প্রাজ্ঞ

প্রাজ্ঞ



প্রাজ্ঞ পাঠের আগে
বেশ কিছুদিন আগে কাহলিল জিবরান এর গদ্য কবিতা দি প্রফেট পড়া হলো। এত বড় একটা সৃষ্টি মানুষের হতে পারে ভাবলে শিহরিত হতে হয়! প্রত্যেকটা বাণী পড়ে আমার মনে হয়েছিলো যে; জিবরান বোধ হয় একজন মহামানব যিনি আপনার-আমার সকলের মনের কথা দি প্রফেট লেখার সময় জেনে গেছেন! দি প্রফেট একটি সাড়া জাগানো গদ্য কবিতা। প্রায় ২০ টি ভাষায় এর অনুবাদ ও হয়েছে। জিবরান এই বইতে কিছু ছবিও নিজে এঁকেছেন যা তাঁর বিশালত্বতাকে আরো তুলে ধরেছে উচ্চে! মনে মনে আমার একটা আকাঙ্খা জাগলো যে; কাহলিল জিবরান কে অনুসরণ করে আমি যদি একটা কিছু লিখি তাহলে কেমন হয়? ঝোঁকের বশে লিখে ফেললাম অনেকখানি। এক সুহৃৎ জানালো “লেখাটা নাকি হাদীস এর মতো হয়েছে!” ঠিক দি প্রফেট এর মতো হয়নি। আমি অনুধাবন করলাম যে আসলে নিজের ক্রিয়েটিভিটির বাইরে গিয়ে অন্যকে অনুসরণ হাদীসের মতোই হবে। তা আর বাণী হবেনা। আমি যে পর্যন্ত লিখলাম ওখানেই শেষ করলাম। আর লিখতে মনে চাইলো না কাউকে অনুসরণ করে। কারণ, আমি জিবরান কে অনুসরণ করে আমার গদ্য কবিতাটা লিখছি এখন অন্যকেউ যদি জিবরানের দি প্রফোট পড়ে আমার “প্রাজ্ঞ” পড়ে তাহলে আমার চিন্তাটা তাঁরা ধরে নেবে জিবরানের চিন্তা হিসাবে। আমার গুরুত্ব থাকবে না। আমি যে লেখাটা লিখলাম, নিজের মেধা-মগজ দিয়ে। কাহলিল জিবরান কে সুরকার আর আমাকে গীতিকার হিসাবে ধরতে পারেন। তবুও ঐ যেটুকু অনুসরণ করলাম সেটুকুর জন্য আমার অধ্যাবসায় কে অস্বীকার করা হতে পারে। প্রাজ্ঞ লেখাটা এর জন্যই স্টপ করে দিলাম। যেটুকু লিখেছিলাম সেটুকু আপনাদের পাঠের উদ্দেশ্যে তুলে দিলাম।
সজল আহমেদ
বরিশাল, বাংলাদেশ।
৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার

প্রাজ্ঞ
তাঁর গলায় একটা শাপলার মালা ছিলো আর পরনে গেঁড়ুয়া পাঞ্জাবী সাদা লুঙ্গী আর হাতে তজবীর দানা।
সে নামলো আমাদের বন্দরে তখন সন্ধ্যা শেষে কৃষ্ণ রাত ছেয়েছিলো এ বন্দর।
এ বন্দরের স্মৃতিতে স্মৃতিতে সবুজ। তাঁর মনে হলো এ নগর তাঁর চিরচেনা। এ নগর তাঁর আত্মীয়।
তাঁর শাম শাম বোরাককে সে উড়ে যেতে বললেন। বোরাক তার সাদা ডানা মেলে উড়ে চলে গেলো।
নেমেই একটা চায়ের দোকানে যোগসাজশ বসলো।
তাঁকে দেখে যারা চিনতে পারলো চারপাশ থেকে ঘিরে ধরলো।
আর জিজ্ঞেস করতে থাকলো একের পর এক। চা দোকানদার তাঁকে এক কাপ চা বানিয়ে দিলো।
হাসিমুখে তিনি চায়ের কাপ নিলেন এবং বললেন শুকরিয়া সুহৃৎ!
তখন চায়ের কাপ থেকে বাষ্প উড়ে যাচ্ছিলো মেঘেদের রাজ্যে। এই বাষ্প একদিন অবেলায় বৃষ্টি হয়ে নামবে পানিচক্রের নিয়মে।
আর বৃষ্টি থেকে জন্মাবে যে ফসল তা পরিচিতি পাবে সোনার ফসলে।

আসা যাওয়া
“জনাব! কষ্ট হয়নিতো, কষ্ট হয়নিতো? এ অবেলায় কেন?”
সে চায়ের কাপ ঠান্ডা হওয়ার পর একচুমুক চা গিললেন।
চা ঠান্ডা হওয়ার পর চুমুক দেয়ার কারণ হলো সে পানিচক্রের নিয়ম ভাঙতে চান না।
চা গিলতে গিলতে বললেন,
“সুহৃৎ আমার ! আসিবার কোন সময় হয়না। সময় হয়না চলিয়া যাইবার।
যে যাইবে সে যাইবেই আর যে আসিবে তিনি আসিবেন’ই।
তোমরা চাইলেও আর না চাইলেও সে আসিবেন।
কারো ইচ্ছা অনিচ্ছায় আসা যাওয়া এক প্রকার দাসত্ব।
মানুষ একমাত্র প্রভূর দাস অন্যসবাই মানুষের।”

স্রষ্টার সন্নিকটে ঋন
যাঁরা তাঁকে প্রথম দেখায় চিনলো না তাঁরাও চিনতে ভুল করলোনা। সবাই জড়ো হয়ে বসলেন। পূবের আন্তরীক্ষে তখন একফালি চাঁদ দেখা গেলো।
চাঁদের আলোতে কৃষ্ণ রাত তখন উঠন্ত যৌবনা যুবতী!
তিনি তাঁর সুহৃদ্বরদের দিকে তাকালেন। তখন তাঁর চোখ থেকে টপটপ করে অশ্রুধারা গড়িয়ে গড়িয়ে মাটি ভিজছিলো প্রায়!
তিনি চাঁদফালির দিকে তাকিয়ে বললেন,
“সুহৃদ্বর আমার! তোমরা তাঁর কোন নিয়মত কে অস্বীকার করিবে?
পৃথিবীর মাধ্যিখানে তুমি এমন কিছু ঋন নিয়া জন্মাইয়াছো যাহা কস্মিনকালেও শুধিতে পারিবেনা।
আর এই যে ঋনসমূহ শোধ করিতে চাহিলে তোমাকে ধরিয়া নেওয়া হইবে তুমি পথভ্রষ্টা।
স্রষ্টার কাছে যে ঋন রহিয়াছে তোমার তাহা শোধ করিবার আকাঙ্খা হইলো বোকামি।
এই তালিকাতে আরো কিছু রহিয়াছে সুহৃৎ।
মাতৃঋন তন্মধ্যে একটি।
এক যুবক দাঁড়ালো। যুকটির রয়েছে ঘন দাড়ি, এলো কেশ আর তীক্ষ্ণ চোখ।
এ চোখ এমন যে প্রশ্নবানে জর্জরিত করে যে কাউকে মেরে ফেলতে পারে।
দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলো
“জনাব তাহলে মানুষ জন্মগত ভাবেই ঋনী বলছেন?
তাহলে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব কোথায়? মানুষ কী তবে নিকৃষ্ট নহে?
যেমন ইদুর, ছুঁচো আর রয়েছে বিভিন্ন কীট?”
সে মুচকি হাসলো আর যুবক কে পাশে বসিয়ে হাতটা রাখলো তাঁর পিঠে গভীর মায়ায়।
“সুহৃৎ! এই যে তুমি প্রশ্ন করিলে ইহাই তোমার শ্রেষ্ঠত্ব। মনে রাখিয়ো, মানুষ ছাড়া অন্যকেউ প্রশ্ন করিতে পারেনা তাই তাহারা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব নহে।
তুমি কী?
কিভাবে আসিলে?
কেন আসিলে?
তোমার দ্বার কী সম্ভব? এসকল প্রশ্ন করা আর ইহার সমাধান খুঁজিতে যাওয়াই তোমার শ্রেষ্ঠত্ব।
মনে রাখিও তুমি মনুষ্য, তোমার মাঝে নিজেকে খুঁজিয়া পাবার আকাঙ্খা যতটুকু রহিয়াছে অতটুকুই তুমি খাঁটি মনুষ্য।
সুহৃৎ আমার! পিতার শ্রেষ্ঠত্ব মৃত্যুদিন পুত্র কে বলিয়া যাওয়া ‘বাছা সুখে থেকো!’
মায়ের শ্রেষ্ঠত্ব দুগ্ধদানে নহে শুধু। তোমার ষোলো-কুড়িটি বছর গড়িয়া দেওয়াই মা।
একজন পুত্র তাঁহার পিতার চাইয়া তাহার মাতা কে বেশি ভালোবাসতে শেখে এটাই তাহার শ্রেষ্ঠত্ব! ”
যুবক তাঁর পায়ে লুটে পরার পূর্বেই সে তাঁকে বুকে তুলে নিয়ে ললাটে চুমু খেলো আর সে চায়ের টাকা পরিশোধ করে হাটা ধরলো অন্ধকারের গলিতে।
এক হাতে তালিয়া বাজেনা
সামনে একটি উপসানলয় তাঁকে আকৃষ্ট করলো। তিনি উপসানালয়ে তাঁর কাঁধের ব্যাগটি রাখলেন। উপসানালয়ে যাঁরা ছিলেন তাঁরা সবাই’ই চিনতে পারলো তাঁকে। উপসানালয়ের সবাই তাঁকে ঘিরে ধরলো এবং প্রশ্নে জর্জরিত করতে থাকলো।
তাঁকে এক বৃদ্ধ বললেন, আপনি আমাদের ঝগড়াবিবাদ সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বললেন,
একহাতে কভূ তালিয়া বাজে না। আবার একটি কারণ হইতে একটি ফাসাদের ও সৃষ্টি নহে।
ঘটানা সমূহের সৃষ্টি হইতে হইতে একখানা ফাসাদের সৃষ্টি হয়।
সুহৃত আমার!
মনে রাখিও, যে ব্যক্তি খুন হন তাহার মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী থাকে।
আর ফাসাদের মূল কারণ হইলো ক্রোধ।
ক্রোধ তোমাদিগকে অন্ধ করিয়া দেয়। সে সর্বদা রুধির ধারা দেখিতে ভালোবাসে।
তোমাদিগকার ভেতরের পশুত্ব আত্মাকে সে সম্মুখ হইতে প্রবঞ্চনা দেয়। ক্রোধ হইলো ধূর্ত প্রবঞ্চক।
অতএব ক্রোধকে সংবরণ করিতে হইবে। যদিও ক্রোধ সংবরণ মনুষ্যের এখতিয়ারে নহে।

ইল্যুসন/ আবেগ
এক কবি উঠে বল্লেন, মহোদয় আপনি আমাদের আবেগ সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বললেন,
সুহৃত আমার! আবেগ হইলো তোমার মধ্যিকার জন্মানো এক প্রকার মানসিক বিষ।
যাহা ক্রমশই তোমার রক্তে বহিতে থাকে এবং, তোমাকে শোষন করিতে থাকে।
সে তোমাকে তৈয়ার করে তাহার গোলামরূপে। যার যত আবেগ সে তত মানসিক ভাবে দাস হইয়া থাকে।
আবেগ হইলো একখানা তাজা খুন। ইল্যুসন হইলো একখানা পচা শামুক।
যাহাতে কাটলে হৃদয়, অনুভূতি পচিয়া যায়!
তোমরা আবেগ বশত কত কী করিয়া ফেলো নিজেই জানো না।
সে তোমাকে তাহার বল দ্বারা তাহার কার্য সম্পাদন করাইয়া থাকে।
তোমাদিগকার মধ্যে লালিত পালিত আবেগ তোমাদিগকার চেতনা ক্রমশ খাইয়া ফেলিতে থাকে যেমন একটি ঘুনপোকা একটি কাঠকে খাইয়া ফেলে।
খবরদার!
তোমরা আবেগ কে প্রশ্রয় দিওনা। যদি আবেগকে প্রশ্রয় দিতে থাকো তবে তুমি কার্য সাধন করিতে পারিবেনা।
আর যাহাদের আবেগ নাই তাহারা যেন নিষ্ঠুর ও না হয়।
আর তোমাদের সন্তানদের আবেগহীন করিবার শিক্ষা দেওয়ার দরকার নাই।
আগে নিজে আবেগহীন হও তাহা হইলে তোমাদের ঔরসে যাহারা আসিবে তাহারাও আবেগহীন হইয়া জন্মাইবে।
তুমি চারদিকে তাকাইয়া দেখো তোমার জন্য আবেগে গদগদ হওয়া কাহাকে কী দেখিতে পাইতেছো?
না নেই যাহা দেখিতে পাইতেছো তাহা সকলই মায়া।
অথচ এই মায়ার জন্য তোমরা কত কি না কর!
প্রতিটা মূহুর্তে তুমি আবেগকে মায়া রূপে প্রশ্রয় দিতেছো।
আর ডেকে আনছো নিজের ধ্বংস কে!
এই রূপ তুমি যদি আবেগ কে প্রশ্রয় দিতেই থাকো তাহলে মনে রেখো তোমার ধ্বংস অনিবার্য!

