Showing posts with label কবিতা. Show all posts
Showing posts with label কবিতা. Show all posts

শুভ জন্মদিন

 

শুভ জন্মদিন! 

আজকে আমরা কি হলো যে পাখি

চোখ বুজলেই তোমার দু ঠোঁট দেখি !

হৃদয় কেঁপে বাজছে সুখের বীন—

আজকে আকাশ বলছে কেঁপে তোমার জন্মদিন !


যেন রংধনুতে মেলে দিয়েছো পাখা

উগ্রভাবে বইছে পূবের হাওয়া —

আমি শোকর করি খোদার কাছে আজ

লাভ হয়েছে তোমায় কাছে পাওয়া ।


তুমি যেন তীব্র বেগের ঘোড়া ;

বেলকনিতে রোজ রেখে যাও চোখ—

আমার কেমন টান লেগে যায় রথে

ধরফরিয়ে কেঁপে কেঁপে যায় বুক !


আমার কাছে পবিত্রতা তোমার দুটো ঠোঁট

কাটখোট্টা ঘরের কোণে বসে —

ভাবছি তোমার উরুর মাঝের তিল —

যাচ্ছি কেবল আদর জালে ফেঁসে! 


নাভীকূপের ভেতর থেকে উঠে 

কামপ্রেমেতে অস্বীকৃত যুবক —

ভালোবাসার মানেই বোঝে এই—

দুটো মানুষ একে-আরেকের ধ্রুবক ।


এমন যদি হতো বলো এখন —

 বেঁচে আমরা কেবল এই  দুজন

আমার ঠোঁটে তোমার দুটো ঠোঁট

আমরা একে অপরের অক্সিজেন ৷ 


লিডার ০১

 

লিডার ০১

আমি তাকিয়ে দেখেছি চিৎকার করেকা রা যেন ডাক দেয়

ওরা নিজের হাতে নিজের পিতার মগজ খুবলে খায়!

ওরা নিজের শিশ্নে নিজের বোনের সম্ভ্রম করে হানি

ঐ লুটেরার দল নিজের ঘরেই চালায় রাহাজানি!


ধর্ষক ওরা কাপুরষ হয়; বিদ্যার নেই বালাই

ওরা লড়াইয়ের মাঠে ভুঁড়িফোড় করে খুন করে নিজভাই!


কেউকেউ তো বিশাল বড় স্বাধীনতার স্তাবক —

আজো পলিটিকসের ঝান্ডাধারী সব শালা প্রতারক।


কেউ আমৃত্যু এই পৃথিবীশালায় মদের বোতল হাতে;

কেউ কাঁপে বসে ভিষণ শীতে কারো সংগ্রাম খাটে!


কারো কারো সাথী সুন্দরী আর কারো সাথী খাটে পতিতা—

কেউ প্রেমিকা রাখে বউয়ের পাশে— বেশ্যার ব্রা'তে সততা।


আমরা শালা কবিতা লিখে ছিড়ে নিয়ে যাব তাগো কান;

আজি বসন্তে দরাজ কণ্ঠে — ক্ষাণকি পারার গান।





আতাকাঠী | সজল আহমেদ এর কবিতা

 আতাকাঠী 

আমার বিরহ আমি নিজেই বুনেছি তা

জানো ভালো করে তুমি আমার গাঁওয়ের মাটি,

আমার শব্দ আমি তোমার পিঠেতে রাখি 

ভাত খাই, গান গাই, ঘুমের বাতাস মাখি

আমার হৃদয় আমি শান্ত করেছি বুকে

 বিছায়ে তোমার বোনা হোগল পাটি।

ব্যক্তিগত কোন স্বর্গ আমার নাই, আবদ্ধ হইনি কোন হুরির প্রেমে

তবু স্বর্গ আমার প্রতীক্ষায় নত করে মাথা আছে আতাকাঠী গ্রামে। 

আমার বাল্য তোমার বুকে, গীত গাওয়া সকালের শীতের কাঁপন

তোমার উদগ্র স্তন চিড়ে আমার অপক্ক যৌবনের বীজ বপন।

তুমি যাই হও আবদ্ধ চির আমি ঋনের প্রেমে

আমার স্বর্গ পরে আছে বুকের কপাট খুলে আতাকাঠী গ্রামে।




আতাকাঠী — ২

খোয়াবে আমি দেখেছি আমার গ্রামে

ছায়ার পেছনে হাঁটে ডাহুক—চড়ুই 

যতটা স্বপ্ন আমি তৈরী করেছি ধানে

গাছে হাসে পেকে যাওয়া ‘আপেল বড়ই’


পায়লার ফুলেফুলে মৌমাছি ওড়ে

মধুর পরিস্রাবণ ভাদ্রের তালে

মহুয়ার রসে কারো মাথা গেলে ঘুরে

নেশাতুর মাছ ঘোরে খেজুরার খালে


যায় জলে ভেসে যায় নারকেল পিঠা

রসের হাঁড়িতে হাসে বাদুড়ের মুখ

সমস্ত পোকারা রসের হাঁড়িতে সাঁটা

মরেও তৃষ্ণা মেটানো প্রকৃত সুখ


আমি জানি আজানের পরের কথা

শীতের রাতে চাদরে মোড়ানো বাবা

দূরন্ত উমে হাসে মায়ের বানানো কাঁথা

এক ডালে দুলে হাসে শিশিরে জবা। 


কেউ কি মনে রেখেছো সেসব স্মৃতি —

যাত্রায় জাদু কোমড়ে উমা বৌদি?

পালাগান, থিয়েটারে রঙের বাতি?

আজীবন বয়ে চলা পায়রা নদী?





আতাকাঠী -৩

আমাকে যত অকৃতজ্ঞ ভাবোনা কেন

আমি কৃতজ্ঞ হই মায়ের আঁচলে

যে গ্রামে আমি সব স্বপ্ন দেখেছি জানো

ঘুম ভেঙে উঠেছি খুব সকালে


সে গ্রামে খুঁজেছি মায়ের আঁচল

কোথাও পাইনি তা কাক ভোরে

খুঁজেছি সে আঁচল উঠান দড়িতে

মাঠে-ময়দানে আর খালের গভীরে


মক্তবে কোরানের সেসব সূরায়

টান দিয়েছিলো ভোরে মাহদী ইমাম

আমিও সেসব সূরার শেষ পারায়—

খুঁজেছি টানে টানে আমার পয়গাম 


কত যে খোঁজার পরেও নাবালক দ্বীন

ফিরে ফিরে গিয়েছি মায়ের কবরে 

জানো, এই আঁচলটা আমি পেতেই চাই

আবার উঠবো জেগে ভেবে কাকভোরে।



আতাকাঠী ৪

মেঠোপথ সদ্ভাবে চলে গেছে দূরে
এখানে কোকিল ডাকে আজানের সুরে,
এখানে মাতাল পাখি মহুয়ার ডালে
ডাকে প্রিয়তম বউ মুগ্ধ গলে।
কুয়াশারা উঁকি দেয় শীতের সকালে
সোনার দুপুরে সবে ভাতঘুমে গেলে
দিবাকর স্নানে যায় শেষ বিকেলে।

শরতে ঘাসের বাঁশি সুমধুর সুর
সুরেসুরে মোহিত সরণির দূর...
কবিতা শানিত হয় তীব্র বর্ষণে
বরষা নৃত্য করে বাড়ির উঠোনে;
ব্যাঙের ঘ্যাঙরঘ্যাঙে সারা পারা মাত
মোহের রজনী যেন বরষার রাত!

আমনের ক্ষেতে সজীব কৃষকের প্রাণ
তীব্র ধোঁয়ার তেজে ছড়ায় পিঠার ঘ্রাণ।
নতুন উদ্যমে বেরোয় আমের মুকুল
মৌমাছি সঙ্গমে আন্দোলিত বকুল
পাতা-ফুলে অর্ধমৃত বিষ পিঁপীড়া
তবু মায়া বয়ে চলে আকন্দ ফুলেরা
প্রকাশ্য কালনাগিনী কালো ধুতুরা
মনোহর তবু দেখো গাছেগাছে এরা!

গাবগাছে ঝুলে থাকে মৌমাছি চাক
পানা জলে খেলা করে পাতিহাঁস ঝাঁক।
ডালে বসে 'কা' ডাকে কালো পাতিকাক,
বিপন্ন বৃষ ছাড়ে গগনবিদারী ডাক!

