সজল আহমেদ এর কবিতা সংগ্রহ

সজল আহমেদ এর কবিতা
..................................
..................................
প্রেমিকা ও অবসাদ
.
অকালে হারিয়ে যায় অযত্নের দাঁত
প্রেমিকা জমা করে শুধু অবসাদ
শুধু অবসাদ যারা জমা করতে জানে
তাঁরা শেখাতে আসে ভালোবাসার মানে!
..................................
..................................

বেকার কবি
.
১.
 মিঃ সানাউল্লাহ্ সানা
সোসাইটির পাশাপাশি
 আল্লা ও আপনাকে
চোখে দ্যাখে না!
সোসাইটি কানা
আর আল্লা আপনারে
লাইক করে না!
আপনি একজন বেকার
তারোপর কবি
আপনি অভাবী
আপনি ফতুর!
প্রেমিকার কাছে
অপমানিত হইতে হইতে,
এক পর্যায়ে এসে থেমে যান
পৃথিবীর চড়-লাথি খাইতে খাইতে
 আর চলার অ্যানার্জি পান না।

২.
এরপর বাবা-মা আপনাকে ভাবতে থাকে উচ্ছিষ্ট।
মিঃ সানা আপনি সংসারে
অনাহারীদের মতো ক্লিষ্ট!
আকাশের ফারিশতাদ্বয় আপনাকে পাপের কারণে করতে থাকে লানত,
মৃত্যু আপনার কাছে রেখেছে "বেঁচে থাকা'' আমানত।
আপনি কই যাবেন?
কই গিয়া মুক্তি পাবেন?
এখন কবর ও আপনাকে
আর গ্রহণ করতে চায় না!
মিঃ সানাউল্লাহ্ সানা
আল্লা ও আপনাকে
চোখে দ্যাখে না!
আপনি কি করবেন এখন?

৩.
মরতেও আপনার নিষেধ,
আপনি দৌঁড়ে পালান জঙ্গলে যখন
সামনে পরে একটি বাঘ
বাঘ আপনাকে খেয়ে ফেল্লে
খিয়ানত হবে মৃত্যু রেখেছিলো যে আমানত।
বাঘের সাথে জম লাড়াইয়ে
আপনি জিতলেন,
আহত হয়ে ফিরে আসলেন
কিন্তু আহত আপনার সেবা করার মতো কাউকে পেলেন না!
মিঃ সানা
আপনি এখন বিপাকে
আপনাকে মৃত্যুও চোখে দেখে না।

৪.
ধরুন একসময়ে মৃত্যু তার যাপিত ঋন ছাড়িয়ে নিলো
এবং একসময় সত্যই আপনার মৃত্যু হলো!
মিঃ সানাউল্লাহ্ সানা
এবার আসবে মৃত্যুর পরের ভাবনা!

৫.
আপনি কি ভাবছেন আপনি বেহেশতে যাবেন?
আপনি কি বিগত মিথ্যাচারের কথা ভাবেন?
 যা আপনি করেছেন প্রেমিকাকে খুশি রাখতে বাবা-মার সাথে,
বন্ধুদের সাথে!
মিঃ সানা
আপনি লিখে নেন
আপনার আর
বেহেশতে যাওয়া হবে না!
আপনি মৃত্যুর পর
আল্লার কাছে আরেকবার
চান্স চাইতে পারেন দুনিয়ায়
ফিরে আসার।
মিঃ সানা
আপনি কি জানেন?
একবার মরে গেলে
আর ফিরে আসে না!

