সজল আহমেদ এর কবিতা:আমার কোন কষ্ট নেই

আমার কোন কষ্ট নেই

এখানে বেঁচে থাকি নিজের শরীরে নিয়ে মাছের ঘ্রাণ
এখানে ছুটে চলি ভাঙা রোদে অজস্র বেদন বুকে আপ্রাণ।
আমার কোন কষ্ট নেই
কোন বেদনা নেই
বুঝতে পেরেছো?
এখন এখানে সমুদ্র শুকায়
পথ করে দেয় চিড়ে রোদে তেতে ওঠা বালি
এরপর বিভিন্ন প্রণালীর পারাপারের পর
মুক্ত হস্তে দান করি নিজেকে।
পৃথিবীর উপরে মায়া নেই
এবার;
চলে যেতে বাঁধা নাই।
চলে যাবার পর বুজে আসে চোখের পাতায় ভর করা ঘুমের নির্মাণ করা মেঘ;
নির্মাতা নিজেই মালিক সাই।
আমার কোন কষ্ট নাই
বুঝতে পেরেছো?
মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলি; জুমার নামাজের মতো সত্য;
আমার কোন বেদন নেই;
আমি নিজকে চিনি, যেমন দুগ্ধপোষ্য পশুরছানা চিনে ফেলে নিজগুণে নিজ মাতা
এবং কিছুদিন পরে আবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলি; আজানের কসম আজ খুব কষ্টে ছেদা হলো বুক।
       সবাই সুখে থাকে আমি কেন পাই নাকো সুখ?
আবার বলি;
আমার কোন দুঃখ নেই
আমার চোখে জল নেই
বোঝা গ্যালো?
এভাবেই স্ববিরোধী সমুদ্রে স্নান শেষে
আবার দাঁড়িয়ে পরি দগ্ধ হই রোদের ম্লান আগুনে
এরপর নিজেকে পুড়িয়ে পুড়ি ঘুম চোখের।
 ঘাম শরীরে ঘুমিয়ে পড়ি সোনার মাদুরে।
রাত ঘুমায় না;
এ কবিতায় কী লিখেছি জানি না
তবে এই জানি আমাকে এভাবেই লিখতে হবে
ব্রত করেছি
একটি ভালো দুঃখের কবিতা চাষ করে যাবো
চাষ করে যাবো এক সমুদ্র বিরহী কবিতার;
ও সমুদ্র চাষা
ও নীল মেঘের দেশে বসা
নিয়তির ক্রন্দনরত মা জননী
আমাকে ধার দাও তোমার সমূহ সুখ সিঁদুররাঙা সিঁথির ভাঁজের।
আমার কোন সুখ নেই
বুঝতে পারলে?
কী বকুলের ফুল চিড়ে নেমে আসা রোদ, মাঠ, ঘাট পাখির কলরব; নীরবে ডাকতে থাকা নিশ্চুপ সব-
নিশ্চল পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেঘ; এভাবেই থেমে গিয়ে দেখ-
কিভাবে ভালো থাকতে হবে তোর।
কিভাবে কুয়াশা চিড়ে বা ধ্বংস করে নেমে আসে ভোর।
সিক্ততা বুঝিনি; বুঝিনি কিভাবে ভালো থাকতে হয়-
ভেজা রুমালে চোখ মুছলে চোখের জল বুঝা যাবে না।
বুঝিনি কিভাবে সুখে থেকে থেকে মানুষটা বিরহে মরে যায়;
নগ্ন পায়ে হেঁটে এসেছিলাম বহুদূর
তবুও দেখা হয়নি
এরা কিরকম
কিভাবে নগ্ন চোখে
বিক্ষিপ্তভাবে
লোকমুখে
শুনে নেয়
কার শরীরে কতটা ঘাম
আর কার কতটা ঠিক দাম!
#সজল_আহমেদ

16 poetry of Sajal Ahmed


You Never seen his heart 
O lovers of earth
You Never seen his heart,
Have you ever seen the heart 
of your poor boyfriend?
How much burns? 
How much of his humility, his survival,
How much does he think of himself as small?
What are you looking at
The young man's cry alone at night?
You look at the boyfriend
Sometimes the lover's heart?
How to fight with a real world;
Ever wondered why a sea water would be donated;
Why mix 
The body in the grave
After so many ways have passed
A fish;
Decide to remain lonely.
pages breaks out of the book,
after a long sleeveless ride
One crow flies alone
The money is blown 
after the ATM booth;
This world
Here it is
It's weird!
Sick and sick
You love it so much that it hurts you away;
Thinking you will be sick
By separating yourself from you.
You think of him as selfish
Think about your own interests
The boy left you today.
But
Forget you repeatedly;
That is not love and sometimes selfish;
Forget you repeatedly
If selfish;
But why do not you look at another woman thinking you will suffer?
You never asked yourself;
Why the boy in the face of is not so much smile today
Does not laugh a little?
Why do you want to move away?
Maybe the rest of the time you are sick with him
Thinking of yourself in your place, why he left yourself alone.
Leave you out and say in his heart;
"In the public way
In the crowd of seven hundred millions of people
Your walk is still a lot of way to your walk, 
Just started;
There is no limit on this path
There are many bowlers here
Many goons;
A huge screen.
Large screen flashes unfinished
The screen is torn off
Start walking
You have to walk......
When you learn to recognize "what is man?"
When you start to realize how difficult the reality is
Again and again called my name will go to Dargah
Kedgeree will give me my name
But I can not get back again
How difficult can the human heart be
As if tough rock stone
Did not understand today?
You did it
But why often in his own soft heart
Do you suffer so much?
Why are you so skeptical to bite yourself?
How terrible it is to get rid of people
You can not learn today?
You have learned
Why then why
Why then
Can not you be strong? ''
On different issues
After the various wounds were created
And decided
Own unbeatable
Painter Onle
Do not let you burn
Your efforts to be happy for you.
You still did not see the reality;
How did you cry after crying?
Last night did not sleepy;
Could not sleepy
He cried very silently.
He never wanted to cry you;
And why did you cry?
Have you ever thought about that?
There comes a time
People sacrifice their favorite things
Just as Ibrahim gave his beloved son a sacrifice.
The world is underground
So here is the emotional crowd
The reality comes back often
There are many reasons for sacrificing their favorite things.


Am I Wrong? 
I repeatedly say to the heart, "I am wrong, I am wrong!" The heart repeatedly tells me, "You do not, you are wrong! ''


Will not be seen
Suddenly we stopped at the last page;
Wherever the cloud stops on the mountain!
There is a frost on the fridge,
The rain rises every day in the morning and shook silently.
Just like a broomstick,
Where all the fish stops are waterless pond;
I'll stand there every morning alone,
I know that all will come, only you will not be seen....



Slave of the Devil
If the star goes away;
The devil is scared
Running rushing,
His servants in this town
Reigns
An Eye of Illuminati
The trembling shivering in winter
And singing different songs;
A piece of blanket is very cold
Hey poor party
To stay comfortable
Let's move to Satan's team.




I was a broken glass
I was a glass, and broke in a variety of ways.
Blood in broken glass it's severed heart.....



Going to die now
I'm going to die now
The soul is going down;
The boat floats on the Spirit,
Everything is going away from the body;
And I, I will not come back!


Mudane Football
After kicking everyone else, I guess, I'm a Mundane football!


Block To Making dreams
People can not sleep after crying, If he can not sleep, he can not make dream


The Train 
The train that stopped at midway; That's death

God and My Dad
I never asked for anything from God, and God never gave me anything like my father. The difference between my father and God is that, my father was stunned by the birth of me. And God did not cease to create the punishment in the Hereafter will be rewarded!


My blocked Happiness 
I feel painful Hundreds of millions of illnesses die of happiness


My syllabus
My syllabus has been burnt;
Do not read any bad love poem story book
No need spectacles available;
I do not fear the extra cost;
My syllabus is burnt-
Broke spectacles.


You are in Whirl of the earth
When you are in the whirl of the earth, when you look at the whole world, then you see the dull! Look at the left, there is no one next to you. Look at the left, or there is no one there. The God above is not with you. The parents of the house, they do not even understand you. Therefore, you do not have to stand up properly. now? Yes, your time of death is right now. But you know, you can not die. Because death does not want you!

I'm Afraid
When I look at the pocket, I'm afraid to look at you. After that, when I looked at the pocket last time, my own janaza taught myself.

Worst offender
The worst offender in the world itself seems to be, when my dear man is crying for my own sake!

I am
I only swallow the grief of beloved people. One day, the troubles that I have not digested, will answer everything.




সজল আহমেদ এর কবিতা: অনুতাপ

অনুতাপ


একদিন একা প্রেমিকাকে
রেখে কোন এক পার্কে
রাগ করে চলে এলেন
মাঝপথে বৃষ্টি নামলে
আপনি ভিজে গেলেন।
আরেকটুপর আপনার জ্বর আসবে
আপনি খাটে শুয়ে কাতরাবেন
ভিষম জ্বরের চোটে
এর পরের দিন প্রেমিকা আপনাকে দেখতে আসবে
ওঁর শ্লেষ হাসি ঠোঁটে।
আসলে রাগ করাটা ভুল হয়েছিলো
এটুকু বুঝতে আপনার
প্রয়োজন হলো একটি প্রেমিকা
একটি পার্ক, এক পশলা বৃষ্টি আর ধুম দিয়ে ওঠা জ্বর।

সজল আহমেদ এর রম্য কবিতা : বুদ্ধিজীবিদের জ্বীনের নগর ভ্রমন

বুদ্ধিজীবিদের জ্বীনের নগর ভ্রমন


বুদ্ধিজীবিরা একদিন দলবেঁধে চইলা গেলেন কোকাব শহরে।
জ্বীনের নগর উহা
সেইখানে খাবার বইলা কিছুই ছিলো না
তাঁরা বেবাক কাঁদতে লাগলো আহারে আহারে!
বিশাল বপু এক জ্বীন দেইখা বুদ্ধিজীবি সকলে,
প্রশ্নবাণে জর্জরিত করলো জ্বীন বেচারারে!
বুদ্ধিজীবি একজন তখনো বিরক্ত হইয়া,
তাহার মুখ নামক ট্যান্ডেস্টার দিলো ছাড়িয়া-
এইখানে এইটা আসছি জ্বীনের নগর কোকাবে,
ভরপুর খানা নাই ইহা ক্যামন নগর হে?
ক্যামন নগর ইহা ক্যামন শহর?
ফল নাই জল নাই, নাই অতিথির কদর!
বোকাচোদা জ্বীনের কভূ বুদ্ধি হবে না
বুদ্ধিমান বুদ্ধিজীবিগণের ওরা কদর বুঝলো না।
আছে খালি দেহ
দেহ তো চুদে না কেহ
বইসা খালি পারে ডিম
দ্যাখো অথচ, এরা নাকি আবার জ্বীন!
অপর এক বুদ্ধিজীবি তখন মুখ খুলিলো;
ট্যান্ডেস্টার বুদ্ধিজীবির লগে দ্বিমত পুষিলো।
হাকিলো ভায়া, থামো না!
অত বেশি বুঝো না
এইখানে এইটা আসছি কোকাব নগর
বাদ্য নাই, গানা নাই বিনোদনহীন শহর;
এইখানে নারী নাই, নাই নারীর অধিকার;
যেইখানে বিনোদন নাই সেইটা ক্যামন শহর?
এইবার তৃতীয় নং বুদ্ধিজীবি জোড়ে হাইকা কয়;
ডাউট আছে দাদা এইটা কোকাব নগর নয়!
হইতে পারে ভুল কইরা পৃথিবী ঘুরছে ভূপৃষ্ট সাথে
ঘুইরা গেছি মোক্ষম টাইমে আইসা পরছি কোন অপেরাতে
অপেরার মেইন থীম জ্বীন ও হইতে পারে
হইতে পারে আমরা আসছি কৃত্রিম কোকাব নগরে!
চতুর্থ জন ভাবে আর মনেমনে কয়;
বেকুবচোদা, উজবুক বাকি সব হালায়!
এই নগরে কোন পলিটিক্যাল দল নাই,
গঠনতন্ত্র না রাজতন্ত্র তাহা জানা নাই;
জ্বীনের কীভাবে চলে তাও জানা নাই
তিন হালার মাথায় গোবর ফালতু প্যানা দেয়।
প্রকাশ্যে চার নং বলে, দাদাগণ শোনো
আদপে ইহা নগরই নহে কোন!
হইতে পারে ইহা কোন ভীনগ্রহ
আর জ্বীন না অ্যালিয়েন এসব, বড়বড় দেহ
নাই এখানে কোন পলিটিক্যাল দল
জ্বীন না এই হালারা সব জাগতিক ফুটবল।
এবার জ্বীনের মুখ খুইলা রাগে কথা বাইর হইলো
চার বুদ্ধিজীবির কানে চারটা থাপড়া দিয়া কইলো-
একজনের পাছা আরেকজন আগুনেতে দিয়া
খাইতে পারেন উহা তারপর চাটিয়া চাটিয়া।
একগ্রহের বুদ্ধিজীবি অন্য গ্রহে ভাত পায় না
বুদ্ধিজীবিতা করো পৃথিবীতে গিয়া।
যেইখানে বুদ্ধিজীবি অধিক দেখা যায়,
সেইখানে একে অপরের হোগা ভেজে খায়!

