শুভ জন্মদিন

 

শুভ জন্মদিন! 

আজকে আমরা কি হলো যে পাখি

চোখ বুজলেই তোমার দু ঠোঁট দেখি !

হৃদয় কেঁপে বাজছে সুখের বীন—

আজকে আকাশ বলছে কেঁপে তোমার জন্মদিন !


যেন রংধনুতে মেলে দিয়েছো পাখা

উগ্রভাবে বইছে পূবের হাওয়া —

আমি শোকর করি খোদার কাছে আজ

লাভ হয়েছে তোমায় কাছে পাওয়া ।


তুমি যেন তীব্র বেগের ঘোড়া ;

বেলকনিতে রোজ রেখে যাও চোখ—

আমার কেমন টান লেগে যায় রথে

ধরফরিয়ে কেঁপে কেঁপে যায় বুক !


আমার কাছে পবিত্রতা তোমার দুটো ঠোঁট

কাটখোট্টা ঘরের কোণে বসে —

ভাবছি তোমার উরুর মাঝের তিল —

যাচ্ছি কেবল আদর জালে ফেঁসে! 


নাভীকূপের ভেতর থেকে উঠে 

কামপ্রেমেতে অস্বীকৃত যুবক —

ভালোবাসার মানেই বোঝে এই—

দুটো মানুষ একে-আরেকের ধ্রুবক ।


এমন যদি হতো বলো এখন —

 বেঁচে আমরা কেবল এই  দুজন

আমার ঠোঁটে তোমার দুটো ঠোঁট

আমরা একে অপরের অক্সিজেন ৷ 


লিডার ০১

 

লিডার ০১

আমি তাকিয়ে দেখেছি চিৎকার করেকা রা যেন ডাক দেয়

ওরা নিজের হাতে নিজের পিতার মগজ খুবলে খায়!

ওরা নিজের শিশ্নে নিজের বোনের সম্ভ্রম করে হানি

ঐ লুটেরার দল নিজের ঘরেই চালায় রাহাজানি!


ধর্ষক ওরা কাপুরষ হয়; বিদ্যার নেই বালাই

ওরা লড়াইয়ের মাঠে ভুঁড়িফোড় করে খুন করে নিজভাই!


কেউকেউ তো বিশাল বড় স্বাধীনতার স্তাবক —

আজো পলিটিকসের ঝান্ডাধারী সব শালা প্রতারক।


কেউ আমৃত্যু এই পৃথিবীশালায় মদের বোতল হাতে;

কেউ কাঁপে বসে ভিষণ শীতে কারো সংগ্রাম খাটে!


কারো কারো সাথী সুন্দরী আর কারো সাথী খাটে পতিতা—

কেউ প্রেমিকা রাখে বউয়ের পাশে— বেশ্যার ব্রা'তে সততা।


আমরা শালা কবিতা লিখে ছিড়ে নিয়ে যাব তাগো কান;

আজি বসন্তে দরাজ কণ্ঠে — ক্ষাণকি পারার গান।





আতাকাঠী | সজল আহমেদ এর কবিতা

 আতাকাঠী 

আমার বিরহ আমি নিজেই বুনেছি তা

জানো ভালো করে তুমি আমার গাঁওয়ের মাটি,

আমার শব্দ আমি তোমার পিঠেতে রাখি 

ভাত খাই, গান গাই, ঘুমের বাতাস মাখি

আমার হৃদয় আমি শান্ত করেছি বুকে

 বিছায়ে তোমার বোনা হোগল পাটি।

ব্যক্তিগত কোন স্বর্গ আমার নাই, আবদ্ধ হইনি কোন হুরির প্রেমে

তবু স্বর্গ আমার প্রতীক্ষায় নত করে মাথা আছে আতাকাঠী গ্রামে। 

আমার বাল্য তোমার বুকে, গীত গাওয়া সকালের শীতের কাঁপন

তোমার উদগ্র স্তন চিড়ে আমার অপক্ক যৌবনের বীজ বপন।

তুমি যাই হও আবদ্ধ চির আমি ঋনের প্রেমে

আমার স্বর্গ পরে আছে বুকের কপাট খুলে আতাকাঠী গ্রামে।




আতাকাঠী — ২

খোয়াবে আমি দেখেছি আমার গ্রামে

ছায়ার পেছনে হাঁটে ডাহুক—চড়ুই 

যতটা স্বপ্ন আমি তৈরী করেছি ধানে

গাছে হাসে পেকে যাওয়া ‘আপেল বড়ই’


পায়লার ফুলেফুলে মৌমাছি ওড়ে

মধুর পরিস্রাবণ ভাদ্রের তালে

মহুয়ার রসে কারো মাথা গেলে ঘুরে

নেশাতুর মাছ ঘোরে খেজুরার খালে


যায় জলে ভেসে যায় নারকেল পিঠা

রসের হাঁড়িতে হাসে বাদুড়ের মুখ

সমস্ত পোকারা রসের হাঁড়িতে সাঁটা

মরেও তৃষ্ণা মেটানো প্রকৃত সুখ


আমি জানি আজানের পরের কথা

শীতের রাতে চাদরে মোড়ানো বাবা

দূরন্ত উমে হাসে মায়ের বানানো কাঁথা

এক ডালে দুলে হাসে শিশিরে জবা। 


কেউ কি মনে রেখেছো সেসব স্মৃতি —

যাত্রায় জাদু কোমড়ে উমা বৌদি?