তাল গাছে খেলা করে বাবুইয়ের দল
টিয়া পাখি ঠোঁটে কাটে কামরাঙা ফল
টিয়াদের ঠোঁটে আসে নতুন সকাল
খালেবিলে নৃত্যে মাছেদের দল।
ঘুঘু ডাকে দ্বিপ্রহর হিজল গাছে
নীরস শিমুল তুলা বাতাসে ভাসে।

আজানে মুখরিত উষসী বেলা
নতজানু গাছেরা বাজায় বেহালা
রাতের বৃহৎ চাঁদ স্মরি মধুমালা
নির্মেঘ গগনে তারার খেলা।
এখানে যা দ্যাখো মধু, তুমি আমার গ্রাম
গ্রাম আমার নিজ মায়ের আরেকটি নাম।

4/16/19
পরিমার্জনঃ  ৮/৬/২১

আব্বা কেমন আছে? | সজল আহমেদ এর কবিতা



আব্বা কেমন আছে?

সজল আহমেদ 

শীতের রাতের শীতল মাটি

প্রশ্ন তোমার কাছে

এমন শীতে তোমার ঘরে

আব্বা কেমন আছে?


কেমন করে ঘুমান তিনি

তোমার ঠান্ডা ঘরে?

বলতে পারো এমন শীতে

আব্বা কেমন করে?


গরম পোশাক, গরম চাদর

বোঝাই ট্রাংকটা ভরে—

হয়তো এখন আব্বা আমার

শীতে ঠকঠক করে! 


কি করি আর কি করে তা

আব্বাটারে পাঠাই—

আমার কাছে আব্বার দেশের

ঠিকানা'ই তো নাই!


না আছে তাঁর মোবাইল নাম্বার

না জানি তার ফ্যাক্স

বলতে পারো এসব দিতে

লাগবে কত ট্যাক্স?


ঠকঠক করে কাঁপছে উঠোন

গাছগুলো তার সাথে—

আব্বাটা যে কেমন আছে

এমন শীতের রাতে!


ঐ দেখ ভাই হলদে পাখি

কাঁপছে শীতে গাছে—

ওঁরই কাছে জিগাইগে চল;

আব্বা কেমন আছে!

সজল আহমেদ এর কবিতাঃ ২

সজল আহমেদ এর কবিতাঃ ২

ইল্যুশন

মিথ্যাকে চাপা দিতে আমি আরেকটা মিথ্যা বল্লাম।
এরপর সে পাপগুলো
লিখে ফেল্ল ইঁদুর
পাপ যেখানে উৎপন্ন হয় মিথ্যেও সেখানে
যে পথে খায় সেপথে পায়ুর  বাঁদুর।
জন্মান্তরবাদ একপাশে রেখে
উঠে যায় চোখে চাঁদ
আমি চলে যাই বহুদূর!
মানুষ মূর্খ!
সকাল হবেনা তাঁরা জানেনা
বিভ্রান্তির দেয়াল ভাঙো তুমি কাঁটা,
ঘড়ির সাথে তোমার সমুস্যা কী?
সময়ের?
সেকেন্ড?
মিনিট?
বা ঘন্টার?
অথচ সময়ের অভাবে
আমাকে খেতে চায় ছিয়াত্তরটি বাঘ
নব্বুই প্যাঁচের সমাজ
ছয়শ রাখাল যাদের কোন ভবিষ্যৎ ছিলোনা বা নেই
আমাকে খেতে চায় প্রেমিকা!
নিজেকে খেতে খেতে এক টুকরো মাংস তোমাকেও সাধি-
খাবা একপিস?
প্রেমিকার অম্বল, রুচিহীনতার অসুখ।
অতএব নিজ মাংস চিবুতে চিবুতে বলিষ্ঠ কণ্ঠনালী চিপে ধরে বলি-
মিথ্যা যেখানে স্তম্ভ গাঁঢ়ে
নিজহাতে ভিত্তি গড়ে তাঁর
যেখানে ছলনা নিত্ত নৈমিত্তিক ;
সেখানে একটা মিথ্যার পিঠে, অপর দুইটি ঢাকতে আমার সমুস্যা কোথায় মাই লর্ড?
#সজল আহমেদ

সজল আহমেদ এর কবিতা

সজল আহমেদ এর কবিতা

আমাকে দিতে পারো

আমি চাইনা বেহেশত কোন
চাইনা সুরাহ্ কোন পাত্রভরা
আমি চাইনা কিছু কখনো
চাইনা আকাশ ভরা তারা।
আমাকে দিতে পারো তুমি-
বেহেশত আদলে তাঁর চুলের ঘ্রাণ
মায়ের হাতে ধোঁয়াওঠা পিঠাপুলি
চাঁদ ওঠা রাতে গাওয়া পুরোনো গান।
এখনো যা কানে বাজে, হরদম প্রাণে বাজে
এখনো যা চোখে ভাসে, বারেবারে ঘুমে আসে
তারাভরা আকাশের সাঁজে, চাঁদের গোধূলি মেখে
কুয়াশার ভাজে গোঁজা আমার সে গ্রাম।

সেসব কল্পনা যা আজ হারিয়ে গেছে
যেসব স্মৃতিরা ডুবে কিবা গেছে উবে 
সেসব পাখিদের যারা আর ফিরেনি
একাকী ছানারা যার মরেছে নীড়ে,
আমাকে দিতে পারো সেসব ফিরিয়ে।

আমার ছেলেবেলার মায়ের তপ্ত শাসন
মরিচের কড়াঝালে নুনপোড়া আমের বাসন।
আরো দিতে পারো সোনালী সে ধান
মক্তবে খুব ভোরে সুরালো কোরাণ।
আউশের ফেন সাথে হলুদ মিশিয়ে
আঁচারের তেলে একবাটি মুড়ি মাখিয়ে।
#সজল আহমেদ

কবিতা: ভাঙা হৃদয়

কবিতা: ভাঙা হৃদয়

ভাঙা হৃদয়

- সজল আহমেদ

আমি তপ্ত তেলে সেদ্ধ হওয়া মাছ
বজ্রপাতে বজ্রাহত গাছ
তপ্ত রোদে ফুটতে থাকা বালি
ক্ষুধা পেটের মৃতপ্রায় কাঙালি।

তোমরা আমায় ভাবছো কে কী, কে তা জানে
খালি রোডে খুঁজি জীবনের মানে
হাঁটছি আমি একলা একা অফুরন্ত রোড
আহার ছাড়া নিদ্রা ছাড়া জলহীন শুকনো ঠোঁট।

শুকনো ঠোঁট ভিজাতে আমি চাইনি কারো চুম
চোখ জ্বালা হয় পুড়ে গেছে কাঁচাপাকা ঘুম
এই যে এখানে তাকাও বুকে এটা আমার হৃদয়,
বাঁচতে হলে এই হৃদয় কে ভালো রাখতে হয়।

খুব যে সফল ভালো থাকায় তাও না
আমার মধ্যে পুড়ে ধোয়া সকল বাসনা
মরে যাচ্ছি দূরে যাচ্ছি অনুভূতি নেই
আমি ছিলাম পূর্বে যিনি, বর্তমানেও সে'ই।

আতুড়ে নুন খাইয়ে আমায় মেরে ফেলতে চাও?
দূরে যাও.... যাও না দূরে আমি বোকা নও।
আমি ঝঞ্ঝা কাটিয়ে আসা একটা ভাঙা তরী,
আমায় ডোবাতে এসো না হা হা কোন আনাড়ী।

কে কতদূর ভালোবাসো আছে আমার জানা
শুনবো না ডাক আর ডেকো না সোনা
আমি মেটাল থিংগস বা শুকনো কাঠ
অনুভূতিহীন কপোট্রন বা আকাঠ।

এই এখানে প্রতিদিনই যাচ্ছি মারা
যাচ্ছি মারা নিত্যনতুন উপায় হারা
তোমরা প্লিজ একটু আমায় ভালো থাকতে দাও না;
তোমরা কেন এমন রূপের, পরের ভালো চাও না?
তোমরা কেন এমন করো; পরের ভালো সয় না?
তোমরা কেন মর্ষকামী, পর কে ভালো থাকতে দাও না?