কাঁদতে থাকা নোটবই - ৩

কাঁদতে থাকা নোটবই - ৩

ফিলিস্তিনের শিশু
মিন হা খলাক্ না ক্বুম
হে মাটি তোমার ভিতরে আজ ঘুম পড়ায়ে দিলাম ফিলিস্তিনের শিশু
ফাটে বোমা বুম বুম
সহিসালামত রাখো, রাখো সহিসালামত আমার আর বলার নাই কিছু!
যদি বলি
চলে গুলি
গুলি চলে
ছলেবলে
বিভিন্ন কৌশলে
কারণে
অকারণে
ছোড়া বিদ্ধ করে বুক
কথার চাবুক
চলে বিভিন্ন ইস্যুতে আসে যম
ফাটে বোমা বুমুবুম
তোমার মাঝে আজ
ফিলিস্তিনি এ শিশুরে পাড়ায়ে দিলাম ঘুম
হে মাটি
তুমি জানো কি?
যারা মরে শিশুকালে
আর পাখি ডাকা সকালে
তাঁরা জান্নাতে বসে খেলে
পানি, ফুল মাছের সাথে
এই জলপ্রপাতে
তুমি খুজে দ্যাখো নিয়ে দম
প্রতিটা ঢেউয়ে লেখা তাদের নাম
আর যারা শহীদ
মরে যাওয়া মানে ঈদ
ওরা বেঁচেবর্তে থাকে
গাজীদের অস্ত্রে
তন্ত্রে তন্ত্রে
সময় হুইসেল হয়ে।


২.
আমার পাখিটা কাঁদলো কেন?
আমি কখনো যাকে কাঁদতে দেখতে চাই না
আমি কখনো দেখতে চাই না দেখতে ও সোনামুখে জল গড়াক
নোনতা জলে মুখ কেন তাঁর থিতু?
তুমি তাঁকে বারবার কাঁদাও হে ঈশ্বর!
কেন?
কেন হে ঈশ্বর?
ঠিক কী কারণে?
এত মানুষ কাঁদে যে রোজ
তাতে কী তোমার হয় না?
কেন আমার পাখিটা কাঁদবে?
ঠিক কী কারণে?
জবাব দিবে
নাকি আরসে মো'আল্লার সথে করে দেবো আড়ি?
তোমার যদি জল দেখতে এতই মনেচায়
তোমার যদি এতই জাগে সখ
তোমার যদি এতই মনেচায় দেখবে জল
তাহলে রয়েছে বিশাল সমুদ্দুর!
এত এত জল তবুও তোমার
এত জল দেখার সখ?
ছিঃ ঈশ্বর ছিঃ!
জবাব চাই
আমার ছোট্ট পাখিটা কাঁদলো কেন?

৩.
আমি একটা আধা পঁচা গলা লাশ
পৃথিবী আমারে করে উপহাস!
কেন এই সাড়ে সাত মিলিয়নের দুনিয়ায়
বোকাদের কেউ আপন নয়?


৪.
আরশে বসা আল্লার কাছে;
আমার একটা আর্জি আছে।
কেন এত কাঁদি খোদা জানো?
পাখির অসুখ আমাকে দাও
পাখিটা আমার কাঁদেনা যেন কখনো!


৫.
দোআ
এখনো চোখে চোখে ভাসে পাখিটির আধো আধো ঘুম ভাঙা চোখ।
যদি আমি মরে যাই
আফসুস নাই
পাখিটির শান্তি হোক!



৬.
আর আমার কিছু হবে না
আমার আর
আর আমার
আমার আর
কিছু হবে না
একটা হৃদয়
একটা মানুষ
কতটা দুঃখ পেলে
কতটা পঁচে গেলে
মরে যেতে চায়
কত নিষ্পাপ মুখ
অতল গহ্বরে
অথবা শূণ্যে
কিংবা সমুদ্রে তলায়!
আর কত তকলিফ?
আর কত ব্যথা হৃদয়
গিললে
কতটা আঘাত দিলে
মানুষ
বোবা হয়ে যায়?
বলতে পারো?
বলবে আমারে?

৭.
আপনার মাথায় চিন্তা;
আপনার মাথায় বিড়ি।
বিড়ি চিন্তারে খায়না
বিড়ি আপনারে খায়।


৮.
ভাল্লাগেনা?
ভাল্লাগেনা?
যাও......
গিয়া মুড়িভাজা খাও.......
আমি এখন নিজের গাঙ্গে একলা মাঝি; ভাসাই দিছি নাও।
আমার এখন একলা চলার হইয়া গেছে অভ্যাস;
আমি এখন নিজের রাজ্যে কইরা বেড়াই ত্রাস!
ঐখানেতে আমিই পুলিশ; আমিই আবার ডাকাত
আমার কথায় উপুত হয় সব আমার কথায়ই কাত
আমার কথায় দিন হয়; আমার কথায়ই রাত।
আমি নিজের চক্রে নিজের মতো ঘুরি
নিজের লাগানো দাহ্য আগুনে নিজের মতো পুড়ি।
আমার এখন ভালো লাগেনা কাউরে
সাধারণ জন দেখলে আমায় পালায় দূরে দৌঁড়ে।
তোমরা যারা অসহ্য আজ চইলা বাবা যাও;
আমি এখন নিজের গাঙ্গে একলা মাঝি; ভাসাই দিছি নাও।

৯.
তুমি দূরে গেলে ভুলে যাই বাপের রাখা নাম;
ভালোবাসা মানে হলো বালছেড়া কাম।


১০.

প্রেয়সি কি আমার কোরান পাঠ শোনে?
ইয়াসিন টান মারি চার আলিফে দেখি প্রেয়সির মুখ,
আহা! আমি তো হারিয়ে গেছি হামজার টানে!
প্রেয়সি কি গোপনে আমার কোরান পাঠ শোনে?
রেহালে কোরান মজীদ, বাহিরে প্রেয়সির প্রকাশ!
আস্তেধীরে পাল্টে গেছে কোরানের সুর-
প্রেয়সি কি বাইরে দাঁড়িয়ে শুনছে কোরান পাঠ?
কোরানের সুরে প্রেয়সির সাথে কি মোহিত হচ্ছে ঐ চাঁদ?
তথাপি ভোকালে অতি সুর আনি-আরো চার আলিফ পাঠ করি টেনে,
কে জানে প্রেয়সিরে মোর কোন আলিফের টান কাছে আনে!

১১.
ও চিঠির কোন জবাব হবেনা
একটি নীরব গাছ বৃষ্টিতে ভিজে যায়
পাতার ফাঁদে জমে থাকে জল; খুলে যায় চোখ। কেউ হতাশ হয়না।
এত সুন্দর মাছরাঙাটা অথচ সে কাঁদতে জানেনা।
অত সুন্দর পাবদা মাছটা অথচ সে সাঁজতে জানেনা।
মাছরাঙা দেখে ভালো লাগে অথচ মানুষ্য তাঁর প্রেমে পরতে পারবেনা
ওঁর শরীর ভিন্ন অবয়বে চোখেরও ভিন্ন রেটিনা।
গাছ হতে ঝরে যায় ফুল - খোপা হতে খুলে যায় চুল;
যে জিনিসটি অতীব সুন্দর ওর প্রেমে পরা ভালো। পেতে চাওয়া ভুল।
প্রেমে পরে সাঁতরে গেলে বুকের গভীরে গিলে ফেলে হজম করতে জানে সমুদ্দুর
প্রেমের গভীরে গেলে মুখ পুড়ে দেয় রোদ্দুর।
সবই অতলে তলাতে গিয়ে জন্ম দেয় এক সুগভীর ইতিহাসের।
একটি সুনীল সমুদ্র যদি কৃষ্ণগহ্বরের গভীরে হারিয়ে যায়। আর ভিন্নভাবে জন্মায় পৃথিবী।
পাখি হয়ে গান গাইবে কর্কশ হাঁসেরা
ওখানে নিত্যনতুন জন্মাবে অন্যরকম ঘাসেরা
যদি শিশিরই না জমা হয় ঘাসে
তবে ঘাসেদের জন্মানোটাই বেহুদা।
(চলছে........)


১২.
অভিশাপ
তোমাকে দিলাম অভিশাপ; একদিন আমার মতো নিঃসঙ্গতা আর একাকীত্ববোধ যেন তোমারেও পেয়ে বসে।
হাসি যেন যাও ভুলে;
কান্নারা জোট যেন বাঁধে তোমার কপালে।
যেন তোমার পাশে কেউ আর না আসে।
না ধরে হাত ;
আমার মতো যেন কুড়ি বছর মনেহয় তোমার একেকটা রাত।
যেন একদিন তুমিও কাঁদো;
যেন তোমার চোখের নিচে কালি জমে
যেন কিরিচ দিয়ে কেউ কোপায় তোমার হৃৎপিণ্ড
যেন তোমার জীবনটা হয় লন্ডভন্ড।
যেন আপন বলতে কেউ না থাকে ধরাধামে।
 তুমি মারা গেলে যেন থাকে প্রথম প্রহর
আর সাথেই যেন শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি
যেন ও বৃষ্টিতে খাটিয়া সমেত ভিজে যাও তুমি।
লাশ যেন পঁচে যায়; বৃষ্টিতে ডুবে যেন যায় তোমার কবর।
কবরে যেন তোমার উপর আজাব বর্ষিত হয়;
তোমাকে দিচ্ছি অভিশাপ- আজবে গজবে যেন কাটে আখেরাত।
তোমাকে অভিশাপ দিচ্ছি কষ্ট হচ্ছে।
বিগত বাইচাত্রামির কথা মনে পরে?
যখন প্রতিটা পাপের হিসাব নেয়া হবে,
ওগো তুমি যাবে কই, কই পালাবে?
২৩/০৭/২০১৮

কাঁদতে থাকা নোটবই - ২

কাঁদতে থাকা নোটবই - ২
১.
একটি রাত কিভাবে
কতটা কষ্টে পার হতে পারে; কেন ; কি কারণে আমার মধ্য হতে জন্ম নেয় অমানুষের আমি জানিনা!
ও জ্বলে আঙার হয়ে ঝলসে যাওয়া চাঁদরে
তোরে দেখে বারে আমার রাত রে!
একবার যদি তাঁকে বলে দিতিস আমার খারাপ লাগার কথা;
আমি আর তবে কাঁদতাম না অযথা!

