ক্র্যাঞ্চ/ কড়মড়

মূলঃ চার্লস বুকোস্কি
অনুবাদঃ সজল আহমেদ

এই একাকীত্বই মহান এটা যদি তুমি তোমার হাতে থাকা ঘড়ির কাঁটার গতিবিধির সাথে ধীরে ধীরে দ্যাখো।
ভালোবাসার কারণে আজ
মানুষ খুবই ক্লান্ত
বিকলাঙ্গ
মানুষ একে অপরের নিকট শুভ নয়
তাঁরা একে অপরের প্রতি
ধনীরা ধনীর সন্নিকটে শুভ নয়
এক ফকিন্নি অপর ফকিন্নির প্রতিও।
আমরা ভয়ে আছি।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের বলে; নিশ্চই আমরা সবাই একদা বড় মাপের বিজয়ী গাধা হতে পারব।
এটা আমাদের কখনো জ্ঞাত করেনি কোন বস্তিজীবন বা কোন আত্মহত্যা সম্বন্ধে।
অথবা একটা নির্জনস্থানে একাকী পরে থাকা কোন সন্ত্রাসী
অস্পৃষ্ট
অদৃষ্ট
কোন উদ্ভিদ ভরা জলার সম্বন্ধে।


মূলঃ
The Crunch“there is a loneliness in this world so great
that you can see it in the slow movement of
the hands of a clock.
people so tired
mutilated
either by love or no love.
people just are not good to each other
one on one.
the rich are not good to the rich
the poor are not good to the poor.
we are afraid.
our educational system tells us
that we can all be
big-ass winners.
it hasn’t told us
about the gutters
or the suicides.
or the terror of one person
aching in one place
alone
untouched
unspoken to
watering a plant.

সজল আহমেদ এর দুটি রাজনৈতিক কবিতা


বর্ডারে সুরঙ্গ খুড়ে রাখো

এখানে লেগে আছে রক্ত স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক
যারা জালিম; যারা দাজ্জাল; যারা জাহেল ; তাদের প্রতি আল্লার গজব নাজিল হোক!
আমি মরে যাওয়া লাশেদের কথা বলি
আমি পঁচে যাওয়া গলা লাশেদের কথা বলি
খুব সহজেই যাদের বুক ছেদ্র করেছিলো গুলি
আমি সেই সমস্ত অহেতুক মরে যাওয়া লাশেদের কথা বলি।
যারা জালেম; যারা খুনি ; তাদের উপর কনকর নিক্ষেপিত হোক
কুকুরের মতো মৃত্যু হোক; মৃত্যুকালে ওঁরা গুম হোক
এখানে লেগে আছে রক্ত স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক!


যারা মুখ থামাতে গুলি করে; তাঁরা মায়ের দুধ খায়নি
যারা মিছিল থামাতে রাবার বুলেট ছুড়ে; তাঁরা মায়ের উদরে জন্মায়নি।
বুলেটে থামাতে চাও?
এত সোজা?
ভেবেছ খু্ব সহজে থামিয়ে দেয়া যাবে?
দশ পৃষ্ঠার একটি পত্রিকা কয়টি লাশের খবর ছাপতে পারবে?
জাতীয় পত্রিকাওয়ালারা বুর্জোয়া মাদারচোদ!
এরা সাম্রাজ্যবাদীদের বাপ বানিয়ে ঘুরে বেড়ায় বাপেদের পকেটে পকেটে।
ওদের মৃত্যু হোক হ্যাঁ ওদের লাশ গুম হোক
এখানে লেগে আছে রক্ত স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক!


যারা জালিম; যারা দাজ্জাল; যারা জাহেল ; তাদের প্রতি আল্লার গজব নাজিল হোক!
যারা গুম হয়েছিলো, এবং যারা বিনাহেতু মরে কচুরিপানার শরীরে পরেছিলো
একদিন যদি কবর হতে জীবিত হয়
রাষ্ট্র সহ ওঁরা গুম করে দেবে জাতীয় সংসদ
এখনো এখানে ওখানে লেগে আছে তাজারক্ত আর স্টেনগান হতে ছিটে আসা বুলেটের থোক!


শহীদ লাশেরা চিবিয়ে খাবে শাসনব্যবস্থা, এমনকি রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর গদি।
জেগে ওঠার পর ওরা যদি মৃত্যুর হেতু জানতে চায়
আইন সংবিধান মন্ত্রী এমপিদের গাড়িবাড়ি প্রোপার্টি চিবিয়ে খায়
প্রতিটা মন্ত্রী ঘোৎঘোৎ করা শূয়রের ছানা
পালানোর পথ পাবে না!
লাশেরা জাগার আগে বাঁচার পথ দ্যাখো
বর্ডারে এখনই সুরঙ্গ খুড়ে রাখো।



রাজনীতি তুলে রেখে
.
রাজনীতি তুলে রেখে বগলে যাও ঘুমুতে যাও।
তিয়াত্তরটি কবিতা, ছিয়াত্তরটি লাশ
বর্নণাতিত মৃত্যুর আবহাওয়া
টিয়ারশোলে মিছিলের স্বাদ
জড়োসড় ইটের খোয়া
এখানে টায়ার পুড়ে ধোয়া
রক্তের দাগ নগ্ন পাঁচিলে
মানুষ অধিকার না পেলে
সম্পদ পুড়িয়ে দিতে পছন্দ করে
যেন শত্রুপক্ষ সেটি ব্যবহার না করতে পারে।
সাইনবোর্ডের সামনে মারামারি
ব্ল্যাক টী-শার্ট ছেলিটির মৃত্যু হয়েছে
প্রেমিকার আহাজারি
এসব যে ভুলে থাকে; খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওঁরা বুর্জোয়া
ওদের বিচি একটা নেই
নোমান ঘুমুতে যাবে না
নোমান মিছিলে যাবে।

গুচ্ছ প্রেমের কবিতা

গুচ্ছ প্রেমের কবিতা

ভাঙা কাঁচ
.
আমি একটি ভাঙা কাঁচ আর ভেঙে যাই বিভিন্নভাবে
ভাঙা কাঁচে রক্ত লেগেছিলো ছিন্ন হৃদয়ের।

কষ্টদায়ক স্মৃতি
.
অনুজ্জ্বল বর্বর অপরিচ্ছন্ন হে পশুসম অনুর্বর স্মৃতি
আমারে একটু ঘুমাইতে দিলে তোমার কী এমন ক্ষতি?


ঠিক যে কারণে
.
ঠিক যে কারণে ফুল হয়েছি; সে কারণেই খুন হয়ে যাই।

মোমবাতি
.
আমি এক প্রজ্বলিত মোমবাতি,
আলো দিচ্ছি তোমাদের অনবরত।
অথচ পুড়ে পুড়ে ডেকে আনি নিজের দুর্গতি!


প্রেমের রণাঙ্গনে
.
প্রেমের রণাঙ্গনে আমি আহত সৈনিক
ঠকেছে আমার কাফেলা
একটা পৃথিবীর সাথে যুদ্ধ করতে করতে
হেরে যাই, মুষড়ে পরি আঘাতে দৈনিক
এই রণাঙ্গনে আমি এক আহত সৈনিক!



প্রেমিকা একটা কুকুর সাদৃশ্য
.
ও পায়ে না, হাতেও না সরাসরি হৃদয়ে কামড়াবে
কামড়ানো হৃদয় আবার আগুনে ঝলসাবে!
ঝলসানো হৃদয়টি আবার পায়ে দলবে
এরপর ও ক্ষান্ত হবে না
কোন অনুরোধেও থামবে না
দূর থেকে ছলাকলা করে কাঁদাবে, কাঁদাবেই
  এরপরে আবার ফিরে আসবে
খেয়ে শেষ করে দেবে
পুনঃ ক্ষুধা পেলে
খাদ্য না পেলে
পুনঃ চলে যাবে।
চারিত্রিক দিক হতে
প্রেমিকা একটা কুকুর সাদৃশ্য



তুমি
.
 তোমায় দেখলেই আমার দেখা হয়ে যায় কাবা
তোমাতেই যত উপোস যত আরধনা
ভালোবাসা এমনই, প্রেয়সী দেবীর তরে প্রেমিক পূজারীর যত উপাসনা।
 ললাটে টিপ পড়েছো যেন বিস্তৃত টকটকে ঋক্ষরাজ
তোমায় আলতো ছুয়ে দিলে ছোয়া হয় হাজরে আসোয়াদ।
তোমার চুম্বনে আমার রোজ পূজো করা হয়ে যায়
যেন পূর্ণতা পায় প্রিয় হে অপূর্ণ হৃদয়।
তুমি ললাটে টিপ পড়েছো যেন বিস্তৃত টকটকে ঋক্ষরাজ
তোমাকে ভালোবাসাই আমার সমস্ত ইবাদত।




অধরা কেমন আছো?
.
হ্যালো! হ্যালো! হ্যালো!
বায়িং হাউজের জবটা আমি এবার সত্যিই পেয়েছি
কোন চাপা নয়
কুড়ি হাজার টাকা মান্থলি সেলারী !
হো হো
ফোন করতে তোমাকে কোন সমস্যা নেই আর;
সমস্যা নেই কিনে দিতে ভুঁড়ি ভুঁড়ি শাড়ি, চুড়ি, রিচব্যান্ড নিত্য নতুন উপহার।
হ্যালো! কেমন আছো?
অধরা ভালো আছো তো?
মনে আছে?
তুমি বলতে আমরা পালিয়ে যাবো চাটগাঁয়ে
ওখানে তুমি অ্যাডমিট হবে কোন একটা ভার্সিটিতে।
 তুমি পড়বে, আমি যাবো চকুরীতে
প্রত্যহ এক চুমু ঘুমুতে যেতে, বিকেলে এবং সকালে।
এতদিন যত চুমু জমা করে রেখে দিয়েছো
সব একসাথে খেয়ে নেবো!
মনে আছে?
আমরা পাঁচ বছর পর বাচ্চা নেবো ওর নাম হবে বল্টু
তুমি বলতে বল্টু নামটা খুউবই ফালতু
আমি তোমাকে বল্টুর মা নাম ধরে ডাক দিতাম খুব রেগে যেতে
'তুই তাইলে বল্টুর বাপ' তুমি বলতে।
আমি খুব হা হা করে হাসতাম।
একদিন হঠাৎ ফোনটা কেঁটে গ্যালো
আমার পকেট তখন পয়সাহীন গড়ের মাঠ
সামনেই পরীক্ষা তাই; আমি পয়সা যোগাতে নেমে গেলাম
তোমাকে ফোন দেওয়া হয়নি
তুমিও দাওনি
এভাবেই আস্তে আস্তে ফোন দেওয়া কমে যায়
সামনেই এক্সাম
আমার পয়সা সম্পূর্ণ যোগাড় হয়নি
কী করব এখন!
চিন্তা আমাকে চিবুচ্ছিলো
একদিকে এক্সামের টাকা
একদিকে তোমার সাথে যোগাযোগে ব্যর্থতা ;
 ফোনে আর কখনো ব্যালেন্স ভরতে না পারার ব্যর্থতায়
আমাদের দূরত্ব তৈরী হলো
এরপর একদিন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হলো!
সেকথা থাক আজ
আজ আমি জবটা পেয়ে গেছি
বেতন পুরো কুড়ি হাজার!
পুরানো কোন সমস্যা নেই আর
এখন আমরা হতে পারবো দুজন দুজনার।
হা হা হা হা!
তুমি চুপ কেন?
কোন সমস্যা কী ?
কথা বলছ না যে?
শরীরটা ভালো?
জ্বর নাকি?
হ্যালো!
অধরা কেমন আছো?
হ্যালো.. হ্যালো..
অধরা শুনছো?
হ্যা.. হ্যা..হ্যালো....



বুক ভাঙার ইতিহাস
.
ইতিহাস লেখার জন্য কতশত ইতিহাসবীদ, বুক ভাঙার ইতিহাস লিখতে শুধু রয়েছে কবিরা


আমার কোন শূণ্যতা ছিলো না
.
আমি তখন প্রেমিকার কথা ভাবছি
প্রথম চুম্বন
এভাবে প্রাক্তন হয়ে গেলো?
আমি হাঁটছি
আমার সাথে হাঁটছিলো একটি ক্লান্ত দুপুর
ছেষট্টিটি নির্বোধ গাড়ির হর্ণ।
আমি দাঁড়ালাম
এবং প্রশ্ন করলাম 'হে দুপুর! ও চলে গেলো কেন?'
দুপুর জবাব দেয় - 'নিজের শূণ্যতা নিজেই খোঁজো।'
আমি আমার প্রেমিকার জন্য কখনো বেটার ছিলাম নাকি ও আমার জন্য ঠিক জানি না
তবে জানি, আমার ভালোবাসায় কোন শূণ্যতা ছিলো না।
আমি হাঁটছি
আমার সাথে হাঁটছিলো একটি ক্লান্ত দুপুর
ছেষট্টিটি নির্বোধ গাড়ির হর্ণ।




পাখি
.
জানো কী
এখনো বেঁচে থাকি
 শরীরে নিয়ে তোমার ঘ্রাণ।
তোমাকে তাড়াতে পারিনি বলে আজো ভুগি ভিষন শূণ্যতায়
হিমোগ্লাবিন হয়ে মিশে গেছো রক্তকণিকায়!
চলে যাও ছেড়ে দাও আমাকে
খুব ব্যথা করে বুকে
আমার রক্তক্ষরণ হয় হৃদয়ে!


একাকী
.
একা একা ভালো থাকা যায়
আমার কোন দুঃখ নেই একাকী
একা থাকার প্রচেষ্টায়
আমি একা থাকতে শিখে গেছি।




নপুংসক স্মৃতি
.
এখনো আমার জেগে থাকা হয় রাতে
তুমি কি জাগো?
এখনো কাঁদা হয় রাতে
তুমি কী কাঁদো?
শুধু একটি প্রশ্ন বারবার
বিভিন্নভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজেকে করি; কেন কোন দোষে কিংবা ত্রুটিতে তুমি চলে গেলে?
হে নপুংসক স্মৃতি
তোর পায়ে ধরি আমারে একটু ঘুমাইতে দে বাপ!