কবিতা: গোল

কবিতা: গোল

গোল

- সজল আহমেদ

আপনি ভাবছেন পৃথিবীটা বস্তুত গোল
যেহেতু আপনি ঘুরছেন গোল হয়ে
আপনার মাথা গোল
আপনি বাজান বগল
আপনার মস্তিষ্কে গোলের দখল
ছাতা গোল
মাথা গোল
ঢোল গোল
বল গোল
আমরা পড়ি ভূগোল
গোল এবং গোল
আপনার বন্ধু হিসেবে আছে কিছু ছাগল
সর্বশেষ আপনি একটা পাগল।

সেই বিজ্ঞানী ভাবতেন, ঘুরে ফিরে আমরা আসি গোল হয়ে
এখানে শেষের যে পদচিহ্ন পরেছিলো মূলত গোলাকার একটি মাঠের শেষ সীমানায়
অতএব পৃথিবীতে যা কিছু দৃশ্যমান
পিরামিড হতে চায়ের দোকান
কমলা হতে আপেল
শাক হতে মাঠের ফসল
তামাক হতে জল
সকল
মূলত
গোল।
আমরা জানিনা
পৃথিবীর আকার মূলত গোল কিনা।
যেহেতু আমরা দেখিনি প্রত্যক্ষ ভাবে
কেমন এ পৃথিবী
সমান্তরাল নাকি উঁচুনিচু
ঢিপি
চ্যাপ্টা নাকি গোল
তবুও আমাদের মূলো গুজে মুখে, বিশ্বাস করানো হয়; পৃথিবী গোল।

কবিতা: হাসি

কবিতা: হাসি

হাসি

-সজল আহমেদ

১.
আজ হাসি, আমাকে দেখে তুমি হাসছো? 
খুব ক্রিটিকাল লাইফ। তোমরা বরটা। ঐ ভাউড়া *দাটা
দেখে আমার আফসুস হয়
দুঃখ পাই! 
তবুও হাসতেই হয় বাল
ও পেলো আমার কচকানো ময়দার তাল।
আর এতেই ভাউড়া *দাটা কত খুশি!
হাসি। 
তোমার বরটা একটা বুড়ো খাসি!
২.
আজ আমার বয়োস হচ্ছে বাইশ বচ্ছর ছয় মাস একুশ দিন।
আর তোমার বাইশ বচ্ছর দুই মাস ছাব্বিশ দিন ষোল ঘন্টা। 
কিন্তু তোমার বরের?
শুনেছি তোমার বাবার চেয়ে পাঁচ বছরের ছোট
হা হা তোমার বাবা কী বুদ্ধিমান দেখেছো?
যাতে তুমি বিয়ের পর বাবা ও স্বামীর আদর থেকে মাহরুম না হও সেজন্য বুড়োটা ওর মতো আরেকটা বুড়ো ধরে তোমাকে গছিয়ে দিয়েছে!
তোমার বিয়ের বয়স এই একবছর অতিক্রম হলো 
আর আমি এখনও মাস্টারবেট করি তোমার মেমরি।
আর ১০টি বছর পর।
আর মাত্র দশটি বছর পরে দেখা হলে লজ্জা পেওনা যেন! 
পুরুষরা সর্বদা পুরুষই থাকে
তথাপি মেয়েরা ক্রমশ হয়ে যায় কাকি বা মাসি।
৩.
হাসি।
হাসলে তো?
তোমার এ হাসির প্রতিশোধ আমি নিতে চাই! যেহেতু মানুষ মাত্রই প্রতিশোধপ্রবণ।
প্রাক্তন প্রেমিকার উপর প্রতিশোধ নিতে প্রেমিক এর পৈশাচিক আনন্দ।
তোমার এখন বর আছে তাই হাসছ
অথচ ভুলে গেছো 
আমিও কিন্তু খুব বিয়ে করতে জানি! আমারও বৌ হবে একদিন। তখন তোমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে খুব হেসে নেবো।

৪.
তোমার ননদ সুলতানাকে আমার নতুন করে ভালো লাগে 
ওর ও আমাকে; আমাকে ওর; আর আমার ওকে; দুজনার দুজনাকে ভালোলাগে।
আমরা উভয়ে একটা সিদ্ধান্তে এসেছি, আর সাত বছর পর আমরা একে অপরকে বিয়ে করে নেবো। 
তোমার বাসার পাশে একটা বাসা ভাড়া নেবো 
যাতে প্রতিদিন বৌ সহ তোমার সাথে দেখা হয়ে যায়
আর তুমি যেন জেলাস হও। বেশি বেশি কষ্ট পেতে পারো। 
আমরা উভয় উভয়কে ভালোবাসবো। প্রতিদিন তুমি ঈর্ষায় কয়েকবার মরে যাবে এট ভেবে 'কেন আমি আসাদ সুলতানা কে এত ভালোবাসি?'
হাসি।
তোমাকে ঐসব দিনগুলোতে সত্যই ভুলে যেতে পারবো; যেহেতু আমি ভুলে যেতে ভালোবাসি।

একটি প্রেমের কবিতা

একটি প্রেমের কবিতা

একটি প্রেমের কবিতা

- সজল আহমেদ

এক.
শারদুল তাকিয়ে শারমিনকে দেখতো
আর তা সবসময় সন্ধ্যায়।
ভালোবাসার মানুষকে অন্ধকার থেকে ভালোবাসা ভালো।
শারদুল যেতো শারমিনের বাসার সামনে;
শারমিন বসে জানলার পাশে কুপির আলোতে-
একটা ঝিঁঝিঁ ডাকতো
একটা কুকুর ডাকতো
একটা পাখি ডাকতো
একটা নিষ্প্রভ সন্ধ্যায়
শারমিন বই পড়তো
শারমিন চুল বিছালে
শারদুল তাকিয়ে দেখতো

দুই.
এরকম দেখতে দেখতে একসময় শারমিনের এক্সাম শেষ হয়
শারদুল সাহস করে ভালোবাসি জানিয়ে দেবে বলে
প্রত্যহ দাঁড়িয়ে থাকতো শারমিনের বাসার দরজায়।
শারমিন আসতো/ শারদুল চুপ
শারমিন যেতো /শারদুল চুপ
শারমিন বসতো/ শারদুল চুপ
শারমিন দাঁড়াতো /শারদুল চুপ
শারমিন তাকাতো/ শারদুল চুপ
শারমিন হাসতো /শারদুল চুপ
তাঁর লজ্জা খুব!
যেনো পেটে জমা অনেক কথা
বলতে গেলেই ফাঁসি হয়ে যেতে পারে এমন ভয়ে; শারদুল কখনো বলতে পারেনি!
শারদুল ভাবতো; শারমিন বুঝে যাবে।
শারদুল জানতোনা; মেয়েদের মনে
যদি হয় কামান দাগানো,
কখনো বাইরে প্রকাশ হয়না কাকে সে ভালোবাসে, কাকে সে পছন্দ করে।

তিন.
দিন যায় দিন আসে/ শারদুল চুপ
রাত যায় রাত আসে/ শারদুল চুপ থাকে
এমনকি দিনের পর রাত এবং রাতের পর দিন হয়
সন্ধ্যা হয়, সন্ধ্যা হতে সকাল
ফুল ফোটে পাখি ডাকে/ শারদুল চুপ থাকে।
দুজনেই মনেমনে খুব কলা খাচ্ছে
খাচ্ছে যেহেতু কলা; তাই দুজনারই পথ খোলা
অথচ দুজন দুজনাকে বলতে পারেনা।
একদিন হঠাৎ চেয়ারটা উল্টে যায়;
শারদুল উল্টো হয়ে বসে
শারমিন আসে
শারদুল কে জানায়; বিয়ে হচ্ছে আমার। ছেলে ব্রুনাই থাকে।
শারদুল শুনেও না শোনার ভান ধরে বলে; কে যাচ্ছে? কবে যাচ্ছে? কোথায় যাচ্ছে? কেন যাচ্ছে? বরগুনা কোথায়?
শারমিন বোবা হয়ে যায়। শিট শারদুল এমন বেওকুফ! সবকিছু না বুঝার ভান করে শারমিন ও বলে, হুম আসছে। আবার যাবে। আমাকে বিয়ে করে নিয়ে যাবে।
শারদুল হাসে
শারমিনের গাঁ জ্বলে
শারদুল হাসে
কিছু বলেনা
শারমিন কয়েকবার তাকায়
কিছু করার নেই। অভিমানে চলে যায় ।
শারমিন যায়
সাথে নিয়ে শারদুলের ফুটো কপাল!