৬.
আপনি আর মরলেন না।
একটা সিগারেট খেতে আপনি বাইরে দোকানে গেলেন
একটা জিপ এসে দোকানের সামনে থামলো
পুলিশ এসে আপনাকর সার্চ করে পেলো গাঁজার টোপলা!
মিঃ সানা
লক্ষ্য করুন, আপনি কিন্তু গাঁজা খান না!
কোথা থেকে এলো টোপলা?
আপনি অতশত ভাবার আগেই; আপনাকে জিপে তুলে নিয়ে গেলো।
থানায় আপনি মাথা নিচু করে আছেন
পুলিশ আপনাকে রিমান্ড এর ভয় দেখাচ্ছেন
আপনি ভয়ে জবুথবু হয়ে আছেন
সানা আপনি সামনে তাকাবেন না
সামনে দাঁড়িয়ে আছেন রক্তচক্ষু আপনার বাবা!
আপনি তবুও তাকালেন
বাবা আপনাকে বাসায় নিয়ে আসলেন
আপনার শাস্তি হলো ৩ বেলা ভাত বন্ধ
আপনি কাঁদতে কাঁদতে যদিও হন অন্ধ
ভাত আর আপনাকে ৩ বেলা দিবে না!
মিঃ সানা
আপনার খেতে মানা।
আপনি কি করবেন?
আস্তে দৌড় দিয়ে পালাবেন?
বা অন্যকোথাও খাবেন?
যদি পালান বা অন্য কোথাও খান খানা
মিঃ সানা
 তবে আর বাপের হোটেলে ভাত খাইতে পারবেন না
আপনাকে ঘাড় ধরে বের করে দিবে।
..................................
..................................

আমার অত টাকা নাই
.
আমারো তো মনেচায় তোমারে নিয়া একটু বড়সড় রেস্টুরেন্ট এ খাইতে যাই,
কিন্তু দ্যাখো আমার অত টাকা নাই!
চলো বাদাম চাবাই
অথবা ফুচকা চটপটি খাই
এরপর সেকেন্ড কোন
অপশন আমার কাছে নাই।
কারণ আমার অত টাকা নাই।
আমার ও তো মনেচায় তোমারে নিয়া একটু ঘুরি কিম্বা শপিংয়ে যাই
কিন্তু দ্যাখো আমার অত টাকা নাই!
এমনই কপাল বাল
আমার এমন গরীবি হাল!
রিক্সায় চড়তে চড়তে
একটা গাড়ির কথা প্রায়ই ভাবি
কিন্তু দ্যাখো আমি অভাবী;
গাড়ি কেনার মতো অত টাকা আমার নাই,
রিক্সা থামায়ে আছে চলো যাই।
লাচ্ছি খাইতে খাইতে ভাবি
এখন একটা বীয়ার ক্যান হাতে থাকা উচিৎ ছিলো অন্তত...
পকেটে তো গড়েরমাঠ স্বপ্ন দেখি অথচ!
মাঝেমাঝে তোমারে মিসডকল দিতে গিয়া লজ্জা পাই,
আবার ভাবি, এত লজ্জা কিসের?
 আমার তো অত টাকা নাই!
ভাবি, কেন আমার অত টাকা নাই?
আমি স্বপ্ন দ্যাখি
স্বপ্ন দেইখা মজা পাই
কারণ আমার অত টাকা নাই!
যেহেতু আমার অত টাকা নাই
সেহেতু আমি দোষ দিবো সব বাপ শালারে
শালা তোর যেহেতু টাকা ছিলো না বেহুদা কেন জন্মাইলি আমারে?
যেহেতু পাপ বাপরেও না ছাড়ে
সমূহঃ খিস্তি জপি বাপের ও তরে.......
তুমি তো স্বপ্ন দ্যাখো, আমাদের বাড়ি হবে, ছাদ হবে
অথবা এও দ্যাখো চাঁদে বসে আমাদের বাড়ির ছাদ দেখবে।
শোনো একটা পাকা পাঁচতলা বাড়ির কথা আমি প্রায়ই ভাবি
বাড়িতে একটা সুইমিং পুল চাই যেখানে নাইতে নামবো তুমি ও আমি।
পাইতে এখনো পোড়াতে হবে কাঠখড় আমরা যা চাই,
বিকজ আমার অত টাকা নাই।
তোমার আঙুলগুলো ধরতে ধরতে ভাবি
কমপক্ষে এক ক্যারেট হীরার একটা আংটি আদপে থাকা তো উচিৎ ছিলো;
অথচ সিটিগোল্ডে তুমি পুরোটা মুড়ে আছো আমার লাগেনা ভালো!
কি আর করা? সব নীরবে দেখে যাই
কারণ ডায়ামন্ড কেনার মতো অত টাকা আমার নাই!
চলো ঐদিকে রাস্তা ধইরা পাশের দোকানে যাই
সিটিগোল্ড আংটিতে করাবো হাত বোঝাই।
দামী সব হোন্ডা দেখে বারবার আফসোসে মরে যাই
অন্তত আমার একটা ডুয়োকাটি এখন পাছার নিচে থাকা লাগে সবকিছুর আগে!
কিন্তু কী?
আমার কোন হোন্ডা নাই
আমি মনেমনে ভো ভো হোন্ডা চালাই
কারণ
তুমি জানো
আমার ঐটা কেনার মতো অত টাকা নাই।
যেহেতু আমি ফকিরনির ঘরের ফকিরনি
সেহেতু দ্বিতীয়ত আমি অশ্লীল গালি দেই আমার নসীবরে.....
শালা সবার টাকা আছে, সবাই করে দুহাতে কামাই
অথচ আমার কেন অত টাকা নাই?
এরপর আমি সমগ্র খিস্তি জপি তোমারে
যেহেতু তুমি আসার পর আমার
শুধু চাহিদাই বাড়ে
টাকা পাইতে ইচ্ছা করে
আর নিজেরে বেশ গরীবের বাচ্চা মনে হইতে থাকে
যেহেতু তুমি শুধু সীমাবদ্ধ "আমার এত এত চাই''
আর এইটা খবো ঐটা খাই
ঐটা কিন্যা দাও ঐটা চাই কিম্বা
কিনে দিতে হবে যত পরে খরচ
সেহেতু গালিশোনা তোমার ফর্জ!
যেহেতু তুমি জানো আমি গরীব
তবুও চাহিদার শেষ নাই
অতএব তোমার নিস্তার নাই
আর আমার যেহেতু টাকা নাই
সেহেতু মুখের ট্যাকশোও হারায়ে ফালাই
দৌঁড়াও তুমি দাও দৌঁড় তুমি
তোমারে দিয়া কার বাল্ফাবো আমি?
তোমারে আর দরকার নাই
বিকজ তোমারে পুষবার মত অত
টাকা আমার নাই।