বিশালতা
একজন ইঞ্জিনিয়ার বললো, আপনি আমাকে বিশালতা সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বল্লেন, বিশালতা হইতেছে যাহা অসীম নহে আবার সংকীর্ণ ও নহে। বিশালতার নির্দিষ্টতা রহিয়াছে।
আর এর নির্দিষ্টতা পরিমাপ করে তোমার দুচোখ।
তোমার চোখে যাহা বিশাল তোমার থেকে যাহার উচ্চতা বেশি তাহার কাছে উহা বিশাল না ও হইতে পারে।
সুহৃত! তবে আমি অনেক কে বলিতে শুনি তাহারা আবেগের বশবর্তী হইয়া আন্তরীক্ষ কে বিশাল বলিয়া ফেলে।
আন্তরীক্ষ কে কভূ বিশাল বলিও না। আন্তরীক্ষের বিশালতা নেই। বিশালতা শুধুমাত্র তাহার’ই রহিয়াছে যাহার গন্তব্য রহিয়াছে।
আন্তরীক্ষ হইলো মায়া। তাহার কোন পরিমাপ করা যায় না। তাহার শেষ আর শুরু কোথায় উহা স্রষ্টা বৈ কারো জানা নেই।
যাহার শুরুই তুমি দেখিলে না তাহা বিশাল না অস্তিত্বহীন তাহা তুমি জানিবে কেমনে?
মনের ও বিশালতা নেই, মন হইলো সংকীর্ণ। যাহাকে তোমরা বিশাল মনের বলিয়া থাকো তাহার মন সংকীর্ণ থাকে সর্বদা অপরাধবোধ নিয়া।

মৃত্যু
এরপর একজন কবরের পাহারাদার বললেন, জনাব আপনি আমাদের মৃত্যু সম্বন্ধে বলুন।
তিনি বলিলেন, মৃত্যু এক পীড়াদায়ক উপঢৌকন! পৃথীবিতে এই একটি মাত্রই উপঢৌকন রহিয়াছে যাহা কেউই গ্রহণ করিতে চায় না।
অথচ শেষ পরিণতি তাহার ইহা গ্রহণ করিতে হয়।
মৃত্যুর বর্ণনা তোমাদিগকে বলি,
মনে কর তোমার সারা শরীরের চামড়া ছাড়ানো হইলো। এবং উহার উপর নুন ছিটানো হইলো।
মৃত্যুর মতোই আরো কষ্টকর হইলো মনে না হইয়া মুখে শোক প্রকাশ।
জোড়ে কাঁদা এক প্রকার আদিখ্যেতা।
তোমরা চিৎকার না করিয়া শোক প্রকাশ করিবার চেষ্টা করিবে।
যদি শত চেষ্টার পর ও তোমরা চিৎকার দিয়া কান্না বাহির হইয়া আসে তাহা হইলে সেই কান্না হলো হৃদয়ের কান্না।
ও কান্না তোমার থামাইবার দরকার নাই। তুমি কাঁদিতেই থাকো কাঁদিতেই থাকো।
শোক করিলে আত্মা ক্রোন্দন করে, আত্মার খোরাক কমতে থাকে এই ভেবে যে
“আহা এই মুর্দার প্রতি অাফসোস যে তিনি পৃথিবীর আর দুটো উন্নতি দেখিতে পাইলেন না!
কেননা আফসোস করা এক নিম্নস্তরের।
তুমি যাহা করিয়াছো তো করিয়াছোই, তাহাতে ঠিক বেঠিক হইতেই পারে তাই বলিয়া তুমি বারবার আফসোস করিলে তোমাকে ঐ কাজ পীড়া দিতে থাকিবে ক্ষণে ক্ষণে।
পিতা ও পুত্র যদি কোন হেতুতে এক সঙ্গে মরিয়া যায় তবে তাহাদের লাশ একত্রে লোকজন কে দেখাইওনা!
যেকোন একজনের লাশ দেখাও।
তবে পিতার লাশ দেখানোকে আমি সুপারিশ করি তোমাদিগকার কাছে।
যদি পুত্রের লাশ দেখাও তবে তাহারা আফসোস করিবে আর মৃত্যুকে ভর্ৎস্যনা করিবে।
যদি পিতাপুত্রের লাশ একত্রে দেখাও তবে তাহাদের আফসোসে পিতাপুত্রের আত্মার ও মৃত্যু ঘটিবে। সুহৃদবর!
মায়ের লাশ পুত্রকে, পুত্রের লাশ মা কে দেখিতে দাও যাহাতে অল্পেই তাহাদের বুকের পাথর নামিয়া যাইতে পারে।
পুত্র বা মা কাউকেই কান্না করিতে নিষেধ করিও না! মনে রাখবে এ কান্না প্রাপ্য কান্না একে অপরের প্রতি!
যে স্বহত্যা করিতে চায় তাহাকে বাঁধা দাও কেননা স্বহত্যা কাপুরুষতা না হইলেও নিজের প্রতি জুলম!
তবে তাকে কান্না করিতে দিও। কান্না জরা ধ্বংস করে।

আত্মা
এরপর এক দরবেশ বললেন, আপনি আমাকে আত্মা সম্বন্ধে বলুন।
একটা মানুষ যখন দুনিয়ার উপর তাঁর কর্তৃত্ব ছাড়িয়া চলিয়া যান তবে সে লাশ বলিয়া গণ্য হয়।
ব্যক্তির মৃত্যু হয় তবে আত্মা এহকাল-পরকাল উভয় কালেই জীবিত। দুনিয়ায় দেহের কর্তৃত্ব বিরাজকালীন আত্মা হয় নিষ্কর্মা।
আর যখন মানুষ লাশ হয় তখন তাঁর আত্মা সচল হয়, আত্মার অনুভূতি জন্মে।
আর সে আত্মা সুখ-কষ্ট উপলব্ধি করে। আত্মার ও আধা মৃত্যু হয়।
কখন বুঝবে তোমার আত্মার আধমরা হইয়াছে?যখন দেখিবে,
পৃথিবীতে তুমি পাওয়া সবচে বড় কষ্টেও তোমার চোখে জল আসছেনা।

সজল আহমেদ এর কবিতা: রিদমড

রিদমড

ঘুমের শহরে কেউ কথা বলেনা
কথা বলেনা সেথা গাড়ি চলে না
.
গাড়ি চলেনা সেথা, গাড়ি চলে রোডে
গাড়ির পেছনে সবাই দল বেঁধে ছোটে
.
দলবেঁধে ছোটে সবে দলে দলে যায়
হেঁটে গেলে সকলের ঝিম ধরে পায়
.
ঝিম ধরে পায় যদি কেউ হেঁটে যায়
হেঁটে হেঁটে সেঁজুতি বেঁটে হয়ে যায়
.
বেঁটে হয়ে যেই সে ফুল ছুঁতে যায়
হাত ছিড়ে রক্ত গড়ায় কাঁটারো গুতায়
.
কাঁটার গুতায় যেই রক্ত তাঁর ঝরে
বিষের জ্বালায় ফুপিয়ে সে মরে
.
ফুপিয়ে মরে সে অকথ্য ব্যথায়
অকথ্য ব্যথারা একদা শরীরে মিশে যায়
.
শরীরে মিশে যায় তার সাথে শিতল ও বাতাস
শিতল বাতাসে ওরা খেলে তিন তাস
.
তিন তাস খেলে যেই কেউ হেরে যায়
একে অপরের তখন কপাল ফাটায়
.
কপাল ফাটিয়ে মজিদ ঘর ছাড়া হয়
ঘর পালালেই কুফার কপাল খুলে যায়
.
কপাল যেই খুলে যায় কুফা বেকুব হয়ে যায়
বেশি টাকা নিয়ে বসে পরে আবার জুয়ায়
.
জুয়ার আড্ডায় কুফা আবার যেই বসে
খয়রাতি কুফা রূপে গৃহে ফিরে আসে
.
গৃহে ফিরে এসে খায় ভাত সেই মেলামাইন থালায়
কুকুরের পেটে কভূ নাহি ঘি হজম হয়
.
ঘি হজম নাহি হলে থানকুনি খায়
থানকুনি খেলে পেটের ব্যামো চলে যায়
.
ব্যামো চলে গেলে আবার কুখাদ্য খায়
আবাল মরে না সব পৃথিবীতে পরে রয়
.
পরে রয় পৃথিবীতে কতশত অবাস্তব কল্পনা
মাটির বুকে ছিড়ে ফুটুক সুশ্রী ফুল সকলের বাসনা
.
বাসনা সকল কভূ পূর্ণ নাহি হয়
বেকুবের বুদ্ধি হলে সব অকালে হারায়
.
অকালে হারিয়ে যায় অযত্নের দাঁত
প্রেমিকা জমা করে শুধু অবসাদ
.
শুধু অবসাদ যারা জমা করতে জানে
তাঁরা শেখাতে আসে ভালোবাসার মানে
.
ভালোবাসার মানে ঝামেলা বাড়ানো
পঁচা মিস্টির নিষ্ফল মাছি তাড়ানো
.
মাছি তাড়িয়ে শেষে চলে গেলে বেলা
শিশুরা ফিরে ঘরে ছেড়ে এসে খেলা
.
ছেড়ে এসে খেলা মাকসুদ ঘুমুতো যায়
পলি কে স্বপ্নে দেখে দ্রুত ভোর হয়
.
ভোর হলে মা এসে কান ধরে টানে
মরিচ ডলে ভাত খায় বসে স্ব আসনে
.
স্ব আসন যে ছিনিয়ে নিতে জানে
তাঁর বুঝতে বাকি নেই জীবনের মানে
.
জীবনের মানে অস্ত্র ছাড়া যুদ্ধ
হয়তবা মরো, নতুবা মারো পালসুদ্ধু
.
পালসুদ্ধু যদি যুদ্ধে মারতে নাহি পারো
শত্রুর গুলিতে তবে আগেভাগে মরো।
(সংক্ষিপ্ত)

সজল আহমেদ এর কবিতা: আব্দুল আজিজ

আব্দুল আজিজ

১.
আব্দুল আজীজ সাব!
আপনি এত কামালেন
টাকা,
তবুও
আপনার সম্পদের কোন হিস্যা হবে না!
আপনি হেঁটে যান, আমি উগ্র গন্ধ পাই!
আপনি এত টাকা দিয়ে কি করবেন?
প্লিজ পারফিউম কেনেন।
টাকা দিয়া কি বাবা ডাক শুনতে পরবেন?
আপনার একটি বাচ্চা।
জুন এ দশ বছরের হলো।
আপনার বাচ্চা। ও খেতে চায় না। ও কথা বলে না। ও মরে যায় না। ও মরতে চায় না।
ছোটবেলায় যখন ডাক্তার দেখাতে নিয়েছিলেন,
ডাক্তার বলেছিলেন, পাঁচ বছর পর আপনার বাচ্চা ঠিক হয়ে যাবে। আপনাকে ডাকবে আব্বা।
আজ
দশবছর
হয়ে গেলো
দামড়া পোলাটা
ও কিন্তু আপনাকে
একটিবারের তরেও
আব্বা ডাকলো না!
২.
আব্দুল আজীজ!
আপনি ওকে গলায় বেঁধে দিয়েছেন তাবীয।
আপনার
যেন ও কথা বলে, খায় আর হাটতে পারে। আর আপনাকে আব্বা ডাকে।
অমুক ফকিরের কারামতি ভরা তাবীয,
এ তাবীয গলায় দিলে পুরুষের গর্ভে ও সন্তান হয়ে যায়!
কিন্তু আজীজ কি লিখে এনেছেন আপনার কপালটায়
কে জানে!
আপনার বাচ্চাটা এ তাবীযেও মুখ খুলে না!
আব্দুল আজীজ সাব
আপনার বেঁধে দেয়া তাবীযে কোন কাজ করে না!
আপনার
সন্তানটি
আপনাকে
ডাকে না
বাপ!
৩.
ও অসুস্থ হয় কিন্তু মরে না
আপনি চান ও মরে যাক
বোঝাটা কমে যাক।
কিন্তু কি?
ও মরবেনা।
ও অসুস্থ হলে আপনিই ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান
অথচ আব্দুল আজীজ!
বাচ্চাটা মরে যাক আপনি চান।
আজীজ আপনি থামুন!
তবে কেন ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান?
আব্দুল আজীজ আপনি কিন্তু থামেন না!
আপনি থামবেন ও না! আপনার সন্তানটিকে বাঁচাতে হবে। আপনার আশা হয়তো বিশটি বছর পর;
ও আপনাকে আব্বা ডাকবে!
কিন্তু কী?
আব্দুল আজীজ সাব
আজ
দশবছর
হয়ে গেলো
দামড়া পোলাটা
ও কিন্তু আপনাকে
একটিবারের তরেও
ডাকলো না বাপ!
৪.
আপনি যতই বলুন এ সন্তানটির জন্য আপনার মায়া আছে, ভালোবাসা আছে। আমি জানি। নয়তো কবেই গলাটিপে ওকে মেরে ফেলতেন!
৫.
এরপর একদিন আপনার সন্তানটি অসুস্থ হলো; আপনি দেখতে পেলেন ওর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে খুব! চোখ দুটো উপরের দিকে রেখেছে কাউকে দেখার মতো। আর জিহ্বা বের করে তৃষ্ণার্ত বিড়ালের মতো।
আপনি কাঁদছেন আজীজ সাব?
আপনিও কাঁদেন? কাঁদতে আপনি জানেন?
আপনাকে কাঁদতে দেখলাম এই প্রথম!
আপনি কাঁদেন
কারণ আপনি জানেন
এই বাচ্চাটি আজ মারা যাবে!
আর আব্দুল আজীজ সাব
দশটি বছর একটা কুকুর পুষলে, ঐ কুকুরের প্রতি ও মায়া পরে যায়
আপনি ওরঁ প্রতি সকল গাফেলতি- অবহেলার কথা ভাবছেন;
আর আজীজ সাব এসব ভেবেই আপনি কাঁদছেন!
৬.
আপনি দেখতে পেলেন একসময় আর বাচ্চাটি নড়ছে না
আপনি জোড়ে জোড়ে কাঁদছেন!
কারণ ও মরে গেছে!
নিচ্ছে না কোন দীর্ঘশ্বাস
আঃ আজীজ আজ দশবছরে ওর আয়ু শেষ হয়ে গেলো
কিন্তু
আপনাকে
ভুলেও
ডাকলো না
আর
বাপ!
৭.
মানুষ কয় প্রকারের কুত্তারবাচ্চা হতে পারে, বাচ্চাটা মারা যাবার পরপরই আপনি বুঝলেন!
যারা বেঁচে থাকতে একটা দিন ও বাচ্চাটাকে দেখতে এলো না,
তাঁরা আপনার কাঁধে হাত দিয়ে বলে "ইস যদি একটিবার ডাক্তারখানা নিতেন তাহলে হয়তো বেঁচে যেতো!''
কেউ বলে "চিকিৎসার অভাবে বাকহীন ছিলো বাচ্চাটা!''
আবার কেউ কেউ চোখের জলে আপনার দাঁড়ি ভিজিয়ে দেয়!
আপনি শুধু দেখেন। অথচ কিছু বলতে পারেন না! কারণ মরে পরে থাকা বাচ্চাটা আপনার!
৮.
আজীজ সাব
আপনি এখন ভাবছেন,
ওকে জন্মানোই আপনার ছিলো মহাপাপ
কারণ
আজীজ সাব
এই দশটি বছর ও থেকে গেলেও
একটিবার
ডাকলোনা
আর বাপ!