পুড়ে ফেলি স্মৃতি


না না এভাবে যদি চোখে জমা করে জল
কাঁদি নিরবধি যদি রূপে মাকাল ফল
এভাবে যদি কেঁদে পাওয়া যেতো তাঁরে
অাজন্ম পাপ চেপে নিজের শরীরে
কিরিচের কোপে কেঁটে জমিত অপরাধ
ধর থেকে মাথা কেঁটে ঘুচাতাম অপবাদ
এসে এনে বসাতাম তাঁরে সোনার চাদড়ে
আর কত স'বো বাতায়নে বাতাসের বেগ?
পুড়ে ছাই মরেছে হৃদয়ের যত ভাববেগ
তাম্র লিপির যুগ নেই কাগজের ভীড়ে
কোথা প্রেম বিরহ লিখে রাখি বলো তো কার শরীরে?
বারবার যদি ভুল করে ফুল ছুতে যাই;
ছুতে গিয়ে বারবার এভাবে যদি নাই হয়ে যাই
খুঁজে খুঁজে তাঁরে যদি এত অবহেলা পাই
ধুলোমাখা চিঠিগুলো পুড়ে করে দেবো ছাই।


বদদোআ
.
বিরামহীন বেদনার পরে আমি এই সিদ্ধান্তে সিদ্ধহস্ত হই; আমি নিজের ভিতরে তুমি নামক কষ্টটা গুম করে দেবো!
আমি গিলে খাবো তোমার নাম
আর কবর রচনা করব তোমার সমস্ত স্মৃতি
যা আমাকে তিলে তিলে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিলো বিভিন্ন ভাবে এ অবধি!
কষ্ট হলো পরজীবি সাদৃশ্য
কখনো কোন কষ্ট কে পুষে রাখতে নেই।
পরজীবি পুষে রাখলে ও আন্ডা পাড়ে, তা দেয়, বাচ্চা ফুটে
এক থেকে একাধিক হতে হতে সর্বশেষে পার্মানেন্ট আবাসস্থল করে নেয়
আমি নিজের ভিতরে কবর রচনা করব তুমি নামক পরজীবির এবং আমার যাবতীয় কষ্টের।
তুমি নামক কোন বেদনা
আমার হৃদয়ে বিদ্ধ হবে না
আমি আর কাঁদবো না কখনো রাতে
বলব না কোন কথা তোমার স্মৃতির সাথে
যতটা বর্বর রাত আমি কেঁদেছি
একদিন সবকিছু তুমি ফিরে যেন পাও
আমি বদদোআ করি, তুমি কখনো যেন সুখী না হও।



বিধুর বিরহে
.
অায়াত
এখানে নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে দেখি ঝাঁকে চলা মাছ
তখন লেগে এসেছিলো সাঁঝ
পশ্চিমের লাল আকাশে আমি তখনো কারো চোখ ভাঙা নোনা জল দেখিনি
আকাশ
ভিজে ছিলো না কোন সমুদ্রসম বেদনে।
এ বিধুর বিরহে
আমার মনে পরে শুধু তোমাকে
আমার লাগে খালি খালি
সমুদ্রে পোড়া বালি
তপ্ত হওয়ার মতো
হৃদয় পুড়ে গেলে
আর কখনো অনুভূতি জাগ্রত হয় না।
তোমার কী অনুভুতি পুড়ে গেলো?


তুমি চৈতি হাওয়া
.
তুমি যেন চৈতি হাওয়া এসে লাগো উদম শরীরে;
শিশিরের অনুভূতি নিয়ে ঘাসেতেই যাব মরে।

সাংবাদিক ইংরেজী অনুবাদ সহকারে


সাংবাদিক 

- সজল আহমেদ

আমি মৃত্যুর আগে ঈশ্বরকে আবদার করলাম 'পরজন্মে তিনি যেন আমাকে সাংবাদিক রূপে প্রেরণ করেন। '
ঈশ্বর নিশ্চুপ।
ঈশ্বর চিন্তিত
তাঁর মাথায় হাত
কী যেন ভাবছিলো চুপচুপ।
নিশ্চুপ চিন্তাবিদ ঈশ্বরের মৌনতা ভাঙাতে
আমি আবারও তাকে পুনরায় করলাম এ আবদার।
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বর হেতু জিজ্ঞেস করলে আমি জবাব দিলাম- 'আমার মায়ের স্বপ্ন ছিলো আমি সাংবাদিক হিসেবে পৃথিবীর মুখ উজ্জল করবো অথচ আমি হয়েছিলাম একজন পিকেটার।
শুনেছি মায়ের দোআ কবুল হয়
এহ জগতে আমি একথার সত্যতা পাইনি
স্বচক্ষে কোন মায়ের দোআ কবুল হতে দেখিনি।
হে ঈশ্বর পৃথিবীর সব মা আমার মা নন;
অতএব আমি চাই অন্তত আমার মায়ের দোআ কবুল হোক।'
ঈশ্বর নিশ্চুপ।
ঈশ্বর চিন্তিত
তাঁর মাথায় হাত
কী যেন ভাবছিলো চুপচুপ।
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বর আমার জান কবজ করার হুকুম দেয়ার পরপরই আমার পরজন্মের প্রসেসিং চলতে লাগলো।
ধাপ এক এ-
আমার চারটি পা গজালো
থুতুনিতে দাঁড়ি হলো
কন্ঠে ম্যা ম্যা ডাক।
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বর তখনো ভাবছেন।
ধাপ দুই এ-
ঈশ্বর তখন আমার খাদ্যচক্রের কথা ভাবছেন....
আমার সামনে পঁচাঘাস তার সামনেই ছিলো সুগন্ধি কোরমা পোলাও
আমি সুগন্ধি কোরমা পোলাওয়ে মুখ না দিয়ে মুখ দিলাম পঁচাঘাসে।
ধাপ তিন এ-
মাথায় হাত চিন্তিত ঈশ্বরের মুখে হাসি- 'হ্যাঁ পারফেক্ট! তোমার মায়ের দোআ কবুল হয়েছে!'

এইটার অনুবাদ :
(অনুবাদক হিসাবে আমি ক্লাশ টু এর ছাত্রর মতো। কিছু কিছু অর্থ না জানায় অর্থগত ভাবে কিছু জায়গা পাল্টে গেছে এজন্য দুঃখিত)
English translation:

Journalist

(Translated By Sajal Ahmed)

I confess to God before my death "In the post-birth, he should send me as a journalist. '
God is silent
God is worried
Hands on his head
God was worried about something quietly.....
I redeem the Intellectual God's silence,
I re-petition to him.
When God asks the reason why
I replied - ''My mother's dream was that, 
I would brighten the face of the world as a journalist, whereas I was a gangster. 
I heard that, the prayer of the mother was accepted
I have not found any truth in this proverb!
I have never seen any mother's prayers to be accepted.
O God, all the mothers of the earth are not my mother;
Therefore I want to accept the prayer of my mother at least. ''
God is silent
God is worried
Hands on his head
What did God think was silent.
 Imagine immediately after, the God ordered me to take away my life
My generation started processing...
Step one -
I woke up four legs
The beard is spit upon
I Called like a goat!
God is worried the and he still thinking....
Step two-
God is thinking about my diet cycle ....
The crisp grass in front of me was fragrant flesh and Pulaos.
I do not eat perfume flesh and pulaos
 I raised my face in the crisp grass.
Step Three-
 Worried God's
Smile on his face
and he shouted with joy
'Yes Perfect! Your mother's prayer has been accepted! '

সজল আহমেদ এর কবিতা: আব্দুল আজীজ



আব্দুল আজীজ
- সজল আহমেদ


১. 
আব্দুল আজীজ সাব! 
আপনি এত কামালেন 
টাকা, 
তবুও 
আপনার সম্পদের কোন হিস্যা হবে না! 
আপনি হেঁটে যান, আমি উগ্র গন্ধ পাই! 
আপনি এত টাকা দিয়ে কি করবেন? 
প্লিজ পারফিউম কেনেন। 
টাকা দিয়া কি বাবা ডাক শুনতে পরবেন? 
আপনার একটি বাচ্চা। 
জুন এ দশ বছরের হলো। 
আপনার বাচ্চা। ও খেতে চায় না। ও কথা বলে না। ও মরে যায় না। ও মরতে চায় না। 
ছোটবেলায় যখন ডাক্তার দেখাতে নিয়েছিলেন, 
ডাক্তার বলেছিলেন, পাঁচ বছর পর আপনার বাচ্চা ঠিক হয়ে যাবে। আপনাকে ডাকবে আব্বা। 
আজ 
 দশবছর 
হয়ে গেলো 
দামড়া পোলাটা 
ও কিন্তু আপনাকে 
 একটিবারের তরেও 
আব্বা ডাকলো না! 
২. 
 আব্দুল আজীজ! 
আপনি ওকে গলায় বেঁধে দিয়েছেন তাবীয। 
আপনার 
যেন ও কথা বলে, খায় আর হাটতে পারে। আর আপনাকে আব্বা ডাকে। 
অমুক ফকিরের কারামতি ভরা তাবীয, 
এ তাবীয গলায় দিলে পুরুষের গর্ভে ও সন্তান হয়ে যায়! 
কিন্তু আজীজ কি লিখে এনেছেন আপনার কপালটায় 
কে জানে! 
আপনার বাচ্চাটা এ তাবীযেও মুখ খুলে না! 
আব্দুল আজীজ সাব 
আপনার বেঁধে দেয়া তাবীযে কোন কাজ করে না! 
আপনার 
সন্তানটি 
আপনাকে 
ডাকে না 
বাপ! 
৩. 
ও অসুস্থ হয় কিন্তু মরে না 
আপনি চান ও মরে যাক 
বোঝাটা কমে যাক। 
কিন্তু কি? 
ও মরবেনা। 
ও অসুস্থ হলে আপনিই ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান 
অথচ আব্দুল আজীজ! 
বাচ্চাটা মরে যাক আপনি চান। 
আজীজ আপনি থামুন! 
তবে কেন ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান? 
আব্দুল আজীজ আপনি কিন্তু থামেন না! 
আপনি থামবেন ও না! আপনার সন্তানটিকে বাঁচাতে হবে। আপনার আশা হয়তো বিশটি বছর পর; 
ও আপনাকে আব্বা ডাকবে! 
কিন্তু কী? 
আব্দুল আজীজ সাব 
আজ 
 দশবছর 
হয়ে গেলো 
দামড়া পোলাটা 
ও কিন্তু আপনাকে 
 একটিবারের তরেও 
 ডাকলো না বাপ! 
৪. 
আপনি যতই বলুন এ সন্তানটির জন্য আপনার মায়া আছে, ভালোবাসা আছে। আমি জানি। নয়তো কবেই গলাটিপে ওকে মেরে ফেলতেন! 
৫. 
এরপর একদিন আপনার সন্তানটি অসুস্থ হলো; আপনি দেখতে পেলেন ওর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে খুব! চোখ দুটো উপরের দিকে রেখেছে কাউকে দেখার মতো। আর জিহ্বা বের করে তৃষ্ণার্ত বিড়ালের মতো। 
আপনি কাঁদছেন আজীজ সাব? 
আপনিও কাঁদেন? কাঁদতে আপনি জানেন? 
আপনাকে কাঁদতে দেখলাম এই প্রথম! 
আপনি কাঁদেন 
কারণ আপনি জানেন 
এই বাচ্চাটি আজ মারা যাবে! 
আর আব্দুল আজীজ সাব 
দশটি বছর একটা কুকুর পুষলে, ঐ কুকুরের প্রতি ও মায়া পরে যায় 
আপনি ওরঁ প্রতি সকল গাফেলতি- অবহেলার কথা ভাবছেন; 
আর আজীজ সাব এসব ভেবেই আপনি কাঁদছেন! 
৬. 
আপনি দেখতে পেলেন একসময় আর বাচ্চাটি নড়ছে না 
আপনি জোড়ে জোড়ে কাঁদছেন! 
কারণ ও মরে গেছে! 
নিচ্ছে না কোন দীর্ঘশ্বাস 
আঃ আজীজ আজ দশবছরে ওর আয়ু শেষ হয়ে গেলো 
কিন্তু 
 
আপনাকে 
ভুলেও 
ডাকলো না 
আর 
বাপ! 
৭. 
মানুষ কয় প্রকারের কুত্তারবাচ্চা হতে পারে, বাচ্চাটা মারা যাবার পরপরই আপনি বুঝলেন! 
যারা বেঁচে থাকতে একটা দিন ও বাচ্চাটাকে দেখতে এলো না, 
তাঁরা আপনার কাঁধে হাত দিয়ে বলে "ইস যদি একটিবার ডাক্তারখানা নিতেন তাহলে হয়তো বেঁচে যেতো!'' 
কেউ বলে "চিকিৎসার অভাবে বাকহীন ছিলো বাচ্চাটা!'' 
আবার কেউ কেউ চোখের জলে আপনার দাঁড়ি ভিজিয়ে দেয়! 
আপনি শুধু দেখেন। অথচ কিছু বলতে পারেন না! কারণ মরে পরে থাকা বাচ্চাটা আপনার! 
৮. 
আজীজ সাব 
আপনি এখন ভাবছেন, 
ওকে জন্মানোই আপনার ছিলো মহাপাপ 
কারণ 
আজীজ সাব 
এই দশটি বছর ও থেকে গেলেও 
একটিবার 
ডাকলোনা 
আর বাপ! 
২১/০৩/২০১৭ 

ভালোবাসার মানুষ কবি ইউসুফ বান্না

ইউসুফ বান্না ভাই
ছবি: রাশপ্রিন্ট

বছরের পর বছর আমি বহু সাংবাদিক, লেখক, বহু কবি, বহু কিছু দেখছি কিন্তু আমার ২২বছরের লাইফে জ্ঞান হওয়ার পর একজন ইউসুফ বান্না ভাই কখনো দেখিনি। তিনি আমার কাছে আহমদ ছফার মতোন। যাঁর কোন স্বার্থ নাই সাহিত্য করায়। বিনাস্বার্থে তিনি সাহিত্য করেন। কবিতা লিখেন, ছবি আঁকেন। আর ভালোবাসেন ঐ ছবিগুলো মানুষরে দেখাইতে। শো-অফ বইলা কিছু তাঁর মধ্যে নাই। তবে সম্ভবত ছবি আঁইকা বিক্রি করতে পারেন আমার জানা নাই অত। বান্না ভাইরে আপনার মনে হবে যে 'ক্রেজি পার্সন।' আপনি ভাবতেও থাকবেন এমনই। কিন্তু তাঁর মতো পিস বেশি একটা আমাগো বাঙলা সাহিত্যের অঙ্গনে দেখা যায় না। বান্না ভাই এমন যে, আপনারে শিখাইবো খুব গোপনে আপন কইরা। আর আপনার মধ্যে নিঃস্বার্থ গাঁইথা দিবে ভালোবাসার বীজ যা আপনারে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট কইরা ফেলবে।

আমাগো সাহিত্যাঙ্গনের উপর তলায় যারা থাকে ওরা সব শালারা হইলো মাদারফাকার! একেবারে স্বজনপ্রীতিতে ভরা রাজনৈতিক নেতাগো মতোন এই বাইঞ্চোদগুলা। আপনারে চিনে তো কাম হইছে, আপনারেই প্রোমোট করবে। চিনে না তো আপনি তাগো কাছে গেলে এমন ভাব ধইরা থাকবে যে তাঁরা শিরু খাঁ আর আপনি তাগো ভৃত্য! বেশ্যার দালালগুলা মেয়েদের ক্ষেত্রে আবার সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুন্দরী হইলে কোন কথাই নাই!