..................................
..................................

ঈদমোবারক
.
আমি তখন বড়লোকের ছাদে বইসা দরিদ্র পল্লির দিকের চাঁদ খাচ্ছি। ঈদের বড় চাঁদটা চাবাইতে চাবাইতে গিইলা ফেলাইলাম যেন ওঁরা চাঁদ না দ্যাখে। যেহেতু ঈদ সবার না। ঈদের চাঁদ সবাইর দেখার অধিকার থাকবে কেন?

..................................
..................................
ঔঁ
.
ঔঁ
ফেঁটে চৌচির হোক আসমান
কসম হে নাজিলকৃত কোরান
ফুল মাটির কসম
কসম খাবো গন্ধম
হে আজমের আজম
চাঁদ তারার কসম
কসম অঁচল এর
কসম মানব সকলের
এবং সকল মরদেহের
কসম হাবিয়া দোজখের
কসম জান্নাতের
আর ফুল, পাখি পরিষ্কার জলবাহী হ্রদ এর।
যাঁরা আমাকে ভাবলো ত্যানা,
 যারা আমার ভালোবাসাকে বলল আদিখ্যেতা
আমাকে ভালোবাসলো না
 এবং যাঁরা নরপিশাচের মতো আমাকে দূরে ছুড়ে দিয়ে বেঁচে যেতে চাইলো;
এবং যাঁরা জড়ো করলো আমার সমূহ বেদনা-
 তাদের পরিত্যাগ করবো।
এবং ব্যতিক্রম হব
           ঔঁ!

..................................