সজল আহমেদ এর কবিতা: চলো ঘুমিয়ে পড়ি

চলো ঘুমিয়ে পড়ি

মেহমুদা
আসো
আজ
আমরা
তাড়াতাড়ি
শুয়ে
গেলেই তাড়াতাড়ি
ভোর হয়ে যাবে।
পিথিবীকে আজ মানুষ শূণ্য করতে গিয়ে দেখি তোমার স্তন এখনই পূর্ণ দুগ্ধে!
মনেহলো ভবিতব্য শাবকটি আমাদের পাশেই কাঁদে,
কি এক আজব কান্না ওরা কাঁদতে জানে মেহমুদা যা চরম সীমারকেও হোসেন করে দেয়!
আমার আর উচিৎ হবে কি পাঁচ টাকার প্যানথারে জাতের অস্তিত্বকে অপচয় করা?
মেহমুদা
আসো
আজ
আমরা
তাড়াতাড়ি
শুয়ে
গেলেই তাড়াতাড়ি
ভোর হয়ে যাবে।
শত্রুর ভালো কথাও যুদ্ধ জয়ের একটি চেষ্টা মাত্র মেহমুদা তুমি জানো।
যারা আমাদের বলে, "১টি হলে ভালো হয় ২টির অধিক ৩টি নয়, বাল্য বিবাহ ভালো নয়!'' ওরাই একদিন বলেছিলো "২টি হলে ভালো হয়, ৩টির অধিক ৪টি নয়, বাল্য বিবাহ ভালো নয়!''
বাসটার্ডস!
মেহমুদা তুমি জানো? যারা এই ভজন ছড়িয়েছে ওদের প্রত্যেকে ছয়-ছয় ভাই! আর চাইল্ড পর্ণ তৈরী হয়েছিলো ওদের গোপন ঘরে হিডেন ক্যামেরায়!
মেহমুদা! আমরা এই প্রতারকদের কোন কথাই গায়ে মাখবো না।
মেহমুদা
আসো
আজ
আমরা
তাড়াতাড়ি
শুয়ে
গেলেই তাড়াতাড়ি
ভোর হয়ে যাবে।
আমাদের দ্বিতীয় বাচ্চাটির কথা ভাবা উচিৎ যিনি অনাগত.....
যার জন্য তোমার স্তনে এসেছে শাল দুধ। তাঁর ক্ষুধা পেলে মুখে ভরে দেবে উদগ্র দুধের বোটা। নিপল চুষতে-চুষতে বাচ্চাটি
মেহমুদা একদিন বড় হয়ে যাবে। ও আমেরিকা যাবে। ইউনিসেফের আওতায় ফিরে আসবে এই বাঙলায়। আমরা সেদিনই "১টি হলে ভালো হয় ২টির অধিক ৩টি নয়, বাল্য বিবাহ ভালো নয়!'' মেনে নেবো। অন্যথায় আমাদের বাচ্চার চাকরীটা থাকবে না!
মেহমুদা
চলো ঘুমিয়ে পরি......
আমরা ঘুমুলে
তাড়াতাড়ি
ভোর হয়ে যাবে।
না ঘুমুলে ভোর হতে
ঢের ঢের দেরী হয়ে যাবে!

সজল আহমেদ এর কবিতা: কই যাবা সেদিন?

কই যাবা সেদিন?

১.
হঠাৎ আমি শুনলাম, তুমি মরে গ্যাছো।
আমি হাসতে হাসতে মারা যাবার পালা
তুমিও যে মরতে পারো আমার বিশ্বাস হয় না
কারণ, তুমি শুয়ে শুয়ে আত্মায় উপলব্ধি কর।
সবাই তোমার সুনাম করছে
আমি আবার হাসি
আমি তো জানি, মানুষ মরলে "জ্ঞানী , ভালো আর মেধাবী হয়ে যায়
২.
এখন ভাবছি হাশরের কথা।
সেদিন তোমার কি হবে?
কই তুমি সেদিন পালাবে?
কই যাবে কি খাবে?
কার হোন্ডার পাছা ধরে
ঘুরে বেড়াবে?
কি হবে তোমার সেদিন কি হবে?
যেদিন কোন হোন্ডার আর থাকবে না তেল,
সেদিন হাশরে মাঠ পাবে বসার জায়গা পাবে না,
রোড পাবে কিন্তু হোন্ডার স্পেস পাবে না।
মাওলার বিচারে হয়ে যাবে তোমার ফাঁসি অথবা জেল!

সজল আহমেদ এর কবিতা: খামোস কবিতা

খামোস কবিতা


কবিতা পুনঃপুন হইতে চাও তুমি প্রেয়সির উরোজ!
শুভ্রমেঘ আকাশে খেলা করে দ্যাখো-ফনা ধইরা খেলা করে উরাগ-
আর মৌমাছি খেলা করে পুষ্পর উপর;
মাছের খেলা সলিলে সলিলে দ্যাখো-প্রেমিক-প্রেমিকার খেলা দ্যাখো চুম্বনে।
আর কবিতা তুমি বারেবারে মৌ-লোভী মৌমাছির মতো
মণ্ডল হইয়া; প্রেয়সির স্তনবৃন্ত নিয়া উদ্ধত চৌর্যবৃত্তি কর অন্যর ভাবনা!
তুমি তামাশা করতে চাচ্ছ প্রেয়সিরে নিয়া!
এ ধৃষ্টতা দেখিও না!

সজল আহমেদ এর কবিতা: সেদিন

সেদিন


আর সেদিন পৃথিবীর সব পাপ একত্রে জড়ো করা হলে;
তুমি কাঁপতে থাকবে ভয়ে যেন তোমার মৃগী রোগ হয়েছে!
আল্লা
তোমার
সামনে;
তুমি
আল্লার
সামনে!
দুজন দুজনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বা বোসে..........
হঠাৎ আল্লা যদি তোমার সমস্ত পাপের হিসাব চায়-
ইয়া মাল হাবীবি!
তুমি তখন কাঁদবে যেমনটা আর কখনোই কাঁদোনি!
তোমার নেক বা গোনাহ্'র পাল্লা কতটা ভারী হবে তুমি জানো না!
তুমি শুধু এই জানো "একজন পাপী তুমি আর এখন তোমার সমস্ত পাপের হিসাব নেয়া হবে। তুমি কাঁদবে অথচ কাউকে অভয় দেয়ার পাবে না।''
আমার সাথে করা বিগত পাপ তোমাকে উৎকন্ঠিত করবে
তোমার মনে হতে থাকবে আমারে।
আর আমার সাথে করা সমস্ত অপরাধরে।
তোমার মনে হতে থাকবে;
কেননা সেদিন-
আল্লা
তোমার
সামনে;
তুমি
আল্লার
সামনে!
দুজন দুজনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বা বোসে..........
আমার সাথে করা সমস্ত পাপ এর হিসাব তোমাকে দিতে হবে!
তুমি যেহেতু পাপ করেছো সেহেতু এর সব দায়ই তোমার
হয়তোবা দহন পাবে হাবিয়ার।
তোমার পুড়তে হবে!
কেননা ঐ দিন,
আল্লা
তোমার
সামনে;
তুমি
আল্লার
সামনে!
দুজন দুজনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বা বোসে..........

সজল আহমেদ এর কবিতা: পৃথিবী

পৃথিবী

পৃথিবী একটা আবছা আলোর ভুল বুঝাবুঝির,
পৃথিবী একটা পিংক কালারের শাড়ির,
এবং বসতস্থল কিছু আবোগদা আনাড়ির!
পৃথিবী একটা স্কুল পালানো ছাত্রের বিড়িটানা
পৃথিবী একটা চুৎমারাণীর আচোদা ছলনা!
পৃথিবী একটা মদের বোতলে ১ ছিপি মদ
পৃথিবী একটা ভাড়া বাড়ির ৩ তলা ছাদ
একটা বিশাল খোলা আসমানে পূর্ণিমার বড় চাঁদ।
পৃথিবী একটি বেকার যুবকের কেচে না দেয়া ঘর্মাক্ত জামা,
পৃথিবী একটা সুন্দরী যুবতীর লাল কালারের পায়জামা!
পৃথিবী একটা মন্ত্রীর খুনের গোপন আস্তানা
পৃথিবী একটি ষোরশির মাসিকের ত্যানা।
পৃথিবী একটা বুর্জোয়ার দুনিয়াভি বেহেশতখানা
পৃথিবী একটা প্রলেতারিয়াতের অন্ন-নোঙরখানা।
পৃথিবী একটা চাহিদার ঘর
পৃথিবী একটা বাড়িঘর ভেঙে দেয়া আচমকা ঝড়।
পৃথিবী কাঁদে রোজ অনেক কাঁদা
পৃথিবীর পথে পথে মৃত্যুর ট্রাপ পাতা
পৃথিবী রোজ হাসে অনেক হাসা
পৃথিবী একটি কালো কৌতুক আর বানের জলে ভাসা।
পৃথিবী একটা সবুজ আবরণে রুকাইয়া রুখসানা।
পৃথিবী একটা ভূগোলবীদের ভূ-বিদ্যার কারসাজি
পৃথিবী এক জুয়ারী গোফীর, বৌ খোয়ানের বাজি!
পৃথিবী একটা আয়নাবাজের ছলছাতুরির চাল
পৃথিবী একটা মর্ষকামীর দাহ্য-দ্রোহী সমকাল।
পৃথিবী একটা পকেট মারের বাম হাতের চাতুরি;
পৃথিবী একটা প্যাকেটে প্যাচানো একপাতা মায়াবড়ি।
পৃথিবী একটা প্রেমিকার দেখা বড় বড় সব স্বপ্ন
পৃথিবী একটা কন্ডমে প্যাচানো পুরুষের দৃঢ় শিশ্ন!
পৃথিবী একটা গুন্ডা পিপুলের গৎবাঁধা ভন্ডামি
পৃথিবী একটা হিরুন্সির দিনভর মাতলামি!
পৃথিবী একটা পরমাণু বোমা দূর্বল রাষ্ট্র গ্রাস,
পৃথিবী মানে অহেতুক অযথা আম্রিকার বোমা ত্রাস!
পৃথিবী একজোড়া কাপলের রাতে মধুর স্বপ্ন বোনা
পৃথিবী মানে পোয়াতি নারীর গর্ভপাতের দিন গোণা।
পৃথিবী একটা বলিষ্ঠ হাতে শিশ্ন চেপে ধরা
মাস্টারবেট শেষে স্পার্ম, চেপে চেপে বের করা । পৃথিবী মানে একটি ছেলের সংসারের ভার নেয়া
পৃথিবী মানে টোকাই ছেলেটির থালা ভরা ভাত না পাওয়া।
পৃথিবী মানে প্রেমিকা হারানোর অব্যক্ত যন্ত্রণা
পৃথিবী মানে গার্মেন্টস কর্মী নিগার সুলতানা।
পৃথিবী মানে খুঁজে না পাওয়া সমস্ত ঘটনা
পৃথিবী হলো রঙ্গমঞ্চ বেশ্যার জীবাণুযুক্ত ভ্যাজাইনা!

কথন এর বাপ (পাণ্ডুলিপি)

কথন এর বাপ



গ্রুগ্রী
(+)বরংচ ব্যক্তিত্বহীন তো সে, যে মানুষকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দেয়ার ভান করে! কারণ যে ব্যক্তিত্বহীন সে "সম্মান'' কি সেটাই বুঝে না!

(+)বেঈমানদের সাথে অভিমান করা আর না করা সমান! বেঈমানরা অভিমানের দাম দিবে না!