২.
যার কেউ নাই
তাঁর কেউ নাই
রাত ও আপন না
কল্পনাগণ ঝরছে চোখে
হয়ে অঝোর কান্না।

৩.
ও অশ্রু তুমি আস্তে আস্তে ঝরো
একটা চোখের এত সাধ্য!
কত কাঁদতে পারো?

৪.
আমার কান্না পাচ্ছে ভিষন
আর দেখছে দূরের চাঁদ-আকাশ
একা এত কেন কাঁদি ও জানালার কাঁচ?

৫.
পুরুষ আমি, কান্নার চিৎকার তাই
গলাতক এসে থেমে যায়;
পুরুষ যারা নীরবে কাঁদে
নীরবেই তাঁরা মরে যায়


৬.
বিরামচিহ্ন বরাবর থেমে গেলে
অক্ষরগুলো খেয়ে ফেলে
খেয়ে ফেলে জমানো মেঘে সুনীল আকাশ
কষ্ট মানুষ খেয়ে ফেলে পরপারে হয় বাস।

৭.
আয়াত সুবহে সাদিকেও আমি ঘুমাইনি
যখন আকাশের শেষ তারা ঝড়ে গিয়েছিলো
চারপাশে আমি তাকাইনি
একটা সাপ আজ দেখেছি জানো?
বিষধর ছিলো
শালা বেকুবটা আমাকে কামড়ায়নি
আয়াত আমি মরে যাইনি।

৮.
একটা মানুষ কতটা নিশ্চুপ হয়ে গেলে
কাঁদতে ভুলে যায় তুমি জানো?
ও রাত তুই সাক্ষী থাকিস
এমন নিশ্চুপ কেউ যেন হয়না কখনো!

৯.
মৃত্যুর পর
আমাকে টুকরো করে ফেলে বুক চিড়ে
হয়তোবা হৃদয়ে খোদাই করে
পাবেনা তোমার নাম
আমার ভালোবাসা কল্পিত কোন গল্প নয়
সাক্ষী আছে ভোরের আজান!

১০.
একটা হৃদয় পুড়ে ছাই হয়ে গেলে
ও ছাই তুমি উড়িয়ে দিও দক্ষিণের বাতাসে
হৃদয় পোড়া কালো ধোঁয়া মেঘ হয়ে আজ
জমে গ্যাছে আকাশে আকাশে।

১১.
জানো আমি নিজের জন্য কাঁদিনা
আজ কতটা কষ্ট পেলে তুমি
এই ভেবে অশ্রু চোখে থামেনা!

১২.
আমি তোমায় কষ্ট দিলাম পাখি
তুমি চিৎকার করে কেঁদোনা
কাঁপে আল্লার আরশ
হয়তো খোদা কখনো আমায় ক্ষমা করবেন না!

১৩.
তুমি কাঁদছো কেন পাখি?
আমার কাজে কষ্ট পাইছো নাকি?
তোমার কষ্ট বড় চোট দেয়
জ্বলছে আমার আঁখি!


১৪
কতটা অপরাধবোধ জমা হতে থাকলে নিজেকে নিজের অসহ্য মনে হয় আমি জানিনা!
নিজেকে নিজের কতটা ছোটলোক মনে হতে থাকলে গালি দিতে ইচ্ছে হয় আমি জানিনা!
তবুও আমি দাবী করছি, আমি একটা মানুষ?
একটা আদম সন্তান?
হে মৃত্যু! হে মৃত্যু?
ওহে ক্ষাণকির পোলা মৃত্যু!
আমাকে বাঁচিয়ে রাখছিস কোন বাল করতে?


১৫.
আমি চিৎকার দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলতে পারিনা "আমার ভুল হইছে! আমারে ক্ষমা করো!"
আমি একটা অমানুষ
একটা নিকৃষ্ট
একটা ছোটলোক
নিজেকে নিজের
আমার অসহ্য মনে হতে থাকে
এবং অহেতুক ভোর বেলা
কোন এক কালে
তোমাকে শেষ চিঠিটা লিখেও
এই বুকভরা অপরাধবোধ নিয়ে
আমি পানি না পেয়েই মরে যাবো!
আমি মরে গেলে "আয়াত" তুমি আমার কবরে একটু থুথু ফেলে যেও!


কাঁদতে থাকা নোটবই-১

কাঁদতে থাকা নোটবই-১

১. আমার যখন তোমাকে মনে পরে আমি ভুলে যাই নিজেকে; কাঁদতে থাকা পাখির কলরবে খুঁজে ফিরি তোমাকে। ২. খোদা করি মুনাজাত তুমি শোনো কী? আমার চাইনা একশ বছর হায়াত আমার হায়াত ওকে দিয়ে দাও ভালো থাকে যেন আমার আয়াত! ৩. তোমার কন্ঠস্বর আমার শ্বাসতন্ত্রের হাওয়া পাখি আমার সর্বোচ্চ উপহার ছিলো তোমাকে খুঁজে পাওয়া! ৪. তোমাকে মনে করতে থাকা সময়ে লিখি এই নোট বই আমি যদি মরে যাই প্রতিদিন না পারো সময়ে সময়ে পড়ে নিবে প্রতিটা অক্ষরে অক্ষরে আমার ঘ্রাণ মিশ্রিত আমাকে খুঁজে পাবে। ৫. শুরু করি দিন আল্লার পর তোমার নামে তোমার জন্য আমি/আমার জন্য তুমি খোদাই করা ছিলে চতুর্থাসমানে। ৬. তুমি জানো আমি পার নাস্তিক হে প্রিয় তোমার মাঝে আমি দেবী প্রতিমা খুঁজে ফিরি আমাকে তোমার পূজারী হিসেবে কবুল করে নিও!

বোকার শহরে বেকুব : সজল আহমেদ এর কবিতা

বোকার শহরে বেকুব : সজল আহমেদ এর কবিতা

বোকার শহরে বেকুব
কতকাল হয়ে গেলো শুনিনা তোমার কথা
ছড়ার মতো বিভ্রান্ত শহরে মিলে গেলে ছন্দ-উপকথা
স্মৃতির শহরে বেকুব ঘুরে আর ফিরে
অবশেষে একদিন, একদিন অবশেষে
আশা জমে ভারী হয়ে মরে।
বিশাল সমুদ্র দেখো কত জল বহে;
নিমগ্ন আঁধারে দেখো জোনাকী পোকারা উড়ে
উড়ে যায় কতশত ব্যথাবাহী স্মৃতি
সন্ধ্যের আকাশে মেঘের সারথি 
উঁচুতে দূরে ঐ উড়ে যায় বক
আজানের ধ্বনীতে কাকেরা অবাক
অব্যক্ত যন্ত্রণায় ভীত আমার শরীর
অহেতুক মরে যাব, অসুখের ভীড়
একেকটা স্মৃতি যেন আকাশসম ভারী
আমার বুকে কেন খোদা জমা এত আহাজারি?
কাঁপে না কী প্রভূ তোমার আসমান?
কাঁপেনা? কাঁপেনা?
আমি কেন কাঁদি প্রভূ তুমি কী বুঝোনা?
জগদ্দল ভারী বুকে বিঁধে ব্যথার কিরিচ
বাঁচতে চাই না আমি দিওনা আশিস।
ফুল পরে ঝরে গাছের শরীরে ব্যথা
ঝরে পরে বয়োসন্ধিতে শুকনা পাতা
গাছের বেদনা কেন ফুল ঝরে পরে
জোনাকি তলিয়ে যায় কৃষ্ণ আঁধারে
আর বাজেনা কানে ঝিঁঝিঁর আওয়াজ
হৃদয় সমুদ্রে খড়া চোখে বিরহের ঝাঁঝ
কাঁদি কেন এত আমি; এত কেন কাঁদি?
সমুদ্রে পানি অত যা কেঁদেছি অবধি
আমার মাঝে বারে বারে আমি যা দেখেছি
অন্যকোথায় কিংবা বাইরের জগৎ অত দুঃখ পোষেনি
পোষেনি পোষেনি কেউ আমার মতো কুকুর
অনাহারী থাকেনা রাত-ভোর-দুপুর!
ওগো বিশাল আকাশ আমার সাক্ষী থেকে যা
যা কেঁদেছি ওতক সমাপ্ত; খোদার কসম আর আমি কাঁদবোনা।

একটি খোলামাঠে এক কোটি আশা
ভীড় ভেঙে উপছে পরে বেদনা-ব্যথা
নদীর জলেতে নেই সম্বল আর আশা
ফিরে দেখা পরিণতি মিছে ভালোবাসা
কুচক্রিরা সদা জল বহে মুখে
আশা যদি ভেঙে যায় বেদনা বুকে
ফিরে ফিরে আর আমি তাকাবোনা
জলের ছিটায় এ ঘুম ভাঙাবোনা
আশ্চর্য এক পাখি উড়ে দূরে গেলে
আকাশের অজানায় যায় ডানা মেলে
দূরের পাখি তাঁর দূরেতেই বাসা
দূরের পাখিতে কেন মিছে ভালোবাসা
আর যদি ভুল করি ডেকোনা আমায়
চোখ মেলে ডানা খুলে ডাকবোনা তোমায়
কিংবা জলেতে কেউ ঘুম ভাঙা চোখে
যদি কেউ এভাবে ডানামেলে ডাকে
এসোনা এসোনা ফিরে কারো ডাকে তুমি
তোমাকে আর ভালোবাসবো না আমি।
(সংক্ষিপ্ত)

আর মাত্র একটি বিপ্লব: সজল আহমেদ এর কবিতা

আর মাত্র একটি বিপ্লব: সজল আহমেদ এর কবিতা

আর মাত্র একটি বিপ্লব
একটি বিপ্লব করতে হবে
বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে
আর মাত্র একটি বিপ্লব
আমার মা
ভাত খায়নি
আজ তিনবেলা
আমার মা
ভাত পায়নি।
ওর কাপড়ে লেগেছিলো ঘাম
খোটে কোন পয়সা বাঁধা ছিলো না
কোন মুদি ওকে বাকি দেয়নি
কেউ ওর পরিশ্রমের চুকায়নি দাম।
একসেড় চাল
আধপোয়া ডাল
একসেড় নুন
একপোয়া আলু
কেউ কিনে দেয়নি।
খবর নেয়নি কেউ
খেয়েছিলো কিনা,
আমার মা।

আর মাত্র একটি বিপ্লব করতে হবে।
আমার মায়ের মুখে ভাত তুলে দিতে,
আর মাত্র একটি বিপ্লব।
সাড়ে সোয়া ষোল কোটি মানুষের সম্পদ
গিলে খাচ্ছে উচ্চবিত্ত
হিস্যা হবে এ সম্পদের আজ
হয়তো ভাত দে
নয়তো মাথা দে
চিবাবো। 

সাংবাদিকদের জবাবদিহিতা কেন দরকার?