প্রলেতারিয়াত
.
১.
বাবাকে একটা চশমা কিনে দেবো বলে বের হয়ে শুনি দোকান থেকে সমগ্র কমদামী চশমা চুরি হয়ে গ্যাছে! কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গ্যালো এ জন্য কোন থানা পুলিশ হবে না। সাংবাদিক সম্মেলন হবে না কোন মিটিং হবে না, মিছিল হবে না। ফেসবুকে কোন স্ট্যাটাস, ইভেন্ট কিংবা গ্রুপ খোলা হবে না প্রতিবাদস্বরূপ। সরকার থেকে কোন পদক্ষেপ ও নেয়া হবেনা চোর ধরতে।
২.
 পৃথিবীতে দুই রকমের চুরি আছে! যথাযথ চুরি আর
অবৈধ চুরি।
যথাযথ চুরিটি প্রলেতারিয়েত করে এলিটের ঘরে তাঁর জমানো সম্পদের হিস্যা করতে। বাকি চুরিটি অর্থ দিয়ে এলিট শ্রেণীরা করে। এলিটরা কমদামী চশমাগুলোকে সব বাজার থেকে চুরি করে নিয়েছে অধিক মুনফার আশায়।
 আমি চশমা কিনতে গিয়ে বাবার কথা মনেকরি। পুরানো চশমাটা হারিয়ে যাওয়ায় বাবা পত্রিকা পড়তে পারছেন না!
৩.
আমার বাবার
প্রতিদিনের রাজনৈতিক পাতাটা দেখা চাই'ই চাই! এরপর উনি বুদ্ধিজীবি হয়ে যান আর আমাকে শেখান কিভাবে টিকে থাকতে হয় বর্তমানের রাজনৈতিক মাঠে। কিভাবে ফাউল করে গোল করতে হয়। কয়েকদিন হলো বাবা আমাকে কিছুই ছবক দিতে পারছেন না! যেহেতু বাবার চশমা হারিয়ে গ্যাছে।
৪.
আমার রাজনীতিজ্ঞ গৃহপালিত বুদ্ধিজীবি মুরব্বি বাবাকে দেখে মায়া হচ্ছিলো বিধায় একটা চশমা কিনতে আমি বের হয়েছিলাম। দোকানে এসে দেখি দোকান থেকে আমার বাবার চশমাটি চুরি হয়ে গেছে! এলিটরা আমার বাবার চশমাটি চুরি করে নিয়ে গেছে।
এখন আমার ইচ্ছে হচ্ছে চিবিয়ে খেয়ে ফেলি সব এলিটের টাকা, গাড়িবাড়ি এবং প্রোপার্টিগুলো সব!

..................................



অপমান
.
প্রতিদিন কয়েকটা জুতো গিলে ফেলার পর হজম হওয়ার আগেই গিলে ফেলার জন্য আরো একটি জুতো তেড়ে আসে।

..................................

