বাঙ্গালী হিন্দু মোসলমান সম্পর্ক ও সাম্প্রদায়িকতা



বাংলাদেশে যাঁরা বিভিন্ন দোহাই দিয়া হিন্দু নির্যাতনরে মুসলমান কমিউনিটির উপরে চাপাইয়া দিতে চায় তাগো দাবী-দুবীতে ঘাপলা আছে। আমি তাগো লগে এক্কেবারে একমত কেন জানি হইতে পারি না!এই দেশে হিন্দু কমিউনিটির উপরে যে অত্যাচার অনাচার হইতাছে তার লগে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে দায়ী হইলো পলিটিকস। হিন্দু নির্যাতনের জন্য পলিটিকসরে তাঁরা দায়ী না কইরা দায়ী করতাছেন মুসলমান কমিউনিটিরে? তাগো দাবী দাওয়ারে শক্ত করতে তাঁরা কিছু প্রশ্ন সাজাইয়া রাখেন। যেমন ধরেন "অ্যাভারেজ মুসলমানরা কেন হিন্দুদের মালাউন বলেন?'' "মুসলমানরা কেন হিন্দু মরলে ফী নারে জাহান্নামা বলেন?'' ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রশ্নগুলার পিছনে তাগো উদ্দেশ্য হইলো, সস্তা জনপ্রিয়তা পাইয়া আলোচনায় আসা, তাগো দুর্বল চিন্তা নতুবা তাঁরা বিদাশে বইয়া হিন্দু-মুসলিম কমিইউনিটির হালচাল না দেইখা হাপিত্তেস করতাছেন। ইন্টালেকচুয়্যাল সাজতে গিয়া তাঁরা ক্লাউন হইয়া যাচ্ছে।
তাঁরা যতই বাঙ্গালী কমিইউনিটি নিয়া বড় বড় বুলি কপচাক না কেন এখনো বাঙ্গালী হিন্দু-মোসলমানের মনের ভিতর ঢুকতে পারেন নাই। বাঙ্গালী মোসলমানের চিন্তা তাগো কাছে এখনো পরিচিত না। আমরা বাংলাদেশে হিন্দু-মোসলমান ভাই হিসাবে আছি। আমি বাঙ্গালী মোসলমান আর বাঙ্গালী হিন্দু আমার ভাই,সো আই লাভ মাই ভাই সো মাচ! একই বাড়িতে দুইটা ভাই থাকলে যেমন একটু গালাগাল ঝগড়াবিবাদ হয় তেমনি কইরা হিন্দু-মুসলমান বাস করতাছি। অ্যাভারেজ মুসলমান হিন্দুদের মালাউন মুখে বলে। মন থিকা, অ্যাভারেজ মুসলমানস না মাইনরিটিরা বলে। ওয়াজ মেহফিলে হইতে পারে এটা। ওয়াজ মেহফিলেও এখন হিন্দুদের নিয়া বিষোদগার হয় না এইটা ইন্ডিয়া না বইলা এইখানে পুলিশি হেফাজতে মেহফিল হয়। "কাফের,মোশরেক'' ইত্যাদি বলা হইতে পারে। একেবারে ডাইরেক্ট মুখে হিন্দু উচ্চারণ কইরা হয় না কইলেই চলে। মোসলমানরা যেমন হিন্দুদের "মালাউন'' মুখে বলে তেমনি হিন্দুরাও মুসলমানদের "শেখের পো'' "ন্যাড়া'' "আগাকাটা'' ইত্যাদি বলেন। এইটা তাঁরা মন থিকা বলে না, কারণ ভোর হইলেই তাঁরা আবার একই কমিইউনিটির মানুষ! তারা তো একই সোসাইটিতে ওঠাবসা করে। বিভিন্ন উপজেলায় তো এখনো একই বাড়িতে হিন্দু মুসলমান থাকে।(বরিশালের, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে এখনো দেখা যাবে)। তবে একই কমিইউনিটিতে থাইকা ক্ষেত্র বিশেষ বাঙ্গালী হিন্দুরা এমন অ্যাক্ট করে যে, মনে হয় মুসলমানরা তাগো গিইলা খাবে ভবিষ্যতে। এইটা তাগো দোষ না। এইটা পলিটিকস এর দোষ। আরো আছে কিছু অল্পে আলোচনায় আসতে চাওয়া অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট গণ লাইক অই সব প্রশ্ন তোলা লোকজন। বাংলাদেশে যতগুলা হিন্দুর বাড়ি পুড়ছে, যতগুলা হিন্দু মারা গেছে সবগুলা ফাসাদ আর হত্যার পেছনে জড়িত পলিটিকস। পলিটিশিয়ানরা হয় রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য হিন্দু-মোসলমান ফাসাদের উষ্কানি দিছে নতুবা ক্ষমতার জোড়ে হিন্দুদের বাড়িঘর দখল করছে। বাঙ্গালী মুসলমানরা তো এক হিসাবে হিন্দুদের ভয় পায় যে, এদের উপর অত্যাচার করলে আইনি ভাবে ফাঁইসা যাইতে হবে। এইদিক তাকাইয়াও তাঁরা হিন্দুদের লগে মানাইয়া চলতে শিখছে। বাঙ্গালী মোসলমানরা মনে করে যে, হিন্দুদের প্রচুর টাকা পয়সা আছে। তাঁরা মাটির ভিতরেও লুকাইয়া রাখে টাকা। তাই এগো কাজের সময় এরা টাকা দিয়া মামলা চালাইবে। হিন্দু বাড়িতে আগুন, তাগো জমিজিরাত দখল অথবা হত্যা এর পেছনে পলিটিকাল একটা কালো হাত থাকে। এরা ভোট কামাইতে বিরোধী দলরে ফাঁসাইতে এমন কাজ করে, না হয় হিন্দুদের সম্পদে এর জিহ্বা লকলক করে। নতুবা বাঙ্গালী