সময়টা ২০১৭ এর ১২ ই অক্টোবর। এক জুনিয়র সাংবাদিককে চড় মেরেছিলো এক পুলিশ কর্মকর্তা। প্রত্যেকটা টিভি চ্যানেল প্লাস পত্রিকা সেটাকে হাইলাইট করে যার দরুন কোন ঘটনার সঠিক কোন বিশ্লেষন ছাড়াই চাকুরী চলে যায় ঐ পুলিশ কর্মকর্তার।
মানুষ কোন কথাই বলেনি এ নিয়ে, বরংচ পুলিশ কর্মকর্তার ঘাড় মটকে খাওয়ার যোগাড়! এই ঘটনার পেছনে যে সাংবাদিকের ও কোন ত্রুটি থাকতে পারে সে বিষয়ে কোন কথাই হয়নি। কারণ সে সময় পুলিশের কিছু অমানবিক, বেআইনি খামখেয়ালি কর্মকাণ্ডের দরুন পুলিশ মানুষের কাছে শত্রুতে পরিণত হয়েছিলো। অপরদিকে সাংবাদিক সাহেবরা সেসময় দেবতার অবতার স্বরূপ বাঙলাদেশে বসবাস করতেছেন। কী তাঁর দোষ কী সে করলো সে বিষয়ে কোন কথা নেই। এক তরফা ভাবে পুলিশকেই দায়ী করলো। এর প্রতিবাদে এই লেখাটা আমি লিখেছিলাম।
লেখাটি আমি সকল সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে না লিখলেও অধিকাংশকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলাম।
পুলিশ সরকারী চাকুরী করে দেইখা বাধ্যগত ঠিকাআছে। “পুলিশ যদি অন্যায় করে সেইটার জবাব তাগো দিতে হবে” এটা যৌক্তিক এবং এর সাথে কারো মতবিরোধ নাই বলে আমি মনেকরি । কাজেই পুলিশ আর সাংবাদিকের মধ্যে লড়াই হলে জবাবদিহিতা আগে পুলিশের করতে হবে। তাই বইলা সাংবাদিকরা তেলের বাটির মতো তেল তেলায়া পার পেয়ে যাবে সেইটা অযৌক্তিক এবং খামখেয়ালি দাবী। সমাজে তাগোর গুরুত্ব দেখায়া বাঁইচা যাবে তা হবে না তা হবে না। সাংবাদিকরা সমাজে তাদের “সততার / নির্ভীকতার” আলাদা একটা ইমেজ তৈয়ার করছে, কাজেই সাংবাদিক নাম বা সাংবাদিকতা পেশার নাম শুনলেই জনমনে একটা ভক্তির উদ্রেক হয়। তবে ভাবা উচিৎ, সাংবাদিকরা যেই ইমেজ নিজেরা সোসাইটিতে ক্রিয়েট করছেন সেই ইমেজের তাঁরা নাও হইতে পারে। সাংবাদিক মানেই সৎ হবে, সাংবাদিক মানেই নির্ভীক হবে এমন না। এর বৈপরীত্য ও তাগো মাঝে থাকতে পারে। অন্ততপক্ষে উপজেলা পর্যাযে যাঁরা সাংবাদিকতা করে তাঁরা যারপরনাই ভীত এবং দলকানা টাইপের হয়। উপজেলা প্রেসের সাংবাদিকদের সভাপতি হিসাবে যাদের নির্বাচন করা হয় খোঁজ নিয়া জানা যাবে তেনারা সরকারী দলের সাথে সম্পৃক্ত। তাঁরা কিভাবে ব্যক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হন তা উপজেলা পর্যায়ে আসলে বোঝা যাবে। এমনকি উঁচু পর্যায়ের সাংবাদিকরাও নিয়ন্ত্রিত হন। কাজেই দলকানা সাংবাদিক মাত্রই যে সততার অবতার এই ধারনাটা বাতুলতা বৈ কিছু না। আমরা আমাদের ভাবনায় সাংবাদিকদের বর্তমানে এলিট পর্যায়ের মানুষ ভাবা শুরু করছি, মানে সাংবাদিকদের অনেক উচ্চাসনে বসাইছি। কাজেই সাংবাদিকদের সাথে কারো ঝামেলারে আমরা সাধারণ পর্যায়ে দেখি না অন্যভাবে দেখি। অন্যভাবে দেখা অবশ্য ঠিকআছে। যেহেতু বর্তমানে আমরা সংবাদপত্র নির্ভর, কাজেই এইসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ আমাদের কাছে সাধারণত একটু বেশিই গুরুত্ব পায়। এই গুরুত্বকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে তাঁরা আমাদের মন মগজে কী ঢোকাচ্ছে সেই প্রশ্নটা কেউ তাদের করে না! হাতের কাছে ক্যামেরা পাইয়া তেনার কিভাবে ক্যামেরা সন্ত্রাস হয়ে ওঠে পতিতালয়ে প্রবেশ করা সাংবাদিকদের রিপোর্টগুলো সাক্ষী হিসাবে আছে। একটা ক্যামেরা দ্বারা সোসাইটিরে নিজেদের খেয়াল মতো নিয়ন্ত্রণ করতে চান, এবং অপরাধেরর চিত্র তুইলা ধরতে গিয়া তাঁরা মানুষের অধিকারে, গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করেন! একটা সিম্পল ফ্যাক্টরে তিল থেকে তাল বানানো একজন সাংবাদিকের বাম হাতের খেল মাত্র। সবার মূলে তাদের ঐ ক্যামেরাপণা। হাতে একটা ক্যামেরা হইলেই সাংবাদিক সাব নিজেরে অনেক কিছু মনে করতে থাকেন। পুরা পৃথিবী উল্টায়ে ফেলবেন আরকি! এরপর আসল তথ্যের পাশাপাশি মিথ্যে খবরকেও আসল খবরে পরিণত করার গুণটা তাদের রয়েছে বেশ! সাংবাদিকরা অপরাধ হিসাবে সেটাকেই গণ্য করেন, যেটা রাষ্ট্র কর্তৃক অপরাধ বলে গণ্য করা হয়। এতে যদি একজন প্রলেতারিয়াত তাঁর দাবী আদায়ে রাস্তায় নামে সেটিকেও তিনি এমন ভাবে সন্ত্রাসবাদীদের বিদ্রোহ হিসাবেও উপস্থাপন করতে পারেন যা সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে বাধ্য! একজন সাংবাদিক মিডিয়ার নীতিমালার উর্ধ্বে উঠে সংবাদ উপস্থাপন করতে পারে না? সরকারের কোন অপরাধ তাঁর ক্যামেরায় ধরা পরে না এমনকি কোন জাতী যদি ক্যাপিটালিস্টদের হাত থেকে বাঁচতে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে তো তাদের কে সন্ত্রাসী হিসাবে দেখাতে মিডিয়া বা তাঁর তৈরী করা সাংবাদিকদের বাঁধে না।
সাংবাদিকরা যে সমস্ত নীতিমালা বেশ মেনে চলে তাঁর একটা লিস্ট করা যায়।
১) উপজেলা বা গ্রাম পর্যায়ের সাংবাদিকরা মোড়লদের(এমপি, মেয়র, চেয়ারম্যান, মেম্বর, প্রসিদ্ধ ব্যক্তি প্রমুখ) বিরুদ্ধে লিখতে পারেন না বা লেখেন না।
২) জেলা বা বিভাগ পর্যায়ের সাংবাদিকরা মেয়র, মন্ত্রী এবং ধনীদের নিয়ে লেখেন না বা লিখতে পারেন না।
৩) ক্যাপিটাল পর্যায়ের সাংবাদিকরা দুএকজন মাথাওয়ালার বিপক্ষে লিখলেও সরকার কিংবা ক্যাপিটালিস্টদের বিপক্ষে তাদের কলম চলে না।
৪) আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাংবাদিকরা আম্রিকা, ইসরাইল, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি ইম্পেয়ারালিস্টদের বিপক্ষে লিখতে পারেন না বা লিখেন না।
কেননা এদের নির্ভর করেই সাংবাদিকরা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকে। যাদের বিরুদ্ধে তাঁরা লিখতে জানেন না বা লিখেন না, প্রকৃতপক্ষে তাঁরাই এইসব নিউজ এজেন্সি এবং তাদের কর্মকর্তাদের পরিচালনা করে। প্রশ্ন হচ্ছে একজন সাংবাদিক কয়টাকা বেতন পায়? কিন্তু এত কম কামাই সত্ত্বেও একজন সাংবাদিক কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হয় সে প্রশ্ন করেছেন কী? আমি এমন ও সংবাদকর্মীর কথা জানি যাঁরা কিনা প্রকাশ্যে ঘুষ খায়। এবং যাঁর পক্ষ থেকে ঘুষ পেয়েছে তাঁর সম্বন্ধে বেশ সুস্বাদু খবর তৈয়ার করেছে।
কাজেই শুধু যে পুলিশের জবাবদিহিতা করতে হবে তা ও না। আইনের সম্মুখীন হলে “মূল ঘটনা” বিশ্লেষন করে “কার কতটা দোষ” সেটা জানার আগেই একজন পুলিশ কর্মকর্তারে বরখাস্ত ও মানা যাবে না। সাংবাদিকরা তাগো “ক্যামেরা ক্ষমতার ” অপব্যবহার করে এটা জেনে আগেই পদক্ষেপ নেয়া পুলিশ অফিসাররে বরখাস্ত মানে তাঁর প্রতি রাষ্ট্রের অবিচার বৈ কিছু নয়।

৫টি কবিতা: সজল আহমেদ

বেতন

একবার তাকিয়ে দেখি আমি আমার দশ বছরের পুত্রের খানার প্লেটে সুস্বাদু খানা হিসাবে আছি, পুত্র আমাকে কচকচ করে চিবিয়ে খাচ্ছে। আবার দেখি আমার বৌয়ের ডায়ামন্ড রিংয়ে ডায়মন্ড হিসাবে আছি।
কিয়ৎক্ষণ পর মেয়ের মেকআপ বক্সে নিজেকে গুটিয়ে থাকতে দেখলাম । মেয়ে আমাকে তুলিতে নিয়ে মাখছে। এর কিছুক্ষণ পর নিজেকে আবিষ্কার করলাম ভাইয়ের মানিব্যাগে। ও আমাকে ওড়াচ্ছে। এরও কিছুক্ষণ পর মায়ের ঔষধের বোতলে, নিরুপায় মা আমাকে গিলে ফেললেন। এরপর আমি আমার নিজেকে আবিষ্কার করলাম নিজের শূণ্য পকেটে!
এরপর আবার আমি পুত্রের প্লেটে, বৌয়ের ডায়ামন্ড রিংয়ে, মেয়ের মেকআপ বক্সে, ভাইয়ের মানিব্যাগে, মায়ের ঔষধে এবং ক্রমানুসারে নিজের শূণ্য পকেটে।