হঠাৎ!
.
হঠাৎ! তোমার সামনে কালো কাপড় মুখে বাঁধা ওঁরা ছ'জন! আর বাবাকে ওরা গুলি করার হুমকি দিচ্ছে; না ওঁরা ছ'জন না, তুমি বুঝতেই পারছোনা ওঁরা ঠিক ক'জন! বাবার হাত বাঁধছে! পা বাঁধছে, আর মুখে কষে দিচ্ছে টেপ! বো বো বো করে বাবা চেচাচ্ছে, টেপ মেরে দেয়ায় অস্পষ্ট শব্দ বেড়োচ্ছে
 হঠাৎ!
আর তাঁর চেচানি শুনে কালো কাপড় মুখে বাঁধা কেউ বন্দুকের বাট দিয়ে কষে দিলো আঘাত! বাবার হাত বাঁধা। তাঁর পা বাঁধা। আর মুখে টেপ। এখন বাবা নিচে পরে গোঙাচ্ছে! বাবার জ্ঞান নেই,
 তাঁর চোখ বেয়ে পানি পরছে আর কপাল ফেটে রক্ত ঝরছে! বাবা এখন বকছেন প্রলাপ। আর রক্তে মেঝে সয়লাব।
হঠাৎ!
মেঝেতে তাকিয়ে দেখলে, মেঝেতে পরে আছে তোমার ভাই আর মায়ের লাশ। ওঁরা চিৎকার করে মানুষ ডাকতে গিয়েছিলো ভুলে। ভুলের মাশুল হিসেবে, মায়ের কপাল আর ভাইয়ের বুক বরাবর ছিদ্র। এখন তোমার চোখে জল! অথচ চিৎকার দিয়ে কাঁদতে পারছোনা! ভাইয়ের লাশটা এখনো তড়পড় করে লাফাচ্ছে, জিহ্বাটা বের হয়ে আছে, তাজা রক্তে ঘর সয়লাব! কালকে বিভিন্ন পত্রিকায় তোমাদের সাথে ঘটা এই ঘটনা হেডলাইন হবে, ভেবে তুমি রোঁমাচিত নয়। কেননা সকল খবরই রোঁমাচিত করেনা। এরকম হেডলাইন কেউ হতে চায় না। তোমার এখন নিজেকে বাঁচাবার ভাবনা।
হঠাৎ তুমি ভাবলে, এদের সাথে তোমাদের শত্রুতা কী?
 তুমি এখন অবধি জানো না। তুমি শুধু জানো তোমার বাবার একটি প্রোপার্টি আছে। আর ওটা নিয়ে মেয়র ওসমান সাহেবের সাথে ভোরে দ্বন্দ্ব হয়েছে। ওসমান সাহেব তোমাকে ডেকেছেন এবং সমাধাও করেছেন। ওসমান সাহেব ভালো লোক। জয়ের মালা তাঁরই হোক
তুমি নিজেই তাঁর লোক। তাঁর তুমি বিশাল ফ্যান। তাঁর বয়ান মোটিভিশনাল।
এখন
 তুমি ভাবছো, ওসমান সাহেবের মতো এত ভালোমানুষ শুধু বেহেশতে পাওয়া যেতে পারে; কিম্বা গল্পের পাতায় মহামুনি হিসাবে। এমন কাজ তাঁর দ্বারা সম্ভব নয়। যাইহোক গল্পের সামনে আগাও।
হঠাৎ
তুমি দেখলে কেউ আশেপাশে নেই;
এবং তোমার হাতেও মাত্র একটি সুযোগ
কী করা যায় এখন ভাবছো। সময় নেই।
হয় কিছু করতে হবে নতুবা মৃত্যুযোগ!
তোমার সামনে একটা পিস্তল, তুমি চাইলেই বেঁচে যেতে পারো এটা ব্যবহার করে। কিন্তু তুমি যদি বন্দুক উঁচিয়ে গুলি করতে যাও, তাহলে বাবাকে ওঁরা এখনই গুলি করে দেবে! কি করবে তুমি ভাবতে ভাবতে দিলে দৌঁড়!
হ্যাঁ! আলবিদা! বেঁচে গেলে। হ্যাঁ প্রাণে বেঁচে গ্যাছো!
হঠাৎ
মনেপরে গ্যালো 'বাবা'! ঠাশ ঠাশ ঠাশ! বুইয়াও..... বুইয়াও..... বুইয়াও.......
বাবা নেই! বাবাকে ওঁরা মেরে ফেলেছে!
এবার? এবার তোমাকে ওঁরা খুঁজবে!
অতএব দৌঁড়াও......... হ্যাঁ! দৌঁড়াও.........
সামনে একটা ব্রীজ
না
কালো পোশাক পড়া ছ'জন
না আরো বেশি
ওসমান সাহেব কালো পোশাকে
ওরা ছ'জন তাঁর পিছনে
বাবা মেঝেতে
মা মরে পরে আছে
ভাই চিৎকার করছে
বাবার মুখে টেপ
ভাইয়ের লাশ মেঝেতে
তোমার হাতে বন্দুক
তোমার ঘরেই তুমি আছো।
না ব্রীজে তুমি দৌঁড়াচ্ছ!
হঠাৎ
তোমার মনেহলো ওসমান সাহেব তোমার সামনে
না ওনার ঘরে তুমি
সম্ভবত দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে,
ওনার গাড়িতে তুমি ধাক্কা খেয়েছো
উনি তোমাকে ওনার বাসায় নিয়ে এসেছে।
উনি জিজ্ঞেস করছে তোমাকে বারবার,
'ঘটনা কী?'
তুমি ভাবছো এখনো সব কল্পনা
রাতে ঘুমিয়ে ভয়ঙ্কার স্বপ্ন দেখছো।
ওসমান সাহেব চুপ। তুমিও চুপ। তুমি আবার বেহুশ হও। এটা স্বপ্ন। কিছুক্ষণ পর আবার হুশ ফিরলো। ওসমান সাহেব তোমার সামনে হাসছে। এটা স্বপ্ন। না এটা স্বপ্ন নয়। ওসমান সাহেব হাসছেন। তুমি তাঁর ঘরে নও, অন্ধকার কোটরে। হা হা হা! ওসমান সাহেব এবার আরো জোড়ে হাসবেন!
আমি আর লিখতে পারছি না। কারণ একবার মরে গেলে মানুষের আর ইতিহাস হয় না!
আমি শুধু হাইলাইট করতে পারি, ওসমান সাহেবের সাফল্যের হাসি।
ওসমান সাহেবের জোড়েজোড়ে হাসি।