চার.
ঠিক পাঁচবছর পর শারদুল-শারমিনের আবার দেখা হয়ে যায়
সেই একই রাস্তায়।
শারমিনের পড়নে শাদা শাড়ি
মুখ ম্লান।
শারদুল হাসে, কী খবর?
শারমিন কাঁদে, ব্রুনাইওয়ালার মৃত্যু হয়েছে!
শারদুল স্তব্ধ। স্তব্ধ আকাশ। পাখি থেমে যায় সব। জলে নেই কম্পন। বাতাসে মৃদু ঝঙ্কার। আকাশটা হাসে, সাথে সূর্যও হাসে। শারমিন তাকিয়ে থাকে।
শারদুল মুচকি হাসে। শারমিন চলে যায়। বেওকুফ একটা!

পাচ.
আবার সন্ধ্যে এসেছে।
শারমিন পুরোনো শাড়িতে
জানালার কাছে
কুপির আলোতে
অপেক্ষারত-
একটা ঝিঁঝিঁ ডাকে
একটা কুকুর ডাকে
একটা পাখি ডাকে
একটা নিষ্প্রভ সন্ধ্যায়
এক টুকরো কুপির অালোতে
শারমিন বসে বই পড়ে
শারমিন চুল বিছায়
শারদুল তাকিয়ে দেখে।

কবিতা: পীতাম্বর ও রাধে

কবিতা: পীতাম্বর ও রাধে

পীতাম্বর ও রাধে

- সজল আহমেদ

পীতাম্বর ডাক মেরেছে খাড়ায়া নদীর কূলে
রাধা তাঁরে জবাব দিলো; “ঝাঁপাই চলো জলে”
“এই কালো জল পানায় ভরা জলজ কুম্ভীর নাই
নির্ভয়তে গামছা পইড়া চলো জলেত ঝাঁপাই। ”
দূর অম্বরে এমন দৃশ্য আঁকছেন বিধাতা
যিশুখ্রিস্ট নাইচা ডাকে “জলেতে ঝাঁপা। ”
পীতাম্বরে খুশির কোন আলাদা যুক্তি নাই
এই জলেতে পীতাম্বর ঝাঁপায়, রাধে ঝাঁপান তাই।

ক্র্যাঞ্চ/ কড়মড়

মূলঃ চার্লস বুকোস্কি
অনুবাদঃ সজল আহমেদ

এই একাকীত্বই মহান এটা যদি তুমি তোমার হাতে থাকা ঘড়ির কাঁটার গতিবিধির সাথে ধীরে ধীরে দ্যাখো।
ভালোবাসার কারণে আজ
মানুষ খুবই ক্লান্ত
বিকলাঙ্গ
মানুষ একে অপরের নিকট শুভ নয়
তাঁরা একে অপরের প্রতি
ধনীরা ধনীর সন্নিকটে শুভ নয়
এক ফকিন্নি অপর ফকিন্নির প্রতিও।
আমরা ভয়ে আছি।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের বলে; নিশ্চই আমরা সবাই একদা বড় মাপের বিজয়ী গাধা হতে পারব।
এটা আমাদের কখনো জ্ঞাত করেনি কোন বস্তিজীবন বা কোন আত্মহত্যা সম্বন্ধে।
অথবা একটা নির্জনস্থানে একাকী পরে থাকা কোন সন্ত্রাসী
অস্পৃষ্ট
অদৃষ্ট
কোন উদ্ভিদ ভরা জলার সম্বন্ধে।


মূলঃ
The Crunch“there is a loneliness in this world so great
that you can see it in the slow movement of
the hands of a clock.
people so tired
mutilated
either by love or no love.
people just are not good to each other
one on one.
the rich are not good to the rich
the poor are not good to the poor.
we are afraid.
our educational system tells us
that we can all be
big-ass winners.
it hasn’t told us
about the gutters
or the suicides.
or the terror of one person
aching in one place
alone
untouched
unspoken to
watering a plant.

সজল আহমেদ এর দুটি রাজনৈতিক কবিতা


বর্ডারে সুরঙ্গ খুড়ে রাখো

এখানে লেগে আছে রক্ত স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক
যারা জালিম; যারা দাজ্জাল; যারা জাহেল ; তাদের প্রতি আল্লার গজব নাজিল হোক!
আমি মরে যাওয়া লাশেদের কথা বলি
আমি পঁচে যাওয়া গলা লাশেদের কথা বলি
খুব সহজেই যাদের বুক ছেদ্র করেছিলো গুলি
আমি সেই সমস্ত অহেতুক মরে যাওয়া লাশেদের কথা বলি।
যারা জালেম; যারা খুনি ; তাদের উপর কনকর নিক্ষেপিত হোক
কুকুরের মতো মৃত্যু হোক; মৃত্যুকালে ওঁরা গুম হোক
এখানে লেগে আছে রক্ত স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক!


যারা মুখ থামাতে গুলি করে; তাঁরা মায়ের দুধ খায়নি
যারা মিছিল থামাতে রাবার বুলেট ছুড়ে; তাঁরা মায়ের উদরে জন্মায়নি।
বুলেটে থামাতে চাও?
এত সোজা?
ভেবেছ খু্ব সহজে থামিয়ে দেয়া যাবে?
দশ পৃষ্ঠার একটি পত্রিকা কয়টি লাশের খবর ছাপতে পারবে?
জাতীয় পত্রিকাওয়ালারা বুর্জোয়া মাদারচোদ!
এরা সাম্রাজ্যবাদীদের বাপ বানিয়ে ঘুরে বেড়ায় বাপেদের পকেটে পকেটে।
ওদের মৃত্যু হোক হ্যাঁ ওদের লাশ গুম হোক
এখানে লেগে আছে রক্ত স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক!


যারা জালিম; যারা দাজ্জাল; যারা জাহেল ; তাদের প্রতি আল্লার গজব নাজিল হোক!
যারা গুম হয়েছিলো, এবং যারা বিনাহেতু মরে কচুরিপানার শরীরে পরেছিলো
একদিন যদি কবর হতে জীবিত হয়
রাষ্ট্র সহ ওঁরা গুম করে দেবে জাতীয় সংসদ
এখনো এখানে ওখানে লেগে আছে তাজারক্ত আর স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক!


শহীদ লাশেরা চিবিয়ে খাবে শাসনব্যবস্থা, এমনকি রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর গদি।
জেগে ওঠার পর ওরা যদি মৃত্যুর হেতু জানতে চায়
আইন সংবিধান মন্ত্রী এমপিদের গাড়িবাড়ি প্রোপার্টি চিবিয়ে খায়
প্রতিটা মন্ত্রী ঘোৎঘোৎ করা শূয়রের ছানা
পালানোর পথ পাবে না!
লাশেরা জাগার আগে বাঁচার পথ দ্যাখো
বর্ডারে এখনই সুরঙ্গ খুড়ে রাখো।



রাজনীতি তুলে রেখে
.
রাজনীতি তুলে রেখে বগলে যাও ঘুমুতে যাও।
তিয়াত্তরটি কবিতা, ছিয়াত্তরটি লাশ
বর্নণাতিত মৃত্যুর আবহাওয়া
টিয়ারশোলে মিছিলের স্বাদ
জড়োসড় ইটের খোয়া
এখানে টায়ার পুড়ে ধোয়া
রক্তের দাগ নগ্ন পাঁচিলে
মানুষ অধিকার না পেলে
সম্পদ পুড়িয়ে দিতে পছন্দ করে
যেন শত্রুপক্ষ সেটি ব্যবহার না করতে পারে।
সাইনবোর্ডের সামনে মারামারি
ব্ল্যাক টী-শার্ট ছেলিটির মৃত্যু হয়েছে
প্রেমিকার আহাজারি
এসব যে ভুলে থাকে; খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওঁরা বুর্জোয়া
ওদের বিচি একটা নেই
নোমান ঘুমুতে যাবে না
নোমান মিছিলে যাবে।

গুচ্ছ প্রেমের কবিতা

গুচ্ছ প্রেমের কবিতা

ভাঙা কাঁচ
.
আমি একটি ভাঙা কাঁচ আর ভেঙে যাই বিভিন্নভাবে
ভাঙা কাঁচে রক্ত লেগেছিলো ছিন্ন হৃদয়ের।

কষ্টদায়ক স্মৃতি
.
অনুজ্জ্বল বর্বর অপরিচ্ছন্ন হে পশুসম অনুর্বর স্মৃতি
আমারে একটু ঘুমাইতে দিলে তোমার কী এমন ক্ষতি?