 বান্না ভাই উপর তলার কিনা জানি না, তবে তিনি উপর তলার হইলেও তিনি এ মাদারফাকারগো থিকা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমারে যদি কেউ জিগায়, তোমার এই পৃথিবীতে অচেনা লোক এমন কারে ভালো লাগছে? আমি নিঃসংকোচে কমু 'সে ইউসুফ বান্না ভাই।' আমি সিনিয়রদের মধ্যে এই একটা মানুষরেই সম্মান করি। তাঁর সাথে আমার মাত্র একদিন কথা হইছে, কোনদিন দেখাও হয়নি বা তিনি আমার জন্য কোথাও সুপারিশ করছেন তাও না। একজন ভালো মানুষরে চিনতে বেশি সময় মূলত লাগে না। আমার পক্ষে একদিনেই সম্ভব হইছে এইটা। 

হঠাৎ একদিন আমি আমার চরিত্রগত ভাবে ধুমচে ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট পাঠাইতেছি এর মধ্যে বান্না ভাই ও ছিলেন। তাঁর কাছে ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট চইলা গেছে। তিনি প্রথমে আমার টাইমলাইনটা ভালো কইরা চষলেন। আমার একটা কবিতা এই কবিতাটা তাঁর ভালো লাগছিলো

'সিগারেট আমারে খাইতে থাকলে একবার কইলাম; এইবার থামো!
সবই যদি খাও একবারে
খাইতে পারবানা আর কখনো।'

তিনি আমারে ইনবক্স করলেন নিজ থিকা। জানাইলো কবিতাটা ভালো লাগছে। এরপর তিনি আমারে কইলো, রিলেকরে চিনো? আমি তখন কোন বাল ও চিনি না। না কোন বাল ও জানি। এখনো যে অনেক কিছু জানি, চিনি তাও না। তখন আরো চিনতাম না। আমি সোজাসুজিভাবে কইলাম, না। তিনি আমারে কইলেন, মারিয়া রিলেকের কাছে তাঁর ভক্তের চিঠিগুলো পড়ছো? আমি কইলাম, না ভাই। তিনি আমারে রিলেকের ঐ চিঠি যোগাড় কইরা দিলেন। আমি তাঁরে জোগাড় কইরা দিতে বলছিলাম কিনা মনে নাই।

আমি ভাবতেছিলাম- 'লোকটার মধ্যে ক্রেজিনেস আছে সম্ভবত! নতুবা চিনে না, জানে না তিনি কেন আমারে এইসব জোগান দিতেছে?' 
তিনি আমার সাথে এমন কইরা কথা কইতে ছিলো যেন আমার লগে তাঁর লগে অনেক আগ থিকা পরিচয়। ফোন নম্বরটা দিয়া কইলো, ঢাকায় আসলে যোগাযোগ কইরো। মনে হইতেছিলো চেনাজানা অনেক আগের। 
তখন আমার প্রোফাইলে সিগারেট মুখে একটা ছবি ছিলো, তিনি আমারে ঐটা নিয়া বললেন, বললেন ঐসব ব্যাকডেটেড। আমি খুব মাইন্ড করছিলাম অবশ্য এবং বলছিলাম, নিজরে মার্কেটে উঠাইতে ঐসব করতেছি। তিনি কইলেন, তুমি মার্কেটে উঠলে এমনেই উঠবা। আমার কেমন যেন গুরুগিরি মনে হইলো ব্যাপারটা। আমি তাঁর ঐকথাটা পাত্তা দিলাম না।
আমার মুখের অবস্থা তো জানাই সবার। আমি আমার মতো তাঁর লগে 'বালবোল' আকথা কুকথা সবই কইলাম, মজার ব্যাপার এই মানুষটা একটুও মাইন্ড করতেছে না অথচ সে আমার বয়সে কমসেকম ১৫-২০ বছরের বড় তো হবেই!
খু্ব স্বাভাবিক চেনাজানা মানুষের মতো তিনি আমার লগে কথা কইতেছিলেন মনে হইতেছিলো আমরা দুই বন্ধু। এই বিষয়টা আমারে ভিতর থিকা ইন্সপায়ার্ড করছে! সবচেয়ে বেশি ইন্সপায়ার্ড হইছি, তাঁর অহংকার শূণ্য মনুষ্যেত্ব দেইখা। এত জানাশুনা, এত বড় মাপের একজন কবি অথচ সামান্য অহংবোধ নাই নিজের মধ্যে।


তাঁর সাথে আমার অনেক কথা হইলো। আর্ট নিয়াও কথা হইলো, কথা হইলো সাহিত্য, রাইসু, মজহার ইত্যাদি নিয়াও। 
একপর্যায়ে তিনি কইলেন, তাঁর প্রেমিকারা কল দিতেছে। তিনি কল ধইরা আইসা ফের আমারে আরো অনেক বই জোগাড় কইরা দিলেন। যেমন, কবিতার ক্লাশ, কবিতা কী, বাংলাদেশের ইতিহাস, সৈয়দ শামসুল হক এর একটা বই এবং কবি নির্মলেন্দু গুণ এর কয়েকটা বই। বই জোগান দিয়া কইলেন সেইগুলা পড়তে।
ঐই শেষকথা। আমিও তাঁরে আর নক করিনাই, তিনিও না।


আমি বইগুলা সংগ্রহে রাখি ঠিকই কিন্তু তখন আর পড়িনাই। বাল পড়মু? তখন পড়ার প্রতি অত আমার আগ্রহ নাই। এইভাবে চইলা গেলো একটা বছর। একবছর পর আমি যখন বইগুলারে পড়তে নিলাম, তখনই মনে হইলো, এই লোক তো আমারে নিজের স্বার্থে কিছু দেননি! এই লোক তো আমার ভিতর থিকা ভালো কিছু বাইর করতে এইসব সাজেস্ট করছেন একেবারে বিনাস্বার্থে! 
আমি ভাবতেছিলাম, কেমনে এইরকম একজন কবি হইতে পারেন? আমাগো সিনিয়র কবিরা তো চায় না তাগো থিকা কেউ একজন ভালো লিখুক। চায় না কেউ একজন তাঁরা চইলা যাওয়ার পর তাগো স্থান দখল করুক। কেউই চায় না। তাঁরা কোন লেখক তৈরী কইরা যায় না। আমি বান্না ভাইয়ের মধ্যে নিঃস্বার্থ যে রূপটা দেখছি,।এইরকম নিঃস্বার্থ মানুষ ছিলেন আমাগো আহমদ ছফা। যিনি তরুণ লেখকগো সবসময় নিজের পাখনার তলায় রাখছেন। লেখক তৈরী করছেন। এমন হইছে যে তিনি নিজ দায়িত্বে তরুণ মেধাবী লেখকগো লেখা ছাপাইতে প্রকাশকদের দুয়ারে দুয়ারে গেছেন! জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর প্রথম উপন্যাস তিনিই পাবলিশ করায়ে দেন। বান্না ভাইও এমন। হয়তো কারো বই পাবলিশ না করুক, কিন্তু বাংলা সাহিত্যে মেধাবী লেখক আসুক এইটা তিনি মনেপ্রাণে চান। বান্না ভাইরে বেশি কেউ একজন চিনবে না। বাংলাদেশের স্বজনপ্রীতিময় সাহিত্য পরিবারে মেধাবী এই মানুষটা বিখ্যাত বা প্রতিষ্ঠিত না। না তাঁর সম্বন্ধে কেউ একটা বেশি জানবে। কারণ তিনি নিজ থিকা কাউরে দেখাইতে যান না। শো-অফ জিনিসটা তাঁর মধ্যে নাই। লুকায়ে লুকায়ে থাকেন তিনি।

কিন্তু সমস্যা হইলো, ভালো মানুষরা লুকায়ে থাকতে পারে না। পৃথিবী তাগো বিভিন্নভাবে মানুষের সামনে হাজির করে। আর তাঁরা সিক্ত হয় মানুষের প্রকৃত ভালোবাসায়। অবিরাম ভালোবাসা ইউসুফ বান্না ভাইয়ের প্রতি।

