প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবালের কলামের জবাব


সম্প্রতি বিডিনিউজ২৪ডটকম এ মৃণালের ভাস্কর্য নিয়ে ছাপা হওয়া জাফর ইকবালের কলামে আমার এই মন্তব্যটি তারা এপ্রুভ করেনি। [জাফর ইকবালের কলাম] আমার মন্তব্যঃ প্রফেসর জাফর ইকবাল কে ধন্যবাদ তাঁর মতামতের জন্য।আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারণ দেবী থেমিসের ইস্যুতে আমি আপনার সাথে একমত নই।তবে আমি আশ্চর্য হই এই দেখে যে হেফাজতে ইসলামকে আপনি যেই দোষে দোষী করছেন ঠিক সেই দোষেই আপনি বা আন্দোলনকারীরা দুষ্ট।হেফাজতে ইসলাম যেমন সকল কাজে ধর্মকে পুঁজি করছে আপনি বা আন্দোলনকারীরা মহান মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করছেন।ধর্মব্যবসার মত মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসা হয় কিনা আমার জানা নেই। প্রথমত,আপনি বারবার ত্রিশলক্ষ শহীদকে টেনে আনছেন এখানে প্রশ্ন থেকেই যায় ‘তাহলে কি শহীদগণ ভাস্কর্য বা বামদের সকল দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে শহীদ হয়েছেন?’ জনগণের জন্য কি শহীদ হননি তাঁরা? আপনার মত যদি হেফাজত ও শহীদদের পুঁজি করে তখন কি করবেন? আর থেমিসের এই গ্রীক মূর্তিতে একাত্তরের কোন চেতনাটা দেখা যাচ্ছে বুঝিয়ে বলুন।প্রফেসর সাহেব,আপনার লেখাটি পড়ে মনে হলোথেমিস, আর্টেমিস, হেরা, মিনার্ভা আর ভেনাসের মূর্তি বসানোর জন্যই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। দ্বিতীয়ত,এই মূর্তির(ভাস্কর্য) পক্ষে আপনি গুটিকয় লোক ছাড়া পাবেন না।তাদের পরিমাণ নগন্য,তবুও ধরলাম ১০%।আর বিপক্ষে রয়েছে ৯০%।আপনি আপনার পেজ এ পোস্টের মন্তব্যগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন মূর্তির বিপক্ষে কতজন আর পক্ষে কতজন।প্রফেসর সাহেব, এখন কথা হচ্ছে কোটি কোটির চেয়ে গুটিকয়েক এর মতামত গ্রাহ্য করতে হবে কেন? যেহেতু সরকার গণতান্ত্রিক সেহেতু জনগণের দাবী তাকে মানতেই হবে।এক্ষেত্রে গণতন্ত্র রক্ষায় আওয়ামিলীগকে ধন্যবাদ দেই যে তাঁরা গণমানুষের পক্ষে গিয়ে ভাস্কর্যটি সড়িয়েছেন।আরেকটি কথা না বল্লেই নয়; প্রায় উলঙ্গ এবং জাতীয় ঈদগাহের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় এটা স্থানান্তর করা হয়েছে(একেবারে অপসারণ করা হয়নি)।এখানে মুসলমান সম্প্রদায় এর বছরে ২ বার ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।মুসলমান কেউ চাইবেনা ঈদের নামাজ পড়ে উঠেই দেবী দর্শন করতে। তৃতীয়ত প্রফেসর সাহেব,আপনি বিভিন্ন দেশের ভাস্কর্যের কথা বলছেন।আমাদের দেশেও ঢের ভাস্কর্য আছে,কেউ সেগুলো নামাতে যায়নি(হেফাজত দাবী করলেও সরকার তাতে কান দেয়নি)।এর মধ্যে নগ্ন ভাস্কর্য ও আছে।দেবী থেমিসের ভাস্কর্য সড়ানোর ইস্যুতে আমি মৃণালের দোষ দেবো।