো না।
সে তোমাকে তাহার বল দ্বারা তাহার কার্য সম্পাদন করাইয়া থাকে।
তোমাদিগকার মধ্যে লালিত পালিত আবেগ তোমাদিগকার চেতনা ক্রমশ খাইয়া ফেলিতে থাকে যেমন একটি ঘুনপোকা একটি কাঠকে খাইয়া ফেলে।
খবরদার!
তোমরা আবেগ কে প্রশ্রয় দিওনা। যদি আবেগকে প্রশ্রয় দিতে থাকো তবে তুমি কার্য সাধন করিতে পারিবেনা।
আর যাহাদের আবেগ নাই তাহারা যেন নিষ্ঠুর ও না হয়।
আর তোমাদের সন্তানদের আবেগহীন করিবার শিক্ষা দেওয়ার দরকার নাই।
আগে নিজে আবেগহীন হও তাহা হইলে তোমাদের ঔরসে যাহারা আসিবে তাহারাও আবেগহীন হইয়া জন্মাইবে।
তুমি চারদিকে তাকাইয়া দেখো তোমার জন্য আবেগে গদগদ হওয়া কাহাকে কী দেখিতে পাইতেছো?
না নেই যাহা দেখিতে পাইতেছো তাহা সকলই মায়া।
অথচ এই মায়ার জন্য তোমরা কত কি না কর!
প্রতিটা মূহুর্তে তুমি আবেগকে মায়া রূপে প্রশ্রয় দিতেছো।
আর ডেকে আনছো নিজের ধ্বংস কে!
এই রূপ তুমি যদি আবেগ কে প্রশ্রয় দিতেই থাকো তাহলে মনে রেখো তোমার ধ্বংস অনিবার্য!
বিশালতা
একজন ইঞ্জিনিয়ার বললো, আপনি আমাকে বিশালতা সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বল্লেন, বিশালতা হইতেছে যাহা অসীম নহে আবার সংকীর্ণ ও নহে। বিশালতার নির্দিষ্টতা রহিয়াছে।
আর এর নির্দিষ্টতা পরিমাপ করে তোমার দুচোখ।
তোমার চোখে যাহা বিশাল তোমার থেকে যাহার উচ্চতা বেশি তাহার কাছে উহা বিশাল না ও হইতে পারে।
সুহৃত! তবে আমি অনেক কে বলিতে শুনি তাহারা আবেগের বশবর্তী হইয়া আন্তরীক্ষ কে বিশাল বলিয়া ফেলে।
আন্তরীক্ষ কে কভূ বিশাল বলিও না। আন্তরীক্ষের বিশালতা নেই। বিশালতা শুধুমাত্র তাহার’ই রহিয়াছে যাহার গন্তব্য রহিয়াছে।
আন্তরীক্ষ হইলো মায়া। তাহার কোন পরিমাপ করা যায় না। তাহার শেষ আর শুরু কোথায় উহা স্রষ্টা বৈ কারো জানা নেই।
যাহার শুরুই তুমি দেখিলে না তাহা বিশাল না অস্তিত্বহীন তাহা তুমি জানিবে কেমনে?