পালাগান, থিয়েটারে রঙের বাতি?

আজীবন বয়ে চলা পায়রা নদী?





আতাকাঠী -৩

আমাকে যত অকৃতজ্ঞ ভাবোনা কেন

আমি কৃতজ্ঞ হই মায়ের আঁচলে

যে গ্রামে আমি সব স্বপ্ন দেখেছি জানো

ঘুম ভেঙে উঠেছি খুব সকালে


সে গ্রামে খুঁজেছি মায়ের আঁচল

কোথাও পাইনি তা কাক ভোরে

খুঁজেছি সে আঁচল উঠান দড়িতে

মাঠে-ময়দানে আর খালের গভীরে


মক্তবে কোরানের সেসব সূরায়

টান দিয়েছিলো ভোরে মাহদী ইমাম

আমিও সেসব সূরার শেষ পারায়—

খুঁজেছি টানে টানে আমার পয়গাম 


কত যে খোঁজার পরেও নাবালক দ্বীন

ফিরে ফিরে গিয়েছি মায়ের কবরে 

জানো, এই আঁচলটা আমি পেতেই চাই

আবার উঠবো জেগে ভেবে কাকভোরে।



আতাকাঠী ৪

মেঠোপথ সদ্ভাবে চলে গেছে দূরে
এখানে কোকিল ডাকে আজানের সুরে,
এখানে মাতাল পাখি মহুয়ার ডালে
ডাকে প্রিয়তম বউ মুগ্ধ গলে।
কুয়াশারা উঁকি দেয় শীতের সকালে
সোনার দুপুরে সবে ভাতঘুমে গেলে
দিবাকর স্নানে যায় শেষ বিকেলে।

শরতে ঘাসের বাঁশি সুমধুর সুর
সুরেসুরে মোহিত সরণির দূর...
কবিতা শানিত হয় তীব্র বর্ষণে
বরষা নৃত্য করে বাড়ির উঠোনে;
ব্যাঙের ঘ্যাঙরঘ্যাঙে সারা পারা মাত
মোহের রজনী যেন বরষার রাত!

আমনের ক্ষেতে সজীব কৃষকের প্রাণ
তীব্র ধোঁয়ার তেজে ছড়ায় পিঠার ঘ্রাণ।
নতুন উদ্যমে বেরোয় আমের মুকুল
মৌমাছি সঙ্গমে আন্দোলিত বকুল
পাতা-ফুলে অর্ধমৃত বিষ পিঁপীড়া
তবু মায়া বয়ে চলে আকন্দ ফুলেরা
প্রকাশ্য কালনাগিনী কালো ধুতুরা
মনোহর তবু দেখো গাছেগাছে এরা!

গাবগাছে ঝুলে থাকে মৌমাছি চাক
পানা জলে খেলা করে পাতিহাঁস ঝাঁক।
ডালে বসে 'কা' ডাকে কালো পাতিকাক,
বিপন্ন বৃষ ছাড়ে গগনবিদারী ডাক!

তাল গাছে খেলা করে বাবুইয়ের দল
টিয়া পাখি ঠোঁটে কাটে কামরাঙা ফল
টিয়াদের ঠোঁটে আসে নতুন সকাল
খালেবিলে নৃত্যে মাছেদের দল।
ঘুঘু ডাকে দ্বিপ্রহর হিজল গাছে
নীরস শিমুল তুলা বাতাসে ভাসে।

আজানে মুখরিত উষসী বেলা
নতজানু গাছেরা বাজায় বেহালা
রাতের বৃহৎ চাঁদ স্মরি মধুমালা
নির্মেঘ গগনে তারার খেলা।
এখানে যা দ্যাখো মধু, তুমি আমার গ্রাম
গ্রাম আমার নিজ মায়ের আরেকটি নাম।

4/16/19
পরিমার্জনঃ  ৮/৬/২১

আব্বা কেমন আছে? | সজল আহমেদ এর কবিতা



আব্বা কেমন আছে?

সজল আহমেদ 

শীতের রাতের শীতল মাটি

প্রশ্ন তোমার কাছে

এমন শীতে তোমার ঘরে

আব্বা কেমন আছে?


কেমন করে ঘুমান তিনি

তোমার ঠান্ডা ঘরে?

বলতে পারো এমন শীতে

আব্বা কেমন করে?


গরম পোশাক, গরম চাদর

বোঝাই ট্রাংকটা ভরে—

হয়তো এখন আব্বা আমার

শীতে ঠকঠক করে! 


কি করি আর কি করে তা

আব্বাটারে পাঠাই—

আমার কাছে আব্বার দেশের

ঠিকানা'ই তো নাই!


না আছে তাঁর মোবাইল নাম্বার

না জানি তার ফ্যাক্স

বলতে পারো এসব দিতে

লাগবে কত ট্যাক্স?


ঠকঠক করে কাঁপছে উঠোন

গাছগুলো তার সাথে—

আব্বাটা যে কেমন আছে

এমন শীতের রাতে!


ঐ দেখ ভাই হলদে পাখি

কাঁপছে শীতে গাছে—

ওঁরই কাছে জিগাইগে চল;

আব্বা কেমন আছে!

Quote By Sajal Ahmed

 


 People are like that; Thinking of himself as a teenager, he spent a few decades!