ঠিক যে কারণে
.
ঠিক যে কারণে ফুল হয়েছি; সে কারণেই খুন হয়ে যাই।

মোমবাতি
.
আমি এক প্রজ্বলিত মোমবাতি,
আলো দিচ্ছি তোমাদের অনবরত।
অথচ পুড়ে পুড়ে ডেকে আনি নিজের দুর্গতি!


প্রেমের রণাঙ্গনে
.
প্রেমের রণাঙ্গনে আমি আহত সৈনিক
ঠকেছে আমার কাফেলা
একটা পৃথিবীর সাথে যুদ্ধ করতে করতে
হেরে যাই, মুষড়ে পরি আঘাতে দৈনিক
এই রণাঙ্গনে আমি এক আহত সৈনিক!



প্রেমিকা একটা কুকুর সাদৃশ্য
.
ও পায়ে না, হাতেও না সরাসরি হৃদয়ে কামড়াবে
কামড়ানো হৃদয় আবার আগুনে ঝলসাবে!
ঝলসানো হৃদয়টি আবার পায়ে দলবে
এরপর ও ক্ষান্ত হবে না
কোন অনুরোধেও থামবে না
দূর থেকে ছলাকলা করে কাঁদাবে, কাঁদাবেই
  এরপরে আবার ফিরে আসবে
খেয়ে শেষ করে দেবে
পুনঃ ক্ষুধা পেলে
খাদ্য না পেলে
পুনঃ চলে যাবে।
চারিত্রিক দিক হতে
প্রেমিকা একটা কুকুর সাদৃশ্য



তুমি
.
 তোমায় দেখলেই আমার দেখা হয়ে যায় কাবা
তোমাতেই যত উপোস যত আরধনা
ভালোবাসা এমনই, প্রেয়সী দেবীর তরে প্রেমিক পূজারীর যত উপাসনা।
 ললাটে টিপ পড়েছো যেন বিস্তৃত টকটকে ঋক্ষরাজ
তোমায় আলতো ছুয়ে দিলে ছোয়া হয় হাজরে আসোয়াদ।
তোমার চুম্বনে আমার রোজ পূজো করা হয়ে যায়
যেন পূর্ণতা পায় প্রিয় হে অপূর্ণ হৃদয়।
তুমি ললাটে টিপ পড়েছো যেন বিস্তৃত টকটকে ঋক্ষরাজ
তোমাকে ভালোবাসাই আমার সমস্ত ইবাদত।




অধরা কেমন আছো?
.
হ্যালো! হ্যালো! হ্যালো!
বায়িং হাউজের জবটা আমি এবার সত্যিই পেয়েছি
কোন চাপা নয়
কুড়ি হাজার টাকা মান্থলি সেলারী !
হো হো
ফোন করতে তোমাকে কোন সমস্যা নেই আর;
সমস্যা নেই কিনে দিতে ভুঁড়ি ভুঁড়ি শাড়ি, চুড়ি, রিচব্যান্ড নিত্য নতুন উপহার।
হ্যালো! কেমন আছো?
অধরা ভালো আছো তো?
মনে আছে?
তুমি বলতে আমরা পালিয়ে যাবো চাটগাঁয়ে
ওখানে তুমি অ্যাডমিট হবে কোন একটা ভার্সিটিতে।
 তুমি পড়বে, আমি যাবো চকুরীতে
প্রত্যহ এক চুমু ঘুমুতে যেতে, বিকেলে এবং সকালে।
এতদিন যত চুমু জমা করে রেখে দিয়েছো
সব একসাথে খেয়ে নেবো!
মনে আছে?
আমরা পাঁচ বছর পর বাচ্চা নেবো ওর নাম হবে বল্টু
তুমি বলতে বল্টু নামটা খুউবই ফালতু
আমি তোমাকে বল্টুর মা নাম ধরে ডাক দিতাম খুব রেগে যেতে
'তুই তাইলে বল্টুর বাপ' তুমি বলতে।
আমি খুব হা হা করে হাসতাম।
একদিন হঠাৎ ফোনটা কেঁটে গ্যালো
আমার পকেট তখন পয়সাহীন গড়ের মাঠ
সামনেই পরীক্ষা তাই; আমি পয়সা যোগাতে নেমে গেলাম
তোমাকে ফোন দেওয়া হয়নি
তুমিও দাওনি
এভাবেই আস্তে আস্তে ফোন দেওয়া কমে যায়
সামনেই এক্সাম
আমার পয়সা সম্পূর্ণ যোগাড় হয়নি
কী করব এখন!
চিন্তা আমাকে চিবুচ্ছিলো
একদিকে এক্সামের টাকা
একদিকে তোমার সাথে যোগাযোগে ব্যর্থতা ;
 ফোনে আর কখনো ব্যালেন্স ভরতে না পারার ব্যর্থতায়
আমাদের দূরত্ব তৈরী হলো
এরপর একদিন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হলো!
সেকথা থাক আজ
আজ আমি জবটা পেয়ে গেছি
বেতন পুরো কুড়ি হাজার!
পুরানো কোন সমস্যা নেই আর
এখন আমরা হতে পারবো দুজন দুজনার।
হা হা হা হা!
তুমি চুপ কেন?
কোন সমস্যা কী ?
কথা বলছ না যে?
শরীরটা ভালো?
জ্বর নাকি?
হ্যালো!
অধরা কেমন আছো?
হ্যালো.. হ্যালো..
অধরা শুনছো?
হ্যা.. হ্যা..হ্যালো....



বুক ভাঙার ইতিহাস
.
ইতিহাস লেখার জন্য কতশত ইতিহাসবীদ, বুক ভাঙার ইতিহাস লিখতে শুধু রয়েছে কবিরা


আমার কোন শূণ্যতা ছিলো না
.
আমি তখন প্রেমিকার কথা ভাবছি
প্রথম চুম্বন
এভাবে প্রাক্তন হয়ে গেলো?
আমি হাঁটছি
আমার সাথে হাঁটছিলো একটি ক্লান্ত দুপুর
ছেষট্টিটি নির্বোধ গাড়ির হর্ণ।
আমি দাঁড়ালাম
এবং প্রশ্ন করলাম 'হে দুপুর! ও চলে গেলো কেন?'
দুপুর জবাব দেয় - 'নিজের শূণ্যতা নিজেই খোঁজো।'
আমি আমার প্রেমিকার জন্য কখনো বেটার ছিলাম নাকি ও আমার জন্য ঠিক জানি না
তবে জানি, আমার ভালোবাসায় কোন শূণ্যতা ছিলো না।
আমি হাঁটছি
আমার সাথে হাঁটছিলো একটি ক্লান্ত দুপুর
ছেষট্টিটি নির্বোধ গাড়ির হর্ণ।




পাখি
.
জানো কী
এখনো বেঁচে থাকি
 শরীরে নিয়ে তোমার ঘ্রাণ।
তোমাকে তাড়াতে পারিনি বলে আজো ভুগি ভিষন শূণ্যতায়
হিমোগ্লাবিন হয়ে মিশে গেছো রক্তকণিকায়!
চলে যাও ছেড়ে দাও আমাকে
খুব ব্যথা করে বুকে
আমার রক্তক্ষরণ হয় হৃদয়ে!


একাকী
.
একা একা ভালো থাকা যায়
আমার কোন দুঃখ নেই একাকী
একা থাকার প্রচেষ্টায়
আমি একা থাকতে শিখে গেছি।




নপুংসক স্মৃতি
.
এখনো আমার জেগে থাকা হয় রাতে
তুমি কি জাগো?
এখনো কাঁদা হয় রাতে
তুমি কী কাঁদো?
শুধু একটি প্রশ্ন বারবার
বিভিন্নভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজেকে করি; কেন কোন দোষে কিংবা ত্রুটিতে তুমি চলে গেলে?
হে নপুংসক স্মৃতি
তোর পায়ে ধরি আমারে একটু ঘুমাইতে দে বাপ!