এখানেই ওয়াসীউল রানা সাহেব মন্তব্য করেছেন ওটাই উদ্বৃত করলাম; ‘‘মৃনাল হক সম্প্রতি টক শোতে যে বক্তব্য রাখলেন তাতে প্রতীয়মান হয় – উনি মার্কিন রুচি যতটা বোঝেন বাংলাদেশের রুচি ততটা বোঝেন না। বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট অনুভূতিসম্পন্ন ভাল এবং মন্দ বোঝার ব্যাপারে। মৃণাল হক বেশ ঔদ্ধত্যের সাথে আমাদের অশিক্ষিত বলে গালি দিলেন, মনে কষ্ট পেলাম, মনে পড়ল “বিদ্বান হইলেই সকলে শিক্ষিত হয় না” চিরাচরিত ভাস্কর্যে সচরাচর কেও আপত্তি করে না। ভুঁইফোর কিছু হলে সেটা যদি উদ্ভট প্রতীয়মান হয় তবে প্রতিবাদ অবশ্যম্ভাবী। ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজে এবং উওমেন টিচার্স ট্রেনিং কলেজে নগ্ন নারীমূর্তির যে ভাস্কর্যগুলি আছে তা তো আপনি দেখেছেন, তা নিয়ে কোন ঝামেলা হচ্ছে না, ফুলার রোডে, টিএসসিতে, কলাভবনের ভাস্কর্য নিয়েও কথা হচ্ছে না। কারণ সেখানে সকলের গমন বাধ্যতামূলক নয়। উপরন্তু ঐ ভাস্কর্যগুলির প্রেক্ষাপট গ্রহনযোগ্য হয়েছে। কিন্তু এই থেমিস বা বাঙালী নারীর তথাকথিত ভাস্কর্যটি এতটাই বেশী দৃষ্টিকটু ও অসহনীয় হয়েছিল যা গনতান্ত্রিক পরিবেশে বল প্রয়োগের মাধ্যমে আরোপ করা অনুচিৎ।’’ মৃণাল মূলত আমাদের বাঙ্গালীদের ছোট করার পাশাপাশি বিভ্রান্তিতেও ফেলেছে।মৃণাল গ্রীক দেবীর মূর্তিকে বিকৃত করেছে এবং বলছেন এটা বাঙ্গালী মেয়ের ছবি। আবার যারা আন্দোলনে নেমেছে তাঁরা বলছেন ‘এটা ন্যায়ের প্রতিক(মূলত কুসংস্কার) দেবী থেমিসেরই মূর্তি’।তাহলে আমরা কার কথা শুনবো? আরেকটা প্রসঙ্গ বাদ দেয়া যায়না,সেটা হলো দেবী মূর্তির খরচাদির কথা।এই ফাও মূর্তি স্থাপনে বাংলাদেশ অার্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এখনো বাংলাদেশ মোড়ে মোড়ে ভাস্কর্য করার মত সম্পদশালী হয়েছে কি? বিভিন্ন সূত্রমতে শুনতে পেলাম;শুধুমাত্র শাড়ি পড়াতে মৃণাল প্রধান বিচারপতি থেকে খসিয়েছে দেড়কোটি টাকা!মৃণাল এতই নিবেদিতপ্রাণ বিনে পয়সায় তো কাজটা করতে পারলোনা! প্রফেসর সাহেব,সর্বশেষ।এই বাংলাদেশ স্বাধীন করা হয়েছে বাঙ্গালীদের সকল প্রকার দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে।কিন্তু আদৌ আমরা তা পারিনি।বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পর বহুতল ভবন নির্মান অন্তত তাই বলে।গরীবের মাথায় নুন রেখে বড়ই খাওয়ার মত ধনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।কই আপনিতো গরীবের অধিকার তাদের সম্পদ নিয়ে কিছু লিখেন না।আপনাদের কলম এবং মিছিল তখনই বের হয়,যখন বিতর্কিত কোন ইস্যু খাড়া হয়(অর্থাৎ নিজেকে বারংবার আলোচনায় আনার সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায়না কেউ যদিও আপনার বিষয়টা এখানে আলাদা)।গরীবরা কেন না খেয়ে আছে? কেন চিকিৎসার অভাবে মারা যায়? কেন স্কুল কলেজ ইত্যাদি সামাজিক প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য? এসব নিয়ে কলাম ছাপুন মিছিল বের করুন দেখি আপনাদের মানবতার স্বরূপ।
SHARE

Mad Max

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image

0 comments:

Post a Comment