(+) আজ যদি আমি মারা যাই কাল হবে দুদিন, আর আমার ক্রিটিকসরা বলবেন "ক্ষাণকির পোলা মরছে ভালো হইছে!''

-নিঃসঙ্গতা-
একা একা কথা বলা, একা রোডে হাঁটা একা ২৪টা ঘন্টা কাটানোর নাম হচ্ছে নিঃসঙ্গতা।
-ভুলে যাওয়া-
নিজের মস্তিষ্কে নিজের অনুভূতিকে কবর দেয়ার নাম হচ্ছে ভুলে যাওয়া।
-ইভটিজিং-
আমরা একটা ছোট্ট বাসায় থাকি
সকাল হলে সবাই মিলে ছাদে উঠে হাঁটি
নিচ দিয়ে কে যায় ; অচেনা মুখ দেখে
কাক ডাকতে থাকি।
-অবসাদ-
প্রতিটি রোডে থাকে পাতা মৃত্যুর ফাঁদ
মানুষটি মরে গ্যালেও মরেনা অবসাদ!
[২]
প্রতিটি রোডে থাকে পাতা মৃত্যুর ফাঁদ
মানুষটি মরে গ্যালে পরে রয় অবসাদ!
-লাইফ-
মানুষের লাইফটা ধরো হাশরের মাঠ
কষ্টের সময়টা পার হতে হতে চুকে যায় পাঠ।
-মানুষ মানুষের জন্য না-
কে কার কষ্টে কাঁদে জানি না
মানুষ মরে মানুষের তরে বালের প্রবাদ মানি না!
-স্বার্থপর-
জগতের প্রতিটি জীব জড়
সব শালারাই স্বার্থপর।
যদি কেউ ভাবে,
কার ধন কে খাবে?
তাকাও করে চোখ কান খাড়া
তোমার চিনির বয়ামের দিকে
লাইন ধরে যায় ১ লাখ পিঁপড়া.....
-স্ব-
প্রতিটা মানুষ নিজেই নিজের ভিন্ন চক্রে নিজের মতো ঘোরে
আমি শুধু নিজের চক্রে হাহুতাশ করি আহারে!
উড়ে যাব/
কে আছো ওখানে?
দরজা খোলোনা.....
উড়ে যাব আকাশে
আমাকে পাবে না।
ধরতে পারবেনা
পাখা হবে দুটো
উড়ে যাব সরু হয়ে
যদি পাই ফুটো।
গাইবো গান
আর শুনবে খাড়া করে কান
গান গেয়ে হারাবো
আমাকে পাবে না।
হা হা হা!
ক্রাশ/
দৃষ্টিতে বলি হয়ে যায় একশ খাসি
কাচাপাঁকা সবে এসে বলে ভালোবাসি
ভালো লাগা/
অপূর্ব সে এক চাঁদের গরিমা
আলো ছিলো স্পষ্টত
ছিলো না পূর্ণিমা।
অভিমান/
আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি
ভেঙে পরে না
তোমার জন্য কাঁদতে চাই
চোখে জল আসে না!
ব্যাঙ/
ক্ষুব্ধ ব্যাঙ মায়ার চেহারা
রাগ করে থাকে মনেহয় গাছের পেয়ারা
ব্যাঙ জোড়ে জোড়ে হাকে ঠিকই
সে রাগ করে না!
কেয়ারলেস/
হারিয়ে যাওয়ার আগে নেয়না কোন খবর
হারিয়ে গেলে অবশেষে জলে ভেজায় কবর।
ব্রেকআপ/
এত এত অভিমান এত অভিনয় শেষে
পাছা ঘুরায়ে দুই যাত্রী উঠলো দুইটা বাসে
তাঁগো একই দ্যাশে যাওয়ার কথা, এখন যাবে ভিন্ন দ্যাশে!
ভালোবাসা/
কে কার প্রতি মুগ্ধ ছিলো জানি না
বিদায় শেষে ঝরলো চোখে
সাধারণ সে পানি না!
সিগারেট/
একটা সিগারেটের টানে সারা দিনের ডিপ্রেশন শরীরে গুম হয়ে ঘুম দেয়।
রেডসালাম/
আসসালামু আলাইকুম শ্রদ্ধেয় কাকা কুকুরের বাচ্চা!
মরতে ভয়/
আমার লাশটি গেলার জন্য সর্বদা কবরটি হা করে রয়।
আমিও অক্সিজেন গিলতে হা হয়ে রই;
আমার মরতে করে ভয়!
ডিপ্রেশন/
মনে হবে নিজেকে হারিয়েছেন গহীন বন
নিজেরে নিজের অসহ্য মনে হওয়া, নিজের ঘিলু চাবায়া খাওয়ার
নাম হইলো ডিপ্রেশন।
কাক/
ও কাক ও কাক
তুই একটু জোড়ে ডাক
যা ছিলো আমার জীবনে তা
অশুভ হতে থাক।
শালিক/
আমড়া গাছে বসে ডাকে
একটা শালিক পাখি
আসো আমরা গলা মিলিয়ে
শালিক ডাকতে থাকি।
মূল্য/
আপনি, তুমি এবং তুই
গোলাপ, জবা এবং জুঁই।
তফাৎ বুঝে ডাকে সবাই নাম,
ডাকের মাঝেই বুঝে ফেললাম কার কতটা দাম!
কাক-২ /
অনেকদিনের চেনা জানার পর
আমি বুঝলাম কাক শুধুই কাক
যেদিন পাখিরা সব হারিয়ে যাবে
গাছগুলো সব শূণ্য হবে
টিনের চালায় অবাক দৃষ্টি কাক তুই ডাকতে থাক।
গোলাপ/
আসসালামু আলাইকুম ও গোলাপ
আপনি আছেন আমিও আছি
ঘ্রাণে আসেন দুইজন নাচি
বকতে থাকি পাগলের প্রলাপ
অলাইকুম আসসালাম ও গোলাপ।
চুমু/
ঠোঁট স্তব্ধ হয়ে উপলব্ধি করে
নিচের অংশ কি যেন আচমকা চুমুক মারে
কি উহা? উহা কী?
জীববিজ্ঞান এর বিবর্তনে
বিপরীত লিঙ্গ ছাড়া আরকি?
স্বরিবোধী/
আসলে আল্লা বইলা কেউ নাই!
পূবের আকাশে তাকাই
সুবহানআল্লাহ্ চমৎকার সব
মেঘ আকাশে দেখতে পাই!
কল্পনা/
চাষ করি আকাশে নতুন মেঘের
আকাশে আকাশে আজ উন্মদনাা
এক কুটি গ্রহ আছে নিজস্ব প্যাঁচে
চাঁদ শোনে কার যেন কুমন্ত্রণা!
কাকের গান/
ওড়ে সকালের কালো-কালো কাক
হে ছোটপাখি, হে ছোটপাখি
শ্লেটে তোমারে করি আঁকা-আঁকি
তোমার বিশাল ফ্যান আমি
প্রত্যহ প্রত্যুষে তোমার কা কা কা গান শুনি!
ডারলিং/
প্রত্যুষা!
দ্যাখো দ্যাখো
ডারলিং প্রত্যুষে
জাগছে উষা।
চলে গেলে/
একবার মরে গেলে আমাকে
আর ফিরে পাবে না
বডি দেখবে ঠিকই
জড়িয়ে ধরতে পারবে না
কবরের পাশে যাবে
একসাথে শোয়া হবে না
একবার হারিয়ে গেলে
আমাকে আর খুঁজে পাবে না!
একদা/
  একটি দেহ নিস্তেজ হয়ে গেলে
ইতিহাস থেমে থেমে যায়
শোবার ঘর, সমস্ত কিছু পর করে দ্যায়
কেটে যায় মায়া হায়!
প্রেমিকা ও পর হয়ে যায়।
বিপক্ষীয় সময়/
একটা সময় সবকিছু পর হয়ে যায়
নিজের শরীর নিজের বিপক্ষে চলে যায়
দেহের দূর্ঘটনা নিজের স্তনঢাকা ওড়নাটা
বুকে না জড়িয়ে, গলায় জড়িয়ে যায়!
হাহ্! এই মাদারচোদদের পৃথিবীতে-
আর স্থায়ী হতে হয় না!
সহী প্রেমিকা ভোলার উপায়/
মন দিয়া পুরানা প্রেমিকারে না ভুলতে পারলে তাঁরে মা ভাবতে থাকেন।
-আর্গ্যুমেন্ট-
মেয়ে মানুষ/
চাইতে চাইতে পাইতে পাইতে পাওয়ার অতিরিক্ত পাইলে
হয়ে যায় সোনা ব্যাঙ;
দুইটা আর থাকে না গজায় তিন ঠ্যাঙ।
লম্বা লম্বা লাফ দিয়ে পার হয়ে যাইতে চায়;
সুন্দরবন অথবা উত্তরের হিমালয়।
বক/
উড়ে যায় সাদা দুটো ডানা মেলে
আকাশ ও পাখি উভয়ই সাদা
কাদা-পানিতে নেমে মাছ খায় অথচ
শরীরে ছিটে না একফোঁটা জল বা কাদা।
কাক/
কালো সে পাখি কুচকুচে কালো তাঁর দেহাবয়াব;
রাত্রে বেলা দ্যাখে দিনে চুরির ও খোয়াব।
ব্রেকআপ/
এত এত কষ্টের পর
মাথা থেইকা কমলো চাপ
দুইটা মানুষ দুদিক হাঁটলো
রিজন ছিলো ব্রেকআপ।
সন্যাসী/
অজস্র কষ্টের পর
বিকারগ্রস্ত মানুষটি
হেঁটে গ্যালো বৃন্দাবন
রেখে ভারী আকাশটি।
ভুলকে ভয়/
কিছু কান্না ভুলে থাকা যায় না
অসহায় কোন মেয়ে যদি ফোনে কাঁদে,
পৃথিবীতে আর থাকতে ইচ্ছে হয় না
মনে চায় চলে যাই এলিয়েন রূপে চাঁদে।
বিবেক/
বিবেক বিবেক ডাকপাড়ি
কই গ্যালো হতচ্ছারা?
জনসমুদ্রের ভীর ঠেলে দেখি
বিবেক এর মায়, গ্যাছে মারা।
লাইট/
আলো ফেলে দূরে কাঁদছিলো
একটি পাওয়ারফুল লাইট
আলো কম হতেই
হোগায় হাত রেখে
মালিক ব্যাটারীতে
দিচ্ছিলো টাইট।
বৃষ্টি/
আকাশের মনখারাপ হলে
আকাশটা খুব কাঁদে
আকাশের অশ্রুকে
বৃষ্টি নামেই সবাই ডাকে!
শিকার/
বাঘের সামনে হরিণ ভাবছে,
প্রতিটা প্রাণের প্রতি দয়া দেখানো অাবশ্যক! বাঘ সেদিন ক্ষুধার্ত ছিলো না বিধায় সেদিন সে প্রাণে বেঁচে গেলো। হয়রান হরিণ বাঘের কবল থেকে ছাড়া পেয়ে ক্ষুধায় কাতর হয়ে ১ মাঠ ঘাস সব সাবড়ে দিলো। ঘাসের ও প্রাণ ছিলো।
নদী/
নদী
আজ অবধি
তাঁরে বিশ্বাস করা দায়
কোন খানে গিয়া ভাঙবে পার
আশঙ্কা এখানে হায়
এখানেই ডর!
ধৈর্য্য/
তসবিহ দানা তসবিহ দানা
ক্ষ্যামা এইবার একটু দাও না!
এত যদি একজন ডাকো
সে কি বেজার হয় না?
কথনের বাপ| ভার্স সমূহ| সজল আহমেদ| ২৬শে এপ্রিল ২০১৮ ইং

সজল আহমেদ এর কবিতা: বিভ্রান্ত

বিভ্রান্ত

লতা বিভ্রম পাতার
ডালে বিস্তৃত সোনার মাদুর
পোকা খাবার লোভে ছোটে
কয়েকশ বিভ্রান্ত বাদুড়।
জানে না বাদুড়
আগালে কয়েকটা ধাপ
সামনেই পাঁতা
আছে মৃত্যুর ট্রাপ!
চাঁদটা হারিয়ে যায়, মেঘের সয়ে অকথ্য যন্ত্রণা
বিভ্রান্ত জোনাক শোনে আঁধারের কুমন্ত্রণা।
জোনাক আর জ্বলেনা
চাঁদ ও ওঠে না
বাদুড় আর ফিরে আসেনা
গাছে বিছানো সোনার মাদুরে
কেউ এসে বসে না।
চলে...
লওহে মাহফুজে এক
একাকী কোরানিক বন্দনা,
বিভ্রান্ত শয়তান ছুটে চলে
পথভ্রষ্ট করার আকাঙ্খা।
ছুটে মসজিদে মসজিদে
ভাঙতে এবাদত
করায়ত্ব হাজীর পাগড়ী করে
লাগায় কলহ; কে শরীয়ত কে মারফত!
কার টুপি লম্বা, গোল। কে রেখেছে দাঁড়ি;
বিভ্রান্ত সবাই, মসজিদে কি আসতে পারবে নারী?
বিভ্রান্ত সকলে বিভ্রান্ত ইমাম,পুরোহিত, রাব্বি, গির্জার যাজক!
চলে কথার বাহাজ, রুষ্ট উপাসক
ফাঁকে ফুরিয়ে যায় সমস্ত ইবাদত!
কে শ্রেষ্ঠ?
মুহাম্মদ না যিশু?
কে জ্ঞানী?
ওসমান নাকি বিশু?
কার গ্রন্থ জগতের এলমের দ্বার...?
কাফের নাকি মুমিন্স ছিলো সম্রাট আকবর?
কে নাস্তিক? কে আস্তিক? কে কাফের বেঈমান
সংশয়বাদী খুন করো ওর ঘটে নেই ঈমান।
অদৃষ্টের পরিহাস - বিভ্রান্ত ইতিহাস,
আকবরি খচ্চর, অশোকের শিক্ষালয়
ভেঙেছে সুলতান মাহমুদ,
দুনিয়া বানিয়েছে যুদ্ধালয়!
অথচ ছিলো কিনা অশোক
তারই নাই কোন হিসাব
বিভ্রান্ত, বিভ্রান্ত, বিভ্রান্ত সব!
বিভ্রান্ত সত্ত্বা, মৃত্যুর পর কই যাবে আত্মা?
কবরের আজাব হবে নাকি হবে না?
বিভ্রান্ত নাস্তিক, পরপার কি আছে? এই ভাবনা!