বিভ্রান্ত
লতা বিভ্রম পাতার
ডালে বিস্তৃত সোনার মাদুর
পোকা খাবার লোভে ছোটে
কয়েকশ বিভ্রান্ত বাদুড়।
জানে না বাদুড়
আগালে কয়েকটা ধাপ
সামনেই পাঁতা
আছে মৃত্যুর ট্রাপ!
চাঁদটা হারিয়ে যায়, মেঘের সয়ে অকথ্য যন্ত্রণা
বিভ্রান্ত জোনাক শোনে আঁধারের কুমন্ত্রণা।
জোনাক আর জ্বলেনা
চাঁদ ও ওঠে না
বাদুড় আর ফিরে আসেনা
গাছে বিছানো সোনার মাদুরে
কেউ এসে বসে না।
চলে…
লওহে মাহফুজে এক
একাকী কোরানিক বন্দনা,
বিভ্রান্ত শয়তান ছুটে চলে
পথভ্রষ্ট করার আকাঙ্খা।
ছুটে মসজিদে মসজিদে
ভাঙতে এবাদত
করায়ত্ব হাজীর পাগড়ী করে
লাগায় কলহ; কে শরীয়ত কে মারফত!
কার টুপি লম্বা, গোল। কে রেখেছে দাঁড়ি;
বিভ্রান্ত সবাই, মসজিদে কি আসতে পারবে নারী?
বিভ্রান্ত সকলে বিভ্রান্ত ইমাম,পুরোহিত, রাব্বি, গির্জার যাজক!
চলে কথার বাহাজ, রুষ্ট উপাসক
ফাঁকে ফুরিয়ে যায় সমস্ত ইবাদত!
কে শ্রেষ্ঠ?
মুহাম্মদ না যিশু?
কে জ্ঞানী?
ওসমান নাকি বিশু?
কার গ্রন্থ জগতের এলমের দ্বার…?
কাফের নাকি মুমিন্স ছিলো সম্রাট আকবর?
কে নাস্তিক? কে আস্তিক? কে কাফের বেঈমান
সংশয়বাদী খুন করো ওর ঘটে নেই ঈমান।
অদৃষ্টের পরিহাস – বিভ্রান্ত ইতিহাস,
আকবরি খচ্চর, অশোকের শিক্ষালয়
ভেঙেছে সুলতান মাহমুদ,
দুনিয়া বানিয়েছে যুদ্ধালয়!
অথচ ছিলো কিনা অশোক
তারই নাই কোন হিসাব
বিভ্রান্ত, বিভ্রান্ত, বিভ্রান্ত সব!
বিভ্রান্ত সত্ত্বা, মৃত্যুর পর কই যাবে আত্মা?
কবরের আজাব হবে নাকি হবে না?
বিভ্রান্ত নাস্তিক, পরপার কি আছে? এই ভাবনা!।

হাঁস
আসসালামু আলাইকুম হে সলিলে সাঁতারানো হাঁস,
তোমার লগে কাটবো সাঁতার মনে অভিলাষ।
চলো সাঁতারাই গভীর নদীতে আর খুঁজে খাই শামুকের ছানা,
মন তৃপ্ত থাকলে নিস্ফল গিলতে শরীর করে না মানা।
চলো; পারি যদি উড়তে কি দোষ খোলা আসমানে;
পাতিহাঁস যদি উড়তে পারে তুমিও পারবে চলো আগাই সামনে;
উড়ি আকাশে।
ইয়া হাঁস! অপ্রকৃতস্থ হয়ো না আজ –
অসময়ে অপ্রকৃতস্থ নিজের পেছনে বাঁশ!


উচ্ছিস্ট
আমি মারা গেলেও পৃথিবীর কোন স্থানের মদের আড্ডা কিংবা কোন ব্রথেলস অথবা কোন কনসার্ট, একটা সেকেন্ড এর জন্যও থেমে থাকবে কি? হাতেগোণা কজন ছাড়া আর কেউ শোক প্রকাশ করবে কি?

সেদিন
আর সেদিন পৃথিবীর সব পাপ একত্রে জড়ো করা হলে;
তুমি কাঁপতে থাকবে ভয়ে যেন তোমার মৃগী রোগ হয়েছে!
আল্লা
তোমার
সামনে;
তুমি
আল্লার
সামনে!
দুজন দুজনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বা বোসে……….
হঠাৎ আল্লা যদি তোমার সমস্ত পাপের হিসাব চায়-
ইয়া মাল হাবীবি!
তুমি তখন কাঁদবে যেমনটা আর কখনোই কাঁদোনি!
তোমার নেক বা গোনাহ্’র পাল্লা কতটা ভারী হবে তুমি জানো না!
তুমি শুধু এই জানো “একজন পাপী তুমি আর এখন তোমার সমস্ত পাপের হিসাব নেয়া হবে। তুমি কাঁদবে অথচ কাউকে অভয় দেয়ার পাবে না।”
আমার সাথে করা বিগত পাপ তোমাকে উৎকন্ঠিত করবে
তোমার মনে হতে থাকবে আমারে।
আর আমার সাথে করা সমস্ত অপরাধরে
তোমার মনে হতে থাকবে।
কেননা সেদিন-
আল্লা
তোমার
সামনে;
তুমি
আল্লার
সামনে!
দুজন দুজনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বা বোসে……….
আমার সাথে করা সমস্ত পাপ এর হিসাব তোমাকে দিতে হবে!
তুমি যেহেতু পাপ করেছো সেহেতু এর সব দায়ই তোমার
হয়তোবা দহন পাবে হাবিয়ার।
তোমার পুড়তে হবে!
কেননা ঐ দিন,
আল্লা
তোমার
সামনে;
তুমি
আল্লার
সামনে!
দুজন দুজনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বা বোসে……….

বাচ্চাকে কেন গোপাল ভাঁড় দেখতে দিবেন না?



জাতীতে আমাদের যেমন বাংলাদেশী ভারতী কিংবা হিন্দু মুসলমান ভাগ রয়েছে তেমনই ভাগ রয়েছে আমাদের ইতিহাসে।আর মানুষের ইতিহাসের দরকার রয়েছে ঐতিহাসিক গোলাম আহমেদ মোর্তজার মতে,মানুষই একমাত্র প্রাণী যাদের ইতিহাসের দরকার হয়।তবে এই দরকারি ইতিহাস পাল্টে যায়,জাতী ভেদে পাল্টায় আবার কিছু কুচক্রির হাতে পরে,সময়ে পাল্টায় অসময়ে ও পাল্টায়।
আবার ইতিহাস না বদলেও তৈরী হয় মানুষের মাঝে বিভক্তি।আমাদের কাছে যারা হিরো হয়তবা তেনাদের কাছে তাঁরা হচ্ছে কাপুরুষ বা বেঈমান। আবার আমাদের কাছে যারা কাপুরুষ, সুযোগবাদী তাদের কাছে তাঁরা সুপুরুষ ।
তখন কেমন হবে যখন আমাদের কাছে তাদের হিরো তথা আমাদের নিকট মীরজাফর জগৎশেঠদের চরিত্রের লোকদের আমাদের কাছে হিরোরুপে উপস্থাপন করা হবে? আর আমাদের বাচ্চারাও তাদের হিরোরুপে দেখা শুরু করবে?
ধরুন গজনীর সুলতান মাহমুদ। আমাদের দেশে সুলতান মাহমুদকে দুই রুপে আমরা দেখি।"ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি " এই পাঠ্যবই তে আমরা সুলতান মাহমুদ কে বীর হিসেবে দেখি আবার কলকাতার পাঠ্য "ইতিহাসের" বই তে চিনি একজন সনামধন্য "লুটেরা" হিসেবে।
হ্যা ইতিহাস এমনই।আমাদের হিরো তো ওনাদের কাছে ভিলেন আবার ওনাদের হিরো তো আমাদের ভিলেন।
তাই আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোৎঅনুরোধ দয়াকরে আপনার বাচ্চাকে কখনোই গোপাল ভাঁড় দেখতে দিয়েন না।
এতদিন ধরে আমি "সনি আট" চ্যানেলটির গোপাল ভাঁড় কার্টুনটির প্রায় ৩৫৪ টি পর্ব দেখেছি।শুধুমাত্র যে এই ৩৫৪টি পর্বে বিনোদনই নিয়েছি তা কিন্তু নয়,সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা নিয়েছি কিভাবে ভারতীয় চ্যানেল সনি আট বিকৃত ইতিহাস বাচ্চাদের শিখায়।আপনি ভাবতেও পারবেননা কিভাবে বাচ্চাদের মনে আমাদের ইতিহাসের বিকৃতিরুপ ঢোকানো হয়।

কেন গোপাল ভাঁড় বাচ্চারা দেখবেনা?
গোপাল ভাঁড়ে মাঝে মাঝেই আমরা "নবাব" কে দেখতে পাই,যিনি সব সময়ই কৃষ্ণচন্দ্রের গোপাল ভাঁড়ের কাছে জব্দ হচ্ছেন। কৃষ্ণচন্দ্র কে তিনি সিংহাসনচ্যুত করতে চান, ইত্যাদি ইত্যাদি।

১.আপনি জানেন ঐ নবাব কে?
যদি না জানেন তাহলে আমার এই তথ্য আপনাকে আশ্চর্য করবে! ভাবতে থাকুন নবাব টা কে! হ্যাঁ ঐ নবাব মূলত বাংলার নবাব " নবাব সিরাজউদদৌলা"। অ্যানিমেটেড সিরিজটিতে নবাবকে অন্যকোথার নবাব বা নবাব আলীর্বাদী খা হিসেবে বোঝাবে বোঝাতে চায় কিন্তু আসলে এই নবাবই হচ্ছেন আমাদের নবাব "সিরাজউদদৌলা"।অনেকে বলবেন উনি দিল্লির নবাব কিন্তু ইতিহাস বলে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নবাব সিরাজউদদৌলার সময়কার রাজা এবং উনি শত্রু ভাবতেন একমাত্র নবাব সিরাজউদদ্দৌলাকেই।আর কৃষ্ণচন্দ্র হলেন নদীয়ার রাজা যে রাজ্যটি ছিলো নবাব সিরাজউদদৌলার আয়ত্ত্বে।

