গত ১০ ই নভেম্বর ২০১৭ শুক্রবার জুমুআর নামাজের পরে ধর্ম নিয়ে কটুক্তির দায়ে রংপুর গঙ্গচড়া থানার ঠাকুর বাড়িতে হামলা করে এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় এর ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয় একদল মুসল্লি। বিডিনিউজ, বিবিসি, যুগান্তর ও কালেরকন্ঠের বরাতে এ পর্যন্ত যতদূর জেনেছি ঘটনাটি ঘটেছে কোন একক ব্যক্তির কারণে। ঘটনার সাথে পুরো ঠাকুরবাড়ি জড়িত তো নয়ই উপরন্তু পুলিশের গুলিতে হাবিবুর রহমান নামে একজন মুসল্লি নিহত ও ১১ জন মুসল্লি হয়েছেন।
"শুক্রবার জুমার নামাজের পর হঠাৎ স্থানীয় কিছু মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে এসে রাস্তা অবরোধ করেছে। একটি মিছিলের বড় অংশ গিয়ে হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ করে। হিন্দু পাড়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ তখন বাধা দেয়। বাধা না মেনে যখন তারা দুএকটি বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে, তখন পুলিশ শটগানের গুলি চালায়।"ধর্মাবমননাকারী মানে মূল দায়ী ব্যক্তিও এই লেখাটি লেখা পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি যাতে ঘটনাটি আরো ঘোলাটে হয় এবং ওই গ্রামে ধর্মাবমাননাকারী বর্তমানে থাকছেন ও না তিনি ঠাকুর পারার বাসিন্দা মাত্র। তিনি থাকেন অন্যত্র:[ বিবিসি :১১ ই নভেম্বর ]
"পুলিশ জানায়, নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লার একটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করেন টিটু রায়। থাকেন সেখানেই। তিনি পাগলাপীর ঠাকুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। '' [কালেরকন্ঠঃhttp://www.kalerkantho.com/online/national/2017/11/10/563904 ]প্রাপ্ত খবর সমূহ থেকে ঘটনাটি কোনন কারণে ঘটে তা জানা যাক। মূল ঘটনাটি জানার জন্য আমি ৪টি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনের সহায়তা নিয়েছি। খবর ২ টির প্রামাণ্য লিংক সহ নিচে উদ্বৃত করা হোলো। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে,
"গঙ্গাচড়া থানার ওসি জিন্নাত আলী বলেন, ঠাকুরপাড়ার এক যুবক গত সপ্তাহে তার ফেইসবুক পেইজ ধর্ম অবমাননামূলক ছবি পোস্ট করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। ''[বিডিনিউজঃhttp://m.bdnews24.com/samagrabangladesh/detail/home/1419556]
বিবিসি লিখেছে,"পুলিশ বলছে, ঐ হিন্দু গ্রামের একজন ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননামূলক পোস্ট দিয়েছেন বলে অভিযোগ করে সেখানে হামলা করা হয়। পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিবিসি বাংলাকে জানান, যার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেই টিটু রায়ের বাড়ি গঙ্গাচড়ার ঠাকুরবাড়ি গ্রামে হলেও তিনি সেখানে থাকেনা। নারায়ণগঞ্জে বসবাস করেন।টিটু রায়ের কথিত এক ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সেখানে কদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। কয়েকদিন আগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এ নিয়ে একটি মামলাও করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ আসামীকে ধরা হবে বলে কথা দেন।ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, "শুক্রবার জুমার নামাজের পর হঠাৎ স্থানীয় কিছু মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে এসে রাস্তা অবরোধ করেছে। একটি মিছিলের বড় অংশ গিয়ে হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ করে। হিন্দু পাড়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ তখন বাধা দেয়। বাধা না মেনে যখন তারা দুএকটি বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে, তখন পুলিশ শটগানের গুলি চালায়।খন্দকার গোলাম ফারুক জানান, পুলিশের গুলিতে একজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হন বলে তারা খবর পাচ্ছেন। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।তিনি জানান হামলাকারীদের সংখ্যা ছিল কয়েকশো।''[বিবিসিঃhttp://www.bbc.com/bengali/news-41945538]আমরা প্রাপ্ত খবর সমূহতে স্পষ্টতই দেখতে পাচ্ছি, ফেসবুকে ব্লাসফেমী করেছে টিটু রায় নামক কোন একক ব্যক্তি। এর সাথে না জড়িত গঙ্গাচড়ার আক্রান্ত ঐ হিন্দু সম্প্রদায়, না জড়িত টিটু নামক ঐ ব্যক্তির পরিবার। তাহলে দেখা যায় যারা জড়িত নয় তাঁদের আক্রমণ করা শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় আইন লঙ্ঘন নয় মানবাধিকার লঙ্ঘন এর চরম পর্যায়! হিন্দু বাড়িতে হামলা করা হয় হযরত মুহম্মদ (সাঃ) কে অবমাননা করার দায়। উল্লেখযোগ্য হলো, [ক] যারা আক্রান্ত হয়েছে তারা হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর কোন অবমাননা করেননি। এমনকি আক্রমণের আগে টিটু রায়ের ঐ অবমাননাকর স্ট্যাটাসের সমার্থক ও তাঁরা ছিলেন না। [খ] পুলিশ শুধুমাত্র টিটুকে ধরার আশা দিয়েছিলো, কিন্তু ঘটনা ঘটার আগে তাঁরা ঘটনাটি আমলে নেয়নি বা নিতে নিষেধ করা হয়েছে। এবং ঘটনার আগেই তাঁরা আচ করতে পেরেছিলেন কেননা সাম্প্রদায়িকতার আগুনে ৫ দিন ধরে দাহ্য কাঠখড় দেয়া হচ্ছিলো। ৫ দিন ঘটনাটি গোল পাকানো সত্ত্বেও মুসল্লিদের এরা কন্ট্রোলে রাখতে ব্যর্থ হন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা দানেও তাঁরা সম্পূর্ণ রূপে নিজেদের ব্যর্থতার পরিচয় দেন। উল্লেখ্য, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ২০১৭ নভেম্বর ১০ শুক্রবার দুপুরেও চাঁদপুর পুলিশ লাইন্সে নবনির্মিত গেইট ও মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, "দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিয়ে বিদেশিরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।'' [কালেরকন্ঠ] বিদেশিদের আর কি দোষ? তাঁরা তো আর দেশের অভ্যান্তরিন খোঁজখবর রাখেন না, বড়জোড় জঙ্গী দমনের খবর শোনেন বা দেখেন। আর বিদেশিদের খুশি রাখার মূল ফর্মূলাই হলো "ইসলামি জঙ্গী'' দমন। পুলিশ দেশের আইন শৃঙ্খলা, পরিস্থিতি দমনে এতটাই পারফেক্ট যে পরিস্থিতি যাইহোক ওনারা রাইফেল তাক করে গুলি ছুড়তে কিঞ্চিৎ অপেক্ষা করেন না! রংপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করেই