পৃথিবীতে নিজেদের একমাত্র বান্দা খুঁজতে হিড়িক পরে যায় শয়তানের গ্রহ ইভিলার-বিথ্রিনাইনজিরোটুথ্রিটু (Eviller-B390232) তে। শয়তানের বান্দাদের পৃথিবীতে প্রতিনিধি হিসেবে সেট করে পায়ের উপর ঠ্যাঙ তুলে বিশ্রাম করার পায়তারা করছিলো সমগ্র শয়তান। প্রতিনিধি খুঁজতে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে পাঠায় অসংখ্য স্যাটেলাইট। একদিন হঠাৎ পৃথিবীতে সেট করা স্যাটেলাইট হতে সিগন্যাল আসতে থাকে সাথে সাথে ভেসে ওঠে সেই প্রতিনিধির নাম। পৃথিবীর বৃহৎ মহাদেশ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ বাংলাদেশের পাহাড়িয়া বিশাল বিভাগ চাইট্টাগ্রামে শয়তানের এক জাতভাইয়ের বাসা হতে অনবরত এ সিগন্যাল আসছিলো! খুশিতে পেঙ্গুইনের মতো দুলতে থাকে শয়তান সরদার।
সিগন্যাল আসার সঙ্গে সঙ্গেই শয়তান সরদার নিজেদের জাত ভাই খোঁজার কাজে পৃথিবীতে বাচ্চা শয়তানদের ছড়িয়ে দিলে তাঁরা সিগন্যাল ধরেধরে এসে সব জড়ো হয় তাদের সিগন্যাল পাঠানো বান্দাটির বাসার সামনে! বান্দার বাসার সামনে নেইম প্লেটে বড়বড় করে তাঁর নাম সাঁটানো ছিলো "ড্রোন বিজ্ঞানী, অপদার্থবীদ, কলামিস্ট, সায়েন্স ফিকশান ও ভূতের বাচ্চার লেখক প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ সরফরাজ দিকপাল (এমএসসি. বিএসসি, ড্রোনেসসি, সায়েন্সফিকেশানাসসি, কলামেসসি, এমবিবিএ অন লিথোলজি ফ্রম ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া)" হ্যাঁ ঠিক জায়গায়ই এসেছি, বললো সব শয়তানের বাচ্চারা।
সুন্দর স্ট্রব্রেরীর মতো লাল কলিংবেলটায়
একটানা ঊনপঞ্চাশটি টিপ দেয়ার পরও দরজা না খোলায় বিরক্ত হয়ে এক ছোট শয়তানের বাচ্চা খেকিয়ে ওঠে-
" কী অবস্থা! মরছে নিকি সব? দিকপাল সাহেব বাসায় নাই নিকি?''
একটি অচেনা চিনচিনে ভদ্র গলা শোনা গেলো, "না তোমাদের স্যার এসময়ে বাসায় থাকেন না। উনি এখন সম্ভবত য়্যুনিভার্সিটির মাঠে ড্রোন নিয়ে খেলাধুলা করছেন ছাত্রীদের সাথে। দরজা খুলে দেই উঠে বসো। চা খাও উনি এসে যাবেন তন্মধ্যে''
হাতে চা খাওয়ার একদম সময় নেই দেখে চা খাবেনা দরজা খোলার দরকার নেই, বলে শয়তানের বাচ্চারা চলে গেলো য়্যুনুভার্সিটির মাঠে। সেখানে দিকপাল সাহেব ড্রোন উড়াচ্ছিলো না বরংচ ডান হাত মাথায় দিয়ে, বামহাতে মোসগুলো একবার এদিক একবার ওদিক ছড়িয়ে গভীর চিন্তায় চিন্তামগ্ন! মাঝে মাঝে বা হাতটা আনমনে চলে যাচ্ছিলো নোস্ট্রলেও।
শয়তানের বাচ্চারা তাঁর পিছনে এসে চোরের বাচ্চার মতো দাঁড়িয়ে কাচুমাচু গলায় বললো-
"আপনি কী সরফরাজ দিকপাল?''
"হ্যাঁ!''
"কী করছেন এখানে?''
"কাল কী বিষয়ে কলাম লিখে মৌলবাদীদের ঘেটি থেকে কল্লা আলাদা করা যায় সে বিষয়ে ভাবছি।''
"অহ আইচ্ছা! আইচ্ছা!"
"তো এদিকে ফেরেন। কথা আছে। ওদিকে ফিরে বসে আছেন ক্যানো?''
"তোমরা যারা এত প্রশ্ন করো: ইচ্ছে হলে ফিরবো। এখন যাও বাড়ি গিয়ে আমার সায়েন্স ফিকশান মুখস্ত করোগে যাও....''
"আপনি যাদের ভাবছেন আমরা তারা নই। আমরা আপনার ছাত্রী নও, আমরা শয়তানের বাচ্চা। শয়তানের রাজত্ব থেকে এসেছি। "
অাশ্চর্য হয়ে দিকপাল পিছনে তাকায়। পিছনে তাকিয়েই সে হতভম্ব হয়ে যায়!
"আপনারা! আপনারাই কী তাঁরা যাদের আমি সিগন্যাল পাঠিয়েছি?'' চকচক করে ওঠে দিকপাল সাহেবের চোখ।
"হ্যাঁ আমরা।'' শয়তানের বাচ্চারা জবাব দেয়।
খুশিতে আত্মহারা দিকপাল খুশিতে, ঠ্যালায়, ভাল্লাগে, ঘোরতে প্রায় চিৎকার স্বরে বলেন,
"চলুন চলুন বাসায়। আমার গিন্নি খুব চমৎকার লিকার ছাড়া চা বানায়। খেতেখেতে গল্প করতে পারবো। "
"না আমাদের হাতে সময় নেই!'' এরপর এক শয়তানের বাচ্চার ডাউট হলো, সে চিন্তা করে শয়তানের প্রতিনিধিত্ব করে এমন কারোর তো বিনয়ে গদগদ হওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা! আগপাছ না ভেবেই সে জিজ্ঞেস করে বসে-
"আপনি কী সত্যই দিকপাল সাহেব নাকি ভুরুংবাজি করছেন?"
"কেন ডাউট হচ্ছে?'' বলেই তিরিশ বছরে না কাটা মোস ছেচল্লিশ বছরে না কাটা নাকের পশম উঁচিয়ে - "তোমরা যারা সন্দেহপ্রবণ: এখনো সন্দেহ আছে?''
এবার উল্টো চকচক করে ওঠে শয়তানের বাচ্চাদের চোখ! তাঁরা সরফরাজ দিকপাল কে চ্যাংদোলা করে মাঠে থামিয়ে রাখা একটি ড্রোনে চেপে পারি দেয় শয়তানের রাজত্বে। এবার তাঁরা আরাম করার সুযোগ পাবে। দিকপাল তখন মোসে তাঁও দিতে দিতে দাঁত বের করে হাসছিলো। নাকের দুই ফুটো থেকে উঁকি দিচ্ছিলো কাঁচাপাকা ছেচল্লিশ বছর পূর্বের সেই না কাটা পশম!