সজল আহমেদ এর কবিতা: তখনো

তখনো


তখনো পড়েনি আজান
মুয়াজ্জিন ফুকেনি মাইকে সুর
আলিফে টান মাঝির
যেতে হবে বহুদূর.......
তখনো কোরাণ পড়া শেষ হয়নি
থেমে গিয়েছিল সূরা ফালাকে
সমুদ্রে বিছানো জায়নামাজে
শাহাজালাল তখনো অাসেনি তটে
তখনো কেউ ভেলায় ভাসেনি
গুঁটিবসন্ত শরীরে
সিরাজ সাঈয়ের গান বাজেনি
লালন গান জমেনি ভীড়ে
তখনো ফররুখ লিখেনি গজল
আল-মাহমুদ সোনালী কাবীন
তখনো কবিতা ধর্ষন করেনি সজল
মসজিদে তখনো আসেনি মুমিন।
কিন্তু যখন সময় আসলো
মসজিদে হলো আজান
মাঝি পৌঁছলে গন্তব্যে
শেষ হলো পড়া কোরাণ
সমুদ্রে বিছানো জায়নামাজে
শাহজালাল এলো তটে
লালন ধরলো জাত এর গান
সিরাজ সাঈ হারালো ভীড়ে
ফররুখ ও করলো প্রস্তান
মাহমুদ এলো বটে
বুড়ো মাহমুদ এর কবিতা ধর্ষিত হলো
বিশাল কোবি সজল আহমেদ এর খাটে।

সজল আহমেদ এর কবিতা: ভাল্লাগেনা?

ভাল্লাগেনা?


ভাল্লাগেনা?
যাও......
গিয়া মুড়িভাজা খাও.......
আমি এখন নিজের গাঙ্গে একলা মাঝি; ভাসাই দিছি নাও।
আমার এখন একলা চলার হইয়া গেছে অভ্যাস;
আমি এখন নিজের রাজ্যে কইরা বেড়াই ত্রাস!
ঐখানেতে আমিই পুলিশ; আমিই আবার ডাকাত
আমার কথায় উপুত হয় সব আমার কথায়ই কাত
আমার কথায় দিন হয়; আমার কথায়ই রাত।
আমি নিজের চক্রে নিজের মতো ঘুরি
নিজের লাগানো দাহ্য আগুনে নিজের মতো পুড়ি।
আমার এখন ভালো লাগেনা কাউরে
সাধারণ জন দেখলে আমায় পালায় দূরে দৌঁড়ে।
তোমরা যারা অসহ্য আজ চইলা বাবা যাও;
আমি এখন নিজের গাঙ্গে একলা মাঝি; ভাসাই দিছি নাও।

সজল আহমেদ এর কবিতা: বয়োসের ভার

বয়োসের ভার


২৩ ই আগষ্ট ২০১৭ রবিবার
|
জানি আর ফেরা হবেনা, দু পা চলা হবে না ;
আয়নাতে মুখ দেখা হবে না।
যা হবার তা হয়ে গেছে, ইদ্রানির ঠোঁটের চুম্বন আর উপভোগ করা হবে না।
এক আকাশ অশ্রু যার তাঁর আর ইচ্ছে করে কাঁদতে হয় না এমনিতেই জল গড়ায়, মাটি ভিজে বৃষ্টির জলের মতো।
যা হবে, যা হয়েছে তা হওয়ার কথা ছিলো, ভেবে নীরবে আর কাঁদি না।
দুঃখ লাঘবের উপায় ও খুঁজি না।
কাঁটা আছে গোলাপে জেনেও গোলাপ ছিড়ে পকেটে পুরে, ভালো লাগা এক নারীর সামনে দাঁড়িয়ে ফুল তাঁকে দেয় সাহসী কোন এক যুবক।
সে যুবক জানে, প্রথম প্রস্তাবটা প্রত্যাখ্যান করে নারী। তবে সে ফুল পায়ে দলে যে ভুলটা করে নারী, সে ভুল তো পোষাবার নয়।
ফুল কে পায়ে দলে সে যেন পায়ে পিষছে পুরো প্রেমিকের হৃদয়!
তবুও সে যুবক আশা বাঁধে নিশ্চিত কোনকালে, ভালো লাগা মেয়েটা তাঁকে ডাক দিয়ে পাশে বসাবে।
যুবকের পকেটে গোঁজা ফুল, নিজহাতে বের করে বারবার চুমো খেয়ে, ছেলেটির মাথা নিয়ে নিয়ে বুকে জড়াবে ।
*********
আশা/
 প্রত্যেক নীড়হারা পাখির একই স্বপ্ন থাকে, সে ফিরে পাবে অচিরেই তাঁর হারানো বাসা,
খড়কুটো হয়ত এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রবে,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে রওয়া খড়কুটো কে সে একত্র করে পূনঃরায় তাঁর নীড় সাজাবে।
 অথচ আমার সে আশা নেই এখন।
 মিথ্যা ভরসার নীড়বাঁধা ছেড়ে আজ আমি বুঝে গেছি, বুঝে গেছি এই বয়োসে সব গোলাপেই কাঁটা থাকে।
তোমাকে পাবার আশা ছিলো কোন এককালে, বয়োস পেরিয়ে গেলো তুমি এলে না
তাই শেষ বয়সে আর আহ্বান করি না! তুমি সুখে থেকো হাজারবার বলি আল্লারে।
***************
প্রেমিকা বা ঈশ্বরী/
তুমি ভুলে গেছো এই, যার অশ্রু আছে সে বোবা হলেও মনের অবস্থা প্রকাশ পায়।
অশ্রু শুধু দুঃখ প্রকাশের নয়, অশ্রু মনের কথা ও কয়!
শত ব্যথাতুর হয়েও যার গালি বের হয় না, চোখ প্রকাশ করে তাঁর অবস্থা!
হা হুতাশ করে মরে যাওয়ার দ্বারপ্রান্ত থেকে প্রেমিক কেঁদে বলে,
কি হবে কি হবে আর মুখ বুজে?
এত ব্যথা দাও! কলজে চিবিয়ে খাও! সহ্য করেছি সব আর করবনা!
মন! মানুষের সহ্যের সীমা হচ্ছে আত্মহত্যা বা খুন!
আত্মহুতি দেয়া প্রেমিকদের সমবেদনা!
যাঁরা চলমান ধর্মের গণ্ডি পেরিয়ে প্রেমকে ধর্ম বানালো আর প্রেমিকাকে ঈশ্বরী। ঈশ্বরীর বিচ্ছেদে কোন উপায় না দেখে আত্মহত্যাকেই শ্রেয় মনে করে বিসর্জন দিলো নিজেকে।
*********
বিপ্লব আমি যা বুঝি/
আমি বিপ্লব বলতে শুধু বিচ্ছেদের মাঝে বেঁচে থাকা প্রেমিক-প্রেমিকাকেই বুঝি। খাঁটি প্রেমিক সে যে, প্রেমিকার বিচ্ছেদে আত্মহনন করে। শ্রেণী সংগ্রাম বলতে শুধু অর্থ বংশের গণ্ডি পেরিয়ে চলমান প্রেমকেই বুঝি। আর সাহসী যুবক বলতে তাঁকেই বুঝি যে প্রেমকে সোসাইটির ভয়ে আড়ালে রাখে না।

*************
ভদ্র ছেলেটি আজ/
জানি আর ফেরা হবেনা, দু পা চলা হবে না ;
আয়নাতে মুখ দেখা হবে না।
অনিচ্ছুক বৃষ্টিতে ভিজতেও হবে না। রাগে অভিমানে গাল ফুলিয়ে থাকতেও হবে না! যা হওয়ার তা হয়ে গেছে ও নিয়ে আর ভাবি না।
তোমার জন্যই আজ ভদ্র ছেলেটার দেরী করে ঘরে ফেরা!
সর্বদা হাসিমুখে থাকা ছেলেটার চোখ লাল!
সিগারেট মুখে নিতে ভয় যাঁর আজ সে ঠোঁটের ফাঁকে সিগারেট ও রেখেছে,
বাঁ হাতে ধরা মদের বোতল!
**************
প্রতিবিম্ব/
তুমি বা তোমরা আর কত যুবকের বুকে তৈয়ার করতে চাও উল্কাপাতের ক্ষত?
আর কত ছেলে কাঁদতেই থাকবে অবিরত?
কেন এত কাঁদাও?
কাঁদিয়ে কি তবে সুখ পাও?
কেন হারাও, কখনো কখনো
আবার প্রতিবিম্ব হয়ে ধরা দাও?
************
অনুভূতি ভোতা হয়ে গ্যাছে/
২৫শে আগষ্ট ২০১৭
রাত ১২:৪৫
নীল আসমানের সাথে মেঘের যে বিচ্ছেদ ঘটে,
কোনকালে শুনেছো কি আসমান আচড়ে পরেছে মাটির উপর?
আমাকে মনে কর একটুকরো কাঠ বা লোহা, অনুভূতি ভোতা হয়ে গেছে, আহম্মক হয়েছি বারবার!
স্বাদ ও আর আগের মত নেই ; শার্শিতে নিজের অবয়ব দেখে চমকি না আর। একমুঠো খেতে পেয়ে বেঁচে আছি শুকরিয়া হাজার হাজার!
পৃথিবীটা এত বোকা! এত বোকা! যে সময়কে থামাতে জানে না,
তাই পৃথিবীর গতিতে বয়োসের গতি ঢের বাড়ছে কোন মতেই থামছেনা।
তবে ক্রমেই মন যৌবন কৃত্রিমতায় ফিরে যাচ্ছে,
নিরেট পুরোনো তোমাতে আর মন বেঁধে রাখতে পারছি না !
পৃথিবী ধীর হয়ে গেছে, আকর্ষন ও কমেছে তাঁর।
ক্রমশ আগাচ্ছে ধ্বংসলীলায় তবুও চেষ্টা ফিরে পেতে স্বরূপ।
সংগ্রাম করে অহরহ উল্কার সাথে, পৃথিবীর পানে কামুক দৃষ্টি উল্কার।
উল্কা একটা আস্ত উচ্ছৃঙ্খল!
চিন্তা-চেতনা তার এই, কখন সুযোগ পেয়ে করবে সে পৃথিবী কে আক্রমণ!
গাত্রে উল্কার সূর্যের দহন।
তাই এত বেগ নিয়ে এসে পৃথিবীর পরে তার সমস্ত জ্বালাপোড়ার শোধ হিসাবে ইয়া বড় ছেদা করে দ্যায়!
অথচ পৃথিবী সে ছেদা ক্রমশ নিজের উদ্যমে পুষিয়ে নেয়।
 আমিও নতুন পৃথিবীর স্বরূপ ফিরে; পাওয়ার মত সংগ্রাম করে, চলেছি কৃত্রিম ভালোবাসা পুঁজি করে।
সেখানে যদি বাঁধা হয়ে দাঁড়াও তুমি সে তোমার দুর্ভাগ্য!
আমি তোমাকে ছিদ্র করে নিছিদ্র সংগ্রামের পথে পা বাড়াবো!
নিজের মানসিকতার সাথে এক বিপ্লবের প্রচেষ্টা চলছে, চালাতেই থাকবো....
***************
নতুনত্ব-নতুন পৃথিবী গ্রহণ/
২৬শে আগষ্ট ২০১৭
শনিবার রাত ১২:৫০
ক্যানো মন কৃত্রিমতা ফিরে পাচ্ছে আমার, যদি প্রশ্ন করো ;
তবে জেনে রাখা শ্রেয় "মানুষ মাত্রই কৃত্রিমতা, প্রাকৃতিরে সে সাজায় বহুরূপ !''
মানুষের সৃষ্টিশীলতা যা ভাবো - তাও কৃত্রিমতারই স্বরূপ।
দাড়িতে পাক ধরবে হয়তোবা, শূণ্যকে আপন করার ছলে চলে যাবো মহাকাশে;
আকাশে বাতাসে এক সংঘর্ষ বাঁধিয়ে হেসে হেসে চলে যাব অন্য গ্যালাক্সিতে।
যাবো যেখানে তোমরা বা তুমি নেই ; যেখানে প্রেম হয় সবুজ ঘাসের সাথে নীহারিকার,
আর তাদের কভূ বিচ্ছেদের যন্ত্রণা সইতে হয়না বারবার!
ভালোবাসা যেখানে প্রত্যহ সৃষ্টি হয় নতুন রূপে, নেই হাপিত্তেস বা প্রেমিকাকে না পাওয়ার অাফসোস,
আদীমতা বলতে শুধু ওখানে বয়োস!
আমাদের এই গ্যালাক্সি বেশ পুরানো হয়েছে, বয়োসের ভারে হয়তোবা একদিন দুমড়ে মুচড়ে যাবে;
ইষৎ ধাক্কায় এখানে আপাতত প্রেম দুমড়ে মুচড়ে যায়-
প্রেমিকার হৃদয় মোচড়ায় হারানোর কান্নায়!
আমি সেই হৃদয় মোচড়ানো প্রেমিকদের আহ্বান করি, চল আমার সাথে অন্য গ্যালাক্সি।
এখানে এই গৎবাঁধা শৃঙ্খলে থেকে, জ্বালানো সিগারেটের অ্যাশড্ হয়ে নিজেকে প্রেমিকার অ্যাস্ট্রেতে ফেলে লাভ কি?
ক্রমশই এই গ্যালাক্সির প্রেম বুড়ো হয়ে যায় যৌবন আর অর্থ ফুরোবার সাথে সাথে-
এখানে নীতিহীন মানুষেরা সাজে নীতির পাহাড় ;
তার চে চলো ঐ গ্যালাক্সিতে অভিনয় দেখতে হবে না আর।
আর জ্বলতে হবেনা তোমার সিগারেট হয়ে, অঙ্গুলি তুলে কেও বাঁধা দেবে না,
মনে হবে না পুড়ে পুড়ে তুমি ভস্ম হয়ে যাচ্ছ প্রেমিকার দাবানলে
,
ওখানে যে যার নিয়মে চলে।
যে বয়োসের ভারে প্রেমিকা করেছে ত্যাগ - সে বয়োসেই তুমি দিব্যি জমিয়ে প্রেম করতে পারবে সবুজ ঘাসের সাথে।
মনে হবে যেন কতকাল প্রেম চলেছিলো যেন দুজনার আহা প্রেম!
মন মসনদে সবুজ ঘাসেরে করো আহ্বান।
আকাশটা হবে লালশাদা মিশালো অভ্রে মোড়া, আর সবুজ গাছে থাকবে হলদে পাখির বসা।
সকলেই থাকবে একজোড়া।
মৃদু বাতাস আর জবা ফুল হবে সুগন্ধীর মূল হোতা
একটা প্যালেস থাকবে সেখানে।
সৌন্দর্যের মূল হবে সেখানে সবুজ ঘাসেরা।
ঘাসেদের সাথে তোমার মধুর প্রেম হবে, প্রেম!
মাঝে মাঝে দু-একটা আহাম্মক উলকা যদি এসে যায় তবে, তাঁকে পৃথিবীর দিকে পাঠাবো ঝেটিয়ে-
ওখানেই বিস্ফোরিত হোক, ওখানের মানুষেরা নীতিগত ভাবে আহাম্মক!