রবীন্দ্র সমালোচনা


সজল আহমেদ
বাংলা সাহিত্যে পদার্পণ মানে আপনি ইতোমধ্যে রবীন্দ্রনাথ পাঠ করে ফেলেছেন। বঙ্গে রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে বাংলা সাহিত্য পাঠ মানে-লবনহীন তরকারী। কোন এক অদৃশ্য হাত বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ পাঠ বাধ্যগত করেছেন। সেই ছোটবেলায় শুরু জাতীয় সংগীত "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি" থেকেই আপনার আমার রবীন্দ্রনাথ পাঠ শুরু হয়েছে। এরপর "ব্যক্তিস্বাধীনতা" বোধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ইচ্ছা হোক আর অনিচ্ছা হোক রবীন্দ্রপাঠ বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক শ্রেণীর পাঠ্য বইতে রবীন্দ্রনাথ থাকবেই। সরকার পাল্টালে শ্রেণী বিশেষ প্রবন্ধ-কবিতা পাল্টে যায়, কোন কোন পূর্ববঙ্গের লেখকও হয়তো পাতা থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। রাজনৈতিক দাঁড়িপাল্লায় এক সময় অদৃশ্য হয়ে যাবে আল-মাহমুদ ও সোনার নোলক। ইতোমধ্যে ফররুখ আহমেদকে খুঁজে পাচ্ছিনে পাঠ্য বইতে। কিন্তু পাঠ্যবইতে রবীন্দ্রনাথ থেকেই যাবে, থাকতেই হবে থাকা চাই-ই চাই। মাদ্রাসা শিক্ষাতেও রবীন্দ্রনাথ স্থান পেয়েছে শুনেছি। শুনে ভালোই লেগেছে। মাদ্রাসা ছাত্ররা স্যেকুলার হবে, মাদ্রাসা ছাত্ররা রবীন্দ্রনাথ জানবে রবীন্দ্রনাথ পড়বে। রবীন্দ্রনাথ থাকবে তাদের কল্পনায় মহাপুরুষ হিসাবে। যদিও রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের জমিদার এবং তাঁর পূর্বপুরুষের ভিটে পূর্ববঙ্গে থাকা সত্ত্বেও পূর্ববঙ্গের প্রজাদের ছেলেমেয়ের জন্য কোন পাঠশালা, মক্তব বা অন্যকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়েননি বা তাতে সাহায্যও করেননি। তবুও রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গে বাধ্যতামূলক ভাবতেই কী ভালো লাগে! কেন রবীন্দ্রনাথকে বাধ্যতামূলক করা হল? এ প্রশ্নের জবাবে রবীন্দ্র ভক্তদের কাছ থেকে আমি যে জবাব পেয়েছি তা উদ্বৃত করলাম-
"রবীন্দ্রনাথ (১৮৬১-১৯৪১) থাকবেই বা না কেন! এক দৃষ্টিতে দেখতে গেলে যেভাবেই হোক তিনি বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলা সাহিত্যকে তিনি সারাটা জীবন দিয়েই গেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে বাঙ্গালীদের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ১৩টি উপন্যাস, ৩৮টি নাটিকা, ৩৬টি প্রবন্ধ, ৯৫টি ছোটগল্প, ১৯১৫টি গান ও ২০০০টি ছবি উপহার দিয়েছেন। তাঁর সাহিত্যের গুণগত মান নিয়ে কে আছে প্রশ্ন তোলার? এখনো কি জন্ম হয়েছে সে ধূর্যটির?"
হ্যাঁ বন্ধুটির দাবী একেবারে অমূলক নয়। রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ নয়। কবি হিসাবে তিনি খুবই পরিশ্রমী ছিলেন, কারণ সাহিত্য করতে তিনি তাঁর জীবনে প্রচুর সময় পেয়েছেন যা অন্যরা খুবই কম পেয়েছেন বাংলা সাহিত্যের জগতে। পারিবারিক সূত্রে জমিদার হওয়ায় রবীন্দ্রনাথের ধনসম্পদের কোন পিছুটান ছিলোনা। তাই সাহিত্যের পিছনে তিনি তাঁর সারাটা জীবন ব্যয় করেছেন। কিংবা তাঁর লেখার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো কোন ধূর্যটি অবশিষ্ট নেই। থাকলেও তাঁরা চাপা পড়ে আছেন বা তাদের চাপা দেয়া হয়েছে। একথা সর্বমহলে সর্বজনবিদিত যে রবীন্দ্রনাথের লেখার কদর তাঁর নোবেল প্রাপ্তির পরে হয়েছে। এর আগে তাঁর কোন গ্রন্থ ফ্লপ হওয়ার ভয়ে কোন প্রকাশক ছাপতে চাইতো না। সে সময়কার সাহিত্যিকগণ রবীন্দ্রনাথকে নিতান্তই অশিক্ষিত ভাবতেন।
"ঠাকুর নোবেল প্রাইজ প্রাপ্তির পূর্বে প্রায় অশিক্ষিত ব্যক্তি হিসাবে গণ্য হতেন। আমার ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্রে ঠাকুরের একটি রচনা থেকে উদ্বৃতি দিয়ে সেটাকে বিশুদ্ধ ও সাধু বাংলায় লেখার নির্দেশ ছিল।" [জাস্টিস আব্দুল মওদুদ, মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশ; সংস্কৃতি রূপান্তর-পৃষ্ঠা ৪০৮]
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নাতী সুরেশচন্দ্র সমাজপতি, ১৩১৯ বঙ্গাব্দ কার্তিকের সাহিত্য সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে মন্তব্য করলেন,
"ইংল্যাণ্ডে রবীন্দ্রনাথ সম্বর্দ্ধনার খবরে দেখিতেছি- ইংল্যাণ্ডের অনেক সুধী স্বীকার করিতেছেন যে, রবীন্দ্রনাথ বর্তমান যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ও ভাবুক-এ বিষয়ে তাঁহার তুল্য দ্বিতীয় ব্যক্তি জগতে কোন দেশে নাই। আনন্দের কথা নয়? তবে কিনা দেশের লোক এতদিন তাহা বুঝতে পারে নাই। ইদানীং রবীন্দ্র ভক্তবৃন্দের বগলেই বিরাজ করেন দর্শন দুর্ঘট। বিস্ময়ের কথা এই যে, দেখিতে দেখিতে জগতের সাহিত্য এত দরিদ্র -প্রায় দেউলিয়া হইয়া গিয়াছে যে রবীন্দ্রনাথ সর্বশ্রেষ্ঠ বলিয়া পরিগণিত হইলেন। কোন কোন সুধী এই জগতব্যাপী কবি জরিপের সার্ভেয়ার ছিলেন,তাহা বলিতে পারিনা। যাঁহারা আমাদের ধন্য করিলেন, তাঁহারাই ধন্য।" [জোতির্ময় রবী ও কালো মেঘের দল; পৃঃ ৯-১০]
পত্রিকায় তাঁর লেখা ছাপা হত কিন্তু গ্রন্থাকারে কবির লেখা সে নিজের টাকাতেই অথবা আত্মীয়েরা ছাপাতো। ১৮৯৬ সালে তাঁর ভাগ্নে একটি বই ছেপেছিল যা সেলফেই সাজানো ছিলো কেউ কেনেননি।
"শুনা যায়, সেই বইয়ের বোঝা সুদীর্ঘকাল দোকানের শেল্ফ ও তাঁহার চিত্ত কে ভারাতুর করিয়া বিরাজ করিতেছিল।" [ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ: অমিতাভ চৌধুরী-পৃঃ৭৮]
এমন সময়ও কবির অতিবাহিত হয়েছে যে, অর্ধেক দামে তাঁর বই বিক্রি করতে হয়েছে, বা এক তৃতীয়াংশ দামে তাঁর গ্রন্থের কপিরাইট বিক্রি করেছেন।
"১৮৯৬ সালে 'রবি মামার' প্রথম কাব্যগ্রন্থগুলি প্রকাশ করেন তিনিই। তারপর বহুবছর রবীন্দ্রনাথ কে এ বিষয়ে অনেকটা নিজের উপরই নির্ভর করতে হয়েছে। নিজের খরচে তিনি বইয়ের পর বই ছেপেছেন। ....রবীন্দ্রনাথের বই অনেক সময় বিক্রি করতে হয়েছে অর্ধেক দামেও। তা নিয়ে সেকালে কম ঠাট্টা বিদ্রুপ হয়নি। ...১৯০০ সালে কবির বন্ধু প্রিয়নাথ সেন কে তিনি লিখেছিলেন 'ভাই, একটা কাজের ভার দেব?...আমার গ্রন্থাবলি ও ক্ষণিকা পর্যন্ত সমস্ত কাব্যের কপিরাইট কাউকে ৬০০০ টাকায় কেনাতে পারো? আমার গ্রন্থাবলি যা আছে সে এক তৃতীয়াংশ দামে দিতে পারব(কারণ এটাতে সত্যের অধিকার আছে, আমি স্বাধীন নই, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যে লোকে কিনবে সে ঠকবেনা। ...আমার প্রস্তাবটা কি তোমার কাছে দুঃসাধ্য ঠেকেছে? যদি মনে কর ছোটগল্প এবং বউ ঠাকুরাণীর হাট ও রাজর্ষি কাব্যগ্রন্থাবলীর চেয়ে খরিদ্দারের কাছে বেশি সুবিধাজনক প্রতিভাত হয় তাহলে তাতেও আমি প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমার বিশ্বাস কাব্যগ্রন্থগুলোই লাভজনক। এই রকম নানা ঝামেলার মধ্যে কবির বই প্রকাশ করতে হয়েছে।" [ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ; অমিতাভ চৌধুরী-পৃঃ৭৯]
কবির উপর এই অভিযোগও ছিলো যে তাঁর যাবতীয় সৃষ্টিই নকল! এই অভিযোগটি তোলেন -কালীপ্রসন্ন বিদ্যাবিশারদ তাঁর মিঠা কড়াতে। "জ্যোতির্ময় রবী ও কালো মেঘের দল" গ্রন্থের ১১১ পৃষ্ঠায় সুজিত কুমার সেনগুপ্ত একটি লেখায় দেন, "স্রেফ টাকার জোড়ে ওঁর লেখার কদর হয়।" আবার বলেন, "রবীন্দ্রনাথের প্রায় যাবতীয় সৃষ্টিই নকল। বিদেশ থেকে ঋণ স্বীকার না করেই অপহরণ।" কালীপ্রসন্ন বিদ্যাবিশারদ তাঁর মিঠে কড়াতে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে প্যারোডি কবিতাও লিখলেন "রবিরাহু" ছদ্মনামে। "জ্যোতির্ময় রবী ও কালো মেঘের দল" গ্রন্থের সৌজন্যে আমি কবিতাগুচ্ছের উদ্বৃতি দিচ্ছি।
১নং কবিতাঃ
ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ বঙ্গের আদর্শ কবি।
শিখেছি তাঁহারি দেখে তোরা কেউ কবি হবি?
'কড়ি ও কোমল' পড় 'পুরো সুর' চাস্ যদি।
পড়ে যা আমার টোলে দেখে যা কবিত্ব নদী।
সে যে রবী-আমি রাহু,
তুল্য মূল্য সবাকার
ধনী সে-দরিদ্র আমি
সে আলো-এ অন্ধকার।
২নং কবিতাঃ
(১) মৌলিকতা পথের ধারে গড়াগড়ি খায়।
ও তার অনুবাদের বিষম ঠেলায় ব্রহ্মা লজ্জা পায়।।
চুনোগলি হার মেনেছে মৌলিকতা দেখে।
যত মুদিমালা বাংলা পড়ে রবি ঠাকুর লেখে।।
(২) আয় তোরা কে দেখতে যাবি,
ঠাকুর বাড়ির মস্ত কবি!!
হায়রে কপাল হায়রে অর্থ!
যার নাই তার সকল ব্যর্থ!!
(৩) কেমন ভাষা বিদ্যা খাসা
দেখ কেমন সং এগো
রোগা হাড়ে তাই বেঁচে গেল
প্রমাদ অঙ বঙ পঙে গো।
বিদ্যাবিশারদ বা অন্যান্য রবী-সমালোচকরা এ কথাটা একেবারেই যে বিদ্বেষ থেকে লিখেছেন বা যাচাই বাছাই না করেই বলে ফেলেছেন, এটা বলা বোকামী। রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলী (দ্য সং অফারিংস) এর জন্য যখন নোবেল পেলেন তখন পশ্চিমা সাহিত্যিকগণ রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ আনেন। তাঁর "দ্য সং অফারিংস" (গীতাঞ্জলী) এর ২৬ নং কবিতা ও ইংরেজী বাইবেলের "সং অফ সলোমন" এর ৫:২৬ নং শ্লোকের মিল দেখান তাঁরা। তাঁরা গীতাঞ্জলীর ৮৬ নং কবিতা ও খ্রীষ্টিও গান "Canticle" এর হুবহু মিল দেখান। "আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ" এর ১৪৫ নং পৃষ্ঠায় এর আলোচনা করেন শ্রী নীরদচন্দ্র চৌধুরী। রবীন্দ্রনাথের প্রমাণিত একটি নকল কবিতা হলো "ভারত তীর্থ"। যা কবি "জালালুদ্দিন রুমি"র একটি কবিতার হুবহু নকল। নিচে দুটো কবিতা'ই উদ্বৃত করা হোলো:
বায্ আঁ,বায্ আঁ
হর আচে হাস্তী বায্ আঁ।
গর কাফির হর গবরওয়া
বোত পরস্তি বায্ আঁ।
ই দরগাহ মা দরগাহে
ন-উম্মিদ নীস্ত
শতবার গর তাওবাহ শিকস্তী বায্ আঁ
-জালালুদ্দিন রুমি
এই কবিতার নকল রবীন্দ্রনাথের কবিতাটি হলো-
এসো হে আর্য,এসো হে অনার্য-
হিন্দু মুসলমান,
এসো এসো আজ তুমি ইংরাজ
এসো এসো খ্রীষ্টান।
মা'র অভিষেকে এসো এসো ত্বরা
মঙ্গলঘট হয়নি যে ভরা-
সবার পরশে পবিত্র করা তীর্থ নীরে
এই ভারতের সাগরতীরে।
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [দ্রঃএ এক অন্য ইতিহাস;পৃঃ ১৬৯-৭০]
রবীন্দ্রনাথের "চিত্রা" কাব্যের "এবার ফিরাও মোরে' এবং "মানসী" কাব্যের "বধূ' কবিতা দুটির ভাব ইংরেজ কবি শেলী ও ওয়ার্ডওয়ার্থের কবিতার নকল। [দ্রঃঐ] নারায়ণ বিশ্বাস এবং প্রিয়রঞ্জন সেন প্রমাণ করেন "গোরা" এবং "ঘরেবাইরে" নকল। কালী মোহন ধরে দেন রবীন্দ্রনাথের কবিতার নকল। এবং অমিতাভ চৌধুরীর লেখায় প্রমাণিত হয়, যার জন্য কবি নোবেল পান সেই গীতাঞ্জলী নামটাই নকল করা! [দ্রঃঐ]। রবীন্দ্রনাথের একটি নকলের কথা বলেন আহমেদ ছফা তাঁর একটি সাক্ষাৎকারে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন রাসেল, অশীষ এবং ব্রাত্য রাইসু। বাউলদের নিয়ে কথা বলার ফাঁকে রাইসু বলেন-
"রাইসু: আমার মনে হয় ছফা ভাই, এইখানে বাউলরাই হইছে সবচেয়ে বড় এলিট।
ছফা: এলিটিজম হচ্ছে একটা জিনিস, যখন একটা অংশে নিজেদের আইডেনটিটি এসার্ট করতে করতে তাঁরা মনে করে যে দে আর বেস্ট ফর সামথিং। বাউলদের এই যে স্যেকুলেড মানসিকতা। এইটা আমি খুব অপছন্দ করি। দেখ, জেনরা মনে করে সমস্ত বস্তু সত্তার মধ্যে প্রাণ আছে। এই কাঠটার মধ্যেও প্রাণ আছে। প্রাণের যে ভেরিয়েশন, সেটা হচ্ছে ডিগ্রি এবং স্টেজের। সেজন্য উর্দুতে একটা শের আছে 'সে মুক্তাতেই নেই, সে পাথরেও নেই, সে নানা বর্ণে দীপ্ত'।
রাইসু: এটারই উল্টো করে রবীন্দ্রনাথ বলতেছেন, তোমারই স্পর্শে পান্না হল সবুজ।
ছফা: রবীন্দ্রনাথ এটা গ্যেটের সেকেন্ড পার্ট থেকে চুরি করছে।
রাইসু: রবীন্দ্রনাথ তো তাইলে বড় কিছু ছিল না।
ছফা: এগজাক্টলি, এই যে বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে তালি দেওয়ার ক্ষমতা এটাই মানুষকে বড় করে।"
[দ্রঃ উত্তরখন্ড আহমেদ ছফা; পৃঃ-২৩২; অধ্যায়-একদিন আহমদ ছফার বাসায় আমরা]
রবীন্দ্রনাথের নকল বিষয়ক আলোচনা এখানেই সমাপ্ত করতে চাই। এ বিষয়ে লিখতে বসলে ছোটখাট একটা বই'ই হয়ে যাবে। যে বিষয়ে আজ লিখতে বসেছি সেটাই এখন সামনে আনা সমীচীন মনে করছি। প্রয়াত বাংলা সাহিত্যিক আহমেদ ছফা প্রণীত "যদ্যপি আমার গুরু" বইটি সম্প্রতি পাঠ করলাম। আহমেদ ছফা তাঁর গুরু অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে দীর্ঘ জীবনে পরিচয়ে যে কথাবার্তা চালিয়েছেন তা তুলে ধরেছেন। বইটিকে অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের সাক্ষাৎকারের বই বলা যায়। বইটির পৃষ্ঠা ৬০-এ নজর পড়তেই চমকপ্রদ একটি কথা দৃষ্টিগোচর হলো। রবীন্দ্রনাথের বিষয় আলোচনা উঠলে ছফা জানতে চান রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে উনার মতামত। এছাড়াও ছফা রবীন্দ্রনাথ বড় মানুষ কি-না এর বিষয়ে ইঙ্গিত দিলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন,
"রবীন্দ্রনাথ বড় লেখক, মানুষ হিসাবে রবীন্দ্রনাথ বিদ্যাসাগর কিংবা তাঁর মত মানুষের ধারে কাছেও আসতে পারেন না। বড় লেখক আর বড় মানুষ এক নয়। বড় লেখকদের মধ্যে বড় মানুষের ছায়া থাকে।"
জাতীয় অধ্যাপক এখানে কি বোঝাতে চেয়েছেন সেটা কারো বোঝার বাকি নেই। সমাজ সংস্কার বা সাহিত্যের উন্নতিতে রবীন্দ্রনাথের তেমন কোন হাত নেই। এই যে হালের রবীন্দ্রপ্রেমীদের উদ্ভট দাবী সেটা তিনি একেবারই ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছেন। রবীন্দ্র ভক্তরা দাবী করেন, "রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষা বাঁচিয়ে রেখেছেন।" এ বিষয়ে অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাককে আহমেদ ছফা প্রশ্ন করলে উনি নিঃসঙ্কোচে বলেন- "বাংলা ভাষাটা বাঁচাইয়া রাখছে চাষাভুষা, মুট মজুর-এরা কথা কয় দেইখ্যাই ত কবি কবিতা লিখতে পারে। "[দ্রঃ আহমেদ ছফার ঐ বই পৃঃ ৬০-৬১]