পুড়ে ফেলি স্মৃতি


না না এভাবে যদি চোখে জমা করে জল
কাঁদি নিরবধি যদি রূপে মাকাল ফল
এভাবে যদি কেঁদে পাওয়া যেতো তাঁরে
অাজন্ম পাপ চেপে নিজের শরীরে
কিরিচের কোপে কেঁটে জমিত অপরাধ
ধর থেকে মাথা কেঁটে ঘুচাতাম অপবাদ
এসে এনে বসাতাম তাঁরে সোনার চাদড়ে
আর কত স'বো বাতায়নে বাতাসের বেগ?
পুড়ে ছাই মরেছে হৃদয়ের যত ভাববেগ
তাম্র লিপির যুগ নেই কাগজের ভীড়ে
কোথা প্রেম বিরহ লিখে রাখি বলো তো কার শরীরে?
বারবার যদি ভুল করে ফুল ছুতে যাই;
ছুতে গিয়ে বারবার এভাবে যদি নাই হয়ে যাই
খুঁজে খুঁজে তাঁরে যদি এত অবহেলা পাই
ধুলোমাখা চিঠিগুলো পুড়ে করে দেবো ছাই।


বদদোআ
.
বিরামহীন বেদনার পরে আমি এই সিদ্ধান্তে সিদ্ধহস্ত হই; আমি নিজের ভিতরে তুমি নামক কষ্টটা গুম করে দেবো!
আমি গিলে খাবো তোমার নাম
আর কবর রচনা করব তোমার সমস্ত স্মৃতি
যা আমাকে তিলে তিলে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিলো বিভিন্ন ভাবে এ অবধি!
কষ্ট হলো পরজীবি সাদৃশ্য
কখনো কোন কষ্ট কে পুষে রাখতে নেই।
পরজীবি পুষে রাখলে ও আন্ডা পাড়ে, তা দেয়, বাচ্চা ফুটে
এক থেকে একাধিক হতে হতে সর্বশেষে পার্মানেন্ট আবাসস্থল করে নেয়
আমি নিজের ভিতরে কবর রচনা করব তুমি নামক পরজীবির এবং আমার যাবতীয় কষ্টের।
তুমি নামক কোন বেদনা
আমার হৃদয়ে বিদ্ধ হবে না
আমি আর কাঁদবো না কখনো রাতে
বলব না কোন কথা তোমার স্মৃতির সাথে
যতটা বর্বর রাত আমি কেঁদেছি
একদিন সবকিছু তুমি ফিরে যেন পাও
আমি বদদোআ করি, তুমি কখনো যেন সুখী না হও।



বিধুর বিরহে
.
অায়াত
এখানে নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে দেখি ঝাঁকে চলা মাছ
তখন লেগে এসেছিলো সাঁঝ
পশ্চিমের লাল আকাশে আমি তখনো কারো চোখ ভাঙা নোনা জল দেখিনি
আকাশ
ভিজে ছিলো না কোন সমুদ্রসম বেদনে।
এ বিধুর বিরহে
আমার মনে পরে শুধু তোমাকে
আমার লাগে খালি খালি
সমুদ্রে পোড়া বালি
তপ্ত হওয়ার মতো
হৃদয় পুড়ে গেলে
আর কখনো অনুভূতি জাগ্রত হয় না।
তোমার কী অনুভুতি পুড়ে গেলো?


তুমি চৈতি হাওয়া
.
তুমি যেন চৈতি হাওয়া এসে লাগো উদম শরীরে;
শিশিরের অনুভূতি নিয়ে ঘাসেতেই যাব মরে।

সাংবাদিক ইংরেজী অনুবাদ সহকারে


সাংবাদিক 

- সজল আহমেদ

আমি মৃত্যুর আগে ঈশ্বরকে আবদার করলাম 'পরজন্মে তিনি যেন আমাকে সাংবাদিক রূপে প্রেরণ করেন। '
ঈশ্বর নিশ্চুপ।
ঈশ্বর চিন্তিত
তাঁর মাথায় হাত
কী যেন ভাবছিলো চুপচুপ।
নিশ্চুপ চিন্তাবিদ ঈশ্বরের মৌনতা ভাঙাতে
আমি আবারও তাকে পুনরায় করলাম এ আবদার।
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বর হেতু জিজ্ঞেস করলে আমি জবাব দিলাম- 'আমার মায়ের স্বপ্ন ছিলো আমি সাংবাদিক হিসেবে পৃথিবীর মুখ উজ্জল করবো অথচ আমি হয়েছিলাম একজন পিকেটার।
শুনেছি মায়ের দোআ কবুল হয়
এহ জগতে আমি একথার সত্যতা পাইনি
স্বচক্ষে কোন মায়ের দোআ কবুল হতে দেখিনি।
হে ঈশ্বর পৃথিবীর সব মা আমার মা নন;
অতএব আমি চাই অন্তত আমার মায়ের দোআ কবুল হোক।'
ঈশ্বর নিশ্চুপ।
ঈশ্বর চিন্তিত
তাঁর মাথায় হাত
কী যেন ভাবছিলো চুপচুপ।
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বর আমার জান কবজ করার হুকুম দেয়ার পরপরই আমার পরজন্মের প্রসেসিং চলতে লাগলো।
ধাপ এক এ-
আমার চারটি পা গজালো
থুতুনিতে দাঁড়ি হলো
কন্ঠে ম্যা ম্যা ডাক।
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বর তখনো ভাবছেন।
ধাপ দুই এ-
ঈশ্বর তখন আমার খাদ্যচক্রের কথা ভাবছেন....
আমার সামনে পঁচাঘাস তার সামনেই ছিলো সুগন্ধি কোরমা পোলাও
আমি সুগন্ধি কোরমা পোলাওয়ে মুখ না দিয়ে মুখ দিলাম পঁচাঘাসে।
ধাপ তিন এ-
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বরের মুখে হাসি- 'হ্যাঁ পারফেক্ট! তোমার মায়ের দোআ কবুল হয়েছে!'

এইটার অনুবাদ :
(অনুবাদক হিসাবে আমি ক্লাশ টু এর ছাত্রর মতো। কিছু কিছু অর্থ না জানায় অর্থগত ভাবে কিছু জায়গা পাল্টে গেছে এজন্য দুঃখিত)
English translation:

Journalist

(Translated By Sajal Ahmed)

I confess to God before my death "In the post-birth, he should send me as a journalist. '
God is silent
God is worried
Hands on his head
God was worried about something quietly.....
I redeem the Intellectual God's silence,
I re-petition to him.
When God asks the reason why
I replied - ''My mother's dream was that, 
I would brighten the face of the world as a journalist, whereas I was a gangster. 
I heard that, the prayer of the mother was accepted
I have not found any truth in this proverb!
I have never seen any mother's prayers to be accepted.
O God, all the mothers of the earth are not my mother;
Therefore I want to accept the prayer of my mother at least. ''
God is silent
God is worried
Hands on his head
What did God think was silent.
 Imagine immediately after, the God ordered me to take away my life
My generation started processing...
Step one -
I woke up four legs
The beard is spit upon
I Called like a goat!
God is worried the and he still thinking....
Step two-
God is thinking about my diet cycle ....
The crisp grass in front of me was fragrant flesh and Pulaos.
I do not eat perfume flesh and pulaos
 I raised my face in the crisp grass.
Step Three-
 Worried God's
Smile on his face
and he shouted with joy
'Yes Perfect! Your mother's prayer has been accepted! '