২.বিকৃত ও সঠিক ইতিহাসে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও নবাবের চরিত্র
২.১
মিথ্যে ঐতিহাসিক ঘটনা
উল্লেখ্য,আমরা গোপাল ভাঁড়ের পর্বগুলোতে দেখতে পাই, "কৃষ্ণচন্দ্রর খুবই সৎ নিষ্ঠাবান,দেশ প্রেমিক,প্রজাপ্রেমিক লোক গোপাল ভাঁড় সহ তার আরো বেশ কিছু রত্নসম লোক আছে।এর মধ্যে গোপাল ভাঁড়ই বেশি বুদ্ধিমান,দেশপ্রেমিক,গরীবের বন্ধু যিনি সব রকমের বিপদ থেকে রাজাকে বাঁচান। নবাব বারবার কৃষ্ণচন্দ্র কে জব্দ করতে চায় এবং গোপাল বুদ্ধি দিয়ে তাকে বাঁচান।নবাবের আরেকটা খারাপ দিক তিনি ইংরেজ তোষণ করে থাকেন।বাংলায় নবাব সর্বপ্রথম ইংরেজদের স্থান দিয়ে তাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখছে অথবা দেখা যায় কৃষ্ণ চন্দ্র ইংরেজদের তোষণ করেন না।তিনি তোষামোদ করলেও গোপাল ইংরেজদের তাড়িয়ে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি।
২.২
গোপাল ভাঁড় বলে ইতিহাসে কেউ নেইঃ
আমরা মনে করি গোপাল ভাঁড় সত্যিই ছিলেন যিনি দুষ্টের দমন করতেন,বিখ্যাত হাস্যরসিক ও ভাঁড়, যিনি হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে অন্যদের আনন্দ দিতেন ইত্যাদি। আসল বা সঠিক হচ্ছে এর বিপরীত। গোপাল ভাঁড় নামক কারো অস্তিস্ত কখনোই ছিলোনা।এই চরিত্রটি মূলত কাল্পনিক।
গোপাল ভাঁড় নামে কেউ রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সময় নির্দিষ্ট করে ছিলেন না। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্ব সম্পর্কে ইতিহাসে প্রচুর তথ্য পাওয়া গেলেও তার কোথাও উল্লেখ নেই যে, তাঁর সভায় গোপাল নামে একজন ভাঁড় ছিলেন।(বাংলা পিডিয়া)তবে কোনো না কোনো বিদূষক রাজার প্রিয়পাত্র হন,সে বুদ্ধিমান হলেও হাস্যরসিক ছিলেন না। তবে সে যে গোপাল ভাঁড় তার কোন ইতিহাস কোন গ্রন্থে লেখিত নেই। গোপালের জন্ম কত বঙ্গাব্দে বা খ্রীষ্টাব্দে তার কোন নথিপত্র ইতিহাস দূরে থাক পুঁথিপত্রে ও তা কোথাও লেখা নেই,এমনকি বটতলার সাহিত্যেও না। তার জন্মস্থানের পক্ষেও কোনো নথি নেই, কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা হিসেবে তার সম্পত্তির কিংবা জায়গা-জমির কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি কোথাও।উনিশ শতকের প্রথম দিককার "বটতলার সাহিত্যে" গোপাল ভাঁড়ের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়।গোপাল ভাঁড়ের বংশ পরিচয় পাওয়া যায় নগেন্দ্রনাথ এর বই "নবদ্বীপ কাহিনি" থেকে। তবে তা সূত্রহীন এবং অবিশ্বাস্য কেননা ঐ বইটায় নবদ্বীপ নিয়ে কিছু রূপকথার গল্পটল্প ও আছে। আশ্চর্যের বিষয় বইটির লেখক "গোপাল" চরিত্রে রহস্য রাখতে ঐ গ্রন্থে ভাঁড় গোপালের বাবার নাম জানালেও তার মা ও স্ত্রী সম্পর্কে কিছুই লিখেননি। নগেন্দ্রনাথ দাসের মতে গোপালের পদবী ছিল 'নাই'। তার মতে, মহারাজ তাকে হাস্যার্ণব উপাধী দান করেন। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও ভাষাবিদ সুকুমার সেন বলেছেন ‘গোপাল ভাঁড় সম্পর্কে আধুনিক বাঙালির কৌতুহল থাকার ফলে বাস্তব অথবা কল্পিত ব্যক্তিটির সম্পর্কে যে জনশ্রুতি জাতীয় ঐতিহ্য গজিয়ে উঠেছে ও উঠছে তার বীজ হচ্ছে ভাঁড় নামের অংশটি, গোপাল ভাঁড়ের ভাঁড়টুকু সংস্কৃত শব্দ ভাণ্ডারের ‘ভাণ্ড’-জাত মনে করে অনেক গোপালের জাতি নির্ণয় করেছেন'।
গোপাল ভাঁড় সম্বন্ধে বাংলাপিডিয়ার বক্তব্য হচ্ছে,

"গোপাল ভাঁড়ের কোনো ঐতিহাসিক স্বীকৃতি নেই। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্ব সম্পর্কে ইতিহাসে প্রচুর তথ্য পাওয়া গেলেও তার কোথাও উল্লেখ নেই যে, তাঁর সভায় গোপাল নামে একজন ভাঁড় ছিলেন।
উনিশ শতকের প্রথম দিককার বটতলার সাহিত্যে গোপাল ভাঁড়ের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। বাংলার ইতিহাস, এমনকি পৃথিবীর ইতিহাসেও, অল্প হলেও দেখা যায় সমষ্টিগতভাবে জনগণের উপস্থিত বুদ্ধি ও জ্ঞান কোনো একজন অতীত লোকের নামে প্রচলিত হয় এবং কালক্রমে তিনি জনগণের মধ্যে হিরো হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। গোপাল ভাঁড় হয়ত এমনি এক কাল্পনিক ব্যক্তিত্ব।"

মূলত এই বুদ্ধিমান প্রাণী বিশেষটি মোল্লা নাসির উদ্দিন এবং বীরবল চরিত্র দুটো কে কাউন্টার করতে তৈরী করা।
২.৩
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র(১৭১০-৮৩)
আমরা গোপাল ভাঁড়ে নিশ্চই রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে চিনি যিনি খুবই সৎ নিষ্ঠাবান,শিক্ষিত,দেশ প্রেমিক,প্রজাপ্রেমিক লোক। হ্যা একথা সত্য যে, তিনি শিক্ষিত লোক ছিলেনমোট ৩ টি ভাষা সহ সঙ্গীত ও অস্ত্রবিদ্যায় ও তিনি পারদর্শী ছিলেন।তিনি ছিলেন রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন কূটকৌশলী ব্যক্তি।এসব গুণ তার মধ্যে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন একজন ইংরেজ প্রেমিক রাজা। রাজা কৃষ্ঞচন্দ্রের আমলেই মূলত বাংলায় ইংরেজরা ঢোকেন।যাকে নবাব সিংহাসনে বসিয়েছিলেন।এবং ১৭৫৭ সালে যখন ইংরেজ সাহেবদের কাছে বাংলার নবাব সিরাজউদদৌলা পরাজিত ও নিহত হলেন তখন নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং কোলকাতার রাজা নবকৃষ্ঞদেব সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন।উল্লেখ্য যে, রবার্ট ক্লাইভ পলাশীর যুদ্ধ ময়দানে যাওয়ার সময় কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের প্রাসাদে রাত যাপন করেছিলো।তারা কোম্পানির জয় কে হিন্দুদের জয় মনে করতেন।আরো উল্লেখ্য যে,নবাব হেরেছেন আর কোম্পানি জিতেছেন এই খুশিতে সেই ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন এর পরপরই নবকৃষ্ঞ চালু করেন দুর্গাপূজা।আর কৃষ্ণচন্দ্র চালু করেন জগদ্ধাত্রী পুজা।
বঙ্কিমচন্দ্র কৌতুক করে লিখেছিলেন, দূর্গোপূজোর মন্ত্র ইংরেজীতে পঠিত হইবে।[বাঙ্গালী জীবনে রমনী:নীরদচন্দ্র চৌধুরী,পৃষ্ঠা নং ১৮]
ইংরেজদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের পুরস্কারস্বরূপ কৃষ্ণচন্দ্র ইংরেজ কর্তৃক ‘মহারাজা’ উপাধিতে ভূষিত হন। তদুপরি ক্লাইভের নিকট থেকে উপঢৌকন হিসেবে পান পাঁচটি কামান।(বাংলাপিডিয়া)

[কৃষ্ণচন্দ্র সম্বন্ধে সামান্য তথ্য "এ এক অন্য ইতিহাস গ্রন্থের পৃষ্ঠা নং ৩২ এ দ্রষ্টব্য ]

শেষকথা
আমরা ইতিহাসে মীর জাফর মীর জাফর বা জগৎশেঠ জগৎ শেঠ করে ঘৃণা প্রকাশ করলেও তাদেরই মত একজনকে হিরো রুপে আমাদের শিশুদের কে দেখাই।আবার প্রকৃত ইতিহাসকে লুকিয়ে, আমাদের নায়ক নবাব সিরাজউদদৌলাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই কার্টুন সিরিজে বদ,শয়তান, ইংরেজ তোষণকারী হিসেবে দেখানো হয়, অথচ তিনি ইংরেজদের বিপক্ষে যুদ্ধ করে নবাব প্রাণটাই খোয়ালেন।অপরদিকে ইংরেজদের পা চাটচাটি করা রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কে দেখানো হয় সুপার হিরো হিসেবে!এই সিরিজটায় একেবারে সুক্ষ্ম ভাবে কাল্পনিক গোপাল দ্বারা শিশুর কাছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে হিরোরুপে তুলে ধরা হচ্ছে যা ন্যাক্কার জনক!

আপনি কি চান আপনার বাচ্চা ছোটবেলা থেকেই আপনার আমার হিরো সিরাজউদদৌলার প্রতি তীব্র ঘৃণা নিয়ে বড় হোক?
যদি না চান তাহলে মিথ্যা ইতিহাসের ভিত্তিতে গড়া গোপাল ভাঁড় থেকে তাকে দূরে রাখুন তাকে।
তথ্যসূত্রঃ