এই কথাটির আরো ভালো বিশ্লেষণ করা যায় তাঁর ব্যক্তিগত জীবন দিয়ে। মানুষ হিসাবে তিনি বড় ছিলেন কি-না। বড় ভাইয়ের বৌয়ের সাথে পরকীয়া অতঃপর নিজের বিয়ে, বিয়ের পর কাদম্বরি (বৌদি) দেবীর আত্মহনন তাঁর বড় মানুষ হওয়ায় যথেষ্ঠ প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করেছে। এ বিষয়ে শ্রী নীরদচন্দ্র চৌধুরী লিখলেন- "১৮৮৩ সনের ডিসেম্বর মাসে ২২ বৎসর ৮ মাস বয়স্ক রবীন্দ্রনাথের সহিত একটি বারো বৎসরের বালিকার বিবাহ হয়। উহার চার মাসের মধ্যে ১৮৮৪ সনের এপ্রিল মাসে জ্যোতিন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঁচিশ বৎসর বয়স্কা পত্নি কাদম্বরী দেবী আত্মহত্যা করিলেন।" তিনি আরো লিখলেন- "জ্যোতিন্দ্রনাথের সংসারের সহিত রবীন্দ্রনাথ ১৮৮১ সনের মাঝামাঝি হইতে ১৮৮৩ সনে বিবাহ হইবার সময় পর্যন্ত যেভাবে যুক্ত ছিলেন তা হতে এই জনশ্রুতি বাঙালী সমাজে ভিত্তিহীন বলিয়া মনে হইলো না। তাহার উপরে কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর সতেরো বৎসর পরে ১৯০১ সনে রবীন্দ্রনাথ 'নষ্টনীড়' গল্পটি প্রকাশ করিয়া এই জনশ্রুতির গৌণ প্রমাণ দিয়া ফেলিলেন।" [আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ -পৃঃ ২৭-২৮]
এই ফাঁকে বলে রাখি, রবীন্দ্রনাথকে বর্ণবাদ-বিরোধী হিসাবে উপস্থাপন করলেও রবীন্দ্রনাথ কিন্তু কোন নমঃশূদ্রের মেয়েকে স্ত্রী-রূপে গ্রহণ করেননি। রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী মৃণালীনি দেবী ছিলেন পীরালী ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে। কাজেই জাতপাত প্রথা থেকে রবীন্দ্রনাথ বের হতে পেরেছিলেন কি-না সেও ভাববার বিষয়। সে সময় সাহিত্যাঙ্গনে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিলো। কারণ, দুধে-আলতা, স্মার্ট বিলেত ফেরত জমিদার পুত্র রবীন্দ্রনাথের কপালে জুটলো কৃষ্ণাকায় এক অশিক্ষিত নারী! মৃণালীনির চেহারা সুরত তেমন ভালো না হলেও পীরালি ব্রাহ্মণ বলেই রবীন্দ্রনাথ একে বিয়ে করেন। এ নিয়ে হেমেন্দ্র প্রসাদ লেখেন- "বউ তেমন সুবিধের হয়নি। সুন্দরী নয় মোটেই।" মৃণালীনি দেবীর গায়ের রং যে তেমন ভালো ছিলোনা সে বিষয়ে হেমেন্দ্র প্রসাদ বলেন- "বউয়ের মুখশ্রী বা দেহের গঠন সাদা মাটা পাঁচপাঁচী। গায়ের রং শ্যামবর্ণ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।" তেমন শিক্ষিতও ছিলেন না দেবী। একমাত্র পীরালি ব্রাহ্মণ বলেই যে তিনি মৃণালিনী দেবীকে বিয়ে করেন এ নিয়ে হেমেন্দ্র প্রসাদ বলেন- "বাংলা অক্ষর পরিচয়টুকু বউয়ের কোন রকম হয়েছে। ঐ পরিবারে শিক্ষাদীক্ষার কোন চলন নেই। মুশকিল হলো এই যে, ধনী জমিদার হলেও পীরালি ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে সবাই দিতে চায় না, কিনা।" মৃণালীনি দেবীর গায়ের রং, তাঁর বংশ মর্যাদা বা শিক্ষা-দীক্ষা টেনে আনার মানে এই না যে আমি তাঁকে ছোট করে দেখছি। রবীন্দ্রনাথ জাতপাতের উর্দ্ধে যেতে পেরেছিলেন কি-না সে বিষয়ে আলোকপাত করার জন্যই এ বিষয়টা টানলাম। রবীন্দ্রনাথ বর্ণবাদের উর্দ্ধেই যদি হবেন তাহলে তাঁর লেখা কাব্য নাটক, কবিতায় মুসলমানদের ম্লেচ্ছ, যবন বলবেন? তাঁর কন্ঠরোধ প্রবন্ধে মুসলমানদের নীচু জাত, ইতর, নিম্ন শ্রেণীর বলে মন্তব্য করেন [রবীন্দ্র রচনাবলীর ১০ম অংশের ৪২৮ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য ]। আরো বর্ণবাদ প্রকাশ পায় রবীন্দ্রনাথ প্রণীত "ইংরেজী সহজ শিক্ষা"য়। আমি এখানে কিছু তুলে ধরছি সেখান থেকে শুধুমাত্র বাংলায়:
• "সুশ্রী মেয়েটির গাধা আছে। • গরীব ছেলেটির একটি নৌকো আছে। • নিষ্ঠুর মানুষটির একটি মাদুর আছে। • দরিদ্র মেয়েটির একটি ছোটো বিছানা আছে। • খাটো মানুষটির একটি সুন্দর পাখি আছে। • বিশ্রী ছেলেটির একটি উঁচু ডেস্ক আছে। • পাতলা মানুষটির (একটি) উঁচু বড় নাক আছে। • গরীব ছেলেটির একটি পুরানো খারাপ কলম আছে।" [পৃষ্ঠা ১৬ -ইংরেজী সহজ শিক্ষা; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]
কাজেই রবীন্দ্রনাথকে বর্ণবাদ-বিরোধী বলা মূলো গিলানো ছাড়া আর কিছুতো ধরা যায় না। এছাড়াও তাঁর বড় হওয়ার বাঁধা হিসাবে ছিলো জমিদারগিরি, ইংরেজ-তোষণ, নোবেল নিয়ে তদবীর ফিকির, উদ্বৃতি না দিয়ে লেখার জোড়াতালি এবং ক্ষেত্র বিশেষ মুসলমান ও হিন্দু বিদ্বেষীতা। জমিদারগিরি ছিলো তাঁর অন্য আরেক রূপ। কবিতায় এই রূপ পাঠকরা দেখতে পাননা বিধায় রবীন্দ্রনাথের দুষ্টু স্বত্ত্বা তাঁরা দেখতে পান না কিংবা অত্যন্ত সুচারু ভাবে এড়িয়ে যান। শ্রী নীরদ চৌধুরী রবীন্দ্র বিদ্বেষীদের মত রবীন্দ্র ভক্তদের মধ্যেও একটা দিক দেখতে পেয়েছেন যে, এঁরা সুক্ষ্মভাবে রবীন্দ্রনাথের দোষ এড়িয়ে যান। কবি হিসাবে যাঁরা রবীন্দ্রনাথকে "বড় মানুষ" হিসেবে পূজো করে আসছেন, "জমিদার" হিসাবে তাঁরা কি রবীন্দ্রনাথকে পূজো করতে পারবেন? রবীন্দ্রনাথ দফায় দফায় পূর্ববঙ্গ এস্টেট এর কর, খাজনা বৃদ্ধি করেছেন। তাঁর পাশাপাশি মুসলমান প্রজাদের কাছ থেকে পূজাপার্বণ এর খাজনা আদায় করেছেন বেআইনি ভাবে। এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কিছু উদ্বৃতি দিচ্ছি- "১৮৯৪ সনে রবীন্দ্রনাথ চাষীদের খাজনা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, খাজনা আদায়ও করেছিলেন। "[দ্রঃ- শচীন্দ্র অধিকারি, শিলাইদহ ও রবীন্দ্রনাথ পৃঃ ১৮, ১১৭]। রবীন্দ্রনাথ ২ বার করে খাজনা আদায় করতেন।
"সব জমিদার খাজনা আদায় করতেন একবার রবীন্দ্রনাথ করত দুইবার। একবার জমির খাজনা দ্বিতীয় বার কালী পূজার সময় চাদার নামে খাজনা।" [দ্রঃইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত, লেখক সরকার শাহাবুদ্দীন আহমেদ ]
এখানে আলোচনার আগে তাঁর পিতামহ ও পিতা দেবেনের প্রজাহিতৌষিতা একটু তুলে ধরার দরকার পড়লো। ঠাকুর বংশের প্রজাপীড়নের কথা সাংবাদিক/বাউল কাঙাল হরিণাথ তাঁর গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় তুলে ধরেছিলেন। "কাঙাল হরিণাথের অপ্রকাশিত ডায়েরী, চতুষ্কোণ" আষাঢ় ১৩৭১ সংখ্যা থেকে তুলে ধরা হলো- "ইত্যাদি নানা প্রকার অত্যাচার দেখিয়া বোধ হইলো পুষ্করিণী প্রভৃতি জলাশয়স্থ মৎসের যেমন মা বাপ নাই; পশুপক্ষী ও মনুষ্য যে জন্তু যে প্রকারে পারে মৎস ধরিয়া ভক্ষণ করে; তদ্রুপ প্রজার স্বত্ত্ব হরণ করিতে সাধারণ মানুষ্য দূরে থাকুক যাহারা যোগী ঋষি ও মহা বৈষ্ণব বলিয়া সংবাদপত্র ও সভা সমিতিতে প্রসিদ্ধ, তাঁহারাও ক্ষৎক্ষামোদর।" পিতামহ দ্বারকানাথ আর পিতা মহর্ষি(!)দেবেন এর মত তিনিও প্রজাদের চাবুক পেটা করেছেন, পায়ে দলেছেন লাথি মেরেছেন এমনকি প্রজাদের বাড়িঘর ও জ্বালিয়ে দিয়েছেন! "কিন্তু তাঁর ঔদার্য ও মানবিক বোধের ঐশ্বর্য সত্বেও জমিদার ও জমিদারীর যে ঠাঁট যা সামন্ত সম্পর্কের একটি অঙ্গ, তা তিনি বর্জন করতে পারেন নি। জমিদারের ক্ষমতা আড়ম্বর ও দাপট সম্পর্কে প্রজাদের ভীতি থেকেই গেছে।" [ডক্টর পোদ্দার; পৃঃ২০]
রবীন্দ্র ভক্তরা একথা প্রচার করে বেড়ায়, প্রজাদের সুবিধার্থে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গে 'কৃষিব্যাঙ্ক' একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। মূলে কার সুবিধা হলো, কাদের ধন সম্পদ বৃদ্ধি পেলো সে কথা কোন রবীন্দ্র ভক্ত জানলেও আড়াল করে যাচ্ছেন নাকি জানেন না এ প্রশ্ন থেকেই গেলো। "কলকাতার কিছু বন্ধুবান্ধব যোগাড় করে তাঁদের সঙ্গে কবি নিজেকে যুক্ত করে একটি সুদের কারবার শুরু করেছিলেন-তার নাম দিয়েছিলেন 'কৃষিব্যাঙ্ক'। তাঁরা শতকরা সাত টাকা সুদ দিয়ে মূলধন যোগাড় করেছিলেন। আর কবি তাঁর জমিদারিতে গরীব প্রজাদের কাছ থেকে সুদ নিতেন শতকরা ১২ টাকা।" [ডক্টর পোদ্দার; পৃঃ২২]। কবির জমিদার সত্ত্বার আলোচনায় কবিকে বড় মানুষ হিসাবে ভাবায় যথেষ্ট অসততা আছে। মূর্তিপূজো-বিরোধী মুসলমানদের কাছ থেকে মূর্তিপূজোর চাঁদা আদায়, আবার কবিতায় সেই মুসলমানদের ম্লেচ্ছ, যবন, নীচ ইত্যাদি বলে গালাগাল নিম্ন মানুষিকতা নয় কি? এছাড়াও কবি কলকাতায় করেছেন মুসলিম-বিরোধী জনসভা।
গোঁড়া হিন্দু কর্তৃক গরু বাঁচাতে পৃথিবীর মাটিতে ভারতবর্ষের পূণায় সর্বপ্রথম "গো রক্ষক্ষিণী সভা" নামে যে জনসভাটি ১৮৯৩ সনে হয় সেটির প্রতিষ্ঠা করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ! [দ্রঃএ এক অন্য ইতিহাস] তবে তিনি যে একমাত্র মুসলিম সম্বন্ধেই বিদ্বেষভরা লেখা লিখেছেন তা নয়। তাঁর কিছু কিছু বক্তব্যে তিনি হিন্দু ধর্ম এবং হিন্দু জাতীকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি! তাঁর নাটক "অচলায়তন"-এ তিনি হিন্দু ধর্মকে চরমভাবে আঘাত হানেন! আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ থেকে এর উদ্বৃতি দিচ্ছি- "রবীন্দ্রনাথ হিন্দু ধর্মকে আঘাত করেছিলো তাঁর নাটক অচলায়তনে। সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক -সুরেশচন্দ্র সমাজপতি এর বিরুদ্ধে লিখলেন-রবীন্দ্রনাথ মেটারলিঙ্ক হইতে পারেন, কিন্তু হিন্দুধর্ম সমাজকে আক্রমণ করিবার অধিকার তাহার নাই। "[আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ-পৃঃ৫৪]
ফ্যাসিবাদী মুসোলিনির মহৎকর্মের কথা কে না জানে! কিন্তু আমাদের কবি মুসোলিনি-প্রেমে মজলেন যে তিনি তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে গেলেন! কবি একসময় ইতালি যান এবং সেখানে বসে ফ্যাসিবাদী মুসোলিনির খুব প্রশংসাও করেন! সৈয়দ আবুল মকসুদ তাঁর রবীন্দ্র রাজনীতি গ্রন্থের পৃষ্ঠা ১-এ এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন- "১৯২৬ সালে কবি ইতালি যান মুসোলিনির আমন্ত্রণে, এবং আথিথীয়তায় মুগ্ধ হয়ে মুসোলিনির প্রশংসা করেন।" ১৯০৫ সালে করলেন বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা। বিরোধিতা করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে যে জনসভা হয় তাঁর সভাপতি ছিলেন স্বয়ং কবি। "শত হইলেও প্রজা। আর প্রজার বাচ্চারা কেন উচ্চশিক্ষিত হইব" এই মানুষিকতা আশাকরি কবির ভিতর ছিলো না। এসব নিয়ে কয়েকটি পর্বে লিখতে চাই। "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ এর অবস্থান" এবং "রবীন্দ্রনাথ ও মুসলমান" বিষয় দুটো পর্বাকারে লিখতে চাচ্ছি। এই দুটো বিষয়ে বিস্তারিত বলার ক্ষেত্র এখানে নয়।
নোবেল প্রাপ্তির আগে রবীন্দ্রনাথের যেমন লেখার কদর হয়নি তেমনি নোবেল প্রাপ্তির আগে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে প্রকৃত রবীন্দ্রনাথ এর জন্ম হয়নি। তাই দেখা যায়, রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির পরের লেখাগুলো আগের লেখার সাথে সাংঘর্ষিক। যে কারণে তিনি মুসলমানদের ম্লেচ্ছ, যবন, তস্কর বলে গালাগাল দিয়েছেন ঠিক একই কারণে তিনি মুসলমানদেরকে আবার হিন্দুদের চেয়ে একধাপ আগানো সহযোদ্ধা হিসাবে দেখেছেন। নোবেল প্রাপ্তির আগে উনি ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ(সঃ)কে নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে বল্লেন-
"কোরআন পড়তে শুরু করেছিলুম কিন্তু বেশিদূর এগুতে পারিনি আর তোমাদের রসুলের জীবন চরিতও ভালো লাগেনি।" [ দ্রঃ বিতণ্ডা, লেখক সৈয়দ মুজিবুল্লা, পৃ -২২৯ ]
নোবেল প্রাপ্তির পর তিনি মুহম্মদ(সঃ)-এর প্রশংসায় ঈদে মিলাদুন্নবীতে লেখাও পাঠিয়েছেন। স্ববিরোধিতা বলি আর সুন্দর করে 'ভুল বুঝতে পারার জন্য' বলি এই কারণে রবীন্দ্রনাথকে 'বড় মানুষ' বলার বেলায় একটু ভেবেচিন্তেই বলতে হবে। যদি তাঁকে মুসলমানদের প্রতি পরবর্তীকালে সদয় হওয়ার জন্য বড় মানুষ বলি, কিংবা পরবর্তীকালে ইংরেজ বিরুদ্ধবাদ এর জন্য বড় মানুষ বলি তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায়, "পূর্ববঙ্গেরর প্রজাদের জন্য জমিদার সাহেব কি করেছিলেন?" পূর্ববঙ্গে জমিদারী করার সময় অভূতপূর্ব সম্মান (রবীন্দ্র পত্রাবলি পড়ুন) পাওয়ার পরও পূর্ববঙ্গের জন্য তিনি কি করেছেন বা কোন উপকারটায় এসেছেন? আরো প্রশ্ন থেকে যায়, কেন তিনি মুসলমানদের প্রতি পূর্বে বিষোদগার ছড়ালেন? কেন ইংরাজ তোষামোদ করলেন? নিজে শ্রেফ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য? যদি তাই হয় তাহলে বড় মানুষ তাঁকে কিভাবে বলব? রবীন্দ্রনাথ নোবেল পাওয়ার আগ পর্যন্ত ইংরেজদের নিয়ে 'টু' শব্দটি পর্যন্ত করেননি! বরঞ্চ বিভিন্ন ইস্যুতে বিপ্লবীদের খাটো করেছেন। এমন এমন সব কবিতা ইংরেজদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন যাতে ইংরেজদের অধিষ্ঠিত করেছেন "ভগবান" এর আসনে! ঠিক নোবেল প্রাপ্তির পরপরই কেন ইংরেজদের ভগবান থেকে যবনে নামালেন? এর আগে কেন করেন নি? কারণ কি এই যে, "রবীন্দ্রনাথ জানতেন একবার নোবেল পেলে সেটা আর ফেরৎ নেয়া যায় না, তাই তিনি এখন ইংরেজদের চৌদ্দপুরুষ করলেও পাছে নোবেল খোয়া যাবেনা!" এই ফাঁকে বলে রাখি, বলা হয় যে রবীন্দ্রনাথ নাকি কোন এক বিপ্লবী হত্যার প্রতিবাদে ইংরেজদের দেয়া নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য এই যে, নোবেলের মত 'নাইট' উপাধি একবার পেলে আর ত্যাগ করা যায়না! রবীন্দ্রনাথের ঐ একই সময় ইউসুফ আলী নামক স্যার উপাধিপ্রাপ্ত এক মুসলমানও নাইট উপাধি পেয়েছিলেন। কিন্তু বিপ্লবের মুখে উনিও নাইট উপাধি ত্যাগ করতে চাইলেন। নাইট উপধি ত্যাগ নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় উনি আর ত্যাগ করতে পারেননি। সেসময় রবীন্দ্রনাথের নাইট উপাধি ত্যাগের খবর নিয়ে ভারতবর্ষে হুলস্থূল হয়ে গিয়েছিল। তাই স্যার ইউসুফ আলী রবীন্দ্রনাথকে চিঠি লিখে নাইট উপাধি ত্যাগের টিপস জানতে চাইলে রবীন্দ্রনাথ জানালেন, শত চেষ্টা করেও এই উপাধি ইংরেজদের ফিরিয়ে দেয়া যায়নি। এই বিষয়ে "এ এক অন্য ইতিহাস" গ্রন্থে গ্রন্থাকার বিশদ আলোচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ও ইউসুফ আলীর চিঠির হুবহু ছবি দিয়ে। রবীন্দ্রনাথের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে তাঁর স্ববিরোধিতা হোক আর সুন্দর করে 'ভুল' হোক, যে কোন কারণেই তাঁকে বড় মানুষ বলা যায় না। রবীন্দ্রনাথ নিজেই তাঁর বড় মানুষ হওয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তাই যাঁরা সাহিত্যের পাল্লায় ফেলে রবীন্দ্রনাথকে একজন বড় মানুষ হিসাবে উপস্থাপন করছেন তাঁদের জ্ঞাতার্থে প্রখ্যাত কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ এর এই কথাটুকু রেখে লেখাটার সমাপ্তি ঘটালাম। সৈয়দ আবুল মকসুদ তাঁর রবীন্দ্র রাজনীতি গ্রন্থে বলেন-
"ধরা যাক, একজন কথাশিল্পী এমন এক কাহিনী লিখলেন যেখানে প্রধান চরিত্র বিপ্লবী-বিদ্রোহী ও কুসংস্কারেরর বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে লেখক নিজে সুবিধাবাদী সমাজের শত্রুদের সঙ্গে একাসনে তাঁর অবস্থান এবং প্রগতিবিরোধী-তাহলে কি তাঁকে আমরা মহৎ ব্যক্তি বলব?"