মনের ও বিশালতা নেই, মন হইলো সংকীর্ণ। যাহাকে তোমরা বিশাল মনের বলিয়া থাকো তাহার মন সংকীর্ণ থাকে সর্বদা অপরাধবোধ নিয়া।
মৃত্যু
এরপর একজন কবরের পাহারাদার বললেন, জনাব আপনি আমাদের মৃত্যু সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বলিলেন, মৃত্যু এক পীড়াদায়ক উপঢৌকন! পৃথীবিতে এই একটি মাত্রই উপঢৌকন রহিয়াছে যাহা কেউই গ্রহণ করিতে চায় না।
অথচ শেষ পরিণতি তাহার ইহা গ্রহণ করিতে হয়।
মৃত্যুর বর্ণনা তোমাদিগকে বলি,
মনে কর তোমার সারা শরীরের চামড়া ছাড়ানো হইলো। এবং উহার উপর নুন ছিটানো হইলো।
মৃত্যুর মতোই আরো কষ্টকর হইলো মনে না হইয়া মুখে শোক প্রকাশ।
জোড়ে কাঁদা এক প্রকার আদিখ্যেতা।
তোমরা চিৎকার না করিয়া শোক প্রকাশ করিবার চেষ্টা করিবে।
যদি শত চেষ্টার পর ও তোমরা চিৎকার দিয়া কান্না বাহির হইয়া আসে তাহা হইলে সেই কান্না হলো হৃদয়ের কান্না।
ও কান্না তোমার থামাইবার দরকার নাই। তুমি কাঁদিতেই থাকো কাঁদিতেই থাকো।
শোক করিলে আত্মা ক্রোন্দন করে, আত্মার খোরাক কমতে থাকে এই ভেবে যে
“আহা এই মুর্দার প্রতি অাফসোস যে তিনি পৃথিবীর আর দুটো উন্নতি দেখিতে পাইলেন না!
কেননা আফসোস করা এক নিম্নস্তরের।
তুমি যাহা করিয়াছো তো করিয়াছোই, তাহাতে ঠিক বেঠিক হইতেই পারে তাই বলিয়া তুমি বারবার আফসোস করিলে তোমাকে ঐ কাজ পীড়া দিতে থাকিবে ক্ষণে ক্ষণে।
পিতা ও পুত্র যদি কোন হেতুতে এক সঙ্গে মরিয়া যায় তবে তাহাদের লাশ একত্রে লোকজন কে দেখাইওনা!
যেকোন একজনের লাশ দেখাও।
তবে পিতার লাশ দেখানোকে আমি সুপারিশ করি তোমাদিগকার কাছে।
যদি পুত্রের লাশ দেখাও তবে তাহারা আফসোস করিবে আর মৃত্যুকে ভর্ৎস্যনা করিবে।
যদি পিতাপুত্রের লাশ একত্রে দেখাও তবে তাহাদের আফসোসে পিতাপুত্রের আত্মার ও মৃত্যু ঘটিবে। সুহৃদবর!
মায়ের লাশ পুত্রকে, পুত্রের লাশ মা কে দেখিতে দাও যাহাতে অল্পেই তাহাদের বুকের পাথর নামিয়া যাইতে পারে।
পুত্র বা মা কাউকেই কান্না করিতে নিষেধ করিও না! মনে রাখবে এ কান্না প্রাপ্য কান্না একে অপরের প্রতি!
যে স্বহত্যা করিতে চায় তাহাকে বাঁধা দাও কেননা স্বহত্যা কাপুরুষতা না হইলেও নিজের প্রতি জুলম!
তবে তাকে কান্না করিতে দিও। কান্না জরা ধ্বংস করে।
আত্মা
এরপর এক দরবেশ বললেন, আপনি আমাকে আত্মা সম্বন্ধে বলুন।
একটা মানুষ যখন দুনিয়ার উপর তাঁর কর্তৃত্ব ছাড়িয়া চলিয়া যান তবে সে লাশ বলিয়া গণ্য হয়।
ব্যক্তির মৃত্যু হয় তবে আত্মা এহকাল-পরকাল উভয় কালেই জীবিত। দুনিয়ায় দেহের কর্তৃত্ব বিরাজকালীন আত্মা হয় নিষ্কর্মা।
আর যখন মানুষ লাশ হয় তখন তাঁর আত্মা সচল হয়, আত্মার অনুভূতি জন্মে।
আর সে আত্মা সুখ-কষ্ট উপলব্ধি করে। আত্মার ও আধা মৃত্যু হয়।
কখন বুঝবে তোমার আত্মার আধমরা হইয়াছে?যখন দেখিবে,
পৃথিবীতে তুমি পাওয়া সবচে বড় কষ্টেও তোমার চোখে জল আসছেনা।