..................................
উড়ে যদি যেতে চাও
.
উড়ে যদি যেতে চাও উড়ে যাও তবে
ইচ্ছে ওড়ার যদি হয় তবে আপনা পাখা গজাবে।

..................................
..................................

আমার হাতে একটা তারছেড়া গিটার
.
এখন বিজন রাত
আর ছাদে নেই চাঁদ।
আমি ছাদে উঠে
চাঁদকে খেয়ে ফেলেছি
বিধায় নিগূঢ় অন্ধকার
আমার সাথে
আমি
আর হাতে
একটা তারছেড়া গিটার।
পৃথিবীর বিপরীত পৃষ্ঠে এখন
চাঁদের হাহাকার
উল্টো দিকে ঘুরছে পৃথিবী
আমি তাতে ঘি ঢালি
আর গান করি
আমার সাথে
আমি
আর
আমার হাতে একটি তারছেড়া গিটার।
এই যে আমি
আমাকে চিনবেন না আপনি
আমি চাঁদ তারা খেয়ে খেয়ে
মাছ পাতা ফুল দিয়ে
কবিতা লেখার পর অ্যাখন
ধইঞ্চা পাতার উপর কোবিতা লিখি।
তারা ধরে অন্য গ্যালাক্সিতে রেখে আসতে গিয়ে
দেখি;
তারারা সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে একাকার
তখন আমি একা
আমার সাথে
আমি
আর
আমার হাতে একটি তারছেড়া গিটার।

..................................
..................................

রিভেঞ্জ
.
।।এক।।
দুঃখ পেলে সবাই
কাঁদতে জানে না
কারো কারো
হৃদয় ভেঙে যায়
কাচের টুকরার মত
অথচ চোখে
জল গড়ায় না!
যারা কাঁদতে জানে না
তাদের দুঃখটা
 কত গভীর
একমাত্র পরমেরই জানা!
আমি এতটুকু দেহে
এত কম বয়োসে
এত অপমান
এত বিরহ
এত অসম্মান,
ক্যামন করে সহ্য করেছি
ভেবে নিজেকে নিজেই
সেলুট করে
বলি "বস মারহাবা'' !
তবে হ্যাঁ, তোমার
সকল দুর্ব্যবহারে
হৃদয় ভাঙে আর
 চোখ ভারী করে!
অপমান, অবজ্ঞা, অানাদর
 আর বিরক্তিবোধ
  থলিতে জমা হতে থাকে।
চোখ বারেবার ইশারায়
বলে দ্যায়, আর কত
অবহেলা, তকলিফ
বাকি রয়েছে?