************
উপকার/
আজ এই কাক ভোরে আহ্লাদে আটখানা চায়েরকাপে ভাসতে দেখি সকালের সূর্য ; আর ভাবি, সূর্যরা কত বোকা প্রেমে পরে ধরা দেয় সকালের চায়ের কাপে!
যেমনটা আমি ধরা দিয়েছিলাম তোমার ফাঁদে,
তুমি এক চুমুকেই আমায় কিভাবে নিঃশেষ করে দিয়েছিলে!
সূর্যকে আমি "আমি হতে দেবো না'' তাই,
চায়ে ফুক দিয়ে সূর্যকে আমি গলঃধকরণ করে বিচ্ছেদ থেকে এ যাত্রায় রক্ষে করলাম।
****************
২৮শে আগষ্ট
সোমবার |রাত ২:০৮
এ যাত্রায় সূর্য বিচ্ছেদ হতে রক্ষা পেয়েছে বটে, তবুও সে কি কারণ পৃথিবী নামের প্রেমিকার চায়ের কাপে বারবার ধরা দিয়ে আত্মহুতি দ্যায় আহ!
তবে সূর্যকে সালাম!
আমার মতো হয়তো তাঁর প্রেমিকা হারানোর ভয় নেই, শত বিচ্ছেদে সে জ্বলছে জন্ম থেকেই।
সূর্যই হোক প্রেমিক যুগলের পুরোধাঃ।
প্রেমিক যুগল ভাবুক.....
******************
প্রশ্ন/
যা হারাবার তা হারিয়ে গিয়েছে, ওর প্রতি আফসোস করিনা।
আফসোস করা হলো মানুষের সবচে দুর্বলতা, আফসোস করতে করতে আমি নিজের চোখে মরতে দেখেছি বিষম খাওয়া কত প্রেমিক বারবার!
প্রেমিকাকে যদি ভুলে না যায় সে তবে, প্রেমিকার বিচ্ছেদ আর বয়োসের ভার, কোনটার ক্ষমতা রাখে সে সইবার?
পৃথিবীর প্রেমিকাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা....
কেন কলজে ছিড়ে খাও, কেন ব্যথা দাও? কেন ভেঙে ফ্যালো গড়ে ওঠা আশা-ভালোবাসা?
জবাব দাও! আজ না জবাব দিলে কেয়ামত তক দাবী!
****************
তোমাদের গন্তব্য/
ক্যানো বয়োস বাড়ার সাথে ত্যাগ করো প্রেমিক?
কেন বিনাদোষে দাও শত ধিক?
জানি আজ মুখ খুলবেনা!
তোমাদের প্রেম বয়োস বাড়ার সাথে সাথে ছিন্ন হতে শুরু করে,
আর গন্তব্য শেষ হয় খুব অল্প সময়ে।
তোমার ভালোবাসা বলতে শুধু ভাবো চাহিদা!
অামার যে প্রেমিকা - তাঁরে কামুক দৃষ্টিতে আমি দেখিনা।
আমার লজ্জা করে বড়!
অথচ তোমারা?
ভালোবাসা বলতে শুধু চাহিদাই বোঝো!
একরাতে শরীরকে এলিয়ে দাও...... ভালোবাসা হয়ে যায় লুটপাট!
*****************
ভালোবাসা নয় শুধু যৌনতা/
এইযে তোমরা যারা ভালোবাসা বলতে শুধু যৌনতা বোঝো, তাদের প্রতি আল্লার গজব নাজেল হোক!
পুড়ে ভস্ম হও বিদগ্ধ আগুনে।
মন তুমিও দগ্ধ হও আগুনে!
প্রপেলার ঘোরে স্রোতের সাথে তাল পাকিয়ে
আর হাওয়াই ঘুড্ডি তাল পাকায় বাতাসে-
একে অপরের কত ভাব!
তাদের রয়েছে কতশত স্মৃতি ;
কত ঘুড়ির সুতা কাটে হুতাশে; প্রপেলার ভেঙ্গে যায় খাড়া স্রোতে ;
তবুও প্রেম ভাঙেনা কভূ একে অপরের - কোন বিচ্ছেদ নেই একে অপরের!
আর তুমি?
কিঞ্চিৎ স্বার্থে টান পেয়েই আমাকে একা ফেলে ষ্টেশনে সেই পালিয়েই গেলে!
**************
গালি/
..... ভালোবাসা হয়ে যায় লুটপাট!
এইযে তোমরা যারা ভালোবাসা বলতে শুধু যৌনতা বোঝো, তাদের প্রতি আল্লার গজব নাজেল হোক!
পুড়ে ভস্ম হও বিদগ্ধ আগুনে।
মন তুমিও দগ্ধ হও আগুনে!
প্রপেলার ঘোরে স্রোতের সাথে তাল পাকিয়ে
আর হাওয়াই ঘুড্ডি তাল পাকায় বাতাসে-
একে অপরের কত ভাব!
তাদের রয়েছে কতশত স্মৃতি ;
কত ঘুড়ির সুতা কাটে হুতাশে; প্রপেলার ভেঙ্গে যায় খাড়া স্রোতে ;
তবুও প্রেম ভাঙেনা কভূ একে অপরের - কোন বিচ্ছেদ নেই একে অপরের!
আর তুমি?
কিঞ্চিৎ স্বার্থে টান পেয়েই আমাকে একা ফেলে ষ্টেশনে সেই পালিয়েই গেলে!
বয়োসের কাছে আমি মাথা নত করি!
******************
ভবিষ্যত ভরসা/
১৪ই সেপ্টেম্বর ২০১৭
যেমন পৌষের শেষে উলঙ্গ তরুর মাথায় জীবিত থাকে ভবিষ্যৎ
তদ্রুপ আমার মাঝে জাগ্রত রয়েছে কিঞ্চিৎ,
বয়োসের ভারে হয়তো বুড়িয়ে গিয়েছে আমার অঙ্গ
তদুপরি সঞ্চারিত রয়েছে আশা আমার হিয়ায়-
ভালোবাসা না হয় নাই পেলাম; আমার যে বীজ স্মৃতিরূপে রয়ে যাবে বসুধায়;
তাঁরা যেন বারবার প্রতিশোধ নেয় তোমার পাপের, আমি তো পারবনা বয়োসের ভারে আমি অসহায়!
তুমি বড় পাপ করেছো!
সারাটা জীবন একই স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রেখেছো।
আমার যৌবন-জীবন ফুরিয়ে গেলো তোমার প্রতারনায়।
*******************
ধোঁকাবাজি/
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
বহুরূপী পৃথিবীতে দেখেছি, তাঁরা মাছের মতো মন নিয়ে কথা বলা শেষে,
ধোঁকাবাজি করে হিংস্র পশুর ন্যায়,
শেষ দেখায় প্রেমিকের হৃদয় তাঁরা খুবলে নিয়ে পালায়!
তাঁরা আচরণ করে যেন সাক্ষাৎ দেবীরূপে পৃথিবীর বুকে ; এসেছে সয়ম্ভর সভায়-
অথচ শেষ আচরণটা তাদের এমন হয়,
যেন সাক্ষাৎ কোন এক পশু দেবীর ছলে খুন করে যায় কলজে নিয়ে চিবিয়ে খায়!
****************
নিবেদন/
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
আর যে ছেলেটার মন ভেঙে যায়
তাদের কে করি নিবেদন
পৃথিবীর মাটি সড়িয়ে তুমি উঠে দাঁড়াও
আর অশ্রুকে করো আহ্বান.......
কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে ফ্যালো,
শালার জল না থাকলে আসবে কোত্থেকে?
কেঁদেকেটে করো একাকার - জলে যেন হয় সমুদ্দুর ;
আর জলের তলায় থাকা কাদার প্রলেপে যারা প্রেম নেশায় মত্ত আছে তাদের ফিরে যেন আসে হুশ।
এই প্রচারে নেমে প্রতিনিধি রূপে;
যাঁরা প্রেম করো পৃথিবীর মানুষ কিংবা জর-জীব;
লাথি মেরে ইলুসন হটাও, প্রেম বড়ো আজীব!
প্রেম তোমাকে অনুভূতি ভোতা করে দেবে;
রোবট হিসাবে থাকতে হবে প্রেমিকার হাতে।
বয়োস বাড়ার সাথে ক্রমশ প্রেম হয়ে ওঠে এক পাগলের প্রলাপ।
**********************
নালিশ/
১৬/৯/১৭
যদি আঁখি পল্লবে দ্যাখো মেঘ তবে
হাতড়ে সড়াও আর বন্দনা করো নতুন দিনে-
স্বাগত করো তাদের যারা আসবে
তোমার হৃদয়ে কোনে কোন বিচ্ছেদ না নিয়ে।
আর তাঁরা সবুজ ঘাসের সাথে প্রেম করবে চুপি;
ধরবে চেপে বিশ্বাসঘাতক-বেঈমানদের টুটি।
বেঈমান যাঁরা তাদের জগৎ একদম কেয়ার করে না,
এ জগৎকে তুমি নালিশ করো, যেন কেউ বেঈমানী করে পার পায় না।
*******************
কাপুরুষ - বোকা /
১৬/৯/১৭
তোমরা যারা নতুন প্রিয়ার নতুন চাহনিতে ভুললে,
আহা ভাই কাঁটাভরা পথে তুমি কই চললে?
একজোড়া দুটি প্রাণ এক হয়ে ছিলে
বলো বিপদে কী প্রাণ সখিরে কাছে তুমি পেলে?
তারপরেও এত দরদ! এত প্রেম! এত উতলায়?
কেন বেঈমান প্রিয়ার তরে এত তন্ময়?
কেন প্রিয়ার শত অপরাধ ক্ষমা করে দিচ্ছ,
কাপুরুষ তুমি!
***************
বৃষ্টিরে বলি/
১৯/০৯/১৭ ইং
হে মেঘ তুমি বিদায় নিয়ে যাও;
বৃষ্টি তো তাদের দরকার যাদের নাই লাজ-
এত ধোকা খেয়েও যারা প্রেমিকার সাথে ভিজতে ভালোবাসে ঝুম বৃষ্টিতে।
আমার প্রোয়োজন নেই ঝুম বৃষ্টির;
তুমি চলে যাও নির্লজ্জ ঐ প্রেমিক-প্রেমিকার ঘরে।
ওরা ঝুম বৃষ্টি খোঁজে আর কোলা ব্যাঙের মতো আষাঢ়ের বৃষ্টিতে মত্ত হয় যৌনতায়।
এই বয়োসের শেষে - প্রেমিকাও নেই; যৌনশক্তি ও নেই। তাহলে তোমাকে দরকার কিসে?
************
শেষোক্ত/
১৯/৯/১৭|রাত ৩:৫৬
এতদিন এই ছিলে, যতবার মনে করেছি
একাকী মাছের মতো কাঁদার পরে জল লুকিয়েছি।
সেই যে কবে চলে গেলে,
ভুলেও কী মনে করেছিলে?
"কে আমি? কই আছি?'' ইত্যাদি ভেবে-
চিন্তায় ভ্রু কুঁচকেছিলে?
কিংবা কোন স্টেশনে কী নিয়েছো খোঁজ?
অথচ তোমাকে ভেবে স্টেশনেই কেঁদেছি রোজ!
ভালোবাসারে যারা পবিত্র বলে,
আমি তাদের জন্য আফসোস করি!
এই ভালোবাসার তরে কান্না লুকিয়ে থাকে কত আনাড়ির!
তবুও এ প্রেম জগতে বেঁচে রয়েছে শুধু ধন সম্পদ আর দেহের চাহিদা বলে
যে প্রেম প্রেমিককে কাঁদায়,
প্রেম আমি ঘৃণকরি ঘৃণা করি!