উইকিপিডিয়া
বাংলাপিডিয়া
ইতিহাসের

প্রতিশোধ



একটা মজার গল্প বলি,আমার এক বন্ধু আছে ওর নাম মোহাইমিন। খুবই বুদ্ধিমান,রাগী,হ্যান্ডসাম,মিষ্টভাষি আর ডানপিটে স্বভাবের।ওর আরেকটা গুন হলো, কথায় ওকে কেউ ঠকাতে পারেনা।বন্ধু মহলে ওকে আমরা ক্ষেপাই পিষুপিষু নামে।পিষুপিষু নাম হওয়ার ঘটনাটা হচ্ছে, স্কুলে পড়াকালীন ওর একটা বিড়াল ছিলো,হুলো বিড়াল। গর্দান মোটা আর বেশ ভারি ছিলো বিড়ালটা, ও শখ করে বিড়ালটার নাম রেখেছিলো পিষুপিষু। ও প্রত্যেকদিন বিড়াল কে কি খাওয়ালো,কি শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করালো ইত্যাদির বিবরণ স্কুলে এসে বেশ গর্বের সাথে বলত।ওর সেই কথা দিয়েই স্কুলের দুষ্টু ছেলেরা ওর নাম বিড়ালের নামে পিষুপিষু দিয়ে দিলো।কিন্তু মজার কথা হলো,মার খাওয়ার ভয়ে এই নাম ওর সামনে কেউ নিতে পারেনি!একবার বন্ধু আলী মহিবুল বলে এমন ঘুষি খেলো যে তিনদিন বিছানায় পরেছিলো।সেই থেকে বন্ধুরাও ওকে এই নামে কখনো ডাকেনাই।যাক সে কথা।হ্যান্ডসাম আর মিষ্টভাষী হওয়ার দরুন গার্লফ্রেন্ড জোটাতে ওর বেগ পেতে হয়নি।ফেইসবুকের মাধ্যমে আমাদের কলেজেরই একজন জুনিয়র মেয়ে কে জুটিয়েছেন তার নাম নদী।নদী যারপরনাই ভদ্র ও সুশ্রী মেয়ে পড়ে আমাদের কলেজে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে,নদী যখন কলেজ থেকে হেটে যায় তখন কলেজের ছেলেরা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে,মুখে মশা মাছি গেলেও টের পায় না।সকলের বুকে রোলার চালিয়ে মোহাইমিন কেমনে গোছাতে পেরেছে সেটাও আমাদের কাছে এক কোটি টাকার রহস্য!আমার সব বন্ধুদেরই একজন করে ইয়ে আছে আমিই একমাত্র লোক যার কপালে এখনো কেউই জোটেনি,মাঝে মাঝে বন্ধুরা আমার দিকে এমন করে তাকায় যেন ভীনগ্রহের কোন সিঙ্গেল প্রাণী দেখছে,কখনো কখনো শ্লেষ ভরা কন্ঠে আমাকে বলে,খুঁজে দেবো নাকি একজন?
নদী আমার সিঙ্গেল লাইফের কথা মোহাইমিনের কাছে শুনে করুণার দৃষ্টি দিয়ে বলেছিলো,"ভাইয়া আমার খোঁজে একটা ভালো মেয়ে আছে, অনুমতি দিলে চেষ্টা করতে পারি।" আমি কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না,বল্লাম "না আপু দরকার নেই,আমার যা চেহারা তাতে আপনার সন্ধানের লোক ভূত বলে ভয় পেয়ে পালিয়ে যাবে।" নদী দাঁত বের করে হোহোহো করে এমন ভাবে হাসলো, লজ্জায় আমি মোমের মত গলে উবে যেতে পারলে বাঁচতাম বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডের কাছে নিজের ইজ্জত পাংচার হওয়ার পর আমি আর ওদের সামনে যাইনি ১ মাসে।এর মধ্যে হঠাৎ একদিন কলেজে প্রেমিক যুগল এর সাথে দেখা।নদী আমাকে দেখে মিটমিট হাসছে।মোহাইমিন হালকা হলুদ দাঁত বার করে হেহে করে হেসে বল্ল,
"তোমার মত বলদ দিয়ে হালচাষ ও হবেনা!মেয়েদের সামনে দাঁড়াতে পারে না ওটা কেমন পুরুষরে? তুই জানিস মেয়েটা তোকে কি বলেছে?"
"এতদিন কই আসিলি তোর কি আমাশয় হইছিলোনি? হেঁহেঁহেঁহেঁ" মনে চাইতেছিলো দাঁত কপাটি খুলে ওর হাতে ধরিয়ে দেই,কিন্তু শত হলেও গার্লফ্রেন্ড সাথে তাই মাফ পেয়ে গেলো। আমি প্রসঙ্গ ঘোরাতে চাইলাম তাই কলেজে তানভীর স্যার আসছে কিনা জিজ্ঞেস করলাম।কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস নদী কাকে যেন ইশারা দিয়ে বল্ল,এইদিকে আয়।আমার দিকে তাকিয়ে বল্ল,"ভাইয়া ঐ যে আসতেছে সে যার কথা বলেছিলাম মনে আছে? আমার বান্ধবি তূণা।" আমি তাকিয়ে দেখলাম সুন্দরী এক ললনা আমাদের দিকে আসতেছে।পাঠক এক ফাঁকে জানিয়ে রাখি আমি কিন্তু খুব লাজুক!সুন্দরী ললনার হেটে আসার স্টাইল দেখেই আমার পেটের মধ্যে গুড়গুড় করতে লাগলো।এই মেয়ের যা চেহারা তাতে এর সাথে কথা বলতেই পাঁচশ টাকা অগ্রীম দিতে হয়। আমার বারটা বাজতে আর দেরী নাই!কি করি কি করি সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে মেয়েটাও প্রায় কাছে পৌঁছে গেলো, আমিও খিচ্চা দৌড় পিছনে তাকাইনি,দৌড়ে একদম কলেজ টয়লেট এর পিছনে।ওখানে কি হয়েছিলো আমি জানিনা তবে বিকেল হতেই মোহাইমিন আমাদের বাসায় হাজির।ওর মুখের দিকে একবার তাকিয়ে আর তাকানোর সাহস হচ্ছিলোনা।থোতাটা ঠিক বাংলা পাঁচ করে আমাকে জিজ্ঞেস করলো,
"তুই দৌড়াইয়া আসলি কেন?" আমি ভয়ে ভয়ে বল্লাম, "দোস তুই তো জানস আমি মেয়েদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারিনা,আমার কাঁপুনি শুরু হয়!তাছাড়া ঐ মেয়েটা যা সুন্দর তাতে আমার মত আলকাতরার ওর সাথে কথা বলা সমীচীন মনে হলোনা" মোহাইমিন এবার খেকিয়ে উঠলো, আমি মাথা নিচু করে বসে আছি জানি এখন সমানে বজ্রপাত হবে।মোহাইমিন বলেই যাচ্ছে "কি?" "বলছে তুই একটা, তুই একটা বলদে মোতাহার!" আমি বড় একটা শক খেলাম।লজ্জায় আর কোন কথাই বের হলো না।মোহাইমিন চলে গেলো।আমি মন খারাপ করে বসে আছি।এমন সময় বন্ধু শাকিল এর ফোন, "কিরে তোর নাকি কাঁপেরে?" "কে বলছে তোরে?"
"হাহাহা শুনছি ব্যাটা,আমাগো নেটওয়ার্ক সারা বাংলায়।তবে তোর নামটা কিন্তু জোশ হয়েছে,বলদে মোতাহার আঁ হাহাহাহা" রাগে আমার গা গজগজ করছে!আমার আর বুঝতে বাকি রইলোনা কাজটা মোহাইমিনের।ও নিশ্চই সব বন্ধুদের ফোন করে বিষয়টা জানিয়েছে।রাগে দুঃখে আমার কান্না পাইতে লাগলো,নেহাৎ পুরুষ মানুষ দেখে চোখে পানি আসেনি।এর মধ্যে ফোন দিলো স্বপন,জুম্মান,শাহেদ,শাহরিয়া সবার ঐ একই গান "কিরে বলদে মোতাহার" অবশেষে আপায় উপায় না পেয়ে ফোনের রিংটোন ভলিউম বন্ধ করে ফোন পাশে নিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।মিনিট পনেরো পরে টুটুটুন শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল।হায়রে কপাল ইন্টারনেট কানেকশন অন হয়ে আছে আর এর জন্য মেসেঞ্জারে অনবরত মেসেজ আসছে!মেসেঞ্জার অন করে দেখি প্রায় ৫৪ টি মেসেজ সব মেসেজ একই ধরনের! কেউ লিখেছেন "হাই বলদে মোতাহার" কেউ লিখেছেন "কি করছেন মোতাহর সাহেব?" তার পর কল লিস্ট চেক করে দেখলাম ৭৭ টি মিসডকল।টেক্সট মেসেজ এসেছে ৯৪ টি!বুঝলাম যারা কল দিয়ে পায়নি তারাই টেক্সট পাঠিয়েছে।আমার মাথা বোঁবোঁ করছে, বিষয়টা সবার কাছে পৌঁছলো কেমন করে?এমনকি আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ডসরাও জানে কেমন করে?ফেসবুক লগইন করে বিষয়টা বুঝতে আর দেরী হয়নি। মোহাইমিন বজ্জাতটা আমার আজকের ঘটনা নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে!আমি তখন লজ্জায়, রাগে ফোপাচ্ছি। বন্ধু মহল ছাড়িয়ে ঘটনাটা বাড়াবাড়ির পর্যায় চলে গেলো। এলাকার গুড়ো থেকে বুড়ো সবাই আমাকে ঐ নামে ডাকতে লাগলো!ঘটনা এই হলো,আমি আর ঘর থেকেই বেরুচ্ছি না!মোহাইমিনের উপর প্রতিশোধ নেয়ার চাপা একটা প্রবণতা কাজ করতে লাগলো,কিন্তু কিভাবে যে নিবো সেটাই মাথায় আসতেছিলোনা।কি করা যায় ভাবতে ভাবতে শেষে একটা আইডিয়া আসলো, মোহাইমিন সেদিন কি কাজে ওর জান্নাতুল আপুদের বাড়িতে গিয়েছিলো, আর আমিও সে সু্যোগ কাজে লাগালাম।অনেকদিন পর ফেইসবুক ওপেন করে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে বের হয়ে আসলাম।স্ট্যাটাসটি ছিলো নিম্নরুপঃ
" মোহাইমিন, জানি দোস আর ফিরবি কিনা!তবে তুই যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস এই কামনাই করি।আল্লাহ্ তোকে জান্নাতুল ফেরদৌস আপাদের বাড়ি সহীসালামতে পৌঁছে দিক!"
ফোন রাখলাম খোলা,মিনিট যেতে না যেতেই টুনটুন করে নদীর মেসেজ, "ভাইয়া আমি বিশ্বাস করি না!" আমি তখন হাসবো না গড়াগড়ি দেবো ভেবেই পাচ্ছিনা। ওকে কোন রিপ্লাই দিলাম না।নদী অফলাইনে চলে গেলো,বুঝলাম বেশ শক খেয়েছে!পাঁচমিনিট অতিবাহিত হলো কোন মেসেজ বা ফোন আসলো না,ছয় মিনিটের মাথায় এত ফোন আসতে শুনু করলো যে আমি দিক খুঁজে পেলামনা।উঁকি দদিয়ে দেখলাম মোহাইমিনদের বাসার সামনে বড়সড় একটা জটলা!সবাই মরহুম মোহাইমিন ককে শেষ দেখা দেখতে চায়।বিশ মিনিটের মাথায় কাকে যেন দৌড়ে আমাদের বাসার দিকে আসতে দেখলাম।কাছে আসতে বুঝলাম মোহাইমিন!জান্নাত আপুদের বাড়ি থেকে আসতে কমসে কম ৩০ মিনিটের পথ,এত দীর্ঘপথ মনে হয় দৌড়েই আসছে!ওকে আসতে দেখে আমি আমার খাটের নিচে লুকালাম!মোহামিন দৌড়ে আমার রুমে ঢুকে হাপাচ্ছে আর বলছে,
"আমি জানি তুই কই,তাড়াতাড়ি স্ট্যাটাস ডিলিট কর না হয় খবর আছে তোর!" আমি মাথা বাড়িয়ে বল্লাম, "মানুষরে ইনসাল্টে করতে কেমন লাগে?"
মোহাইমিন থ মেরে চেয়ারে বসে আছে,আমার মুখেও কোন কথা নেই!আমাকে শেষ বারের মত স্ট্যাটাসটা ডিলিট করতে বলে ও চলে গেলো,সেই যে চলে গেল আমার সাথে একমাস আর দেখা করেনি,হয়নি কোন কথাও!একমাস পরে এলাকার খেলার মাঠে দেখলাম মোহাইমিন কাকে যেনন কান ধরে ওঠবস করাচ্ছে।পাশের একজনের কাছে কারণ কি জিজ্ঞেস করতে বল্ল,এই ছেলেটা নাকি ওকে মরহুম মোহাইমিন বলেছে।আমাকে দেখেই ও মুখ ঝামটা দিয়ে সড়ে পরলো।আমি হাসতে হাসতে বাসার দিকে চলে আসলাম।

মঙ্গোল শোভাযাত্রা নিয়া মুসলমানরে অপবাদ দিতাছেন আপনে?


এই যে মঙ্গোল শোভাযাত্রা হইবে এইটা নিয়া চুপই ছিলাম চারুকলার বন্ধুগো খাতিরে।এই যে তাঁরা রাক্ষস টাক্ষস নিয়া লাফাইবে তাও তাগো খাতিরে সাম্প্রদায়িকতা ধরিনায় কিন্তু এখন চুপ থাকনতো গেলোনা।মঙ্গোলে গোল করেন না মনা করছে কে আপনাগো? কিন্তু এইটারে শ্রেফ পুরানা বাংগালী সংস্কৃতি বানাইতেই হবে? যান বানান মানা করছে কে? কিন্তু এইটার দোহাই দিয়া আপানে বাংগালী মুসলমানরে সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী,বাংলা সংস্কৃতি বিরোধী ইত্যাদি বলনের আপনারা কে?
মঙ্গোল শোভাযাত্রা বাংলাদেশীগো পালনের জিনিস হইলো কবে থেইক্কা? বাংলাদেশীরা প্যাগান সভ্যতা ছাড়ছেন সেই কবে। পূর্ববঙ্গের কোন প্রাচীন ইতিহাসে এর উল্লেখ নাই তবুও এইটা হইয়া গেলো বাংগালীর প্রাচীনতম উৎসব!