দেবী থেমিসের মূর্তি: প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর প্রতি

দেবী থেমিসের মূর্তি: প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর প্রতি
মুহম্মদ জাফর ইকবাল (ছবি: উইকিপিডিয়া)
মুহম্মদ জাফর ইকবাল



২রা জুন, ২০১৭ বিডিনিউজ২৪ডটকম এ মৃণালের ভাস্কর্য নিয়ে ছাপা হওয়া জাফর ইকবালের কলাম একটা কলাম ছাপে 'স্বপ্ন ভেঙে নয় স্বপ্নের অংশীদার হয়ে' শিরোনামে। কিভাবে বিভিন্ন ইস্যুর সাথে মুক্তিযুদ্ধ জড়িয়ে তার সাথে এক চা চামচ আবেগ মিশিয়ে তরুণ প্রজন্মকে খাওয়াতে হবে সে বিষয়ে প্রফেসর উটপাখি মুহম্মদ জাফর ইকবাল ভালোই জানেন (উনি নিজেকে উটপাখি ভাবেন)। আর চেতনার বলি চশমা পড়া ছাত্র/ছাত্রীরা প্রতিদিন স্যার স্যার করে যা গিলায় ওটাই গিলে নেয় হিঃ হিঃ! স্যারের নামে প্রতিদিন তিনশ দুম্বাহ জবেহ করে স্যারকে উৎসর্গ করেন। জ্বী হুজুর! জ্বী জনাব! জ্বী স্যার এজ্ঞে ইত্যাদি পাখির কলরবে স্যারের চারপাশ মুখরিত থাকে। প্রতিটা 'আজ্ঞে জনাব' টাইপের পত্রিকা ওয়ালারাও স্যারের কলাম ছাপতে মুখিয়ে থাকেন। বিডিনিউজ২৪ডটকম এ প্রফেসর ইকবালের ঐ কলামে আমি একটি মন্তব্য করি কিন্তু বিডিনিউজ২৪ডটকম সেটি অ্যাপ্রুভ করার সৎ সাহস দেখায়নি। পাছে থলের বিড়াল বেড়িয়ে দুধ খাবে কিনা কিংবা প্রফেসরের মানইজ্জত ধুলোয় মিশে যেতে পারে, এই ভয় ছিলো মনে সম্ভবত। আর এভাবে মানইজ্জত চলে গেলে পরবর্তীকালে প্রফেসর বিডিনিউজ২৪ডটকম এ তাঁর কোন লেখা জমা নাও দিতে পারে! এই ভয়েই সম্ভবত মন্তব্যটি অ্যাপ্রুভ করা হয়নি।
এই লিংকে জাফর ইকবালের কলামটি: এখানে
আমি এই প্রশ্নগুলো প্রফেসর জাফর ইকবাল এর প্রতি রেখেছিলাম ২রা জুন ২০১৭ইংরেজী তারিখে ঐ কলামে মন্তব্যের ঘরে।

২/০৬/১৮ ইং
প্রফেসর জাফর ইকবাল কে ধন্যবাদ তাঁর লেখার জন্য। আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারণ দেবী থেমিসের ইস্যুতে আমি আপনার সাথে একমত নই। তবে আমি আশ্চর্য হই এই দেখে যে হেফাজতে ইসলামকে আপনি যেই দোষে দোষী করছেন ঠিক সেই দোষেই আপনি বা আন্দোলনকারীরা দুষ্ট। হেফাজতে ইসলাম যেমন সকল কাজে ধর্মকে পুঁজি করছে আপনি বা আন্দোলনকারীরা মহান মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করছেন। ধর্মব্যবসার মত মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসা হয় কিনা আমার জানা নেই। না হলে আপনি কেন বিভিন্ন ইস্যুতে একমাত্র মুক্তিযুদ্ধকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন?

   [ক] প্রথমত,আপনি বারবার ত্রিশলক্ষ শহীদকে টেনে আনছেন এখানে প্রশ্ন থেকেই যায় ‘তাহলে কি শহীদগণ ভাস্কর্য বা রাম/বামদের সকল দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে শহীদ হয়েছেন?’ 
জনগণের জন্য কি শহীদ হননি তাঁরা?
আপনার মত যদি হেফাজত ও শহীদদের/ মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি পুঁজি করে ভাস্কর্যের বিরোধীতা করেন তখন কি করবেন? আর থেমিসের এই গ্রীক মূর্তিতে একাত্তরের কোন চেতনাটা দেখা যাচ্ছে বুঝিয়ে বলুন। 
    [খ] প্রফেসর সাহেব,আপনার কলাম পড়ে মনে হলো থেমিস, আর্টেমিস, হেরা, মিনার্ভা আর ভেনাসের মূর্তি বসানোর জন্যই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। আপনি যেভাবে বলছেন তাতে মনেহয় একমাত্র এই স্বাধীন দেশে আপনারা ছোট্ট একাংশরা যা বলবেন তাতেই দেশ চলবে। যেহেতু গণতন্ত্রবাদী বাংলাদেশ সেহেতু আপনার পক্ষে যদি আপনি তিন এর একাংশও না দাঁড় করতে পারেন তাহলে বলে রাখা ভালো, আপনার কোন দাবীই মেনে নেয়া হবে না। একথাও বলতে হচ্ছে- মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো বাঙালীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কোন বিদেশী থেমিস দেবীর ভাস্কর্য গড়তে নও।


   [গ] দ্বিতীয়ত, এই মূর্তির(ভাস্কর্য) পক্ষে আপনি গুটিকয় লোক ছাড়া পাবেন না। তাদের পরিমাণ নগন্য,তবুও ধরলাম ১০%। আর বিপক্ষে রয়েছে ৯০%। আপনি আপনার পেজ এ পোস্টের মন্তব্যগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন মূর্তির বিপক্ষে কতজন আর পক্ষে কতজন। প্রফেসর সাহেব, এখন কথা হচ্ছে কোটি কোটির চেয়ে গুটিকয়েক এর মতামত গ্রাহ্য করতে হবে কেন? আপনার অবস্থান থেকে আপনি যতটা নিজকে সঠিক মনে করেন তাঁরাও নিজেদের অবস্থান থেকে নিজেদের সঠিক মনে করেন।

 যেহেতু সরকার গণতান্ত্রিক সেহেতু জনগণের দাবী তাকে মানতেই হবে। এক্ষেত্রে গণতন্ত্র রক্ষায় আওয়ামিলীগকে ধন্যবাদ দেই যে তাঁরা গণমানুষের পক্ষে গিয়ে ভাস্কর্যটি সড়িয়েছেন। আরেকটি কথা না বল্লেই নয়; প্রায় উলঙ্গ এবং জাতীয় ঈদগাহের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় এটা স্থানান্তর করা হয়েছে (একেবারে অপসারণ করা হয়নি)। এখানে মুসলমান সম্প্রদায় এর বছরে ২ বার ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মুসলমান কেউ চাইবেনা ঈদের নামাজ পড়ে উঠেই দেবী দর্শন করতে। তৃতীয়ত প্রফেসর সাহেব,আপনি বিভিন্ন দেশের ভাস্কর্যের কথা বলছেন। আমাদের দেশেও ঢের ভাস্কর্য আছে,কেউ সেগুলো নামাতে যায়নি (হেফাজত দাবী করলেও সরকার তাতে কান দেয়নি)। এর মধ্যে নগ্ন ভাস্কর্য ও আছে। দেবী থেমিসের ভাস্কর্য সড়ানোর ইস্যুতে আমি মৃণালের দোষ দেবো। 

   [ঘ] মৃনাল হক টক শোতে যে বক্তব্য রেখেছিলেন তাতে এটি প্রতীয়মান হয় – উনি মার্কিনদের রুচি খেয়াল যতটা বোঝেন বাংলাদেশের রুচি খেয়াল ততটা বোঝেনই না। বাংলাদেশের মানুষরা সম্পূর্ণ অনুভূতিসম্পন্ন কোন বিষয়টি ভালো হবে আর কোনটি মন্দ এসব বুঝার ব্যাপারে। মৃণাল হক বেশ ঔদ্ধত্যের সাথে টিভি টকশোতে বাংলাদেশীদের অশিক্ষিত বলে গালি দিলেন বলে মনে মনে অনেকটা ক্ষোভ ও কষ্ট পেয়েছিলাম। আসলে বিদেশে দুচার কলম পড়াশুনা আর একাধিক ডিগ্রীলাভ করেই সকলে শিক্ষিত হতে পারে না, স্মার্ট হতে পারে না মৃণাল কে টিভি সেট এর সামনে দেখে একথাটিই বারবার আওড়াচ্ছিলাম। শিক্ষিত আর স্মার্ট হতেও আপনাকে কথা বলতে শিখতে হবে। কোন স্থানে কোনটি বলা আপনার জন্য মঙ্গলের সেসব মাথায় রাখা চাই।
চিরাচরিত ভাস্কর্যে সচরাচর বাংলাদেশীরা কেউ কখনো আপত্তি করেনি। ভুঁইফোর কিছু হলে সেটা যদি উদ্ভট বা এমন কিছু প্রতীয়মান হয় যা অমঙ্গলকর তবে প্রতিবাদ অবশ্যম্ভাবী। ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজে এবং উইমেন টিচার্স ট্রেনিং কলেজে নগ্ন নারীমূর্তির যে ভাস্কর্যগুলি আছে তা তো আপনি দেখেছেন, তা নিয়ে কোন ঝামেলা হচ্ছে না, ফুলার রোডে, টিএসসিতে, কলাভবনের ইত্যাদির ভাস্কর্য নিয়েও কেউ টু-শব্দটিও করেছে না। কারণ সেখানে সকলেই যেতে পারে না। একমাত্র তাঁরাই ওখানে যেতে পারেন যারা ভাস্কর্য বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন। ঐসকল ভাস্কর্যগুলির প্রেক্ষাপট ও কিন্তু গ্রহনযোগ্য হয়েছে। কিন্তু এই যে বিদেশী থেমিস বা বাঙালী নারীর তথাকথিত ভাস্কর্যটি এতটাই বেশি অশ্লীল, দৃষ্টিকটু হয়েছিল যা গনতান্ত্রিক পরিবেশে বল প্রয়োগের মাধ্যমে আরোপ করা একদমই অনুচিৎ।
মৃণাল মূলত আমাদের বাঙ্গালীদের অশিক্ষিত বলে ছোট করার পাশাপাশি বিভ্রান্তিতেও ফেলেছে। মৃণাল গ্রীক দেবীর মূর্তিকে বিকৃত করেছে এবং বলছেন এটা বাঙ্গালী মেয়ের ছবি। হা হা হা কী একটা ব্যাপার ভাবা যায়!

  [ঙ] আবার যারা আন্দোলনে নেমেছে তাঁরা বলছেন ‘এটা ন্যায়ের প্রতিক(মূলত কুসংস্কার) দেবী থেমিসেরই মূর্তি’। তাহলে আমরা কার কথা শুনবো?

আরেকটা প্রসঙ্গ বাদ দেয়া যায় না কোনমতেই, সেটি হলো দেবী মূর্তির খরচাদির কথা। এই ফাও মূর্তি স্থাপনে বাংলাদেশ অার্থিক ভাবে অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো বাংলাদেশ মোড়ে মোড়ে ভাস্কর্য করার মত সম্পদশালী হয়েছে কি?
বিভিন্ন সূত্রমতে শুনতে পেলাম;শুধুমাত্র শাড়ি পড়াতে মৃণাল প্রধান বিচারপতি থেকে খসিয়েছে দেড়কোটি টাকা! মৃণাল এতই নিবেদিতপ্রাণ বিনে পয়সায় তো কাজটা করতে পারলো না।
' বাংলাদেশ ভালোবাসি কিন্তু অর্থ দিয়ে নয় কিংবা বাংলাদেশের জন্য রক্ত ঢেলে দিবো কিন্তু নিজের শরীর থেকে একটা ফোটও না' ব্যাপারটা এরকম হলো না?

  [চ] প্রফেসর সাহেব, সর্বশেষ এই বাংলাদেশ স্বাধীন করা হয়েছে বাঙ্গালীদের সকল প্রকার দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে, বাঙ্গালীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। ত্রিশলক্ষ বা তার কমবেশি শহীদ ও হয়েছে একমাত্র বাংলাদেশীদের সকল দাসত্বের শৃঙ্খল হতে মুক্ত করতে। কিন্তু আদৌ আমরা তা পারিনি। আপনি নিজেই কখনো গণমানুষের পক্ষে কথা বলেননি। উপরন্তু বিভিন্ন আধুনিকতার দোহাই দেখিয়ে বাচ্চাদের আষাঢ়ে গল্পের সায়েন্স ফিকশন গিলিয়ে রহমত, করীম মিঞা কে দাঁড় করিয়েছেন অশিক্ষিত বাঙাল হিসেবে আর নায়ক হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন ভিনগ্রহের প্রাণী। আপনি এতএত শহীদদের কথা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শ্লোক পড়েন, আপনার কাছ থেকে বাংলাদেশ কয়েক ডজন আষাঢ়ে গল্পের সায়েন্স ফিকশান আর একটা অকেজো ভাঙা উড়তে ব্যর্থ ড্রোন ছাড়া আর কী পেয়েছে?

সংযোজন (৮ই ডিসেম্বর ২০১৮) :
 [ছ] বাঙালীরা এখনো দাস। উচ্চবিত্তদের দাস। সরকারের দাস। কারখানা মালিকের দাস। বাঙালীরা পাক দাসত্ব হতে মুক্তি পাওয়ার পর পুনরায় দাসত্ব গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পর বহুতল ভবন নির্মাণ আর না খেতে পেয়ে মানুষগুলোর মৃত্যু অন্তত তাই বলে। গরীবের মাথায় নুন রেখে বড়ই খাওয়ার মত ধনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এখানে। কই আপনিতো গরীবের অধিকার তাদের সম্পদ নিয়ে কিছু লিখলেন না! লিখবেন কেমন করে, আপনি তো গণমানুষের পক্ষেই নয়।
আপনার কলম এবং মিছিল তখনই বের হয়,যখন বিতর্কিত কোন ইস্যু খাড়া হয় (অর্থাৎ নিজেকে বারংবার আলোচনায় আনার সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায় না কেউই)। 

গরীবরা কেন না খেয়ে আছে? কেন চিকিৎসার অভাবে শিশুরা/বৃদ্ধরা মারা যাচ্ছে? কেন স্কুল কলেজ ইত্যাদি সামাজিক প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য? 
আপনি কখনো ইতিবাচক কোন কলাম লিখেছিলেন মাদ্রাসার ছাত্র নিয়ে? মনে করুন তো।
কেমন করে মন্ত্রী, এমপি, মেয়র প্রতিটা রাজনৈতিক নেতা অতি অল্পতেই আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছে? এ প্রশ্নটি করার মতো সাহস কী আপনার আছে? নেই।
জনগণের ৩ হাজার কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটা কী কোন ফায়দা দিচ্ছে? প্রশ্ন করেছেন সরকার কে? না করেন নি। আপনার সে সাহস নেই। আপনার মতো ভাড়াটে বুদ্ধিজীবিদের যেমন লজ্জা কম, তেমনি সাহস ও কম। আপনি জানেন, প্রশ্ন করলেই বিপদ! আপনার প্রফেসরগীরি ছুটে যাবে। সরকারের ইয়ং ছেলেরা আপনাকে বেইজ্জতি করে ধুতি খুলে নিবে। আপনার বিপক্ষে মিছিল বের করবে। আপনাকে পেটাবে, লাত্থি মারবে পেটে একেবারে! আপনি নিজের এতদিনে করা নামডাক খোয়াতে চান না। 
প্রফেসর! মানুষের অধিকার আর লিগ্যাল দাবী-দাওয়া এসব নিয়ে কলাম ছাপুন, মিছিল বের করুন দেখি আপনাদের মানবতার স্বরূপ। জানি আপনি পারবেন না। কারণ আপনি অসৎ!

