(লেখা পইড়া আমারে ফিমেনিস্ট মনে করলে আমার কিছু আসে যায় না)
আমি যারে দেইখা সবচে বেশি ইন্সপায়ার্ড হইছি সে হইলো পিউডাইপাই। একটা লোক, একলা একা এতবড় হইতে পারছে একমাত্র নিজের আর্মস, নী'র শক্তি আর মেধায়। আজ তাঁর ইউটিউব সাবসক্রাইবার সংখ্যা ৭৬ মিলিয়ন! বিশ্বের এক নম্বর ইউটিউবার। কয়েকদিন আগে ছিলো ৬৫ মিলিয়ন। তখনো এক নম্বর ছিলো। টি-সিরিজ এর সাথে একটা বুদ্ধিদীপ্ত ফ্যাসাদ তাঁরে আরো ১০+ মিলিয়ন সাবসক্রাইবার জুটিয়ে দিছে। পিউডাইপাই শুধু যে ইউটিউব নিয়া বইসা রইছেন তা না, তাঁর রয়েছে নিজস্ব শপ। সেইখানে সে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বেচাকিনা করেন। এখন তাঁর যদি ইউটিউব চ্যানেলটা বন্ধ হয়ে যায়, তাতে তাঁর ইনকামের কিচ্ছু হবে না!
পিউডাইপাই একাই সব করেন। একাই পথচলা শুরু করছিলেন ২০০৬ এ। সেই একা একা একটা লংরোডে তেরোটা বছর হাঁটতে হাঁটতে সে আইসা দাঁড় হইছেন আজকের এই স্থানে। পিউডাইপাই আপনাকে খুব সুক্ষ্মভাবে বুঝাবে,
"ইফ ইউ হ্যাভ লটস অব মানি, ইউ ক্যান ফাক এভরিথিংস এভার ইফ ইউ ওয়ান্ট!'
আমি জানি এই ফেসবুক লাইফের লিজেন্ডারি হইলো গিয়া ধোয়ার মতোন। "ফু'' দিলেই নাই। ফেসবুকে আপনার পপুলারিটি একটা ইল্যুশনের মতোন। দেখলেন এই আপনি জনপ্রিয় আবার চোখের পলকের মধ্যে নাই হয়ে গেছে। এইখানে একটা মেয়ে ইনবক্সেই সেলিব্রিটি। শতশত মেসেজ তাঁর ইনবক্সে জমা হয়। মূলত ঐ মেসেজগুলাই একেকটা ফালতু সময় নষ্ট করার মতো। হাই, হ্যালো, ভালো লাগে, ক্রাশ খাইছি ইত্যাদি। ইনবক্সের যেই ছেলেটি আপনার উপর ক্রাশ খায়, দেখবেন ঐ ছেলেটা আবার অন্য মেয়ের উপর ক্রাশ খাইতে সময় নিবে না। আর যে আপনারে বলে "ক্রাশ খাইছি!'' সে আপনারে স্পেশাল নাও ভাবতে পারে। সো সে আপনারে মেন্টালি সাপোর্ট না ও করতে পারে। ৮৫% বাঙালী ছেলেরা গার্লফ্রেন্ডরে মেন্টালি সাপোর্ট দিতে অপারগ।
ইনবক্সের বাইরে যে একটা রিয়ালিটি আছে, সেইখানে একটা মেয়ে সেলিব্রিটি হইতে প্রতিবন্ধকতা আছে। ইনবক্সের বাইরে একটা মেয়ে বয়ফ্রেন্ড এর বা স্বামীর কথার বাইরে যেতে পারে না, জোড়ে কথা বলতে পারে না, ফ্যামিলির কোন ডিসকাশনে তাঁরে ভ্যালু দেয়া হয়না, বাইরে রাজনীতি করতে পারে না, না দেখাইতে পারে কোন জোর। একটা মেয়ে যখন কোন বিষয়ে স্বামী বা বয়ফ্রেন্ডরে পরামর্শ দেয় তখন স্বামীর জবাব থাকে "মেয়ে মানুষ বেশি বুইঝো না তো!''
