কুর্সড বা গালাগালি (পর্ব -২)


রিভেঞ্জ
।।এক।।
দুঃখ পেলে সবাই
কাঁদতে জানে না
কারো কারো
হৃদয় ভেঙে যায়
কাচের টুকরার মত
অথচ চোখে
জল গড়ায় না!
যারা কাঁদতে জানে না
তাদের দুঃখটা
কত গভীর
একমাত্র পরমেরই জানা!
আমি এতটুকু দেহে
এত কম বয়োসে
এত অপমান
এত বিরহ
এত অসম্মান,
ক্যামন করে সহ্য করেছি
ভেবে নিজেকে নিজেই
সেলুট করে
বলি “বস মারহাবা” !
তবে হ্যাঁ, তোমার
সকল দুর্ব্যবহারে
হৃদয় ভাঙে আর
চোখ ভারী করে!
অপমান, অবজ্ঞা, অানাদর
আর বিরক্তিবোধ
থলিতে জমা হতে থাকে।
চোখ বারেবার ইশারায়
বলে দ্যায়, আর কত
অবহেলা, তকলিফ
বাকি রয়েছে?
।।দুই।।
ইনশাল্লা
একদিন ফিরিয়ে দেবো
সব জমিত অপমান!
তুমি শুধু তাকিয়েই থাকবে
যেরকম আমি
তোমার দিকে
তাকিয়ে থাকতাম।
মুখের ওপর সব
“না” বলে দেওয়া,
হাত ধরতে না দেয়া
পাশে বসতে না দেয়া
আমাকে বারবার খোটা দেয়া
আমাকে বোকা ভাবা
প্রতিটা গালি
একেক করে
আশ্লেষে আমাকে
ধ্বংশ করে দেয়া!
টিস্যুতে হাত, নাক মুছে
মুখে ছুড়ে দিয়ে
সবকিছুর শোধ নেবো
ইনশাল্লা একদিন!
তোমার মুখে কোন
কথা সড়বে না
কারণ নিজেই খাল কেটে
তুমি কুমির এনেছিলে!
ভাবতেও তোমার কষ্ট হবে যে,
“আমি এতটা খারাপ হতে পারি!”
।।তিন।।
ইনশাল্লা
তুমি মরে ভূত হলে,
তোমার মৃতদেহতে
লাথিও দেবো না
আমার দামী জুতো
ফকিরনি একদম
সহ্য করে না!
জানাজা তো দূরে থাক
আমি তোমার লাশটা কে
দূর হতে
দেখতেও যাবো না!
খাটিয়ায় তুমি
অপমানবোধ
হতে থাকবে।
এমন ভান করে থাকবো
যেন তোমাকে আর
চিনি না আমি।
কোন কালেই
আমরা পরিচিত
ছিলাম না যেন।
আমার ঘৃণা হবে ছিঃ!
পূর্বের সব বিরহ
মনে পরে যাবে;
কবরে একদলা
থুও ফেলবো না।
জানো তো
আমি যেখানে-সেখানে
থুঃ ফেলি না।
সুযোগ পেলে
তোমার নাপাক খাটিয়ায়
আগুন জ্বালিয়ে দেবো!
।।চার।।
ইনশাল্লা
তুমি মরে যাওয়ার
একদশক পর একদিন
কবরে বড় ঘাস গজাবে,
তোমার কবরের
যত্ন নিচ্ছে না যেন কেউ,
নিশ্চিহ্ন প্রায়
কবরের উঁচু প্রস্তর।
মরিচাধরা সাইনবোর্ডে শুধু
তোমার অস্পষ্ট
নাম সাদা
রঙে লেখা।
আমাকে তুমি
আসতে দেখবে
তোমাকে আমি
দেখবো না।
হয়তো ভাববে
তোমার কবর
জিয়ারতে এসেছি।
তুমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে
হয়তোবা ভাববে আমার
দোআয় তোমার শাস্তি
কিঞ্চিত লঘু হতে পারে।
অামি হাসবো রহস্যের হাসি
তোমার কবরের মাটি
ভেঙে যেতে দেখে।
আমি কবরের পাশে দাঁড়াবো
জিয়ারতের ভান করে
জিপারটা আস্তে টেনে খুলে
কবরের পাশে ঘুরে ঘুরে
কবরের গায়ে মুতে
লেপ্টে আসবো
গৎবাঁধা শ্লেষ।
।।পাঁচ।।
তুমি দেখবে
অথচ কিচ্ছুটি
বলার শক্তি
নেই তোমার!
দুনিয়াতে তোমার কথা
কেউ শোনে না
এখন আর।
এমনকি তোমার
কবরের ফেরেশতারা ও না!
মনে রেখো, আমাকে
ইগনোর করেছো বলে
কবরেও তোমার শান্তিতে
থাকা হবে না!
হা হা হা!