আমার সম্বন্ধে কে কী ভাবে?



১.

মহাকবি মিরাজুল ইসলাম এর কাব্যিক খিস্তি

.

হয়ত আমি অনেক বড় নই,

আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে কি ই বা দেখেছি,

এখনো অনেক কিছু দেখার বাকি আছে,

এখনো অনেক কিছু শেখার বাকি আছে,

কিন্তু আমি ছোটো হলেও অভিজ্ঞতা কিন্তু অতো ও কম নয়,

আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি,

আমি বোকাচোদা দেখি নাই,

সজল রে দেখছি,

হালার মত আবুল আমি আমার জন্মে দেহি নাই,

আবুলে নিজেরে অনেক বড় মহাকবি ভাবে,

হা হা হা,

আতেল নামক অশ্লীল কবিতা ছাড়া তো আর ওর মাথায় কিছু আহে না,

ওর কবিতার মধ্যে পাওয়া যায় ওর নিম্ন মানসিকতা,

আবার নিজেরে মহাকবি ভাবন চোদায়,

কিন্তু ওই সমস্ত কবি তো আমি সুদি না

- মিরাজুল ইসলাম

২.

সজল

সারা গায়ে সাঁইত্রিশ কেজি ওজন।

ভাবে যেন হয়ে গেলো বালছাল হরিদাস পাল;

মাথায় হাত দিয়া দেখে টাকে নাই বাল।

- নুরুল-আমিন

৩.

আমি তাকে চিনি বিগত দুবছর

ভাবে তিনি অনেক বড় কোন কো-বি

অথচ অশ্লীলতা ছাড়া পানসে সবই।

তবুও তাকে ভালোলাগে

কেন জানিনা ;

সমালোচকরা বলে আতেল তিনি

আমি ওসব মানিনা।

-শুভ্রত

৪.

প্রিয় বন্ধু আমার সজল

আছো তুমি বেশ চঞ্চল...

বন্ধু তুমি অনেক ভালো

তুমি থাকলে ফিরে পাই আলো;

পরিচয় আমাদের অল্প দিনের

মনে স্থান করেছে আপন জনের....

সখা ডাকলে করো রাগ ..!!

তখন তোমায় দেখি বাঘ....

আদর করে ডাকি দোস্ত....

কবে খাওয়াবে আমায় পোস্ত?

- শিপলু খান

৫.

২২শে জুন

মহান মানবের জন্মদিন।

তার কাছে রহিয়াছে পৃথিবীর ঋন

শুভ শুভ শুভদিন

আজকে মোদের শুভদিন,

আজকে আমাদের শুভদিন,

সজল আহমেদের জন্মদিন।

- শাহাদৎ এমএস হোসাইন

৬.

আমি ছাগল দেখেছি সজল দেখিনি

- রকিবুল হাসান শিহান

৭.

সজল আহমেদ। এ তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি আতেল কবিসভায়। ফেসবুকে ওনাকে একবছর যাবৎ আমি ফলো করি। এবং ইদানিং ওনার বেশ আতেল পাঠক ও জন্মিয়েছে। আতেলদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ক্রমশ। প্রায় ১৫০-২০০ লোক ওনার কবিতা পড়ে ফেসবুকে। এমনকি ইন্টারনেট এর বাংলা পোর্টালে তাঁর আতেল মার্কা কবিতার ভাইরাসের মতো ছড়াছড়ি! ইস্টিশন ব্লগেও ওর একটি প্রোফাইল আমার দৃষ্টিতে পরেছে সাথে বেশ কিছু কবিতা।

  একেও আমার ব্রাত্য রাইসুর ভাব শিষ্য মনেহয়। এর কবিতার ও প্রধান উপজীব্য অশ্লীল এবং হাস্যকর বাক্য। নিজে এখনো লেখা না শিখলেও ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো বড়ো মাপের লেখকদের সমালোচনা করেন। 'রবীন্দ্র সমালোচনা' লিখে সার্চ করলে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে ওর বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট নজরে আসবে।

- নি.পুঅশ্লীলতা সাহিত্য নও। পরাপর খিস্তি সাঁজিয়ে রাখলেই পোয়েট্রি হয়ে যায়না। ওর দৌড় বড়জোড় ক্ষাণিকটা। পাঠকদের ছিঃ ছিঃ পেয়ে কবিতা লিখেই বা কি হবে? পুষ্পিতার সাথে ওর কোন শত্রুতা নেই। পুষ্পিতা কবিতা ভালোবাসে মনেপ্রাণে আর কবিদের শ্রদ্ধা করতে জানে। তবে তোমাকে কবি হতে হবে। অ-কবি বা আগাছা কবি হলে ঝুটের পাত্রে বাস করতে হবে।

- নি.পু৮.

ভুল কি আমি জানিনা

সজল মহাকবি মানিনা

প্রিয় এ পিথিবীর বুকে আমি কবি দেখেছি অনেক

জীবনান্দ বুকোওস্কি সবে যদি হয় মহাকবি

তবে সজল কেমনে দাবী করে নিজেকে আজ অবধি?

এ কেমন বিচার?

এ কেমন পিথিবীর নিয়ম?

চটি লিখে যদি কবিতা রচনা করা যেতো

তাহলে তাকে কি বলব মহাকবি হাফিজ বসতি তার আফগান।

- সজিদ রহমান

ছোটছোট মন্তব্যে যাহারা আমাকে আর আমার কবিতা আশির্বাদ করলেন

চটিরাজ সাম্প্রদায়িক সজল আহমেদ এর প্রতি ঘৃণা জানাই। ওকে বর্জন করা হোক। আগাছারা বনে সুন্দর।

- মাহবুব সাইদ

Saifur Rahman Kayes

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমানের জন্য এদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।তার প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়ে নিজেরাই বাতিল মালে পরিণত হয়েছে।

রাধারাণী রাই

এদের কিভাবে কবি হিসেবে গণ্য করা হয় আমি বুঝতে পারছি না। এমন কবিতা তো প্রকাশ করাই উচিত নয়।

তবে দিদিভাই এটুকু বলতে পারবো এক হাতে ৫টা আঙ্গুল থাকলেও সবগুলো সমান হয় না একেকটা একেক সাইজের। বাংলাদেশের তথাকথিত কবি নামক ধর্ষক গুলোকে দিয়ে সম্পূর্ণ বাংলা আর বাঙ্গালিকে বিচার করবেন না।

Shamsuddin Hira

রসময়গুপ্ত চটি সাহিত্যিক আর উনারা হলেন চটিকবি।

Palit Sankar

এইসব কবিদের কবিতা শিশুমনে গভীর দাগ কাটবেই।ফলে অল্পদিনেই তারা ধরষণে আবেগ তাড়িত হবেই।তাই বাংলা একাডেমীর উচিত এগুলো নিষিদ্ধ করা। বাজার থেকে এসব চটি মারকা চটি কবিতার বই বিক্রী বিতরন মূদ্রন এক্কেবারেই বন্ধ করে দেওয়াই আমাদের কাম্য।

Farjana Ahmed

BANGLADESH a agular Vail nai... Ami Bangladeshi hoye o jantam na ader motho pagol sagol o amader deshe ase..thanks apnake for your sharing .

Nasreen Akhter

এরা আমার দেশের নাগরিক হতে পারে না। নর্দমার কীট বললেও সে কীটের প্রতি অবিচার হবে। আমি সিওর এই সবকটা সাইকোসেক্সসুয়াল ডিসঅর্ডারে ভুগছে।

এগুলোর আসল ট্রিটমেন্ট জরুরী আর তা হলো শুধু উপর্যুপরি জুতাপেটা।

বিদ্যুৎ বিশ্বাস

এগুলো কি কবিতা?

বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। দুখ পাচ্ছি এই লেখা দেখে।এসব লিখে কি করে এরা কবি হয়?এসব কবিদের অশ্রাব্য গালি গালাজ ময়, বিকৃত কাম তাড়িত লেখার উপর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোন প্রতিষ্ঠান আছে কি? থাকলে তাদেরই বা কাজ কি?নাকি তারা ও আধুনিক কবিতার নামে এই চটি কবিতায় যৌন্সুখে মত্ত হয়ে অনুমোদন দেয়।

এসব কবিতা কি তাদের (কবি নয় ছাগলদের) বাবা মা ভাই বোনেরা পড়ে?তাদের কৈশোর উত্তীর্ণ ছেলে মেয়েরা পড়ে?

তাদের প্রিয় বাবা মা ভাই বোনেরা সন্তানেরা কি এইসব কবিতা পড়ে গরভবতি হয়?

Ami Nul

এইসব কবিতা? ছিঃ ছিঃ! এসব দেখার চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়! রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এমন 'সোনার বাংলা'র ছবি দেখেননি।

এইসব কবিদের মুখে একদলা থুতু ছিটাতে ইচ্ছে করছে!!

তৃষিত হিয়া

এসব বিকৃত ও অসুস্থ শিল্প আমাদের খাদ্য নয়। সুস্থ মস্তিষ্কজাত কোনো ব্যাক্তিরই নয়। যারা এগুলোর পূজা করে থাকে তারা নিঃসন্দেহে বিকৃত মানসিকতার অধিকারী।



মজিদ এ মোহাম্মদ

অবিকল মানু‌ষের অবয়বে মানুষের মাঝেই লুকিয়ে থাকা মানুষের চেহারায় কিছু "অমানুষ" বৈ তো নয়!! আর কবি সেতো এক সাধনার বিষয়।

এদেরকে ঘৃনা জানাতে ও ঘৃনা হয়, মানুষের চেহারার এসব অমানুষ দের।

শুধু বলি

আবার তোরা মানুষ হ।



Aslam Ibn Layek

মারজুক রাসেলের ফেসবুক আই,ডি তে আমি একদিন ঢুকে ঘন্টাখানেক ছিলাম। পরে না-পাক অবস্থায় বের হয়ে এসে গোসল করা লেগেছিল। কিন্তু তিনি যখন গীতিকবিতা লেখেন তখন ভাষা স্বাভাবিক।

এই তিন ছাগল (রাইসু, সজল, জামিল) এগুলো কবিতা বলে, কবি ও কবিতার অসম্মান করেছে।

আপনিও এদের আধুনিক কবি (যদি সেটা ব্যাঙ্গাত্মক অর্থে ব্যবহার না করে থাকেন) বলে আপনাকে ছোট করেছেন।

Nilanjona Puspita

যারা বলছেন এদের ভাল কবিতা ও রয়েছে: হ্যাঁ ভাল কবিতা কবি সায়্যিদ জামিল এবং কবি সজল আহমেদ উভয়েরই রয়েছে। তবে এদের দু'জনারই ভাল কবিতার চেয়ে অশ্লীল কবিতার পরিমান বেশি। এদের আরো সচেতন হওয়া উচিৎ এবং কবিতায় অশ্লীল ''শব্দ'' প্রয়োগ করা উচিৎ নয়। ভবিষ্যতে এরা কবিতায় অশ্লীল শব্দ এবং খিস্তি পরিহার করবেন বলে আশা রাখছি।

বিঃদ্রঃ কবি ব্রাত্য রাইসু এর কবিতা আমার কখনো কবিতা মনে হয়নি। এতে না ছিল কোন ছন্দ না হয় কোন কবিতা। কবিতা মানে লাইন বাই লাইন খিস্তি সাঁজিয়ে রাখা নয়। কবিতা একজন কবি এর আবেগ।

জি.এম. সুমন সরকার

এদের নামের অাগেকবি বসানো ঠিক হইনি,

ছিঃ ভমি অাসছে..

অনেকে অাবার বলতে পারেন সাহিত্যে কোন অশ্লিলতা নাই,

তবে এমন লেখা বর্জন করাই শ্রেয়

Proletariat (Manu Script)


Proletariat
Author: Sajal Ahmed
Type: Poetry
Format: PDF
Size: 2.43mb
Download Proletariat. PDF: https://www.mediafire.com/file/lokwkn53bm4sz52/Proletariat+uploading+copy.pdf
Preamble
I have some of my poems in the book. Thinking about poems are my own. I love to decorate the world like myself.
With your thoughts or imagination, the world of my own thoughts or imagination may not be the same.
I am not worried about whether your thoughts or philosophy are mixed with my thoughts or philosophy, because I am happy that 'at least I have a thought area of ​​my own. And I can paint my fantasies with my own paint! '
Last: Readers should read, think, and critique. That's my glamor.



Proletariat
Sajal Ahmed

Maxim E Publication
Published Date: 2 Dec 2018
Allright Reserved ©Sajal Ahmed
Prehistoric name
My father was old-fashioned. He named me Abu Bakr. The name was like poison to me. As an old woman,  The name has been found out from the bottom of the pinnacle. My father was old-fashioned. His thoughts are outdated.
I grow up and change the name; Instead of an old-fashioned name.
  I do not know if my father was suffering, But he never called me anymore.
Poets Never Die
If I am a woman poet
My poetry, there was no shortage of readers.
The comment room would have been filled, indigenous.
I'm sorry
Meanwhile, my poetry reader came out clean air, and a tree.
Then they said to me, write down the death;
And that's suicide.
Now I said; Every man and animal will one day taste death.
Poets are getting the news of death very long ago
O great winds and trees!
The trees and the wind laugh at me and say, 'But the poets never taste the death!'
Make a revolution
Against the bourgeoisie
And just a revolution
my mother
Did not eat rice
Today is three days
my mother
Did not get rice
Sweat took her clothes
There was no money tied
No grocers left him
Nobody paid for his hard work
Anus rice
Gourd pulp
Across the nun
Eutlet potatoes
No one bought it.
No one took the news,
Whether my mother ate or not
And just have to make a revolution.
To give rice to my mother,
And just a revolution.
Sixteen million people's resources
Swallowing, the upper class
Today will be divided, swallowed resources.
Maybe give rice
Either head
Sons of bitch, chewed your head today!

Proletariat
1.
I will buy a spectacles to buy my father, I heard from the store, the full costume spectacles stolen! There will be no police station for anyone who steals the galley. There will be no press conference, no meeting, no procession will be held. No status, event or group will be opened on Facebook in protest. No action will be taken from the government to thieves.
2.
 There are two types of theft in the world!
Proper stolen
Illegal stolen
Proper stolen proletariat and his property in the Elite House. Elite classmates pay the remaining stolen money. Elite people steal the cheap glasses from all markets and hopefully for more profit.
I think of my father going to buy glasses. Parents can not read the old specs due to lost!
3.
My dad
Want to see the daily political page! Then he became an intellectual and taught me how to survive in the present political field. How to make a foul goal. Father is not able to give me anything! As the father's glasses lost.
4.
I was excited to see my politician-savvy intellectual old father, so I went out to buy a spectacles. I came to the shop to see my father's spectacles stolen from the shop! The elites have stolen my dad's spectacles.
Now I want to eat all the elite money, carts and properties, all chew!