বাংগালী মুসলমানদের যেহেতু সাম্প্রদায়িক বলা হইলো সেহেতু সত্য তো বলতেই হয়, 'এই উৎসবে সাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া আছে'!ঐযে রাক্ষস টাক্ষস ঐসব হিন্দুধর্ম থেইক্কা ধার করা হইছে।আর এইটায় সাম্প্রদায়িকতার ছাপ চাক্ষুষ দেখা যাইতেছে সেহেতু এইটারে বড়জোর হিন্দু বহুল পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের উৎসব হিসাবে খাটান যাইতে পারে যেহেতু এইটায় হিন্দুয়ানির ছাপ ১০০% দেখা যায়( যদিও এইটা তাগো আবিষ্কৃত ও না।চারুপীঠ নামের একটি সংগঠনের শামীম আর তাঁর বন্ধুরা সহ ৩০০ শিক্ষার্থী ১৯৮৫ সালে যশোরে প্রথমবারের মতো নববর্ষের উৎসবে পাপেট ও মুখোশ নিয়া বাদ্যাটাদ্য বাজায়া মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে। এরপর ১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা চারুকলার শিক্ষার্থীরা পহেলা বৈশাখের সকালে মঙ্গোল শোভাযাত্রার আয়োজন করে আসতেছেন।আমি যে সাল হইতে লেখতেছি তার মাত্র ৩২ বছর আগে থেইকা আবিষ্কার হয়।আর নিয়মিত হয় তারও ৪ বছর পর থেইকা ৮৯ সালে)।বৈশাখে পান্তাভাত ইলিশমাছ খাওন রীতির মতো এইটাও হালের নতুন উৎসব।
যদি ধরিই হোলীর মত কইরা এইটারেও পালন করবেন মূর্তি সাজাইয়া "রাক্ষস " কান্ধের উপরে ফালাইয়া প্যাঁপু বাঁশি বাজাইয়া দৌড়াইতে হবে এইটা বাংগালী হিসাবে ফরজ হইয়া দাঁড় করান হইছে, বা সরকার ফরজ করছেন বা উৎসব মানেই করতে হবে বাংগালী হিসাবে ইত্যাদি ইত্যাদি, তাইলে আগেই কইয়া রাখা ভালো এইটা পূর্ববঙ্গে ফরজ করা খাটে না এই উৎসব পশ্চিমবঙ্গের খাটে আমাগো জন্য খালি পহেলা বৈশাখ উৎযাপনই যথেষ্ট।পহেলা বৈশাখের পুরান কোন অনুষ্ঠানে বাংগালী মুসলমান বাগড়া দেয়নায় বা বলেনায় যে এইটা করা যাবেনা। যেই ক্যালেন্ডার দেইখা বৈশাখ উদযাপন করা হয় সেই ক্যালেন্ডারই 'ফতেউল্লাহ সিরাজি' নামের একজন মুসলমান তৈরী করছেন মোঘল সম্রাট আকবরের আমলে।তাই পূর্ব থেইকাই নববর্ষ উদযাপনের লগে মুসলমানরা জড়িত।আসেন বঙ্গাব্দ'র ইতিহাস দেখিঃ

"ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে "বঙ্গাব্দ " বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়।
আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকত। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া।"[দ্রঃউইকিপিডিয়া]

তো ইতিহাসের নিরিখে এইটারে হাল বৈশাখ কওন যায়।এরপর বিবর্তন হইতে হইতে আজকের এই পান্তা ইলিশে আসছে।আকবরের আমল থেইক্কাই মুসলমান কেউ বৈশাখ উদযাপন নিয়া টু শব্দ করেনায় বরঞ্চ পালন কইরা আসছে, এই নিয়া মুসলমানদের কেউ সংস্কৃতি বিরোধী কইতে পারেনায় কিন্তু হালের কিছু বুদ্ধিজীবি মঙ্গোল শোভা যাত্রার
 বিরোধীতা করায় মুসলমানদের সংস্কৃতি বিরোধী তো বানাইছেনই লগে মৌলবাদী,সাম্প্রদায়িক ইত্যাদিও বানাইছেন!
 কেন মুসলমানরা এর বিরোধীতা করছেন সেইটা জিগানোর পর্যন্ত কোন বুদ্ধিজীবি বাকি রইলোনা!মূর্তি মুসলমান ধর্মবিরোধী আর মঙ্গোল শোভাযাত্রার মূলই হইলো মূর্তি নিয়া লাফালাফি।মূর্তি বিরোধী মুসলমানরা কিভাবে মূর্তি নিয়া লাফালাফি করবেন? তাগো উপরে জোড় কইরা এই নতুন সংস্কৃতি চাপাইয়া দেওয়াও এক প্রকার সাম্প্রদায়িকতা নয় কি?
 সরকারের মন্ত্রী নূর সাহেব জোড় জবরদস্তি কইরা এইটারে গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছাইয়া দিছেন এইটা কি তিনি ঠিক করছেন?
তার উপর এইটা আবার পূর্ববঙ্গে বসবাসরত সংখ্যাগরিষ্ট মুসলামান বাংগালীগো ধর্ম বিরোধী কাজ আর মূলেও তারা এইটার বিরোধী।



বিডিনিউজ২৪ডটকম শিরোনাম করছে
"দেয়ালচিত্রে পোড়া মবিল: ‘বাঙালির শৈল্পিক অনুভূতিতে আঘাত’
ভাই আপনাগো শৈল্পিক অনুভূতি থাকতে পারে আর মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি থাকবেনা এইটা কেমন কথা?
আর সেই অনুভূতি থেইক্কা তাঁরা এইটার বিরোধীতা করলেই আপনারা ঝাপাইয়া পরবেন এইটা কেমন কথা হইলো? নিজেগো বেলায় ১৬ আনা পরের বেলায় ৪!
আপনারা মাত্র ২৮ বছর আগের উৎসব দিয়া বাংগালী মুসলমানরে ঐতিহ্য সংস্কৃতি বিরোধী বলতে আসছেন অথচ বাংলাদেশের সংস্কৃতি আর বাংলাভাষাটা রক্ষা করছেনই পূর্ব বঙ্গের মুসলমারা,হিন্দুদের কোন অবদান থাকলেও সেইটা পূর্ববঙ্গের জন্য গোনায় ধরার মত না।এইখানে প্রমাণ স্বরূপ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালী লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বইয়ের একটা উদ্বৃতি টাইনা প্রমাণ করতেছি পূর্ববঙ্গের ঐতিহ্য আর বাংলাভাষা রক্ষায় কাগো অবদানঃ

"সেই অভিবক্ত বাংলার বিধান সভায় নবনির্বাচিত মুসলমানরাই ছিলো খাঁটি বাঙালী।এর আগে রাজনীতিতে আসতেন শুধু বড় বড় জমিদার,উকিল,ব্যারিস্টার বা রায়বাহাদুর খাঁনবাহাদুর।তাদের পোশাক হয় সাহেবী অথবা চাপকান।মুখের ভাষা সব সময় ইংরেজী।কিন্তু গ্রাম বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্বাচিত মুসলমান প্রতিনিধিরা বিধান পরিষদে নিয়ে এলেন বাংলাভাষা।লুঙ্গির উপরে পাঞ্জাবী পরে আসতেও তাঁদের দ্বিধা নেই।পশ্চিম বাংলার মুসলমানরা তো ধুতি পরে নিয়মিত।তাঁরা তাদের বক্তব্য বাংলায় পেশ করতে লাগলেন।তখন নিয়ম ছিল কোন সদস্য বাংলায় বক্তৃতা করলে তা রেকর্ড তা রেকর্ড করা হোতনা। বক্তব্যের সারাংশ ইংরেজীতে তর্জমা করে দিতে হত।তাই সই।তবু তাঁরা বাংলায় বলবেনই।বাঙালী হিন্দু নেতারা তখন খদ্দেরের ধুতি পাঞ্জাবী ধরেছেন বটে।কিন্তু বক্তৃতার সময় ইংরেজীর ফোয়ারা ছোটান।কে কি বল্লেন সেটা বড় কথা নয়।কে কত জোড়ালো ইংরেজী তুবড়ি ছোটাতে পারেন সেটাই গর্বের বিষয়।হিন্দু নেতাদের মধ্যে হীনম্মন্যতা ছিল যে,সর্বসমক্ষে বাংলা বললে লোকে যদি ভাবে যে,লোকটা ইংরেজী জানেননা!শিক্ষিত মুসলমানদের বালাই নেই।যাঁরা ভালে বক্তা তাঁরাও ইংরেজী ছেড়ে প্রায়ই শুরু করতেন বাংলায়।স্বয়ং ফজলুল হক ছিলেন শিক্ষা দীক্ষায় অনেকের চেয়েই উঁচুতে,তিনি মাঝে মাঝেই ইংরেজীর বদলে শুধু বাংলা নয় একেবারে খাঁটি বরিশালী বাঙাল ভাষায় কথা বলতেও দ্বীধা করতেন না। [দ্রষ্টব্যঃ পূর্ব-পশ্চিম ১ম খণ্ডের ৯৭ নং পৃষ্ঠায়]"

যেহেতু পূর্ব বঙ্গের ঐতিহ্য এবং বাংলা ভাষাটা বাঁচাইছেন মুসলমানরাই সেহেতু তাগো ১৯৮৫ সালে আবিষ্কৃত মঙ্গোল শোভাযাত্রা দিয়া বাংলা সংস্কৃতি বিরোধী কওনের আগে ইতিহাস অবশ্য পাঠ্য।আর আপনাগো মঙ্গোল শোভাযাত্রা কি মঙ্গলের? বুকে হাত দিয়া বলেন তো মঙ্গোল শোভাযাত্রা মঙ্গলকর কিনা!এই একটা দিনে আপনারা জনগণরে রাস্তা আটকাইয়া কি ভোগান ভোগাইতে পারেন সেইটা সর্বজনবিদিত।
এইবার মঙ্গোল শোভাযাত্রা বাদ দিছে খোদ আওামিলীগই-
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার(এপ্রিল ১৩/২০১৭ ইং) ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জনগণের যাতে ভোগান্তি পোহাতে না হয়, সেজন্য শোভাযাত্রা বাতিল করা হয়েছে।”[বিডিনিউজ২৪ডটকম ১৩ ই এপ্রিল ২০১৭]
কেন আওয়ামী লীগ পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রা বাতিল করেছে, তার ব্যাখ্যায় ওবায়দুল কাদের বলছেন, “আমাদের ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রা হয় বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত। আমরা চিন্তা করেছি, এ ধরনের শোভাযাত্রায় জনগণের ভোগান্তি হয়। বহুদিন ধরে কোনো ধরনের র্যালি করার পক্ষে আমরা নই।"

“আমাদের নেত্রীর সংবর্ধনার বড় ধরনের আয়োজন… নেত্রী জানালেন, ‘জনগণকে ভোগান্তি দিয়ে আমার সংবর্ধনার প্রয়োজন নেই’। একই কারণে আমরা শোভাযাত্রাও বাতিল করেছি। আমরা গণভবনে নেত্রীর সঙ্গে বৈশাখী উৎসব পালন করব।… বাইরে মানুষের যেন ভোগান্তি না হয়।”
[দ্রঃঐ]
আপনারা ভোগান তাতেও কোন আপত্তি নাই কিন্তু বাংগালী মুসলমানদের শোভাযাত্রার বিরোধীতা করার কারণে মৌলবাদী,সাম্প্রদায়িক আর ঐতিহ্য বিরোধী কওনের আগে দয়া কইরা ইতিহাস পইড়েন।ইতিহাস একদিন আপনাগোও ক্ষমা করবেনা মিথ্যা অপবাদের দায়ে।