মানে ফেসবুকে আপনার একটা মেয়েরে সেলিব্রিটি মনে হইলেও সে পার্সোনাল লাইফে একজন সাধারণ মেম্বারের গুরুত্ব ও পায় না। ফেসবুকে হাসিখুশি ফ্যাশন্যাবল ছবি দেইখা মনে হবে যে, এই মেয়ে চব্বিশ ঘন্টাই থাকে সম্ভবত হাসিখুশির উপরে। কিংবা শতভাগ লাক্সারিয়াস লাইফস্টাইল তাঁর। কিন্তু না। আপনি যখন মেয়েটার রিয়ালিটিতে প্রবেশ করবেন দেখবেন ঐ ছোট্ট দুনিয়ায় সে সবসময় একা আর ডিপ্রেশন প্লাস হীনমন্যতায় ভুগে। সে চিন্তা করে, আরে আমি তো একটা মেয়ে আর এই কনজারভেটিভ সোসাইটিতে আমার কোন দাম নাই!
ছেলেদের কথা যদি বলি, মেয়েদের মতো অত ডিপ্রেশন তাঁদের না থাকলেও একই রকম অনুভূতি সম্পন্নও। তো এইসব খুচরা আলাপ করার একটাই কারণ আর তা হইলো, ফেসবুকের বাইরে মেয়েদের বা ছেলেদের একটা আলাদা জগৎ আছে যেইটারে বলে রিয়ালিটি। এই রিয়ালিটিতে মেয়েরা বা ছেলেরা যেসব কারণে ডিপ্রেশড থাকে সেইসব কারণ ডিসকভার কইরা ঐরকম ঔষধ প্রোয়োগ করা উচিৎ ফ্যামিলি থিকাই। আপনি আপনার মেয়েকে গুরুত্ব দিন, যেমন দেন আপনার অন্যান্য সদস্যদের। মেয়েকে আপনি গালি দিয়েন না। তাদের সাপোর্ট দিন এবং সর্ব কাজে। ছেলেরেও তদ্রুপ।
আর যদি কোন মেয়ে ফ্যামিলি থিকা সাপোর্ট না পায় সেইক্ষেত্রে মেয়েটা নিজরে যেন কোনভাবেই ছোট না ভাবে। এইটা আমার পরামর্শ।
মেয়েরা একটামাত্র কারণেই নিজরে আগাইয়া নিতে পারে না সেইটা হলো, সে নিজরে কখনোই একটা পুরুষের সমান ভাবতে পারে না। দেখবেন এইটা তাগো কথায় কিন্তু প্রকাশ পায় "আহারে যদি ছেলে হইতাম!'' বা "তুমি তো ছেলে, সব করতে পারো। আমি মেয়ে সব করতে পারি না!'' ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব নিম্নমানের ভাবনা যেন মেয়েরা না করে। তাইলেই অসম্ভব হবে তাঁরপক্ষে একজন নারী পিউডাইপাই হওয়া।
একজন পিউডাইপাইর কথা এই প্রসঙ্গে বলার কারণ হচ্ছে, মেয়েরা যদি নিজরে ডেভেলপ করতে চায় সেইক্ষেত্রে তাঁর পিউডাইপাই'র মতো একা একা সব শুরু করতে হবে। একাই তাঁর পথচলা শুরু করবে এই কারণে "সে তাঁর সঙ্গীরে তাঁর সাপোর্টার হিসেবে নাও পাইতে পারে। মেয়েদের সব বিষয়ে সাপোর্ট দিবে এমন পুরুষ পাওয়া দুষ্কর! '' তাহলে কী একটা মেয়ের স্বপ্ন দেখা ধুলায় মিশবে? না।
দ্যা অ্যালকেমিস্টে একটা কথা বারবার বলছেন সেই বুড়ো রাজা "তুমি যখন কিছু পেতে চাও, পুরো পৃথিবী তোমাকে সেটা দেওয়ার জন্য ব্যাকুল থাকে। তোমার শুধু ইচ্ছা থাকতে হবে। '' সো মেয়েদের ও বিভিন্ন দিকে না তাকিয়ে, কে তাঁরে কী কইলো ঐসব না শুনে শ্রেফ সামনের দিকে হাঁটতে হবে। "You can dream it, you can do it.''
0 comments:
Post a Comment