সজল আহমেদ এর কবিতা: রিভেঞ্জ

রিভেঞ্জ


।।এক।।
দুঃখ পেলে সবাই
কাঁদতে জানে না
কারো কারো
হৃদয় ভেঙে যায়
কাচের টুকরার মত
অথচ চোখে
জল গড়ায় না!
যারা কাঁদতে জানে না
তাদের দুঃখটা
 কত গভীর
একমাত্র পরমেরই জানা!
আমি এতটুকু দেহে
এত কম বয়োসে
এত অপমান
এত বিরহ
এত অসম্মান,
ক্যামন করে সহ্য করেছি
ভেবে নিজেকে নিজেই
সেলুট করে
বলি "বস মারহাবা'' !
তবে হ্যাঁ, তোমার
সকল দুর্ব্যবহারে
হৃদয় ভাঙে আর
 চোখ ভারী করে!
অপমান, অবজ্ঞা, অানাদর
 আর বিরক্তিবোধ
  থলিতে জমা হতে থাকে।
চোখ বারেবার ইশারায়
বলে দ্যায়, আর কত
অবহেলা, তকলিফ
বাকি রয়েছে?

।।দুই।।
ইনশাল্লা
একদিন ফিরিয়ে দেবো
 সব জমিত অপমান!
তুমি শুধু তাকিয়েই থাকবে
 যেরকম আমি
তোমার দিকে
তাকিয়ে থাকতাম।
মুখের ওপর সব
 "না" বলে দেওয়া,
হাত ধরতে না দেয়া
পাশে বসতে না দেয়া
আমাকে বারবার খোটা দেয়া
আমাকে বোকা ভাবা
প্রতিটা গালি
একেক করে
আশ্লেষে আমাকে
ধ্বংশ করে দেয়া!
টিস্যুতে হাত, নাক মুছে
 মুখে ছুড়ে দিয়ে
সবকিছুর শোধ নেবো
ইনশাল্লা একদিন!
তোমার মুখে কোন
কথা সড়বে না
কারণ নিজেই খাল কেটে
তুমি কুমির এনেছিলে!
ভাবতেও তোমার কষ্ট হবে যে,
"আমি এতটা খারাপ হতে পারি!''

।।তিন।।
ইনশাল্লা
তুমি মরে ভূত হলে,
তোমার মৃতদেহতে
লাথিও দেবো না
আমার দামী জুতো
ফকিরনি একদম
সহ্য করে না!
 জানাজা তো দূরে থাক
 আমি তোমার লাশটা কে
দূর হতে
 দেখতেও যাবো না!
খাটিয়ায় তুমি
অপমানবোধ
 হতে থাকবে।
এমন ভান করে থাকবো
যেন তোমাকে আর
চিনি না আমি।
কোন কালেই
আমরা পরিচিত
ছিলাম না যেন।
আমার ঘৃণা হবে ছিঃ!
পূর্বের সব বিরহ
মনে পরে যাবে;
কবরে একদলা
 থুও ফেলবো না।
জানো তো
আমি যেখানে-সেখানে
থুঃ ফেলি না।
সুযোগ পেলে
তোমার নাপাক খাটিয়ায়
আগুন জ্বালিয়ে দেবো!

।।চার।।
ইনশাল্লা
তুমি মরে যাওয়ার
 একদশক পর একদিন
কবরে বড় ঘাস গজাবে,
তোমার কবরের
 যত্ন নিচ্ছে না যেন কেউ,
নিশ্চিহ্ন প্রায়
কবরের উঁচু প্রস্তর।
মরিচাধরা সাইনবোর্ডে শুধু
তোমার অস্পষ্ট
 নাম সাদা
রঙে লেখা।
আমাকে তুমি
আসতে দেখবে
তোমাকে আমি
দেখবো না।
হয়তো ভাববে
তোমার কবর
জিয়ারতে এসেছি।
তুমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে
হয়তোবা ভাববে আমার
দোআয় তোমার শাস্তি
কিঞ্চিত লঘু হতে পারে।
অামি হাসবো রহস্যের হাসি
তোমার কবরের মাটি
ভেঙে যেতে দেখে।
আমি কবরের পাশে দাঁড়াবো
জিয়ারতের ভান করে
জিপারটা আস্তে টেনে খুলে
কবরের পাশে ঘুরে ঘুরে
কবরের গায়ে মুতে
 লেপ্টে আসবো
 গৎবাঁধা শ্লেষ।

।।পাঁচ।।
তুমি দেখবে
অথচ কিচ্ছুটি
 বলার শক্তি
 নেই তোমার!
দুনিয়াতে তোমার কথা
কেউ শোনে না
এখন আর।
এমনকি তোমার
কবরের ফেরেশতারা ও না!
মনে রেখো, আমাকে
 ইগনোর করেছো বলে
 কবরেও তোমার শান্তিতে
 থাকা হবে না!
হা হা হা!




রিভেঞ্জ-২


একদিন আমাকে করা
সব অপমান
পুঙ্খানুপুঙ্খ ফিরিয়ে দেবো!
পেটে লাথি মারা
গায়ে হাত তোলা
আমাকে ছোট করা
আমাকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ
টুটি চেপে ধরা
আর প্রতিটা গালি
যেভাবে আমাকে দিয়েছিলে
 ঠিক তার দ্বিগুণ
বুঝিয়ে দেবো কড়ায়গণ্ডায়!
তোমরা কাঠগড়ায়
 থাকা আসামী হবে
সেদিন আমি লয়ার
আমিই ধর্মাবতার;
তোমরা শুধু তাকিয়ে থাকবে,
হা করার ও শক্তিটা থাকবে না।
 মনে রেখো!
আমি তোমাদের
আশির্বাদ করলেও
তোমাদের মনে হবে
গালি দিচ্ছি!
কেননা তোমাদের পূর্বের
পাপ তোমাদের পীড়া দেবে।
তোমরা আষাঢ়ের গাছ
আমি গ্রীষ্মের প্রখর তাপদাহ
 একদিন শুকিয়ে যাবে
গ্রীষ্মের প্রখর তাপে!
জানি তো একদিন
 তুমি ফিরে আসবা;
অথচ আমি এমন
ভাব ধরবো যেন,
তোমারে আর চিনিই না!
আমি অন্যদিকে তাকিয়ে
 সিগারেট ফুকতে ফুকতে
 বলবো,
"যান বিজি আছি
আন্টি পরে আসুন!''





রিভেঞ্জ-৩

একদিন আমার ও সময় আসবে
আমিও অনেকটা বড় হব!
তোমার কল্পনার অনেকটা বাইরে!
তোমার অহংকারের চে আমার একটা কথার ওজন হবে সাতমন বেশি ভারী তুমি সহ্য করতে পারবে না!
প্রিয়তমা তুমি আমার কথার ওজনে মাটিতে মিশে যাবে।
আমিও তোমার ফোন দেখে রিসিভারে ৩ বারে হাত নেবো না।
তোমার বার্তা খুলেও দেখবো না।
তোমাকে পাশে বসতে দেবো না
জড়িয়ে ধরে ভালোবাসতে দেবো না!
তুমি কাঁদবে আর আমি তাকিয়ে দেখবো।
তুমি টিস্যু চাইবে নাকের চোখের পানি মুছতে
আমার দামী টিস্যুতে তোমারে হাত ছোঁয়াতে দেবো না।
আমি একটা গাছ। মনেকর।
ছোট থাকে গাছ দেখোইতো
ডালপালা গজায়, মস্তবড় শীর সুউচ্চে তুলে মেঘরে চ্যালেঞ্জ করে বসে
উপরের মেঘ ঈর্ষান্বিত হয়,
 যুদ্ধের দামামা বাজায়
বজ্রপাত নিক্ষেপিত হয় মেঘের পাচিল থেকে গাছের মস্তকে!
বজ্রের আঘাতে গাছ মরে যায়
শিকড়ে গজায় তাঁর সুউচ্চে মাথা
তোলার স্বপ্ন।
শিকড় থেকে গাছের ভবিষ্যৎ সুউচ্চে মাথা তোলে, পূণরায় চ্যালেঞ্জ করে মেঘ মালারে।
একদিন আমার ও সময় আসবে
আমিও বড় হব!
তোমার বাড়ির ছোট রাস্তায়
আমারে দেখবা স্বর্নে মোড়া গাড়ি
নিয়ে প্যাঁপোঁ হর্ণ বাজাচ্ছি
কানে তালা লেগে যাবে তোমার পরিবারের।
আর তোমার বাবার কালো কুচকুচে দুটো হাত আমি স্বর্ন দিয়ে মুড়িয়ে দেবো!
একটা বান্ডিলের সব টাকা তোমার বাবার মুখে ছুড়ে দিয়ে বলবো "নে ফকিরনির বাচ্চা এইবার এইসব দিয়া মুড়ি ভেজে তোর মেয়ে কে নিয়া খা যাহ!''



সজল আহমেদ এর কবিতা: আমার হাতে একটা তারছেড়া গিটার

আমার হাতে একটা তারছেড়া গিটার


এখন বিজন রাত
আর ছাদে নেই চাঁদ।
আমি ছাদে উঠে
চাঁদকে খেয়ে ফেলেছি
বিধায় নিগূঢ় অন্ধকার
আমার সাথে
আমি
আর হাতে
একটা তারছেড়া গিটার।
পৃথিবীর বিপরীত পৃষ্ঠে এখন
চাঁদের হাহাকার
উল্টো দিকে ঘুরছে পৃথিবী
আমি তাতে ঘি ঢালি
আর গান করি
আমার সাথে
আমি
আর
আমার হাতে একটি তারছেড়া গিটার।
এই যে আমি
আমাকে চিনবেন না আপনি
আমি চাঁদ তারা খেয়ে খেয়ে
মাছ পাতা ফুল দিয়ে
কবিতা লেখার পর অ্যাখন
ধইঞ্চা পাতার উপর কোবিতা লিখি।
তারা ধরে অন্য গ্যালাক্সিতে রেখে আসতে গিয়ে
দেখি;
তারারা সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে একাকার
তখন আমি একা
আমার সাথে
আমি
আর
আমার হাতে একটি তারছেড়া গিটার।

সজল আহমেদ এর কবিতা: মরে যাওয়া খুব সহজ


মরে যাওয়া খুব সহজ!

১.
মরে যাওয়া খুব সহজ!
মনে করুন একদিন রাতে
টুপ করে মরে গেলেন ;
কাউকে কিছু না বলেই
 ছাদে উঠে লাফ দিলেন।
একদম সহজ এ কাজটা।
২.
বাবা বকছেন;
আর আপনি ভাবছেন- 'বকাবকি' এই ল্যাটা জনমের তরে; চুকে যাওয়াই ভালো! তাহলে কি করা যায়?
মরে যাওয়া সহজ।
মরে যেতে চান?
তাহলে যান।
৩.
আপনি ফোনটা হাতে নিয়ে টিপছেন
এর মধ্যেই প্রেমিকা একটা টেক্সট করলো আর তাতে লেখা 'আমার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাবে কাল কিছু করো।'
আপনার কিছুই করার নেই।
আপনি ভাবলেন এর চে মরে যাওয়া ঢের ভালো! করলেন কী, বিষ খেয়ে টুপ করে মরে গেলেন। মরে যাওয়া একদম সহজ। একদম সহজেই, সহজভাবে মরে যেতে পারবেন। কোন ঝক্কি ঝামেলা ছাড়াই।
৪.
আপনি বুঝে ফেলেছেন ইতোমধ্যে
মরে যাওয়া খুব সহজ!
আর আপনার তাই মরে যতে হবে
বেঁচে থাকা খুব কঠিন
তাহলে টুপ করে মরে যেতে থাকুন।
কিভাবে? কোন পদ্ধতি প্রোয়োগে-
সবচে সহজভাবে;
এবং নৈতিকতা রেখে বজায়, মরে যেতে হয়?
তাঁর একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করা উচিৎ।
ভেবে ভেবে বের করলেন একটি বই
নাম দিলেন 'মরে যাবার একশ একখানা সহী উপায়'
বইটি ফ্লপ হলো। বাজার থেকে শুধু একটি কপি বিক্রি হলো; আর তা কিনেছে আপনার এক মেয়ে বন্ধু।
ভাবছেন ওর কাছে কিভাবে মুখ দেখানো যায়?
বই ফ্লপ হওয়ার চেয়ে একপিস বিক্রি হওয়া বইটি আপনাকে গূঢ়ভাবে আঘাত করলে;
আপনি ভাবলেন মরে যাবেন।
এখন আপনি সত্যিই মরে যাবেন
কোন পদ্ধতি প্রোয়োগ করে মরা যাবেন ভাবতে ভাবতে
একসময় ছাপানো বইগুলোতে আগুন ধরিয়ে তাতে লাফ দিলেন।
ওয়াও!