।।দুই।।
ইনশাল্লা
একদিন ফিরিয়ে দেবো
 সব জমিত অপমান!
তুমি শুধু তাকিয়েই থাকবে
 যেরকম আমি
তোমার দিকে
তাকিয়ে থাকতাম।
মুখের ওপর সব
 "না" বলে দেওয়া,
হাত ধরতে না দেয়া
পাশে বসতে না দেয়া
আমাকে বারবার খোটা দেয়া
আমাকে বোকা ভাবা
প্রতিটা গালি
একেক করে
আশ্লেষে আমাকে
ধ্বংশ করে দেয়া!
টিস্যুতে হাত, নাক মুছে
 মুখে ছুড়ে দিয়ে
সবকিছুর শোধ নেবো
ইনশাল্লা একদিন!
তোমার মুখে কোন
কথা সড়বে না
কারণ নিজেই খাল কেটে
তুমি কুমির এনেছিলে!
ভাবতেও তোমার কষ্ট হবে যে,
"আমি এতটা খারাপ হতে পারি!''

।।তিন।।
ইনশাল্লা
তুমি মরে ভূত হলে,
তোমার মৃতদেহতে
লাথিও দেবো না
আমার দামী জুতো
ফকিরনি একদম
সহ্য করে না!
 জানাজা তো দূরে থাক
 আমি তোমার লাশটা কে
দূর হতে
 দেখতেও যাবো না!
খাটিয়ায় তুমি
অপমানবোধ
 হতে থাকবে।
এমন ভান করে থাকবো
যেন তোমাকে আর
চিনি না আমি।
কোন কালেই
আমরা পরিচিত
ছিলাম না যেন।
আমার ঘৃণা হবে ছিঃ!
পূর্বের সব বিরহ
মনে পরে যাবে;
কবরে একদলা
 থুও ফেলবো না।
জানো তো
আমি যেখানে-সেখানে
থুঃ ফেলি না।
সুযোগ পেলে
তোমার নাপাক খাটিয়ায়
আগুন জ্বালিয়ে দেবো!

।।চার।।
ইনশাল্লা
তুমি মরে যাওয়ার
 একদশক পর একদিন
কবরে বড় ঘাস গজাবে,
তোমার কবরের
 যত্ন নিচ্ছে না যেন কেউ,
নিশ্চিহ্ন প্রায়
কবরের উঁচু প্রস্তর।
মরিচাধরা সাইনবোর্ডে শুধু
তোমার অস্পষ্ট
 নাম সাদা
রঙে লেখা।
আমাকে তুমি
আসতে দেখবে
তোমাকে আমি
দেখবো না।
হয়তো ভাববে
তোমার কবর
জিয়ারতে এসেছি।
তুমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে
হয়তোবা ভাববে আমার
দোআয় তোমার শাস্তি
কিঞ্চিত লঘু হতে পারে।
অামি হাসবো রহস্যের হাসি
তোমার কবরের মাটি
ভেঙে যেতে দেখে।
আমি কবরের পাশে দাঁড়াবো
জিয়ারতের ভান করে
জিপারটা আস্তে টেনে খুলে
কবরের পাশে ঘুরে ঘুরে
কবরের গায়ে মুতে
 লেপ্টে আসবো
 গৎবাঁধা শ্লেষ।

।।পাঁচ।।
তুমি দেখবে
অথচ কিচ্ছুটি
 বলার শক্তি
 নেই তোমার!
দুনিয়াতে তোমার কথা
কেউ শোনে না
এখন আর।
এমনকি তোমার
কবরের ফেরেশতারা ও না!
মনে রেখো, আমাকে
 ইগনোর করেছো বলে
 কবরেও তোমার শান্তিতে
 থাকা হবে না!
হা হা হা!
SHARE

Mad Max

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image

0 comments:

Post a Comment