রিভেঞ্জ ২
একদিন আমাকে করা
সব অপমান
পুঙ্খানুপুঙ্খ ফিরিয়ে দেবো!
পেটে লাথি মারা
গায়ে হাত তোলা
আমাকে ছোট করা
আমাকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ
টুটি চেপে ধরা
আর প্রতিটা গালি
যেভাবে আমাকে দিয়েছিলে
ঠিক তার দ্বিগুণ
বুঝিয়ে দেবো কড়ায়গণ্ডায়!
তোমরা কাঠগড়ায়
থাকা আসামী হবে
সেদিন আমি লয়ার
আমিই ধর্মাবতার;
তোমরা শুধু তাকিয়ে থাকবে,
হা করার ও শক্তিটা থাকবে না।
মনে রেখো!
আমি তোমাদের
আশির্বাদ করলেও
তোমাদের মনে হবে
গালি দিচ্ছি!
কেননা তোমাদের পূর্বের
পাপ তোমাদের পীড়া দেবে।
তোমরা আষাঢ়ের গাছ
আমি গ্রীষ্মের প্রখর তাপদাহ
একদিন শুকিয়ে যাবে
গ্রীষ্মের প্রখর তাপে!
জানি তো একদিন
তুমি ফিরে আসবা;
অথচ আমি এমন
ভাব ধরবো যেন,
তোমারে আর চিনিই না!
আমি অন্যদিকে তাকিয়ে
সিগারেট ফুকতে ফুকতে
বলবো,
“যান বিজি আছি
আন্টি পরে আসুন!”


ব্রেকআপ
এক।
চলে যাচ্ছে প্রেমিকা!
দুই।
ডাকে কালো কাক।
আবার আসতে হবে ফিরে ধরে রোড ক্যানভাস।
বিপদ সংকেত!
বিপদে তোমারে
আগলে রাখার অভ্যাস,
ছাড়তে পারিনি,
সেফিটি শত্রুর ও প্রয়োজন।
বলি একটু বোসে যাও তবে
কত পাওনা রয়েছে ;
এখনো বাকি, না সুধরে যেতে হবে।
কাক ডাকা শেষ হলে চলে যেও
দাবী নেই আমার।
যা ছিলো দাবী যত পাওনাগণ্ডা
সব তড়তড় করে বাড়তেই ছিলো।
পৃথিবীর বাঁকে
খোলা ক্যানভাসে
দাবীর মিছিল ছিলো সক্রিয়!
যতটা ভালোবাসা পাওনা ছিলো তোমার
তার চে ঢের বেশি দিয়েছি
কাক ও ময়ূরের দল চাক্ষুষ সাক্ষী!
ইর্ষান্বিত হয়েছিলো ওরা
দেখে দুজনার প্রেম
শেষমেষ কার ভুলে কে জানে
বিচ্ছিন্নতা গ্রাস করে আমাদের
সুখ নেই সবার কপালের লিখনে
পৃথিবীই মরে যাবে,
আর আমাদের প্রেম কোন হরিদাস পাল হে?
কিছুটা সময় যদি হয়
এক কাপ কফি খাই চলো।
হাত ধরে না হোক
দুজন-দুজনার দিকে তাকিয়ে না হোক,
দৃষ্টি নিম্নগামী করে হলেও।
শেষ দাবী।
সব দাবী।
দাবী সব;
পূরণের মতো সাধ্য কী আছে তোমার?
জানি নেই –
তবুও চলো, এক কাপ কফিইতো খাবো।
তিন।
শেষকথা, কত স্মৃতিগাঁথা।
কত কথা শেষে কাক ডাকা শেষ হবে জানে কে!
চার।
কাক ডাকা শেষ!
যাও! রোড ধরে চলে যাও ফিরে চেওনা;
যত ছিলো পাওনা;
তা ফিসাবিলিল্লাহি আফওয়াজা…
পাঁচ।
চলে গ্যালো প্রেমিকা!
যতদূর তাকালে দৃষ্টিক্ষীণ হয় ততদূর তাকিয়ে ছিলাম!
নাহ! চলেই গ্যালো ফিরে তাকালো না!
চলে গ্যালো প্রেমিকা
কাঁদছিলো মেঘমালা
ছোট দু চোখে কাঁদছিলো শালিক
কাকেরা সব
ডাকছিলো অলক্ষুণে ডাক
কাঁদছিলো আমার শক্ত হৃদয়
সে কাঁদছিলো কিনা জানি না!
ভাবি। ভাবতেও কষ্ট হয়; আর কোনদিন কথা হবে না!
এক সাথে কফি খাওয়া হবে না!
শিট! চলে গ্যালো প্রেমিকা ;
আর দেখা হবে না!