মুসলমান কর্তৃক সাহস কইরা হিন্দুদের সাথে এসব ঘৃণিত আচরণ করা অসম্ভব। যদিও বা কইরা থাকে তার সংখ্যা নগন্য। এখন আপনি বলবেন, এই নগন্যই বা কেন করতে গেলো? ভাইসাব,এই নগন্যটা করার জন্য দায়ী হইলো ভারতের হিন্দু-মোসলমান প্রেক্ষাপট। আমরা যতই ভারতরে সড়াইতে চাই না কেন,সামান্য হইলেও ভারতের রাজনৈতিক আবহাওয়া আমাগো উপর আসে। সেইটারে ট্যাকল দেওয়ার মুরোদ আমাগো রাজনীতিকদের নাই। এখন প্রেক্ষাপট হিসাব না কইরা আপনে যদি মুসলিম কমিইউনিটিরে গালমন্দ করতে থাকেন তাইলে আপনাগো কাছে আমার প্রশ্ন থাইকা যায় "মোসলমান মোল্লা নামে পরিচিত লোকগুলা যে ইদানিং আক্রমনের স্বীকার হইতাছে তাগো দায় কার?'' আপনি তখন অজুহাত খুঁজবেন। আপনের আমার চিন্তায় পার্থক্যই হইলো এই!
তবে বর্তমানে মাঝেমাঝে যে হিন্দু নির্যাতনের কথা আমরা শুনি সেইগুলার পিছনে কিছু নেংটা ইঁদুর বিদ্যমান। এই নেংটা ইঁদুরগণ ফেসবুক বা ব্লগ থিকা হিন্দু-মুসলমান লড়াইয়ের সূত্রপাত ঘটায়। ফেসবুকে "জয় হিন্দু'' "নয়ন অমুক'' অমুক ব্লগ তমুক ব্লগ ইত্যাদি পেজ/ব্লগের মাধ্যমে এরা প্রতারিত হয়। এঁরা একটা হয় উগ্র মন মানসিকতার মুসলমান অন্যটা হয় ভারতীয় উগ্র হিন্দু সংগঠন কর্তৃক প্রভাবিত(প্রতারিত ও বলা যায়)। অনলাইনে এরা একে অপরের দেবী-পয়গম্বর নিয়া গালিগালাজ করতে করতে ফ্যাসাদের সূত্রপাত ঘটায়। বর্তমানে এইসব সাম্প্রদায়িক ফ্যাসাদের মধ্যে ভারতীয় কয়েকটা সংগঠন আছে বইলা আমি মনে করি। যারা বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের দোহাই দিয়া ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটাইবে। তাদের পায়তারা লক্ষনীয়! আর তাদের এই প্রচেষ্টারে উস্কে দেয় ভারতীয় হাইকমিশন। কোনখানে হিন্দু নির্যাতনের খবর পাইলে বাংলাদেশ সরকার যাওয়ার আগে এরা গিয়া হাজির হয়। আমি আশ্চর্য হই যে, কোন মুসলমানের এইরকম বিপদে ভারতীয় হাই কমিশন যান না! বোধকরি তেনারা জানেনই না বা জানতে চান না। ভারতীয় হাই কমিশন বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারতের জনগণ মনে করেন কিনা এই প্রশ্ন থাইকা যায়। আর কেনইবা ভারতীয় হাই কমিশন হিন্দুদের বাড়ি যান অন্য কোন সম্প্রদায়ের বাড়ি যান না এই প্রশ্ন কেউ তাগো করেন না। সরকার ও এই বিষয়ে চুপ থাকেন। বাংলাদেশে হিন্দু মুসলমান ফাসাদের নতুন নতুন পন্থা তৈয়ার করে আরো একটা গোষ্ঠী। এইটা হলো "হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ''। আশ্চর্য হবেন যে, এরা তিনটা একই কমিউনিটিতে থাকতে চায় আর তার থেইকা মুসলমানদের একেবারে বাদই দিছে! আমি অন্যকোন রাষ্ট্রে একক সংগঠনের কথা শুনছি কিন্তু এইরকম ৩ সম্প্রদায় নিয়া কোন সংগঠনের নাম শুনিনায়। প্রশ্ন থাইকা যায় যে তাহলে মোসলমানরা কি অপরাধ করছেন যে তাগো বাদ দিয়াই এই সাম্প্রদায়িক সংগঠন গড়া হইলো? যাইহোক। এই সংগঠনের হর্কাকর্তা আর সদস্যদের বক্তব্যও চরম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধাইতে পারে যেকোন সময়। এরাও ফেসবুকে গ্রুপ খুইলা মুসলমানদের আক্রমণের প্লান করে এমন খবর ও আমি জানি। তাঁরা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ-ব্লগে গালাগাল দেয় ও উস্কানিমূলক বক্তব্য পেশ করে। গরু নিয়া বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের একটা বক্তব্য আমার এখনো মনে আছে। ঐটা বিদাশে বইসা দিছিলো। কি সাম্প্রদায়িকই না ছিলো বক্তব্যটা! এদের বক্তব্য শুনলেই মনে হবে, এঁরা একটা দাঙ্গার অপেক্ষা করে সর্বদা। সরকার এই সংগঠনটা কেন বন্ধ করেন না এখনো আল্লা মালুম!
এই সংগঠনটা দাঙ্গাবাজ সদস্য দিয়া ভরা। এইটারে বাদ করা হোক।
SHARE

Mad Max

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image

0 comments:

Post a Comment