সজল আহমেদ এর কবিতা: আব্দুল আজীজ



আব্দুল আজীজ
- সজল আহমেদ


১. 
আব্দুল আজীজ সাব! 
আপনি এত কামালেন 
টাকা, 
তবুও 
আপনার সম্পদের কোন হিস্যা হবে না! 
আপনি হেঁটে যান, আমি উগ্র গন্ধ পাই! 
আপনি এত টাকা দিয়ে কি করবেন? 
প্লিজ পারফিউম কেনেন। 
টাকা দিয়া কি বাবা ডাক শুনতে পরবেন? 
আপনার একটি বাচ্চা। 
জুন এ দশ বছরের হলো। 
আপনার বাচ্চা। ও খেতে চায় না। ও কথা বলে না। ও মরে যায় না। ও মরতে চায় না। 
ছোটবেলায় যখন ডাক্তার দেখাতে নিয়েছিলেন, 
ডাক্তার বলেছিলেন, পাঁচ বছর পর আপনার বাচ্চা ঠিক হয়ে যাবে। আপনাকে ডাকবে আব্বা। 
আজ 
 দশবছর 
হয়ে গেলো 
দামড়া পোলাটা 
ও কিন্তু আপনাকে 
 একটিবারের তরেও 
আব্বা ডাকলো না! 
২. 
 আব্দুল আজীজ! 
আপনি ওকে গলায় বেঁধে দিয়েছেন তাবীয। 
আপনার 
যেন ও কথা বলে, খায় আর হাটতে পারে। আর আপনাকে আব্বা ডাকে। 
অমুক ফকিরের কারামতি ভরা তাবীয, 
এ তাবীয গলায় দিলে পুরুষের গর্ভে ও সন্তান হয়ে যায়! 
কিন্তু আজীজ কি লিখে এনেছেন আপনার কপালটায় 
কে জানে! 
আপনার বাচ্চাটা এ তাবীযেও মুখ খুলে না! 
আব্দুল আজীজ সাব 
আপনার বেঁধে দেয়া তাবীযে কোন কাজ করে না! 
আপনার 
সন্তানটি 
আপনাকে 
ডাকে না 
বাপ! 
৩. 
ও অসুস্থ হয় কিন্তু মরে না 
আপনি চান ও মরে যাক 
বোঝাটা কমে যাক। 
কিন্তু কি? 
ও মরবেনা। 
ও অসুস্থ হলে আপনিই ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান 
অথচ আব্দুল আজীজ! 
বাচ্চাটা মরে যাক আপনি চান। 
আজীজ আপনি থামুন! 
তবে কেন ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান? 
আব্দুল আজীজ আপনি কিন্তু থামেন না! 
আপনি থামবেন ও না! আপনার সন্তানটিকে বাঁচাতে হবে। আপনার আশা হয়তো বিশটি বছর পর; 
ও আপনাকে আব্বা ডাকবে! 
কিন্তু কী? 
আব্দুল আজীজ সাব 
আজ 
 দশবছর 
হয়ে গেলো 
দামড়া পোলাটা 
ও কিন্তু আপনাকে 
 একটিবারের তরেও 
 ডাকলো না বাপ! 
৪. 
আপনি যতই বলুন এ সন্তানটির জন্য আপনার মায়া আছে, ভালোবাসা আছে। আমি জানি। নয়তো কবেই গলাটিপে ওকে মেরে ফেলতেন! 
৫. 
এরপর একদিন আপনার সন্তানটি অসুস্থ হলো; আপনি দেখতে পেলেন ওর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে খুব! চোখ দুটো উপরের দিকে রেখেছে কাউকে দেখার মতো। আর জিহ্বা বের করে তৃষ্ণার্ত বিড়ালের মতো। 
আপনি কাঁদছেন আজীজ সাব? 
আপনিও কাঁদেন? কাঁদতে আপনি জানেন? 
আপনাকে কাঁদতে দেখলাম এই প্রথম! 
আপনি কাঁদেন 
কারণ আপনি জানেন 
এই বাচ্চাটি আজ মারা যাবে! 
আর আব্দুল আজীজ সাব 
দশটি বছর একটা কুকুর পুষলে, ঐ কুকুরের প্রতি ও মায়া পরে যায় 
আপনি ওরঁ প্রতি সকল গাফেলতি- অবহেলার কথা ভাবছেন; 
আর আজীজ সাব এসব ভেবেই আপনি কাঁদছেন! 
৬. 
আপনি দেখতে পেলেন একসময় আর বাচ্চাটি নড়ছে না 
আপনি জোড়ে জোড়ে কাঁদছেন! 
কারণ ও মরে গেছে! 
নিচ্ছে না কোন দীর্ঘশ্বাস 
আঃ আজীজ আজ দশবছরে ওর আয়ু শেষ হয়ে গেলো 
কিন্তু 
 
আপনাকে 
ভুলেও 
ডাকলো না 
আর 
বাপ! 
৭. 
মানুষ কয় প্রকারের কুত্তারবাচ্চা হতে পারে, বাচ্চাটা মারা যাবার পরপরই আপনি বুঝলেন! 
যারা বেঁচে থাকতে একটা দিন ও বাচ্চাটাকে দেখতে এলো না, 
তাঁরা আপনার কাঁধে হাত দিয়ে বলে "ইস যদি একটিবার ডাক্তারখানা নিতেন তাহলে হয়তো বেঁচে যেতো!'' 
কেউ বলে "চিকিৎসার অভাবে বাকহীন ছিলো বাচ্চাটা!'' 
আবার কেউ কেউ চোখের জলে আপনার দাঁড়ি ভিজিয়ে দেয়! 
আপনি শুধু দেখেন। অথচ কিছু বলতে পারেন না! কারণ মরে পরে থাকা বাচ্চাটা আপনার! 
৮. 
আজীজ সাব 
আপনি এখন ভাবছেন, 
ওকে জন্মানোই আপনার ছিলো মহাপাপ 
কারণ 
আজীজ সাব 
এই দশটি বছর ও থেকে গেলেও 
একটিবার 
ডাকলোনা 
আর বাপ! 
২১/০৩/২০১৭ 

সজল আহমেদ এর কবিতা:আমার কোন কষ্ট নেই

আমার কোন কষ্ট নেই

এখানে বেঁচে থাকি নিজের শরীরে নিয়ে মাছের ঘ্রাণ
এখানে ছুটে চলি ভাঙা রোদে অজস্র বেদন বুকে আপ্রাণ।
আমার কোন কষ্ট নেই
কোন বেদনা নেই
বুঝতে পেরেছো?
এখন এখানে সমুদ্র শুকায়
পথ করে দেয় চিড়ে রোদে তেতে ওঠা বালি
এরপর বিভিন্ন প্রণালীর পারাপারের পর
মুক্ত হস্তে দান করি নিজেকে।
পৃথিবীর উপরে মায়া নেই
এবার;
চলে যেতে বাঁধা নাই।
চলে যাবার পর বুজে আসে চোখের পাতায় ভর করা ঘুমের নির্মাণ করা মেঘ;
নির্মাতা নিজেই মালিক সাই।
আমার কোন কষ্ট নাই
বুঝতে পেরেছো?
মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলি; জুমার নামাজের মতো সত্য;
আমার কোন বেদন নেই;
আমি নিজকে চিনি, যেমন দুগ্ধপোষ্য পশুরছানা চিনে ফেলে নিজগুণে নিজ মাতা
এবং কিছুদিন পরে আবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলি; আজানের কসম আজ খুব কষ্টে ছেদা হলো বুক।
       সবাই সুখে থাকে আমি কেন পাই নাকো সুখ?
আবার বলি;
আমার কোন দুঃখ নেই
আমার চোখে জল নেই
বোঝা গ্যালো?
এভাবেই স্ববিরোধী সমুদ্রে স্নান শেষে
আবার দাঁড়িয়ে পরি দগ্ধ হই রোদের ম্লান আগুনে
এরপর নিজেকে পুড়িয়ে পুড়ি ঘুম চোখের।
 ঘাম শরীরে ঘুমিয়ে পড়ি সোনার মাদুরে।
রাত ঘুমায় না;
এ কবিতায় কী লিখেছি জানি না
তবে এই জানি আমাকে এভাবেই লিখতে হবে
ব্রত করেছি
একটি ভালো দুঃখের কবিতা চাষ করে যাবো
চাষ করে যাবো এক সমুদ্র বিরহী কবিতার;
ও সমুদ্র চাষা
ও নীল মেঘের দেশে বসা
নিয়তির ক্রন্দনরত মা জননী
আমাকে ধার দাও তোমার সমূহ সুখ সিঁদুররাঙা সিঁথির ভাঁজের।
আমার কোন সুখ নেই
বুঝতে পারলে?
কী বকুলের ফুল চিড়ে নেমে আসা রোদ, মাঠ, ঘাট পাখির কলরব; নীরবে ডাকতে থাকা নিশ্চুপ সব-
নিশ্চল পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেঘ; এভাবেই থেমে গিয়ে দেখ-
কিভাবে ভালো থাকতে হবে তোর।
কিভাবে কুয়াশা চিড়ে বা ধ্বংস করে নেমে আসে ভোর।
সিক্ততা বুঝিনি; বুঝিনি কিভাবে ভালো থাকতে হয়-
ভেজা রুমালে চোখ মুছলে চোখের জল বুঝা যাবে না।
বুঝিনি কিভাবে সুখে থেকে থেকে মানুষটা বিরহে মরে যায়;
নগ্ন পায়ে হেঁটে এসেছিলাম বহুদূর
তবুও দেখা হয়নি
এরা কিরকম
কিভাবে নগ্ন চোখে
বিক্ষিপ্তভাবে
লোকমুখে
শুনে নেয়
কার শরীরে কতটা ঘাম
আর কার কতটা ঠিক দাম!
#সজল_আহমেদ