ওনারা সরাসরি বুলেট ব্যবহার করেছেন এবং ওনাদের বুলেটের আঘাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে ও বেশ কিছু লোক আহত ও হয়েছেন! আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই যে, এই মৃত্যু জবাবদিহিতাও করতে হবে না তাদের! শ্রেফ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা বলে পাশ কাটিয়ে যাবেন বা গেছেন। এবং তাদের টিটুকে ধরতে ব্যর্থ হওয়ার ফলাফল ১০ ই নভেম্বরের ঘটনা। [গ] যে মুসল্লিরা হামলা করেছে তাঁরা ধর্ম (কোরান, হাদীস, ইজমা, কিয়াস) বা ইসালামী ব্লাসফেমি সম্বন্ধে সামান্যতম ধারণাও রাখে না। বাঙালী মোসলমানের সমস্যা হলো তাঁরা প্রচণ্ড সাম্প্রদায়িক মনোভাবের সাম্প্রদায়িকতা এদের চরিত্রগত। এবং ধর্মের নামে তাঁরা অধিকাংশ সময়ই সাম্প্রদায়িকতা চর্চা করে এবং তাদের চিন্তা শক্তি একেবারে নিম্ন লেভেল এর দার্শনিক অবস্থান একই। যার দরুন আগপাছ না ভেবে বা ধর্মে কী বল্ল না বল্ল তার দিকে দৃষ্টিপাত না করেই তাদের সাম্প্রদায়িক, কমজ্ঞান চরিত্রের উন্মেষ ঘটায়। ঘটনাপ্রবাহের চিন্তা নেই। পাশাপাশি ইসলাম বিষয়ে অতটা না জানায় তাঁরা সাম্প্রদায়িকতাকে পাশ কাটিয়ে এখনো ভালো মুসলমান হতে পারেনি। এরা না করেছে ইসলামি শিক্ষা গ্রহণ, না পেরেছে চরিত্রগত সাম্প্রদায়িকতা ঝাড়তে। তাঁরা মুখে মুখে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্বের গান গায়, কিন্তু তাদের চরিত্র সম্পূর্ণ রূপে ইসলাম ধর্ম কে কলুষিত করে। ইসলাম কখনোই বলে না "অন্য সম্প্রদায়ের কোন একক ব্যক্তি যদি অাল্লাহ্, পয়গম্বরদের অবমাননা করে তবে ঐ সম্প্রদায়ের সকল ব্যক্তি এর দায় বহন করবে।'' খৃষ্ট ধর্মের মতো ইসলামে "পিতা পুত্রের পাপের দায়ভার নিবে '' এমন কোন সিস্টেম নাই। উপরন্তু ইসলাম বলে একমাত্র অপরাধীর শাস্তি হোক। এবং সে শাস্তির ভার বহন করবে রাষ্ট্র, কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নও। ব্লাসফেমির ক্ষেত্রে ইসলাম আপেডেটেড না হলেও "ব্যক্তির দায় গোষ্ঠীর ওপর'' এমন ব্যাকডেটেড ও নয়। কোরানে ব্লাসফেমি নিয়ে দুটো আয়াত উল্লেখযোগ্যঃ "যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত-পা-সমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। কিন্তু যারা তোমাদের গ্রেফতারের পূর্বে তওবা করে; জেনে রাখ, আল্লাহ ক্ষমাকারী, দয়ালু। ” [সূরা মায়েদা:৩৩] (আয়াতটির যেখানে "যারা'' ব্যবহার করেছে ওখানে বিভ্রান্তিতে পরলে জেনে রাখা ভালো, ওখানে একক ব্যক্তি হলে একক ব্যক্তি। ২জন হলে ২ জন। ২ জনার বেশি হলে দুজনার বেশি।) তবে আল্লাহ্ শুধুমাত্র এদের (ব্লাসফেমিকারীদের) শাস্তির কথায়ই উল্লেখ করেনি। আল্লাহ্ এদের ভুল স্বীকার করার ও সুযোগ দিয়েছেন উপরের উদ্বৃত আয়াতে এটা খোলাখুলি বলা হয়েছে "কিন্তু যারা তোমাদের গ্রেফতারের পূর্বে তওবা করে; জেনে রাখ, আল্লাহ ক্ষমাকারী, দয়ালু। '' যদি এরা ভুল স্বীকার করে তাহলে এদের শাস্তি রদ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আরেকটি আয়াতে এটা স্পষ্টঃ “ নিঃসন্দেহে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয় - আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব জীবনে এবং পরকালে অভিশাপ দেন, এবং তাদের জন্য অবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। যদি এই প্রতারকেরা , আর ঐ সব লোকেরা যাদের অন্তরে কলুষতা আছে, এবং ঐ সকল লোকেরা যারা শহরে মিথ্যা সংবাদ রটিয়ে থাকে তারা, (তাদের এসব কাজ থেকে) বিরত না হয়, তাহলে আমি অবশ্যই আপনাকে তাদের উপর শক্তিশালী করে দেবো: এরপর তারা শহরে আপনার কাছে অতি অল্পকালই অবস্থান করতে পারবে: তারা তাদের নিজেদেরকে অভিশপ্ত অবস্থায় পাবে: যেখানে তাদের পাওয়া যাবে, তাদেরকে আটক করা হবে এবং মারধর করা হবে (নির্দয়ভাবে)। ”[ সূরা আল-আহযাব ৫৭-৬১] লক্ষ্য করুন, "এবং ঐ সকল লোকেরা যারা শহরে মিথ্যা সংবাদ রটিয়ে থাকে তারা, (তাদের এসব কাজ থেকে) বিরত না হয়, তাহলে আমি অবশ্যই আপনাকে তাদের উপর শক্তিশালী করে দেবো'' এখানে ঐ সকল লোকদের বিরত থাকার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তাহলে টিটু রায় নামক লোকটিকেও প্রথমবার আক্রমণ করলে সেটা বৈধ হতো কিনা প্রশ্ন থেকে যায়। উপরন্তু তাকে এ কাজ থেকে বিরত থাকার সুযোগ দেয়া যাবে। সে যাইহোক আলোচ্য বিষয়ে আসি। টিটুর ফেসবুক আইডি থেকে যে পোস্টটি দেয়া হয়েছে পোস্টটির দায়ভার কোনভাবেই ঠাকুরপারা নিবে না। এর একমাত্র দায়ভার টিটুর। জবাবদিহিতাও টিটু করবে। কিন্তু টিটুকে ধরতে পুলিশ দেরী করায় ঠাকুর পারা পোড়ানোর ঘটনাটি ঘটেছে। টিটুকে যদি পুলিশ তখনই গ্রেপ্তার করে চলমান আইনের আওতায় আনতো তবে মুসল্লিদের সাম্প্রদায়িক হামলার ইন্ধন যোগানোর পেছনের প্লেয়াররা এই পিছু হটতো। [ঘ] স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য বিষয়টি ঘটার আগে জানতেন না। বিষয়টি পাঁচদিন গোল পাকালেও। [ঙ] টিটু অশিক্ষিত। টিটু পড়ালেখা জানে না। ভাবতে পারেন, আক্রান্ত মানুষগুলো ঠিক কতটা অসহায় হয়? বাংলাদেশের বা বিশ্বের সংখ্যালঘুরা এখন রাজনৈতিক কারণে অসহায়। আর রংপুরের ঘটনাটা তার আরো একটা বড় উদাহরণ। নিছক ধর্মাবমাননার জন্য একটা সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়না এর পেছনে অবশ্যই পলিটিকস জড়িত থাকে। রংপুরের ঘটনায় সন্দেহের তালিকাতে রাজনীতিই থাকে। বর্তমানে ভাত আনতে পান্তা ফুড়ানোর বাজারে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছাড়া নীরিহ মুসল্লি কর্তৃক নিরীহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে আক্রমণ একটি অবিশ্বাস্য ও আষাঢ়ে গল্প ছাড়া আর কিছু নয়। সবচেয়ে বেশি ২টি বিষয়ের ওপর আমাদের সন্দেহের দৃষ্টি নিক্ষেপ করা যাক:
- [১] বিষয়টি নিয়ে ৫ দিন ধরে এলাকায় বোঝাপড়া চলেছে। এমনকি থানায় এটি নিয়ে একটি মামলাও হয়েছে টিটুর বিরূদ্ধে। অথচ এই বিষয়টি নাকি স্থানীয় মোড়ল শ্রেণী অর্থাৎ স্থানীয় নেতাদের কাছে গেছেন । স্থানীয় গণ্য নেতারা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য জানেন না!
[২] টিটু পড়ালেখাই জানে না [যুগান্তর]
প্রথমত, যদি ৫ দিন এই বিষয়টিকে নিয়ে তালগোল পাকানো হয় তাহলে স্থানীয় গণমান্য নেতা ও সংসদ সদস্য জানেন না এটি নিছক কৌতুক বৈ আর কী হতে পারে?