Suddenly!
Suddenly! Six people in front of you are wearing black clothes!
And they are threatening to shoot your father;
Not six of them, you can not understand that they are just a few! Father's hands are binding!
Tie the legs, and tape the face!
They  cheating on a booing, tapping the tape fills the vague word.
Suddenly!
And after hearing his shack, someone tied black in the face and hit with the gun button hit him! Father's hand tied. His legs tied. And tape in the mouth.
Now the father is going down!
 Dad does not know
His eyes are watering and his blood is bleeding!
Dad is now deliberately bidding And blood in the floor.
Suddenly!
Looking at the floor, your brother and mother's bodies are there after the floor.
They forgot to call people screaming.
As a mistake, the holes along the mother's forehead and brother's chest.
Now your eyes are water! But you can not cry!
The body of the brother is still bouncing, the tongue is out,
fresh blood in the floor!
You will not be pampered by the fact that this incident will be headlined in different newspapers tomorrow.
 Because all the news is not spunky. Nobody wants to be like this headline.
 You now have the idea of ​​saving yourself.
Suddenly you thought, what is your enmity with them?
You do not know so far You just know your father has a property. And there has been a conflict between Mayor Osman Sahab. Osman has called you and helped you.
Osman is a good man He is the winner of victory
You yourself are his people. You're a huge fan of him. His speech Motivational.
Now.    
 You think, such a good man like Osman can be found only in heaven; Or as a pity on the story page.
 This is not possible by him. Proceed in front of the story.
Suddenly!
You see no one around;
And there is only one chance in your hand
Think about what to do now. There is no time.
There is nothing to do or to die!
A pistol in front of you, you can survive if you want to use it. But if you shoot a gun and shoot him, then he will shoot his father right now! What do you think of racing to run!
Yes! Alvida! Survive. Yes, live life!
Suddenly!
'Father' goin in the shape! Squeeze the fad Buiyao..... Buiyao... Buiyao.......
Dad! They killed your dad!
Now? Now you will find them!
So run......... yes! Run it.........
A bridge in front
No
Six people wearing black clothes
Not more
Osman's black dress
The six of them are behind him
Dad is on the floor
Mother is dead afterwards
The brothers are screaming
Tape in the mouth of your father
Brother's body on the floor
Gun in your hand
You are in your house
You are running on the bridge!
Suddenly!
You think Osman is in front of you
Do not you in his house
Perhaps running to run,
You got hit in his car
He brought you to his house.
He asks you repeatedly,
'What is the event?'
You think all the imagination still
You are dreaming of sleeping at night.
Osman Sahib silence.
You're also silent You're over again. It's a dream After a while again came back.
Osman Sahab laughing in front of you.
It's a dream
It's not a dream.
Osman Sahib laughing. You are not in his house, in dark quotes. Ha ha ha Osman Sahab will laugh more!
I can not write anymore. Because once people die, there is no history!
I can only highlight, Osman's smiling success.
Osman sahab busses laugh......
If you want to fly then fly
If you want to fly then fly to the sky
If you want to fly then your fan will grow.

Liar Lover
O liar lover!
Your biggest lies "I love you babe, more than me and my father-mother."
I remember your words
And every falsehood will be judged one day!
That day I opened my pants zipper:
I'll piss your dirty face!
"What is insult?"
I'll teach you.
Rubbish slut girl
No one will look at you;
Nobody will show sympathy;
You will cry,
Nobody can hold your hand,
I'll kick you
In your face and chest
I will kick your stomach!
More,
I will tattoo your whole body
"You are a liar! You are a scam! You're a whore! You're a street nerd dog!"
Bitch now go to hell....

First Love Makin
I am talking about the first day to throw you away.
The day you hit me;
My bird took refuge in your secret house.
Both of us were in the trunk:
of the cemestery;
Both are very happy.
Then you were sucking my lips
Like an orange cell,
I think it would eat.
I kissed your whole body. Your nipple,
was very hard
I touched your breasts.
Tallow two balls.
You jerked eyes and bitten won lips
and said, "Ah!"
Then the became one two bodies.
The two souls joined together in the same spirit.
I still remember that day.

Prayer
More than once I tried
My neck is not lowered!
There is a lot to leave outside the suburbs
I do not feel good..
Where did the god worshiped,
where did God go?
Why do not you see me?
What a weird mood
Worshiped on the Lord's footsteps
Every evening and every morning,
My Lord's worship is no more
Do not mind!
I lost;
This is an unbearable pain!
Why do not you see me?
You Never seen his heart
O lovers of earth
You Never seen his heart,
Have you ever seen the heart
of your poor boyfriend?
How much burns?
How much of his humility, his survival,
How much does he think of himself as small?
What are you looking at
The young man's cry alone at night?
You look at the boyfriend
Sometimes the lover's heart?
How to fight with a real world;
Ever wondered why a sea water would be donated;
Why mix
The body in the grave
After so many ways have passed
A fish;
Decide to remain lonely.
pages breaks out of the book,
after a long sleeveless ride
One crow flies alone
The money is blown
after the ATM booth;
This world
Here it is
It's weird!
Sick and sick
You love it so much that it hurts you away;
Thinking you will be sick
By separating yourself from you.
You think of him as selfish
Think about your own interests
The boy left you today.
But
Forget you repeatedly;
That is not love and sometimes selfish;
Forget you repeatedly
If selfish;
But why do not you look at another woman thinking you will suffer?
You never asked yourself;
Why the boy in the face of is not so much smile today
Does not laugh a little?
Why do you want to move away?
Maybe the rest of the time you are sick with him
Thinking of yourself in your place, why he left yourself alone.
Leave you out and say in his heart;
"In the public way
In the crowd of seven hundred millions of people
Your walk is still a lot of way to your walk,
Just started;
There is no limit on this path
There are many bowlers here
Many goons;
A huge screen.
Large screen flashes unfinished
The screen is torn off
Start walking
You have to walk......
When you learn to recognize "what is man?"
When you start to realize how difficult the reality is
Again and again called my name will go to Dargah
Kedgeree will give me my name
But I can not get back again
How difficult can the human heart be
As if tough rock stone
Did not understand today?
You did it
But why often in his own soft heart
Do you suffer so much?
Why are you so skeptical to bite yourself?
How terrible it is to get rid of people
You can not learn today?
You have learned
Why then why
Why then
Can not you be strong? ''
On different issues
After the various wounds were created
And decided
Own unbeatable
Painter Onle
Do not let you burn
Your efforts to be happy for you.
You still did not see the reality;
How did you cry after crying?
Last night did not sleepy;
Could not sleepy
He cried very silently.
He never wanted to cry you;
And why did you cry?
Have you ever thought about that?
There comes a time
People sacrifice their favorite things
Just as Ibrahim gave his beloved son a sacrifice.
The world is underground
So here is the emotional crowd
The reality comes back often
There are many reasons for sacrificing their favorite things.

Am I Wrong?
I repeatedly say to the heart, "I am wrong, I am wrong!" The heart repeatedly tells me, "You do not, you are wrong! ''
Will not be seen
Suddenly we stopped at the last page;
Wherever the cloud stops on the mountain!
There is a frost on the fridge,
The rain rises every day in the morning and shook silently.
Just like a broomstick,
Where all the fish stops are waterless pond;
I'll stand there every morning alone,
I know that all will come, only you will not be seen....

Slave of the Devil
If the star goes away;
The devil is scared
Running rushing,
His servants in this town
Reigns
An Eye of Illuminati
The trembling shivering in winter
And singing different songs;
A piece of blanket is very cold
Hey poor party
To stay comfortable
Let's move to Satan's team.

I was a broken glass
I was a glass, and broke in a variety of ways.
Blood in broken glass it's severed heart.....

Going to die now
I'm going to die now
The soul is going down;
The boat floats on the Spirit,
Everything is going away from the body;
And I, I will not come back!
Mudane Football
After kicking everyone else, I guess, I'm a Mundane football!

Block To Making dreams
People can not sleep after crying, If he can not sleep, he can not make dream

The Train
The train that stopped at midway; That's death

God and My Dad
I never asked for anything from God, and God never gave me anything like my father. The difference between my father and God is that, my father was stunned by the birth of me. And God did not cease to create the punishment in the Hereafter will be rewarded!

My blocked Happiness
I feel painful Hundreds of millions of illnesses die of happiness

My syllabus
My syllabus has been burnt;
Do not read any bad love poem story book
No need spectacles available;
I do not fear the extra cost;
My syllabus is burnt-
Broke spectacles.
You are in Whirl of the earth
When you are in the whirl of the earth, when you look at the whole world, then you see the dull! Look at the left, there is no one next to you. Look at the left, or there is no one there. The God above is not with you. The parents of the house, they do not even understand you. Therefore, you do not have to stand up properly. now? Yes, your time of death is right now. But you know, you can not die. Because death does not want you!
I'm Afraid
When I look at the pocket, I'm afraid to look at you. After that, when I looked at the pocket last time, my own janaza taught myself.

Worst offender
The worst offender in the world itself seems to be, when my dear man is crying for my own sake!
I am
I only swallow the grief of beloved people. One day, the troubles that I have not digested, will answer everything.

Eunuch laws
This is the world of law;
Here people, animals, insects and insects, and roads all obey the law.
All the leaders of the world, all the poets of the world, have enacted the law.
You are walking; You have to obey the law.
Eating; Laws must be followed.
You are enjoying marijuana;
You will be enacted, they will take you away and the police will beat you; You must be in jail!
You do not have freedom of speech; Your words and laws have been imposed! You will leave the excretion; It is also under the law.
Therefore, you can be a sea or wave; There is no law, no matter where you are,
you can be happy wherever you are.
After whipping you will be able to float which is happy.
So you become sea or waves.

Prayer
More than once I tried
My neck is not lowered!
There is a lot to leave outside the suburbs
I do not feel good..
Where did the god worshiped,
where did God go?
Why do not you see me?
What a weird mood
Worshiped on the Lord's footsteps
Every evening and every morning,
My Lord's worship is no more
Do not mind!
I lost;
This is an unbearable pain!
Why do not you see me?
I'm Innocent
What is my crime?
Why do that?
What is the blame?
Do you leave me?
I'm innocent
I'm so so
I'm innocent
I'm not at fault!
I love you
So always say true
I'm so scared
About our relationship
If it breaks
My death is bound!
I do not want
To die
Leave you
I do not want you to cry
I do not want you to be alone
I do not want to see water in your eyes
I want you
Smile
More
Get angry with me
And finally
Love me.
You can cry me
Hit as much as possible
As much as kicks me
Still I will not let you cry
Because I love you
If I ever see you weeping;
If I ever see you wandering,
I will destroy this world!
Oath By God!

-The End-


Parallel Universe

I see my twin brother
One thin screen in us
I pulled my brother with my hand
He's not coming
The tanks are not coming
I cry
I'm my blood
Do not let others spread anywhere
The screen is between us
Mother breathed her breath;
Yet he is not coming.
Asked me; What is mother
Whether the substance? Whether its own mass, weight and space occupies?
I showed her mom's photo.
'Okay! Mother means a color photo? And asked.
I tried to convince him that there is no definition of mother in our universe.
Mother never objects, sometimes non-object, and feeling
If you want to see a mother, you will have to come to this universe.
He told me
Actually around the screen
Seconds will move the thorns
He'll turn his Universe
Maybe this can be found in the universe
 He may find the structural definition of the mother.
So, the Universe, it is better to let him stay in that universe.
I thought for a while; But as much as I mean, I'll never let my blood stay in another Universe. promise!

সজল আহমেদ এর কবিতা:আমার কোন কষ্ট নেই

আমার কোন কষ্ট নেই

এখানে বেঁচে থাকি নিজের শরীরে নিয়ে মাছের ঘ্রাণ
এখানে ছুটে চলি ভাঙা রোদে অজস্র বেদন বুকে আপ্রাণ।
আমার কোন কষ্ট নেই
কোন বেদনা নেই
বুঝতে পেরেছো?
এখন এখানে সমুদ্র শুকায়
পথ করে দেয় চিড়ে রোদে তেতে ওঠা বালি
এরপর বিভিন্ন প্রণালীর পারাপারের পর
মুক্ত হস্তে দান করি নিজেকে।
পৃথিবীর উপরে মায়া নেই
এবার;
চলে যেতে বাঁধা নাই।
চলে যাবার পর বুজে আসে চোখের পাতায় ভর করা ঘুমের নির্মাণ করা মেঘ;
নির্মাতা নিজেই মালিক সাই।
আমার কোন কষ্ট নাই
বুঝতে পেরেছো?
মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলি; জুমার নামাজের মতো সত্য;
আমার কোন বেদন নেই;
আমি নিজকে চিনি, যেমন দুগ্ধপোষ্য পশুরছানা চিনে ফেলে নিজগুণে নিজ মাতা
এবং কিছুদিন পরে আবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলি; আজানের কসম আজ খুব কষ্টে ছেদা হলো বুক।
       সবাই সুখে থাকে আমি কেন পাই নাকো সুখ?
আবার বলি;
আমার কোন দুঃখ নেই
আমার চোখে জল নেই
বোঝা গ্যালো?
এভাবেই স্ববিরোধী সমুদ্রে স্নান শেষে
আবার দাঁড়িয়ে পরি দগ্ধ হই রোদের ম্লান আগুনে
এরপর নিজেকে পুড়িয়ে পুড়ি ঘুম চোখের।
 ঘাম শরীরে ঘুমিয়ে পড়ি সোনার মাদুরে।
রাত ঘুমায় না;
এ কবিতায় কী লিখেছি জানি না
তবে এই জানি আমাকে এভাবেই লিখতে হবে
ব্রত করেছি
একটি ভালো দুঃখের কবিতা চাষ করে যাবো
চাষ করে যাবো এক সমুদ্র বিরহী কবিতার;
ও সমুদ্র চাষা
ও নীল মেঘের দেশে বসা
নিয়তির ক্রন্দনরত মা জননী
আমাকে ধার দাও তোমার সমূহ সুখ সিঁদুররাঙা সিঁথির ভাঁজের।
আমার কোন সুখ নেই
বুঝতে পারলে?
কী বকুলের ফুল চিড়ে নেমে আসা রোদ, মাঠ, ঘাট পাখির কলরব; নীরবে ডাকতে থাকা নিশ্চুপ সব-
নিশ্চল পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেঘ; এভাবেই থেমে গিয়ে দেখ-
কিভাবে ভালো থাকতে হবে তোর।
কিভাবে কুয়াশা চিড়ে বা ধ্বংস করে নেমে আসে ভোর।
সিক্ততা বুঝিনি; বুঝিনি কিভাবে ভালো থাকতে হয়-
ভেজা রুমালে চোখ মুছলে চোখের জল বুঝা যাবে না।
বুঝিনি কিভাবে সুখে থেকে থেকে মানুষটা বিরহে মরে যায়;
নগ্ন পায়ে হেঁটে এসেছিলাম বহুদূর
তবুও দেখা হয়নি
এরা কিরকম
কিভাবে নগ্ন চোখে
বিক্ষিপ্তভাবে
লোকমুখে
শুনে নেয়
কার শরীরে কতটা ঘাম
আর কার কতটা ঠিক দাম!
#সজল_আহমেদ