সজল আহমেদ এর কবিতা: অনুতাপ

অনুতাপ


একদিন একা প্রেমিকাকে
রেখে কোন এক পার্কে
রাগ করে চলে এলেন
মাঝপথে বৃষ্টি নামলে
আপনি ভিজে গেলেন।
আরেকটুপর আপনার জ্বর আসবে
আপনি খাটে শুয়ে কাতরাবেন
ভিষম জ্বরের চোটে
এর পরের দিন প্রেমিকা আপনাকে দেখতে আসবে
ওঁর শ্লেষ হাসি ঠোঁটে।
আসলে রাগ করাটা ভুল হয়েছিলো
এটুকু বুঝতে আপনার
প্রয়োজন হলো একটি প্রেমিকা
একটি পার্ক, এক পশলা বৃষ্টি আর ধুম দিয়ে ওঠা জ্বর।

সজল আহমেদ এর রম্য কবিতা : বুদ্ধিজীবিদের জ্বীনের নগর ভ্রমন

বুদ্ধিজীবিদের জ্বীনের নগর ভ্রমন


বুদ্ধিজীবিরা একদিন দলবেঁধে চইলা গেলেন কোকাব শহরে।
জ্বীনের নগর উহা
সেইখানে খাবার বইলা কিছুই ছিলো না
তাঁরা বেবাক কাঁদতে লাগলো আহারে আহারে!
বিশাল বপু এক জ্বীন দেইখা বুদ্ধিজীবি সকলে,
প্রশ্নবাণে জর্জরিত করলো জ্বীন বেচারারে!
বুদ্ধিজীবি একজন তখনো বিরক্ত হইয়া,
তাহার মুখ নামক ট্যান্ডেস্টার দিলো ছাড়িয়া-
এইখানে এইটা আসছি জ্বীনের নগর কোকাবে,
ভরপুর খানা নাই ইহা ক্যামন নগর হে?
ক্যামন নগর ইহা ক্যামন শহর?
ফল নাই জল নাই, নাই অতিথির কদর!
বোকাচোদা জ্বীনের কভূ বুদ্ধি হবে না
বুদ্ধিমান বুদ্ধিজীবিগণের ওরা কদর বুঝলো না।
আছে খালি দেহ
দেহ তো চুদে না কেহ
বইসা খালি পারে ডিম
দ্যাখো অথচ, এরা নাকি আবার জ্বীন!
অপর এক বুদ্ধিজীবি তখন মুখ খুলিলো;
ট্যান্ডেস্টার বুদ্ধিজীবির লগে দ্বিমত পুষিলো।
হাকিলো ভায়া, থামো না!
অত বেশি বুঝো না
এইখানে এইটা আসছি কোকাব নগর
বাদ্য নাই, গানা নাই বিনোদনহীন শহর;
এইখানে নারী নাই, নাই নারীর অধিকার;
যেইখানে বিনোদন নাই সেইটা ক্যামন শহর?
এইবার তৃতীয় নং বুদ্ধিজীবি জোড়ে হাইকা কয়;
ডাউট আছে দাদা এইটা কোকাব নগর নয়!
হইতে পারে ভুল কইরা পৃথিবী ঘুরছে ভূপৃষ্ট সাথে
ঘুইরা গেছি মোক্ষম টাইমে আইসা পরছি কোন অপেরাতে
অপেরার মেইন থীম জ্বীন ও হইতে পারে
হইতে পারে আমরা আসছি কৃত্রিম কোকাব নগরে!
চতুর্থ জন ভাবে আর মনেমনে কয়;
বেকুবচোদা, উজবুক বাকি সব হালায়!
এই নগরে কোন পলিটিক্যাল দল নাই,
গঠনতন্ত্র না রাজতন্ত্র তাহা জানা নাই;
জ্বীনের কীভাবে চলে তাও জানা নাই
তিন হালার মাথায় গোবর ফালতু প্যানা দেয়।
প্রকাশ্যে চার নং বলে, দাদাগণ শোনো
আদপে ইহা নগরই নহে কোন!
হইতে পারে ইহা কোন ভীনগ্রহ
আর জ্বীন না অ্যালিয়েন এসব, বড়বড় দেহ
নাই এখানে কোন পলিটিক্যাল দল
জ্বীন না এই হালারা সব জাগতিক ফুটবল।
এবার জ্বীনের মুখ খুইলা রাগে কথা বাইর হইলো
চার বুদ্ধিজীবির কানে চারটা থাপড়া দিয়া কইলো-
একজনের পাছা আরেকজন আগুনেতে দিয়া
খাইতে পারেন উহা তারপর চাটিয়া চাটিয়া।
একগ্রহের বুদ্ধিজীবি অন্য গ্রহে ভাত পায় না
বুদ্ধিজীবিতা করো পৃথিবীতে গিয়া।
যেইখানে বুদ্ধিজীবি অধিক দেখা যায়,
সেইখানে একে অপরের হোগা ভেজে খায়!

বোকার শহরে বেকুব : সজল আহমেদ এর কবিতা

বোকার শহরে বেকুব : সজল আহমেদ এর কবিতা

বোকার শহরে বেকুব
কতকাল হয়ে গেলো শুনিনা তোমার কথা
ছড়ার মতো বিভ্রান্ত শহরে মিলে গেলে ছন্দ-উপকথা
স্মৃতির শহরে বেকুব ঘুরে আর ফিরে
অবশেষে একদিন, একদিন অবশেষে
আশা জমে ভারী হয়ে মরে।
বিশাল সমুদ্র দেখো কত জল বহে;
নিমগ্ন আঁধারে দেখো জোনাকী পোকারা উড়ে
উড়ে যায় কতশত ব্যথাবাহী স্মৃতি
সন্ধ্যের আকাশে মেঘের সারথি 
উঁচুতে দূরে ঐ উড়ে যায় বক
আজানের ধ্বনীতে কাকেরা অবাক
অব্যক্ত যন্ত্রণায় ভীত আমার শরীর
অহেতুক মরে যাব, অসুখের ভীড়
একেকটা স্মৃতি যেন আকাশসম ভারী
আমার বুকে কেন খোদা জমা এত আহাজারি?
কাঁপে না কী প্রভূ তোমার আসমান?
কাঁপেনা? কাঁপেনা?
আমি কেন কাঁদি প্রভূ তুমি কী বুঝোনা?
জগদ্দল ভারী বুকে বিঁধে ব্যথার কিরিচ
বাঁচতে চাই না আমি দিওনা আশিস।
ফুল পরে ঝরে গাছের শরীরে ব্যথা
ঝরে পরে বয়োসন্ধিতে শুকনা পাতা
গাছের বেদনা কেন ফুল ঝরে পরে
জোনাকি তলিয়ে যায় কৃষ্ণ আঁধারে
আর বাজেনা কানে ঝিঁঝিঁর আওয়াজ
হৃদয় সমুদ্রে খড়া চোখে বিরহের ঝাঁঝ
কাঁদি কেন এত আমি; এত কেন কাঁদি?
সমুদ্রে পানি অত যা কেঁদেছি অবধি
আমার মাঝে বারে বারে আমি যা দেখেছি
অন্যকোথায় কিংবা বাইরের জগৎ অত দুঃখ পোষেনি
পোষেনি পোষেনি কেউ আমার মতো কুকুর
অনাহারী থাকেনা রাত-ভোর-দুপুর!
ওগো বিশাল আকাশ আমার সাক্ষী থেকে যা
যা কেঁদেছি ওতক সমাপ্ত; খোদার কসম আর আমি কাঁদবোনা।

একটি খোলামাঠে এক কোটি আশা
ভীড় ভেঙে উপছে পরে বেদনা-ব্যথা
নদীর জলেতে নেই সম্বল আর আশা
ফিরে দেখা পরিণতি মিছে ভালোবাসা
কুচক্রিরা সদা জল বহে মুখে
আশা যদি ভেঙে যায় বেদনা বুকে
ফিরে ফিরে আর আমি তাকাবোনা
জলের ছিটায় এ ঘুম ভাঙাবোনা
আশ্চর্য এক পাখি উড়ে দূরে গেলে
আকাশের অজানায় যায় ডানা মেলে
দূরের পাখি তাঁর দূরেতেই বাসা
দূরের পাখিতে কেন মিছে ভালোবাসা
আর যদি ভুল করি ডেকোনা আমায়
চোখ মেলে ডানা খুলে ডাকবোনা তোমায়
কিংবা জলেতে কেউ ঘুম ভাঙা চোখে
যদি কেউ এভাবে ডানামেলে ডাকে
এসোনা এসোনা ফিরে কারো ডাকে তুমি
তোমাকে আর ভালোবাসবো না আমি।
(সংক্ষিপ্ত)