দ্বিতীয়ত, টিটু যদি পড়ালেখাই না জানে তবে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে কে বা কারা এই কাজটি করেছে, তাদের ফায়দা কী? এসব এখন কোটি ডলারের প্রশ্ন! এই সংঘবদ্ধ মুসল্লিদের কে বা কারা পিছনে সংঘবদ্ধ ইন্ধনদাতা হিসাবে ছিলো সেটা জানা এখন মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং এ হামলার দরুন সবচে উপকার পেয়েছে ঐ সংঘবদ্ধ ইন্ধনদাতা গোষ্ঠী। ভারত এবং বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে তার পিছনে একটা না একটা রাজনৈতিক দলের হাত ছিলোই! হয় তারা সরাসরি হামলায় ইন্ধন যোগায় নতুবা মুখবুজে হামলার সমর্থন দেয়। সাম্প্রদায়িক হামলা শুধুমাত্র ধর্মের কারণেই সৃষ্টি হয় না এর পিছনে জড়িত থাকে বিভিন্ন ইস্যু। এর শুরু হয় ধর্মকে পুঁজি করে এবং অবশ্যই সংখ্যাগুরু যাতে অধিকাংশের সমার্থন পাওয়ায় কোন অসুবিধারই সৃষ্টি না হয়। আমরা যদি বাবরি মসজিদ নিয়ে দাঙ্গার দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, ওপারে দাঙ্গার সংখ্যাগরিষ্টদের হোতা ছিলো বিজেপি এবং এপারে সংখ্যাগরিষ্টদের সমার্থন হারনোর ভয়ে দুটো প্রধান রাজনৈতিক দলই মুখে কুলুপ সেটে ছিলেন! ব্লাসফেমি সৃষ্টির ইতিহাসে রাজনীতির ছড়াছড়ি। ব্লাসফেমির ইতিহাসে দেখা যায় এর উদ্ভব হয়, অত্যাচারী সামন্ত রাজাদের এবং চার্চের যাজকদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছেন বা আঙুল তুলেছেন তাদের রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে একেবারে খুন করার মাধ্যমে। যাজকরা এবং রাজারা তাদের প্রভাবের বিপক্ষে আঙুল তোলাদের আইন কর্তৃক খুন করিয়ে জনগণের কাছে ভালো হয়ে থেকেছেন এবং জনগণকে ধর্মের নামে মূলো খাওয়ানোর মেডিসিন হিসাবে ব্লাসফেমির প্রয়োগ করেছেন। ব্লাসফেমির উদ্ভব হয়েছিল প্রাচীন ও মধ্যযুগে। ১ হাজার ৪৫০ বছর আগে ৫৬০ সালের পর রোমের সামন্ত রাজারা প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী খ্রিষ্টান ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের সহায়তায় এর উদ্ভব ঘটায়। এইভাবে ধর্মের গণ্ডির বাইরে গিয়ে ধর্মীয় আইন তৈয়ার হয়। বাইবেলের এমন অনেক আয়াত আছে যা পরিবর্তিত হয়েছে শুধুমাত্র চার্চ/রাজাদের সুবিধা অসুবিধার উপর ভিত্তি করে। ধর্মের নামে যে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি হয় সেটা হয় ধর্মের বাইরে গিয়ে। সাম্প্রদায়িকতার পিছনে একটা সংঘবদ্ধ ইন্ধন দাতা থাকে যাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা বিভিন্ন সময় দেখি মূর্তি ভাঙচূড়, হিন্দু জমি ভোগ দখল, মসজিদে শূয়োরের মাথা ইত্যাদি। এগুলো হলো সাম্প্রদায়িক কলহ বাঁধাবার চক্রের কাজ। নিশ্চই মুসল্লিরা এই ধরনের চক্রের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। টিটুও ঠিক একই রকম বলি হতে পারে। কাজেই এটির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার একান্ত কাম্য। আর অবশ্যই আক্রান্ত হিন্দুদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং ভারতীয় হাই কমিশন যেন এ বিষয়ে কোনমতে নাক গলাতে না পারে, যেন কোন দল এ নিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি না করতে পারে সে দিকে নজর রাখতে হবে।