সজল আহমেদ এর কবিতা: প্রলেতারিয়াত

প্রলেতারিয়াত

১.
বাবাকে একটা চশমা কিনে দেবো বলে বের হয়ে শুনি দোকান থেকে সমগ্র কমদামী চশমা চুরি হয়ে গ্যাছে! কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গ্যালো এ জন্য কোন থানা পুলিশ হবে না। সাংবাদিক সম্মেলন হবে না কোন মিটিং হবে না, মিছিল হবে না। ফেসবুকে কোন স্ট্যাটাস, ইভেন্ট কিংবা গ্রুপ খোলা হবে না প্রতিবাদস্বরূপ। সরকার থেকে কোন পদক্ষেপ ও নেয়া হবেনা চোর ধরতে।
২.
 পৃথিবীতে দুই রকমের চুরি আছে! যথাযথ চুরি আর
অবৈধ চুরি।
যথাযথ চুরিটি প্রলেতারিয়েত করে এলিটের ঘরে তাঁর জমানো সম্পদের হিস্যা করতে। বাকি চুরিটি অর্থ দিয়ে এলিট শ্রেণীরা করে। এলিটরা কমদামী চশমাগুলোকে সব বাজার থেকে চুরি করে নিয়েছে অধিক মুনফার আশায়।
 আমি চশমা কিনতে গিয়ে বাবার কথা মনেকরি। পুরানো চশমাটা হারিয়ে যাওয়ায় বাবা পত্রিকা পড়তে পারছেন না!
৩.
আমার বাবার
প্রতিদিনের রাজনৈতিক পাতাটা দেখা চাই'ই চাই! এরপর উনি বুদ্ধিজীবি হয়ে যান আর আমাকে শেখান কিভাবে টিকে থাকতে হয় বর্তমানের রাজনৈতিক মাঠে। কিভাবে ফাউল করে গোল করতে হয়। কয়েকদিন হলো বাবা আমাকে কিছুই ছবক দিতে পারছেন না! যেহেতু বাবার চশমা হারিয়ে গ্যাছে।
৪.
আমার রাজনীতিজ্ঞ গৃহপালিত বুদ্ধিজীবি মুরব্বি বাবাকে দেখে মায়া হচ্ছিলো বিধায় একটা চশমা কিনতে আমি বের হয়েছিলাম। দোকানে এসে দেখি দোকান থেকে আমার বাবার চশমাটি চুরি হয়ে গেছে! এলিটরা আমার বাবার চশমাটি চুরি করে নিয়ে গেছে।
এখন আমার ইচ্ছে হচ্ছে চিবিয়ে খেয়ে ফেলি সব এলিটের টাকা, গাড়িবাড়ি এবং প্রোপার্টিগুলো সব!

সজল আহমেদ এর কবিতা: ঔঁ

ঔঁ

ঔঁ
ফেঁটে চৌচির হোক আসমান
কসম হে নাজিলকৃত কোরান
ফুল মাটির কসম
কসম খাবো গন্ধম
হে আজমের আজম
চাঁদ তারার কসম
কসম অঁচল এর
কসম মানব সকলের
এবং সকল মরদেহের
কসম হাবিয়া দোজখের
কসম জান্নাতের
আর ফুল, পাখি পরিষ্কার জলবাহী হ্রদ এর।
যাঁরা আমাকে ভাবলো ত্যানা,
 যারা আমার ভালোবাসাকে বলল আদিখ্যেতা
আমাকে ভালোবাসলো না
 এবং যাঁরা নরপিশাচের মতো আমাকে দূরে ছুড়ে দিয়ে বেঁচে যেতে চাইলো;
এবং যাঁরা জড়ো করলো আমার সমূহ বেদনা-
 তাদের পরিত্যাগ করবো।
এবং ব্যতিক্রম হব
           ঔঁ!

সজল আহমেদ এর কবিতা: আমার অত টাকা নাই

আমার অত টাকা নাই


আমারো তো মনেচায় তোমারে নিয়া একটু বড়সড় রেস্টুরেন্ট এ খাইতে যাই,
কিন্তু দ্যাখো আমার অত টাকা নাই!
চলো বাদাম চাবাই
অথবা ফুচকা চটপটি খাই
এরপর সেকেন্ড কোন
অপশন আমার কাছে নাই।
কারণ আমার অত টাকা নাই।
আমার ও তো মনেচায় তোমারে নিয়া একটু ঘুরি কিম্বা শপিংয়ে যাই
কিন্তু দ্যাখো আমার অত টাকা নাই!
এমনই কপাল বাল
আমার এমন গরীবি হাল!
রিক্সায় চড়তে চড়তে
একটা গাড়ির কথা প্রায়ই ভাবি
কিন্তু দ্যাখো আমি অভাবী;
গাড়ি কেনার মতো অত টাকা আমার নাই,
রিক্সা থামায়ে আছে চলো যাই।
লাচ্ছি খাইতে খাইতে ভাবি
এখন একটা বীয়ার ক্যান হাতে থাকা উচিৎ ছিলো অন্তত...
পকেটে তো গড়েরমাঠ স্বপ্ন দেখি অথচ!
মাঝেমাঝে তোমারে মিসডকল দিতে গিয়া লজ্জা পাই,
আবার ভাবি, এত লজ্জা কিসের?
 আমার তো অত টাকা নাই!
ভাবি, কেন আমার অত টাকা নাই?
আমি স্বপ্ন দ্যাখি
স্বপ্ন দেইখা মজা পাই
কারণ আমার অত টাকা নাই!
যেহেতু আমার অত টাকা নাই
সেহেতু আমি দোষ দিবো সব বাপ শালারে
শালা তোর যেহেতু টাকা ছিলো না বেহুদা কেন জন্মাইলি আমারে?
যেহেতু পাপ বাপরেও না ছাড়ে
সমূহঃ খিস্তি জপি বাপের ও তরে.......
তুমি তো স্বপ্ন দ্যাখো, আমাদের বাড়ি হবে, ছাদ হবে
অথবা এও দ্যাখো চাঁদে বসে আমাদের বাড়ির ছাদ দেখবে।
শোনো একটা পাকা পাঁচতলা বাড়ির কথা আমি প্রায়ই ভাবি
বাড়িতে একটা সুইমিং পুল চাই যেখানে নাইতে নামবো তুমি ও আমি।
পাইতে এখনো পোড়াতে হবে কাঠখড় আমরা যা চাই,
বিকজ আমার অত টাকা নাই।
তোমার আঙুলগুলো ধরতে ধরতে ভাবি
কমপক্ষে এক ক্যারেট হীরার একটা আংটি আদপে থাকা তো উচিৎ ছিলো;
অথচ সিটিগোল্ডে তুমি পুরোটা মুড়ে আছো আমার লাগেনা ভালো!
কি আর করা? সব নীরবে দেখে যাই
কারণ ডায়ামন্ড কেনার মতো অত টাকা আমার নাই!
চলো ঐদিকে রাস্তা ধইরা পাশের দোকানে যাই
সিটিগোল্ড আংটিতে করাবো হাত বোঝাই।
দামী সব হোন্ডা দেখে বারবার আফসোসে মরে যাই
অন্তত আমার একটা ডুয়োকাটি এখন পাছার নিচে থাকা লাগে সবকিছুর আগে!
কিন্তু কী?
আমার কোন হোন্ডা নাই
আমি মনেমনে ভো ভো হোন্ডা চালাই
কারণ
তুমি জানো
আমার ঐটা কেনার মতো অত টাকা নাই।
যেহেতু আমি ফকিরনির ঘরের ফকিরনি
সেহেতু দ্বিতীয়ত আমি অশ্লীল গালি দেই আমার নসীবরে.....
শালা সবার টাকা আছে, সবাই করে দুহাতে কামাই
অথচ আমার কেন অত টাকা নাই?
এরপর আমি সমগ্র খিস্তি জপি তোমারে
যেহেতু তুমি আসার পর আমার
শুধু চাহিদাই বাড়ে
টাকা পাইতে ইচ্ছা করে
আর নিজেরে বেশ গরীবের বাচ্চা মনে হইতে থাকে
যেহেতু তুমি শুধু সীমাবদ্ধ "আমার এত এত চাই''
আর এইটা খবো ঐটা খাই
ঐটা কিন্যা দাও ঐটা চাই কিম্বা
কিনে দিতে হবে যত পরে খরচ
সেহেতু গালিশোনা তোমার ফর্জ!
যেহেতু তুমি জানো আমি গরীব
তবুও চাহিদার শেষ নাই
অতএব তোমার নিস্তার নাই
আর আমার যেহেতু টাকা নাই
সেহেতু মুখের ট্যাকশোও হারায়ে ফালাই
দৌঁড়াও তুমি দাও দৌঁড় তুমি
তোমারে দিয়া কার বাল্ফাবো আমি?
তোমারে আর দরকার নাই
বিকজ তোমারে পুষবার মত অত
টাকা আমার নাই।



সজল আহমেদ এর কবিতা: বেকার কবি

বেকার কবি


১.
 মিঃ সানাউল্লাহ্ সানা
সোসাইটির পাশাপাশি
 আল্লা ও আপনাকে
চোখে দ্যাখে না!
সোসাইটি কানা
আর আল্লা আপনারে
লাইক করে না!
আপনি একজন বেকার
তারোপর কবি
আপনি অভাবী
আপনি ফতুর!
প্রেমিকার কাছে
অপমানিত হইতে হইতে,
এক পর্যায়ে এসে থেমে যান
পৃথিবীর চড়-লাথি খাইতে খাইতে
 আর চলার অ্যানার্জি পান না।

২.
এরপর বাবা-মা আপনাকে ভাবতে থাকে উচ্ছিষ্ট।
মিঃ সানা আপনি সংসারে
অনাহারীদের মতো ক্লিষ্ট!
আকাশের ফারিশতাদ্বয় আপনাকে পাপের কারণে করতে থাকে লানত,
মৃত্যু আপনার কাছে রেখেছে "বেঁচে থাকা'' আমানত।
আপনি কই যাবেন?
কই গিয়া মুক্তি পাবেন?
এখন কবর ও আপনাকে
আর গ্রহণ করতে চায় না!
মিঃ সানাউল্লাহ্ সানা
আল্লা ও আপনাকে
চোখে দ্যাখে না!
আপনি কি করবেন এখন?

৩.
মরতেও আপনার নিষেধ,
আপনি দৌঁড়ে পালান জঙ্গলে যখন
সামনে পরে একটি বাঘ
বাঘ আপনাকে খেয়ে ফেল্লে
খিয়ানত হবে মৃত্যু রেখেছিলো যে আমানত।
বাঘের সাথে জম লাড়াইয়ে
আপনি জিতলেন,
আহত হয়ে ফিরে আসলেন
কিন্তু আহত আপনার সেবা করার মতো কাউকে পেলেন না!
মিঃ সানা
আপনি এখন বিপাকে
আপনাকে মৃত্যুও চোখে দেখে না।

৪.
ধরুন একসময়ে মৃত্যু তার যাপিত ঋন ছাড়িয়ে নিলো
এবং একসময় সত্যই আপনার মৃত্যু হলো!
মিঃ সানাউল্লাহ্ সানা
এবার আসবে মৃত্যুর পরের ভাবনা!

৫.
আপনি কি ভাবছেন আপনি বেহেশতে যাবেন?
আপনি কি বিগত মিথ্যাচারের কথা ভাবেন?
 যা আপনি করেছেন প্রেমিকাকে খুশি রাখতে বাবা-মার সাথে,
বন্ধুদের সাথে!
মিঃ সানা
আপনি লিখে নেন
আপনার আর
বেহেশতে যাওয়া হবে না!
আপনি মৃত্যুর পর
আল্লার কাছে আরেকবার
চান্স চাইতে পারেন দুনিয়ায়
ফিরে আসার।
মিঃ সানা
আপনি কি জানেন?
একবার মরে গেলে
আর ফিরে আসে না!

৬.
আপনি আর মরলেন না।
একটা সিগারেট খেতে আপনি বাইরে দোকানে গেলেন
একটা জিপ এসে দোকানের সামনে থামলো
পুলিশ এসে আপনাকর সার্চ করে পেলো গাঁজার টোপলা!
মিঃ সানা
লক্ষ্য করুন, আপনি কিন্তু গাঁজা খান না!
কোথা থেকে এলো টোপলা?
আপনি অতশত ভাবার আগেই; আপনাকে জিপে তুলে নিয়ে গেলো।
থানায় আপনি মাথা নিচু করে আছেন
পুলিশ আপনাকে রিমান্ড এর ভয় দেখাচ্ছেন
আপনি ভয়ে জবুথবু হয়ে আছেন
সানা আপনি সামনে তাকাবেন না
সামনে দাঁড়িয়ে আছেন রক্তচক্ষু আপনার বাবা!
আপনি তবুও তাকালেন
বাবা আপনাকে বাসায় নিয়ে আসলেন
আপনার শাস্তি হলো ৩ বেলা ভাত বন্ধ
আপনি কাঁদতে কাঁদতে যদিও হন অন্ধ
ভাত আর আপনাকে ৩ বেলা দিবে না!
মিঃ সানা
আপনার খেতে মানা।
আপনি কি করবেন?
আস্তে দৌড় দিয়ে পালাবেন?
বা অন্যকোথাও খাবেন?
যদি পালান বা অন্য কোথাও খান খানা
মিঃ সানা
 তবে আর বাপের হোটেলে ভাত খাইতে পারবেন না
আপনাকে ঘাড় ধরে বের করে দিবে।