আননোন
জলের মধ্যে বসত করে
কিন্তু জলেতে তার বাড়ি না
নীলাকাশে ওঠে কিন্তু
আকাশের সে চাঁদ ও না।।
ও আকাশের তারার ফাঁদে
রোজ রাতে সে যায় হারিয়ে,
যায় হারিয়ে মেঘ মালাতে।
মেঘ মালাতে হারিয়ে যায়
কিন্তু মেঘের দেশে বাড়ি না।
আমার মাঝে দ্যাখো যারে
হেসে ওঠে, কান্নাকরে
এমন করে রোজ করে যে
এত ব্যথা
এক নাগাড়ে
হৃদয়েতে পূঁজি করে
হার্টের ঠিক বাম পাশেতে
জোরসে কষে লাথি মারে
দুহাত দ্বারা
কলজে ছেড়ে
পুঁঞ্জিভূত সকল আশা
ছিড়ে ফেলে ফূর্তি করে
আমার মধ্যেই বসত করে
অথচ,
আমার শরীরে তাঁর বাড়ি না।
সন্ধ্যেবেলা রোজ আকাশে
যারে তোমরা চাঁদ হিসাবে,
উঠতে দেখো
তার হৃদয়ের ক্ষত দ্যাখো
আকাশ থেকে কষ্ট মালা
তাঁর হৃদয়ে নাজিল হলো
আকাশেতে থাকে সে চাঁদ
কিন্তু আকাশে তাঁর বাড়ি না।।
আমরা যখন হাসি খেলি
ঐ বিধাতা আকাশপানে,
খন্ড কালো মেঘরে বলে
মেঘরে যে সে হুকুম করে
মাথার উপর বৃষ্টি ঝরাও,
বৃষ্টি ঝরে গাছের পাতায়-
জয়জয়কার গাছের মাথায়,
গাছেরা সব পাতায় পাতায়
যৌবনের ও উদ্যমতায়
খলখলিয়ে হেসে ওঠে,
আবার যখন বৃষ্টি থামে
গাছেরা সব কান্না করে,
রোজ সকালে সূর্য ওঠে
বৃষ্টিরা সব শুকিয়ে গেলে
শুকনো পাতা মড়মড়িয়ে
চিৎকার করে, এক নাগাড়ে
চিৎকার করে প্রশ্ন করে,
বৃষ্টি কেন আসে না?
বিধাতা বৃষ্টি কেন আসে না?
বৃষ্টি হলো
সবাই আবার নতুন করে ভিজতে থাকে
সবাই কিন্তু খেলা করে
বৃষ্টি হলো, বৃষ্টি পরলো
আমার শরীর ভিজলো নারে,
ভিজলো না, ভিজলো না…..

পতিতার মতো
তুমি কী যে ছলনা জানো!
আমার বাগানে হও ঘাসফুল
কত নিষ্পাপ ভাবি
আর অপরের বাগানে হও রক্তকরবী!
হা হা হা…..
আহা আমি কী মহাবোকা,
তোমার অস্তিত্ব হারানোর কল্পনায়,
ঘাসফড়িঙরে তোমার শরীরে বসতে দেই না,
অথচ তুমি উলঙ্গ শরীরে রক্তকরবী হয়ে
অন্যের বাগানের শিশিরের ছোয়া নাও,
বৃষ্টিতে ভেজো
আর বিটলপোকার কামড়ে তোমার দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়!
ফুল তুমি যার বাগানেই ফোটো আমার অাফসোস নেই,
তবে দুঃখটা এই যে অন্যের বাগানে
তোমার বেশ ক্ষতি হয়ে যায়,
পাপড়িরা ক্ষতবিক্ষত হয়, তুমি কল্পনাও করো না!
ফুল তুমি যার বাগানেই ফোটো,
আল্লার কসম তোমার ক্ষতি হয়ে যায়
এমন কোন বাগানে ফুটো না প্লিজ!

SHARE

Mad Max

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image

0 comments:

Post a Comment