দ্বিতীয়ত, টিটু যদি পড়ালেখাই না জানে তবে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে কে বা কারা এই কাজটি করেছে, তাদের ফায়দা কী? এসব এখন কোটি ডলারের প্রশ্ন! এই সংঘবদ্ধ মুসল্লিদের কে বা কারা পিছনে সংঘবদ্ধ ইন্ধনদাতা হিসাবে ছিলো সেটা জানা এখন মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং এ হামলার দরুন সবচে উপকার পেয়েছে ঐ সংঘবদ্ধ ইন্ধনদাতা গোষ্ঠী। ভারত এবং বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে তার পিছনে একটা না একটা রাজনৈতিক দলের হাত ছিলোই! হয় তারা সরাসরি হামলায় ইন্ধন যোগায় নতুবা মুখবুজে হামলার সমর্থন দেয়। সাম্প্রদায়িক হামলা শুধুমাত্র ধর্মের কারণেই সৃষ্টি হয় না এর পিছনে জড়িত থাকে বিভিন্ন ইস্যু। এর শুরু হয় ধর্মকে পুঁজি করে এবং অবশ্যই সংখ্যাগুরু যাতে অধিকাংশের সমার্থন পাওয়ায় কোন অসুবিধারই সৃষ্টি না হয়। আমরা যদি বাবরি মসজিদ নিয়ে দাঙ্গার দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, ওপারে দাঙ্গার সংখ্যাগরিষ্টদের হোতা ছিলো বিজেপি এবং এপারে সংখ্যাগরিষ্টদের সমার্থন হারনোর ভয়ে দুটো প্রধান রাজনৈতিক দলই মুখে কুলুপ সেটে ছিলেন! ব্লাসফেমি সৃষ্টির ইতিহাসে রাজনীতির ছড়াছড়ি। ব্লাসফেমির ইতিহাসে দেখা যায় এর উদ্ভব হয়, অত্যাচারী সামন্ত রাজাদের এবং চার্চের যাজকদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছেন বা আঙুল তুলেছেন তাদের রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে একেবারে খুন করার মাধ্যমে। যাজকরা এবং রাজারা তাদের প্রভাবের বিপক্ষে আঙুল তোলাদের আইন কর্তৃক খুন করিয়ে জনগণের কাছে ভালো হয়ে থেকেছেন এবং জনগণকে ধর্মের নামে মূলো খাওয়ানোর মেডিসিন হিসাবে ব্লাসফেমির প্রয়োগ করেছেন। ব্লাসফেমির উদ্ভব হয়েছিল প্রাচীন ও মধ্যযুগে। ১ হাজার ৪৫০ বছর আগে ৫৬০ সালের পর রোমের সামন্ত রাজারা প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী খ্রিষ্টান ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের সহায়তায় এর উদ্ভব ঘটায়। এইভাবে ধর্মের গণ্ডির বাইরে গিয়ে ধর্মীয় আইন তৈয়ার হয়। বাইবেলের এমন অনেক আয়াত আছে যা পরিবর্তিত হয়েছে শুধুমাত্র চার্চ/রাজাদের সুবিধা অসুবিধার উপর ভিত্তি করে। ধর্মের নামে যে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি হয় সেটা হয় ধর্মের বাইরে গিয়ে। সাম্প্রদায়িকতার পিছনে একটা সংঘবদ্ধ ইন্ধন দাতা থাকে যাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা বিভিন্ন সময় দেখি মূর্তি ভাঙচূড়, হিন্দু জমি ভোগ দখল, মসজিদে শূয়োরের মাথা ইত্যাদি। এগুলো হলো সাম্প্রদায়িক কলহ বাঁধাবার চক্রের কাজ। নিশ্চই মুসল্লিরা এই ধরনের চক্রের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। টিটুও ঠিক একই রকম বলি হতে পারে। কাজেই এটির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার একান্ত কাম্য। আর অবশ্যই আক্রান্ত হিন্দুদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং ভারতীয় হাই কমিশন যেন এ বিষয়ে কোনমতে নাক গলাতে না পারে, যেন কোন দল এ নিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি না করতে পারে সে দিকে নজর রাখতে হবে।
0 comments:
Post a Comment